ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল ও কোপাকুপির ইতিহাসঃ শেখ মুজিবুর রহমান
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ২৪ জুলাই, ২০১৩, ০২:৫২:৫৬ রাত
আওয়ামী লীগ – ছাত্রলীগরা দুই গ্রুপ তিন গ্রুপে কামড়াকামড়ি করে , কোপায়, খুন করে । আপনারা ভাবেন এরা কত্ত খারাপ । আসলে এইটা কিন্তু নতুন কিছু না । এদের চরিত্র আগে থেকেই এইরকম । এরা যে শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেই মারে- খুন করে তা নয়, এরা নিজেদের ভেতর মারামারি- কাটাকাটি করে শুরু থেকেই । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও মারামারিতে ওস্তাদ ছিলেন । তো এখন যদি ছাত্রলীগ মারামারি না করে, এরে ওরে খুন না করে তাইলে বাপকা-বেটা হবে কেম্নে ? তাঁর সময়কার ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও মারামারির কিছু ঘটনা জানুন তাঁর নিজের জবানিতে-
ঘটনা-১ঃ
‘দুই দলের নেতৃবৃন্দের একজায়গায় বসা হল, উদ্দেশ্য আপোষ করা যায় কিনা ? বগুড়ার ফজলুল বারীকে সভাপতি করে আলোচনা চললো । কথায় কথায় ঝগড়া, তারপর মারামারি হল, শাহ সাহেব অনেক গুন্ডা জোগাড় করে এনেছিলেন’ ।
(অসমাপ্ত আত্মজীবনী-৩০)
ঘটনা-২ঃ
‘আমি কিছু সংখ্যক ছাত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলাম । খবর যখন রটে গেল লীগ মন্ত্রিত্ব নাই , তখন দেখি টুপি ও পাগড়ী পরা মাড়োয়ারিরা বাজি পোড়াতে শুরু করেছে এবং হৈচৈ করতে আরম্ভ করেছে । সহ্য করতে না পেরে , আরো অনেক কর্মী ছিল, মাড়োয়ারিদের খুব মারপিট করলাম, ওরা ভাগতে শুরু করলো । জনাব মোহাম্মাদ আলী বাইরে এসে আমাকে ধরে ফেললেন এবং সকলকে বুঝাতে চেষ্টা করলেন’ ।
(অসমাপ্ত আত্মজীবনী-৩৫ )
ঘটনা-৩ঃ
‘কাউন্সিল সভা যখন শুরু হল , মওলানা আকরম খাঁ সাহেব কিছু সময় বক্তৃতা করলেন । তারপরই আবুল হাশিম সাহেব সেক্রেটারি হিসেবে বক্তৃতা দিতে উঠলেন । কিছু সময় বক্তৃতা দেওয়ার পরই নাজিমুদ্দিন সাহেবের দলের কয়েকজন তার বক্তৃতার সময় গোলমাল করতে আরম্ভ করলেন । আমরাও তার প্রতিবাদ করলাম, সাথে সাথে গন্ডগোল শুরু হয়ে গেল । সমস্ত যুবক সদস্যই ছিল শহীদ সাহেবের দলে , আমাদের সাথে টিকবে কেমন করে ! নাজিমুদ্দিন সাহেবকে কেউ কিছু বললো না । তবে তার দলের সকলেরই কিছু কিছু মারপিট কপালে জুটেছিল ।
আমি ও আমার বন্ধু আজিজ সাহেব দেখলাম, শাহ আজিজুর রহমান সাহেব ছাত্রলীগের ফাইল নিয়ে নাজিমুদ্দিন সাহেবের পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন । আমি ও আজিজ পরামর্শ করছি শাহ সাহেবের কাছ থেকে এই খাতাগুলি কেড়ে নিতে হবে , আমাদের ছাত্রলীগের কাজে সাহায্য হবে । নাজিমুদ্দিন সাহেব যখন চলে যাচ্ছিলেন , শাহ সাহেবও রওয়ানা করলেন , আজিজ তাঁকে ধরে ফেলল । আমি খাতাগুলি কেড়ে নিয়ে বললাম , কথা বলবেন না , চলে যাবেন’ ।
(অসমাপ্ত আত্মজীবনী-৪৪ )
ঘটনা-৪ঃ
‘শহীদ সাহেবের আসার দুই দিন পুর্বে আমি বললাম , আমি গোপালগঞ্জ মুসলিম লীগের জন্মদাতা । শহীদ সাহেব আসবেন , তাঁকে সংবর্ধনা দিব , যদি কেউ পারে যেন মোকাবেলা করে । আমি রাতে লোক পাঠিয়ে দিলাম । যেদিন দুপুরে শহীদ সাহেব আসবেন সেদিন সকালে কয়েক হাজার লোক সড়কি , বল্লম, দেশি অস্ত্র নিয়ে হাজির হলো । সালাম সাহেবের লোকজনও এসেছিল । তিনি বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন নাই । তবে শহীদ সাহেব, হাশিম সাহেব ও লাল মিয়া সাহেবের বক্তৃতা হয়ে গেলে সালাম সাহেব যখন বক্তৃতা করতে উঠলেন তখন ‘সালাম সাহেব জিন্দাবাদ’ দিলেই আমাদের লোকেরা মুর্দাবাদ দিয়ে উঠল । দুই পক্ষে গোলমাল শুরু হল । শেষ পর্যন্ত সালাম সাহেবের লোকেরা চলে গেল । আমাদের লোকেরা পিছে ধাওয়া করলো’ ।
(অসমাপ্ত আত্মজীবনী-৪৬)
ঠিক আছে ভাই ?
বিষয়: রাজনীতি
১৪৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন