ইসলাম, গনতন্ত্র, খেলাফতঃ বিভ্রান্তি নিরসন -১

লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ৩০ মে, ২০১৩, ০৮:২১:৩০ রাত

রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের দেড় হাজার বছর পেরিয়ে গেছে । পৃথিবীতে এসেছে অনেক পরিবর্তন । মুসলমানরা হয়েছে খেলাফতহারা । মুসলিমরাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জাতি । তবু থেমে থাকেনি পুনর্জাগরণের কাজ, আন্দোলন । অনেক নতুন প্রেক্ষাপট , নতুন পরিভাষা, নতুন মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে । এসব নিয়ে ছড়িয়েছে অনেক বিভ্রান্তি । গ্রহণ-বর্জনের দোলাচলে মুসলিম জাতি হয়েছে দ্বিধাবিভক্ত । এমনি একটি বিষয় –‘গনতন্ত্র’ । কেউ কেউ এটাকে একবাক্যে কুফর-শিরক বলে নাকচ করেছেন, কেউবা শর্তসাপেক্ষে গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন । কেউ কেউ সংস্কারের পক্ষে ।

এ সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের মাঝে রয়েছে বিস্তর বিতর্ক । লিখেছেন অনেকেই । বিষয়টি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে স্ট্যাটাস আকারে পোস্ট করার চিন্তা করেছি । ইনশাআল্লাহ প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটি করে পোস্ট দেয়ার চেষ্টা থাকবে । শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । আশা করছি, সব প্রশ্নের জবাব মিলবে । আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন । আমীন

গনতন্ত্র নিয়ে আলোচনার শুরুর দিকে আমরা কয়েকটি সাধারণ প্রশ্ন পরিস্কার করতে চাই । বিভ্রান্তি নিরসনে এই সহজ প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে বাস্তব ধারণা থাকা প্রয়োজন । পরবর্তী আলোচনা বুঝতে এই পরিক্রমণিকা আমাদের সহায়তা করবে ।

>> গনতন্ত্র কি কোন জীবন বিধান ?

গনতন্ত্র কোন জীবন বিধান নয় । এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ মাত্র । ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান । এতে আছে ধর্মীয় বিশ্বাস , ব্যক্তিগত জীবনের জন্য বিধান , অর্থনৈতিক বিধান , রাজনৈতিক মতবাদ সব । গনতন্ত্রে কোন ধর্মীয় মতবাদ ,ব্যক্তিগত জীবনের জন্য কোন নিয়ম নীতি, সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক মতবাদ নেই । আমেরিকা ধর্মে খ্রিষ্টান , অর্থনৈতিক ভাবে পুজিবাদী , রাজনীতিতে গনতন্ত্র । একইভাবে বিভিন্ন দেশে এই কম্বিনেশন বিভিন্ন ।

>> গনতন্ত্রের প্রকৃত রুপ কী ?

গনতন্ত্রের কোন নির্দিষ্ট রুপ নেই । এর মূলকথা হলো জনগন শাসক বা পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচন করবে । বিভিন্ন দেশে গনতান্ত্রিক সরকার কাঠামোর রুপ বিভিন্ন । বাংলাদেশের সাথে ভারত কিংবা আমেরিকার গনতন্ত্রের বিস্তর ফারাক । বৃটেনে এখনও রাণী আছে এবং যদিও রাণীর তেমন কোন ক্ষমতা নেই তারপরও রাণী চাইলে নাকি যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিংবা বাতিল করতে পারেন !

>> আমেরিকা কি গনতন্ত্র চায় ?

পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর কাছে গনতন্ত্রের শ্লোগান তাদের স্বার্থোদ্ধারের হাতিয়ার মাত্র । তারা গনতন্ত্র চায় বটে তবে আপোষহীনভাবে নয় । গনতন্ত্রের মাধ্যমে অন্যান্য দেশে তাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ বেশি , খেল জমে ভালো । এটা তাদের লাভ । তারা যদি গনতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষহীন হয়ে থাকে , তাহলে তারা মিশরের হোসনি মোবারক কে কেন সাপোর্ট দিত ? সৌদি রাজপরিবারের সাথে কেন তাদের এত সখ্য ? পাকিস্তানের সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ কে সমর্থন ও সহযোগিতা দিত কেন ?

আসলে গনতন্ত্র তাদের এমন কোন আদর্শ নয় যা তারা সব দেশে যেকোন মূল্যে প্রতিষ্ঠা করবেই ,বরং স্বার্থোদ্ধারের মুখরোচক বুলি মাত্র ।

তবে আমেরিকা ব্রিটেন অস্ট্রেলিয়া জার্মানি প্রভৃতি উন্নত রাষ্ট্র তাদের রাজনীতি এবং তাদের গনতান্ত্রিক রীতিনীতি ভালোমতই প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং এতে তারা সত্যিকারার্থেই লাভবানও হচ্ছে ।

সেখানে কোন রাজনৈতিক সংঘাত নেই , লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মী হত্যা করা হয়না , গান পাউডার দিয়ে গাড়ি পোড়ানো হয়না , গুলি করে কিংবা পিটিয়ে ছাত্রহত্যা হয়না , পুলিশ দিয়ে রাজনৈতিক নিপীড়ন তেমন নেই । অথচ ঠিক ঠিক নির্দিষ্ট সময় পরপর নির্বাচন হচ্ছে , শাসনক্ষমতার হাতবদল হচ্ছে ।

বিষয়: বিবিধ

১৫০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File