ইসলাম নারীর অবাধ বিচরণে বাধা দেয় !
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ০১ মে, ২০১৩, ১২:৪৫:৪২ রাত
ইসলাম নারীর অবাধ বিচরণে বাধা দেয় । অক্কে , মেনে নিলাম ।
এবার মনে করা যাক আপনার পরিবার এমন একটা জায়গায় বাস করে যার চারিদিকে ঘন জঙ্গল । সেই জঙ্গলে হিংস্র জন্তুর বিচরণ । একা কাউকে পেলে আক্রমণ করে । ক্ষতি করার চেষ্টা করে । আমার প্রশ্ন, এমন একটা পরিবেশে আপনি কি আপনার ভাইকে একা নিরস্ত্র অবস্থায় যেতে দেবেন ?
উত্তর- না । বোনকে পাঠানোর তো প্রশ্নই ওঠে না । যদি প্রয়োজন হয় তাহলে নিশ্চয়ই চেষ্টা করবেন কয়েকজন মিলে অথবা অন্তত দুজন মিলে সশস্ত্র অবস্থায় যেতে ।
ধরা যাক, আপনার ছোট ভাই –যে এখনো নিজে নিজেকে রক্ষার উপযোগী হয়নি; কিন্তু যখন তখন বাইরে চলে যায় । আপনি কী করবেন ? আপনি কি তাকে কঠোর শাসনের ভেতর রাখবেন না ?
এখানে দুটো পক্ষ । একটি পক্ষ আপনি । আপনি আপনার ভাইকে ভালোবাসেন । তাই তার কোন ক্ষতি হোক চাননা । এজন্য তাকে কিছু বিধিনিষেধের আওতায় রাখেন । জঙ্গলে যাবার প্রয়োজন হলে তার সাথে যান ।
অপর পক্ষটি ঐ জঙ্গলের হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের দল । তারা চায় তার শিকার একা একা নিরস্ত্র অবস্থায় বাইরে আসুক । সারাদিন-রাত তাদের আশেপাশে ঘোরাফেরা করুক ।
এখন , ঐ জন্তুরা যদি অভিযোগ করে আপনার বিরুদ্ধে যে আপনি আপনার ভাইকে অবাধ বিচরণ করতে দিচ্ছেন না । ব্যাপারটা কেমন হয় ?
সৃষ্টিকর্তা নারীকে তৈরি করেছেন পুরুষের তুলনায় দুর্বল ও নরম করে । এটা এখন শুধু তত্ত্বীয় বা অভিজ্ঞতানির্ভর কথা নয় , মেডিকেল সাইন্স দ্বারা প্রমাণিত । নারীর গড় উচ্চতা কম , বডি সারফেস এরিয়া কম, রক্তের পরিমাণ কম , রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম , মস্তিষ্কের ওজন কম , মাসল কম , কম ক্যালরি খরচ করে ইত্যাদি । আরো অনেক কিছু । এছাড়াও এমন কিছু দুর্বলতা আছে যা পুরুষের নেই ।
আর বাইরে কারা ঘোরাফেরা করছে ? এরা কী চায় ? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মানিক কী করেছিল ? ইডেন কলেজে কী করে ছাত্রলীগ নেত্রীরা ? কী ঘটেছিলো সাভারে চলন্ত বাসে ? কী করেছিল নরপশু পরিমল জয়ধর ? বেশি জন্তু-জানোয়ারের উদাহরণ দিয়ে এই পোস্টটা কলুষিত করতে চাইনা । আশাকরি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ।
ইসলাম দিতে চায় ‘সুরক্ষা’ ।
ইসলাম দিতে চায় ‘নিরাপত্তা’ ।
যেসব পুরুষ ইসলামের অনুশাসন মেনে চলে তারা কোন মহিলাকে দেখলে চোখ নামিয়ে নেয় । তাদের কাছ থেকে কোন ক্ষতির আশংকা নেই । কিন্তু মানিকের মত যারা ? তারাই অভিযোগ তোলে , ইসলাম নারীর অবাধ বিচরণে বাধা দেয় !
ঠিক যেন জঙ্গলের ঐ পশুগুলোর মত অভিযোগ ! শিকার পাবে না এই হতাশায় আসা অভিযোগ । হ্যা , ইসলাম তোমাদের মত হিংস্র জন্তু জানোয়ারের সামনে নারীর অবাধ বিচরণে বাধা দেয় । প্রয়োজনে মাহরাম পুরুষ (বাবা, ভাই , যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ এমন নিকতাত্মীয়) সাথে নিতে বলে । এটাই ইসলামের সৌন্দর্য । আর নারীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার রক্ষাকবচ । এটা নারীর প্রতি ইসলামের অবজ্ঞা বা কঠোরতা নয় , নিখাদ ভালোবাসা ।
এবার আসি আসল কথায় । ইসলাম আসলে নারীর অবাধ বিচরণে বাধা দেয় না । নারীর প্রকৃতিগত দুর্বলতার কারণে শুধুমাত্র নিরাপত্তার খাতিরে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মাত্র ।
ইসলামী রাষ্ট্রে নারীরা গার্লস স্কুল ,মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করবে । অফিসে চাকুরী করবে । ব্যাংকের মহিলা শাখায় চাকুরি করবে , ব্যাংকিং করবে । এভাবে প্রতিটি সেক্টরে নারীরা তাদের নিজস্ব পরিবেশে অবাধে কাজ করবে । পর্দা রক্ষা করে রাস্তাঘাটেও অবাধে বিচরণ করবে । কেউ কোন জন্তু-জানোয়ারের ভয় করবে না ।
মক্কায় থাকতেই আল্লাহর রাসুল(সাঃ) বলেছিলেন, একদিন সানআ থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত একজন নারী একা একা হেঁটে যাবে । আল্লাহ ছাড়া আর কারো ভয় করতে হবে না ।
আলহামদুলিল্লাহ , খেলাফতের সোনালী যুগে সত্যি সত্যিই এভাবে নারীরা একা একা দূর দূরান্তে ভ্রমণ করেছে । আল্লাহ ছাড়া কারো ভয় সেখানে ছিলনা । আমরা আবার এমন একটি সমাজে ফিরে পেতে চাই । আর সেটা মধ্যযুগে ফিরে গিয়ে নয় – এই একবিংশ শতাব্দীতেই ।
বিষয়: বিবিধ
১২২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন