মোরগ-পোলাওয়ের সুগন্ধ
লিখেছেন লিখেছেন অপ্টিমিস্ট রোকন ২৩ জুন, ২০১৩, ১১:৩৯:২৭ সকাল
আমাদের গ্রামে একটা কথা আছে এরকম ‘উচুতে থেকে মাগুর মাছটা চায়’। গ্রামদেশে পুকুর বা বিলে মাছ মারার সময় দেখা যায় একদল লোক গায়ে কাদা-পানি মাখিয়ে অনেক কষ্ট করে মাছ ধরে। আর একদল লোক গায়ে কাদা-পানি না মাখিয়ে উপরে বসে মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করে। দিন শেষে মাছ ভাগাভাগির সময় দেখা যায় উপরে বসনেওয়ালা পরিপাটি পোষাকের লোকেরা সবচেয়ে বড় ও মূল্যবান মাছটি চেয়ে বসে আছে।
উপরোক্ত ঘটনার কথা মনে পড়লো একটা নিউজ পড়ার পর। নিউজটির চুম্বক অংশ শুনুন: ১৮ দলীয় জোটের বাইরে সরকারবিরোধী মহাঐক্যজোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন এই জোটে যোগ দিচ্ছেন বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারা, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, আ স ম রবের জেএসডিসহ আরো কয়েকটি দল। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন ওই জোটে দেখা যেতে পারে এরশাদের জাতীয় পার্টিকেও। ১৮ দলের বাইরে নতুন এই জোট গঠনের পেছনে যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে জামায়াত থাকায় ওই দলগুলো ১৮ দলে যোগ দিতে অস্বস্তি প্রকাশ করছে। তাই জামায়াত থাকবে ১৮ দলে। আর ঐ দলগুলো থাকবে মহাঐক্যজোটে।
এবার আসুন আমার প্রথম কথায়। পাঁচ বছর গায়ে কাদা-পানি মাখিয়ে মাছ ধরেছে বিএনপি ও জামায়াত। যদিও মাছ জামায়াতই পেয়েছে বেশি, কাদাও বেশি মাখিয়েছে গায়ে, তবু বিএনপির গায়েও কাদা কম লাগেনি। কিন্তু মাছ ভাগাভাগির সময় দেখা যাচ্ছে একজন পরিপাটি ডাক্তার, একজন টকশো-হোস্ট, একজন পতিত সমাজতন্ত্রী আর একজন নষ্ট প্রেমিক মাগুর মাছের ভাগ নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
এবার আর একটি ছোট ঘটনা। গ্রামের রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন গ্রামের মেম্বার। এক ছোকড়া সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে একটা বড় মোরগ হাতে নিয়ে। মেম্বার তাকে জিজ্ঞেশ করলেন, যাস কোথায়? ছোকড়া বলে, বাজারে যাবো মোরগ বেচতে। মেম্বার বলেন, তুই এই মোরগ কারো বাড়ি থেকে চুরি করেছিস। যা তোর বাবাকে ডেকে নিয়ে আয়। ছোকড়া সত্যি সত্যি মোরগটা চুরি করে এনেছিল। ফলে যা হবার তাই হলো। মেম্বারের হাতে মোরগটা তুলে দিয়ে ছোকড়া এক দৌড়ে পালিয়ে গেল। আর সেই রাতে মেম্বারের বাসা থেকে মোরগের গোস্তের সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়লো সারা গ্রামে।
উপরোক্ত বয়ানের উপসংহার: আমাদের সুযোগসন্ধানী মেম্বারগণের বাসা থেকে শীঘ্রই মোরগ-পোলাওয়ের সুগন্ধ পেতে যাচ্ছে দেশবাসী।
বিষয়: রাজনীতি
১৫২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন