চকোলেট

লিখেছেন লিখেছেন অপ্টিমিস্ট রোকন ২১ জুন, ২০১৩, ০৪:১৯:৪৮ বিকাল

প্রথমে একটি পুরোনো গল্প। চকোলেটের দোকানের পিচ্চি দোকানদারকে দেখে ক্রেতা বলেন, “বাবু এই যে তুমি চকোলেট বেচো, চকোলেট খেতে ইচ্ছে করে না তোমার?” পিচ্চি জবাবে বলে, “ইচ্ছে তো করে। কিন্তু আব্বু দোকানের সব চকোলেট গুনে রাখে। একটা খেলেই ধরা পড়তে হয়।” ক্রেতা বলেন, “আহা বেচারা! চকোলেটের দোকানদারি করেও চকোলেট খেতে পারে না।” ক্রেতার কথা শুনে পিচ্চি বলে “আব্বু যত চালাকই হোক না কেন, আমার চকোলেট খাওয়া ঠেকাতে পারে না। কারণ আমি বৈয়ম থেকে চকোলেট বের করে কাগজের মোড়ক খুলে সব চকোলেট একবার করে চেটে খাই, আবার সুন্দর করে মোড়ক পেচিয়ে চকোলেটগুলো বৈয়মে রেখে দেই। কেউ ধরতে পারে না।”

এবার দ্বিতীয় গল্প। আওয়ামী লীগ চকোলেট থেতে গিয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে। কিন্তু চট্টগ্রামের লোকেরা এতই বেয়াড়া যে কোন মতেই তাদেরকে চকোলেট খেতে দিল না। ফলে গোপনে চকোলেট চেটে খেয়ে ঢাকায় ফিরে এল তারা। কয়েকদিন পর নারায়নগঞ্জ পৌরসভায় চকোলেট খেতে গিয়ে লোকজন দেখে ফেলায় চকোলেট ছেড়ে আসতে বাধ্য হলো তারা। তারও কিছুদিন পর একসাথে চারটি সিটিতে চারটি বড় চকোলেট খাওয়ার নেশা পেয়ে বসলো আওয়ামী লীগকে। কিন্তু না, এবারও মানুষের কড়া ধমক খেয়ে চকোলেট চেটে খেয়েই ঢাকায় ফিরতে হলো তাদেরকে। কোথাও চকোলেট খেতে না পেয়ে শেষমেষ তারা আবার চকোলেট খাওয়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছে গাজিপুরের উদ্দেশে।

তৃতীয় গল্প। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের কোন এক স্নিগ্ধ সকাল। প্রধানমন্ত্রী পাঁয়চারি করছেন গণভবনে। ইদানিং পাইক-পেয়াদা কাউকে কাছে ঘেঁষতে দেন না তিনি। একা একা গণভবনের বিস্তৃত সবুজ মাঠে হাঁটেন। আনমনা হয়ে অতীত জীবনের স্মৃতি হাঁতড়ে নস্টালজিক হয়ে যান। পুত্র-পুত্রবধূ, কণ্যা-কণ্যা জামাই, বোন-ভাগ্নী কেউ দেশে নেই। আর মাত্র কয়েকদিন পর জাতীয় নির্বাচন। দেশের প্রধান কয়েকটি দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তাতে অবশ্য তাঁর মনে কোন দুঃখ নেই। বরং তিনি খুশি। তিনি চাচ্ছিলেন তারা যেন এই নির্বাচনে অংশ না নেয়। তাঁর সেই চাওয়া পূর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছোটবেলা থেকেই চকোলেট খেতে খুব পছন্দ করেন। কিন্তু তাঁর দুর্ভাগ্য, যে চকোলেটটি তিনি পছন্দ করেন, সেই চকোলেটটি বেশিরভাগ সময়ই অন্য একজন খেয়ে ফেলে। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে যে চকোলেটই তিনি খেতে গিয়েছেন, সেই চকোলেটই তাকে ফেলে আসতে হয়েছে। এবার তিনি দৃঢ়ভাবে দাঁতে দাঁত চেপে বড় আর একটি চকোলেটের জন্য অপক্ষো করছেন। তিনি জানেন, সব চকোলেট মিস হলেও এই চকোলেট মিস হওয়ার কোন চান্স নেই। প্রধানমন্ত্রী তার মনের ভেতর বয়ে যাওয়া খুশির ঢেউ চাপা দিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। কিন্তু পারছেন না। একা একা সবুজ মাঠে হাঁটছেন আর খিল খিল করে হাসছেন তিনি।

বিষয়: রাজনীতি

১৭৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File