আলোকবর্তিকার সন্ধানে....

লিখেছেন লিখেছেন কানামাছি ২০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:০২:৩৯ দুপুর

রাজু আজ একটু চিন্তিত কারন মাসুমের একটা কথা তার মাথায় ধরছে না।মাসুম আবার মাঝে মাঝে কিছু হাইপোথিটিকাল কথা বলে থাকে।অন্যরা এসব হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিলেও রাজু আবার মাসুমের কথার খুব গুরুত্ব দেয়।মাসুম আবার এটা বুঝে যে,রাজুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু সে নিজে।মাসুমের যেকোনো ভালো কাজে রাজু সবসময় উৎসাহ দেয়,আবার মাসুম কোন ভুল করলে সবচেয়ে আগে রাজুই সেই ভুল সংশোধনের জন্য এগিয়ে আসে।

দুজনের এই বন্ধুতের কথা রাকিব আবার একটু আধটু বোঝে,অমি বুঝলেও না বোঝার ভান করে থাকে।তরুণ আবার অন্যের বন্ধুত্ব-ভালোবাসার প্রতি খুব বেশি মনোযোগ দেয়না,নিজের ভালোবাসা নিয়েই বেশি ব্যাস্ত।জয়ন্ত অবশ্য সবসময়য় একটু “confused” থাকে তরুনের ভালোবাসা নিয়ে।আসলেই কি লাবণ্য তরুনের বন্ধু নাকি তার চেয়েও বেশি কিছু!!!

রাজু এখনও খুব চিন্তিত,সকাল গড়িয়ে দুপুর এল বলে কিন্তু এখনও মাসুমের কথার কোন কূল কিনারা করতে পারছেনা।সকাল বেলা শুভংকর সারের ক্লাসে attendance দিয়ে সেইযে ক্লাস থেকে দুজন বের হয়ে গেছে আর যাওয়া হয়ে উঠেনি।একবার অবশ্য ক্লাসে যেতে চেয়েছিল তার প্রিয় মাসুদ সারের ক্লাস করার জন্য কিন্তু মাসুমের প্রশ্নের উত্তর বের না করা পর্যন্ত তার কোন কাজে মন বসছেনা।চিন্তায় মনোযোগ আনার জন্য রাজু তাই একটা ফাকা রুম খুজছিল।৪র্থ বর্ষের ভাইয়াদের যে পরীক্ষা চলছিল-সংকর দা তা ভুলেই গিয়েছিল,মেয়ের বিয়েতে বর পক্ষ যৌতুক চেয়েছে ৫০০০০! টাকা,এই চিন্তায় বিভোর হয়ে কখন যে নিত্যকার মত ভাইয়াদের ক্লাসরুম খুলে রেখেছে তার খেয়ালও নেই।রাজু অবশ্য রুমটা ফাকা পেয়ে আপনমনে মাসুমের প্রশ্নের জবাব খুজতে লাগলো।“মাঝে মাঝে কিছু ভুল কোন বড় কোন সৃষ্টির পথ বের করে দেয়”।রাজু ধীরে ধীরে মনে করার চেষ্টা করছিল মাসুমের প্রশ্নটা-

“দিনের বেলায় সূর্য এই পৃথিবীকে আলোকিত করে,রাতে করে বিদ্যুৎ -শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে দিনদিন এই পৃথিবী,কিন্তু তারপরও পুরো পৃথিবীতে এত অন্ধকার কেন?কেন এত অশান্তি?”

বলতে গিয়ে চোখটা ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল মাসুমের।পর পর তিন ক্লাসে রাজুকে দেখতে না পেয়ে রাশেদ খুজতে খুজতে চলে এল ঐ ক্লাসে।রাজুকে খুঁজে পেয়েই তো আচ্ছা বকা শুরু করল রাশেদ...তোকে আমি কতগুলো ফোন দিয়েছি তুই দেখেছিস-রাজুর অবশ্য সেই দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই-আনমনে ভেবে যাচ্ছে মাসুমের প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য।হঠাৎ তার মনে হোল রাশেদকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে কেমন হয়?অন্যরা যখন সারাক্ষন face book নিয়ে বসে থাকে রাশেদ তখন বেশির ভাগ সময় পার করে INTERNET এ বিভিন্ন বই পুস্তক আর ম্যাগাজিন পড়ে।কারন রাশেদ বিশ্বাস করে “জানতে হলে পড়তে হবে,কিন্তু সত্য জানতে হলে অনেক বেশি পড়তে হবে”।

কালবিলম্ব না করে তাই রাজু বলেই ফেলল রাশেদকে -রাশেদ একটু চিন্তা করে বলল,আরে বুদ্ধিজীবী এত কিছু জানিস আর এই সহজ প্রশ্নের উত্তর জানিস না।রাজুর তার তর সয়ছিল না—রাশেদ তুই বলবি ??নাকি তুই মজা করছিস আমার সাথে,আমি প্রায় তিন ঘন্টা ধরে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি।উত্তর দেবার আগে রাশেদ রাজুকে একটা প্রশ্ন করল-আচ্ছা রাজু বলত আমাদের কে সৃষ্টি করেছেন?

রাজু বলল, কেন আল্লাহ্‌।

আচ্ছা আল্লাহ্‌ কি এই দুনিয়ার মানুষের চলার জন্য কোন আলোকবর্তিকা বা জীবনবিধান পাঠিয়েছেন?

হ্যাঁ পাঠিয়েছেন।আল কুরআন।।

তাহলে বল তো,আমরা যে শিক্ষা অর্জন করছি তা দিয়ে কি পৃথিবীর এই অন্ধকারকে দূর করা সম্ভব?সূর্য দিনে আলো দেয়,বিদ্যুতের আলোয় রাতের অন্ধকার দূরীভূত হয়।কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছিস,যে অন্ধ তার কাছে কি এই আলোর কোন মূল্য আছে?পুরো পৃথিবীটা নিয়ন বাতি দিয়ে আলোকিত করলেও তো তার কাছে এই জগতটা অন্ধকারই লাগবে।

রাজু বলল হ্যাঁ তাইতো।

আসলে বন্ধু,আমাদের এই পঞ্চইন্দ্রিয় দিয়ে আমরা যে জ্ঞান অর্জন করতে পারি সেই জ্ঞান দিয়ে এই দুনিয়ার সকল পাপ-পঙ্কিলতার অন্ধকার দূর করা সম্ভব নয়,তার জন্য দরকার এমন একটা আলোকবর্তিকা যা কিনা মানুষের হৃদয় আলোকিত করে,পবিত্র করে তোলে তার আত্মাকে।আর তা হচ্ছে-আল কুরআন।যা কিনা স্রষ্টার পক্ষ হতে প্রেরিত সমস্ত মানব জাতির জন্য এক স্থায়ী আলোকবর্তিকা।আমরা যেদিন এই আলোকবর্তিকা নিয়ে সামনে এগিয়ে চলব সেদিন এই ধরণীতে আর কোন অন্ধকার থাকবেনা আমার দৃঢ় বিশ্বাস,রাজু কিছু বলবে ভাবছিল কিন্তু রাশেদের জবাব যেন তাকে আবার নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিল...

বিষয়: বিবিধ

১১৮৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

164865
২০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪২
ফেরারী মন লিখেছেন : আমরা এই আলো থেকে অনেক অনেক দুরে অবস্থান করছি বলেই আজ পৃথিবীতে এত হানাহানি, কাটাকাটি। সুন্দর পৃথিবীটা অসুন্দরে রূপান্তরিত হচ্ছে। সুন্দর লেখা
২০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১০
119058
কানামাছি লিখেছেন : আপনার চোখ তো মানুষকে বিভ্রান্ত করবে।।আমার লিখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
165187
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৯:৫২
আলোকিত ভোর লিখেছেন : ধন্যবাদ Rose
165995
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪০
রওশন জমির লিখেছেন :
মনে প্রেম এর বাত্তি জ্বলে বাত্তির নিচে অন্ধকার

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File