......শুভ কামনায় রুম নং ৩০৫
লিখেছেন লিখেছেন কানামাছি ২৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:৩৭:৫৬ দুপুর
নির্ঝর বাইরে যাচ্ছ নাকি? তা কোন কোন ইউনিভার্সিটিতে আপ্লাই করলা? আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রশ্নকর্তা বলে ফেলল,আসলে এই রুমে তারাই আসে যারা বাইরের ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য যেতে চায়,তাছাড়া বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাই করার জন্য যে আনুসঙ্গিক কাগজ পত্র লাগে তা ত এখান থেকেই নিতে হয়। আমি একটু দম নিলাম এবং বললাম,আসলে আমি নই আমার এক বড় ভাই বাইরে যাবেন তাই উনার কাগজ পত্র আমি একটু তুলে দিচ্ছি।উনি কক্সবাজার থাকেন ,পরমানু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানী।সত্যি বলতে কি, প্রায় এক মাস ধরে কাগজগুলোর জন্য ছোটাছুটি করছি কিন্তু একবারের জন্যও মনে হয়নি যে আসলে এই কাগজগুলো তোলার উদ্দেশ্য কি?প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন করার সাথে সাথে যদি উত্তরটাও না দিতেন তাহলে আজ আমি হয়ত একটু অস্বস্তিতেই পরতাম।যাই হোক গুরুজনেরা বলেন;মানির মান আল্লাহই রাখেন।তবে এটা ঠিক কাগজগুলো উঠানোর জন্য এই রুমে আসার প্রথম দিন থেকেই আমি একটু অন্যরকম অনুভূতির সম্মুখিন হতাম।প্রথমত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিল্ডিঙে আমার পক্ষে যতগুলো রুমে ব্যাক্তিগত কাজের জন্য যাওয়া হয়েছে তার কোন রুমেই আমি এত ব্যস্ততা দেখিনি,দ্বিতীয়ত এই রুমের যারা অফিসার এবং স্টাফ তারা একটানা কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু তাদের মুখে একটুও বিরক্তির ছাপ নেই বরং কোন একটা সমস্যার কথা যখন তাদের বলি তখন তারা এত অমায়িক ভাবে তার উত্তর দেয় কিম্বা কাজটি করে দেয় তা এক কথায় অসাধারণ।বিশেষ করে মাসুম ভাই,এক মুহূর্ত অবসর না দিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু মানুষটির মুখে কোন বিরক্তির আভা নেই।আমি বাসায় এসে ভাবতাম রেজিস্টার বিল্ডিং এর এই রুমের রহস্য আসলে কি?এরা এত অমায়িক কেন।?তারপর দিন শেষে হয়তবা ভাবনার অতল গভীরে এই চিন্তা হারিয়ে যেত। তবে আজ যখন এই রুমে আসার কারন জানতে পারলাম। তখন আমি মনে হয় একটি বিশ্লেষণ দাড় করাতে পেরেছি আর তা হল এই রুমে যারা আসেন তাদের বেশির ভাগ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী।তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ সফলতার সাথে সাথে করে এখন বাইরে যাচ্ছেন উচ্চতর ডিগ্রি আনার জন্য এবং এই বিষয়টি এই রুমের কর্মকর্তা এবং স্টাফদের অজানা নেই।দুই,এই রুমের সবাই হইতবা অসম্ভব ভালো মানুষ।যদিও প্রথম বিশ্লেষণকেই আমার কাছে বেশি যুক্তিসংগত মনে হয় এজন্য যে মেধাবীদের প্রতি সবারই একটু সুনজর থাকেন। তাছাড়া তারা জ্ঞানী,জ্ঞানীরাই ত সম্মান পাবার যোগ্য।আর আমিও এই সুযোগে কিছুটা “প্রক্সি” সম্মান পেলাম।যাই হোক মন্দ না।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রুমের ভিড় দেখে এখন আমার সত্যি এত ভালো লাগে যে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।আমাদের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক সময় বলা হত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড।কিন্তু কালের বিবর্তনে আর অশুভ রাজনীতির যাঁতাকলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস ঐতিহ্য যেন দিন দিন মলিন হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আজ যখন এই রুমে গিয়ে আমি এত ভিড় দেখলাম তখন সত্যি মনটা ভরে গেল।আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা আবারা তার হারানো গৌরব উদ্ধার করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাইতো বলি, মাসুম ভাই আপনি হয়ত এজন্যই এত কাজের চাপেও একটু বিরক্তি প্রকাশ করেন না আর নিরন্তর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ।আর আমারও প্রত্যাশা এই রুমে ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনা আরও বৃদ্ধি হোক...শুভ কামনায় রুম নং ৩০৫।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন