মারীর বরফরাজ্যে
লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ ফিসাবিলিল্লাহ ২৬ জানুয়ারি, ২০১৫, ০১:১১:২১ রাত
ইসলামাবাদ থেকে মাত্র দেড় ঘন্টার দূরত্বে ছোট্ট একটি পাহাড়ী শহর মারী। আবহাওয়ার অনন্য বৈচিত্রের কারণে দেশ বিভাগের আগে বৃটিশরা এই শহরটিকে গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসাবে গ্রহণ করেছিল। শীতকাল বাদে বাকিটা সময় এখানে চিরবসন্ত বিরাজিত থাকে। ইসলামাবাদে তাপমাত্রা যখন উঠে যায় ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত, তখনও এখানে সেটা ৩০-এর উপরে ওঠে না। অথচ ইসলামাবাদ থেকে দূরত্ব মাত্র ৭০ কি.মি.। এ কারণে পাকিস্তানের বহু অর্থশালী মানুষ এখানে জমি কিনে বাড়ী করে রেখেছে গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থল হিসাবে।
সাধারণত: জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়টা মারীর পাহাড়গুলো বরফে সাদা হয়ে যায়। দশ-বারো বছর পূর্বে প্রায় ৫-৭ ফুট বরফে জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়ত। তবে গাছ-পালা হ্রাসের কারণে এখন আর অত বরফ পড়ে না। বেশীর বেশী ৩-৪ ফুটের মত। এসময় দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে ভীড় করে শুভ্র-সাদা পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
ইসলামাবাদেই থাকি। যেখানে সারাদেশের মানুষ ছুটে আসে সেখানে এত কাছে থেকেও বেড়িয়ে আসব না তাই হয়! আবহাওয়ার পূর্বাভাষ দেখে দিনক্ষণ ঠিক করে গত বছরের মত এবারও রওনা হলাম মারীর পথে গত ২২ জানুয়ারী ২০১৫।
মারী পৌঁছে মেইন স্পট তথা মল রোডে ওঠার বেশ আগেই আবিষ্কার করলাম পৃথিবীটা আর সবুজ নেই। সাদা চাদরে আবৃত হয়ে গেছে। একই সময়ে শুরু হল তুষারবৃষ্টি। আকাশ থেকে অঝোরে ঝরছে তুলোর মত বরফকণা। অপার্থিব এক অনুভূতি। পাহাড়ের গায়ে ঘন পাইন গাছের ফাঁক গলে জমিনের উপর দুধের নহরে যেন ভেসে গেছে। এক ফোঁটা কালিমা নেই তাতে। কেবল সাদাদের একচ্ছত্র আধিপত্ত। পাইন, ওক, দেবদারু গাছের শাখায় শাখায় থোকা থোকা ফুলের মত বরফ জমেছে। সবুজে-সাদায় মিলেমিশে তাতে জন্ম হয়েছে এক অপূর্ব সৌন্দর্যের। সারাটা দিন সেখানে কাটালাম অদ্ভূত আনন্দে।
দিয়ে দিলাম কিছু ছবি....
প্রথম আলোয় প্রকাশিত
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারন হয়েছে........আমারও যেতে ইচ্ছা করছে
মন্তব্য করতে লগইন করুন