বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষদের এমপিও না পাওয়ার পেছনে ব্যক্তিক ও সাংগঠনিক দায় (পর্ব-০১)
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ০১:০০:৩৫ দুপুর
কোন প্রোগ্রাম বা আন্দোলন কল করলে উপস্থিত হন মাত্র দুই থেকে আড়াইশো শিক্ষক। নানান অযুহাতে উপস্থিত হতে চান না অনেকেই। সারা দেশের কথা উহ্য রেখেই বলছি দু একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে খোদ রাজধানী ঢাকার বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরাও আন্দোলন সংগ্রামে পারত পক্ষে উপস্থিত হতে চান না। কিন্তু বেতন ভাতা ও প্রাপ্য সন্মান না পাওয়া এসকল শিক্ষক তো সারাক্ষনই রাজপথে থাকার কথা। তাঁদের বাসাবাড়ি হওয়ার কথা আদালতের বারান্দায় কিংবা প্রেসক্লাবের পাদদেশে। তাহলে এমন পরিবেশের সৃষ্টি কেন হয় না? আজকে আমি সে বিষয় গুলোই সবিস্তারে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।
সারাদেশের অনার্স মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানরত শিক্ষকের সংখ্যা আনুমানিক তিন হাজার (জাতীয়করনভুক্তদের বাদ দেওয়ার পর)। প্রকৃত অর্থে বলা যায় তিন হাজার সংখ্যাটা সকল বিষয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যা। সত্যটা হলো বর্তমান সময়ে সরাসরি পাঠদানে নিয়োজিত শিক্ষক সংখ্যা হাজার পনেরশো এর বেশি হবে না। বাকি অর্ধেক প্রতিষ্ঠানের অবহেলা নয়তো অনাগ্রহের কারনে পাঠদানে যুক্ত হতে পারেন নি। আবার অনেকেই একুল ওকুল দুকুলই রক্ষা করে চলেছেন। অর্থ্যাৎ সাপ্তাহে দু একদিন ক্লান নেন পাশাপাশি অন্য কোন চাকুরী বাকরী করে দিন যাপন করছেন। এ ধরুন আমার কথা চার বছর হলো নিয়োগ পেলাম বাট এখনো পাঠদানে নিযুক্ত হতে পারিনি প্রতিষ্ঠান চায়নি বলে!!!
এক্ষেত্রে সাভাবিক একটা ব্যাপার অবশ্যই আপনী বুঝতে পারবেন যে যারা এখনো সরাসরি পাঠদানে যুক্ত নয় তাদের নিজ থেকে আন্দোলন সংগ্রাম বা এ সংলগ্ন অন্য কোন কাজ করার আগ্রহ থাকবেনা। সুতারাং তাদের পায়ে পড়ে ডাকলেও তারা আসবেন না। একটিভ হবেন না। তাদের ধারনা বড়জোর সবার হলে আমারও হবে। প্রতিষ্ঠান পাঠদানে ডাকলে তবেই যাবো নচেৎ নয়। গুটি কয়েক শিক্ষক আন্দোলন সংগ্রাম করে, মামলা হামলা করে এমপিও আনতে সক্ষম হলে তখন তারা প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটি ম্যানেজ করে এমপিও নামের সোনার হরিন আনবেন। অন্যথায় কোন কিছুতেই নাই।
এতো গেল যারা সরাসরি পাঠদানে যুক্ত নয় তাদের কথা। এবার আসি তাদের কথায় যাঁরা সরাসরি পাঠদানে যুক্ত আছেন তাদের কথায়। মোট তিন হাজার শিক্ষকদের মধ্যে যদি অর্ধেক পাঠদানের বাহিরে থাকেন তাহলে বাকি অর্ধেক পাঠদান প্রক্রিয়া যুক্ত আছেন। এ যুক্ত থাকা শিক্ষকদের কিছু অংশ আবার কলেজ থেকে প্রচলিত স্কেলে বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ সুবিধা সমুহ পাওয়ার মধ্যে আবার একটা অংশ আন্দোলন সংগ্রামে থাকেন আবার অন্য একটি অংশ মনে করেন আন্দোলন সংগ্রাম করে কি লাভ!! শুধু শুধু সময় নষ্ট। আমি তো বেশ ভালোই আছি। আন্দোলন সংগ্রামে জড়িত থাকা শিক্ষকদের আবার কিছু অংশ গা ছাড়া ভাব। খুব কম সংখ্যক শিক্ষকই নিবেদিত প্রান। এর সংখ্যা একেবারেই নগন্য বলা চলে। এ নিবেদিত নেতা কিংবা শিক্ষকের সংখ্যা েএকেবারে কম বলেই আমাদের আজ শোচনীয় অবস্থা বিরাজমান।
পাঠদানে যুক্ত থাকা শিক্ষকদের মধ্যে প্রচলিত স্কেলে সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকার মধ্যে রাজধানী ঢাকার শিক্ষকের সংখ্যা বেশি বলে অনুমেয়। কারন হতে পারে এখানের প্রতিষ্ঠান গুলো আর্থিক ভাবে বেশ শক্তিশালী। স্টিউডেন্টস সংখ্যা প্রচুর। পরিচালনা থাকা কর্তাব্যক্তিরাও বেশ ক্ষমতাধর। ঢাকার বাহিরে হাতে গোনা কয়েকটি কলেজ প্রচলিত স্কেলে বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। আবার এ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সংখ্যা বিষয় ভিত্তিক দু একজন শিক্ষকও হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো! পাঠদানে না থাকা শিক্ষকরা না হয় আন্দোলন সংগ্রামে বা মামলায় এলো না মানলাম। তাহলে বাকিরা কেন আসেন না?? আসলেও সংখ্যায় কম কেন? উত্তর খুঁজতে বেশিদুর যাবার দরকার নেই। আপনী যদি আমার এ লেখা শুরু থেকেই মনযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে এতক্ষনে বুঝে যাওয়ার কথা।
---- (চলবে)
লেখক:
বেসরকারি অনার্স শিক্ষক, ফ্রিল্যান্সার এ
বিষয়: বিবিধ
৬৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন