ওহে আমার আঁধার রাতের শয্যা সঙ্গী:
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৩:১০:৫৩ দুপুর
অন্ধকার রাতে শয্যা সঙ্গী হিসেবে এখন আমায় বিশাল পরমতায় আগলে রাখে তারা। জাগতিক উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আমার বান্ধবহীন একান্ত শুন্য স্থানটা তারা পূরণ করেছে খুব আদুরে চর্চায়। আলোতে দেখা না দিলেও তারা দেখা দেয় তীব্র অন্ধকারে। খুব বেশি দিন হয়নি ওদের সাথে আমার পরিচয়। মাস তিনেক হবে। একদিন সকালে তাদের বেশ কয়েকজনের একটি দলকে দেখতে পাই আমার মশারির কোনায়।
এরপর থেকেই তারা আমায় আলিঙ্গনের তীব্রতায় জ্বালিয়ে যাচ্ছে। বহু পথ ঘাট মাড়ি দিয়ে হরেক রকম কায়দা করেও তাদের এ আলিঙ্গন থেকে রেহাই পেতে পারিনি। পরিমানে বেশি না হলেও তাদের বিশাল বহর এখন বেশ কয়েকটিতে এসে ঠেকেছে। অবশিষ্ট্য সে গুলো এখন নিরাপদ আশ্রয় গেঁড়েছে আমার বালিশের কভারে, লেপের ভেতরে, চৌকির ফাঁক ফোকরে।
আমি ছাড়বার পাত্র নই। গরম পানি দিয়ে ধুয়েছি আমার শোবার যাবতীয় তৈজসপত্র। লেপ তোশক, বালিশ, মশারি। ফাঁক ফোকর গুলোয় ছিটিয়েছি গরম পানি। আমার নানান মুখি মিশাইল হামলায় তারা এখন বিপর্যস্ত। দু তিন পর পর এখন তাদের এক দু জনকে দেখা মেলে। দেখা মাত্রই পত্রিকার মাঝে রেখে জীবন প্রদীপ নেভাতে আমি তৎপর হই।
এখন আমি হতাশ, ক্লান্ত। তাদের সাথে পেরে উঠতে পারছিনা। তারা আমার থেকে শত গুন বেশি উৎপাদনশীল। নিয়মিত রুম পরিষ্কার করে এবং বিছানাপাতি রোদে শুকোতে দিয়েও মুক্তি মিলেনি আমার। আমার এখন কি করা উচিত? গুগল থেকে নেয়া সাজেশানেও তাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারিনি। তারা এখন আরো আগ্রাসী হয়ে আমাকে ভালোবাসার বাহুডোরে বাঁধতে চাইছে। তাদের এ প্রচন্ড রকম ভালোবাসায় আমি এখন পরিশ্রান্ত। মনে হয় আমার রুমটা ওদের ওয়াক্ফ দিয়ে আমি পালিয়ে বাঁচি।
ওগো আমার প্রানবিনাসী ছারপোকারা, এবার আমায় ক্ষমো। আমি আর পারছিনা তোমাদের পরমতায়। হাতে পায়ে ধরি তোদের। আমায় এবার মুক্তি দে। তোমরা সদলবলে নিক্ষেপ হও শতাব্দির নির্লিপ্ত আস্তাকুড়ে। আমার অন্ধকার সময় আমি একা কাটাতে ভীষন অভ্যস্ত। গতো আটাশটি বছর আমি দিনে রাতে সব সময় একাকি থেকে এসেছি। আমি তোমাদের বিহীন পারবো আমার এ ব্যাচেলর জীবন পাড়ি দিতে। তোমরা চলে যাও। যাও।
এখন আমার সময় কাটে ভীষন কষ্টে। হ্যাঁপা জীবনে আমি বাঁচি ছারপোকার অতি অত্যাচারে। দিন রাত এখন আমার ছেড়ে দে মা কেঁন্দে বাঁচি অবস্থা। কোথা গেলে তোমাকে বিহীন জীবন পাড়ি দিতে পারবো? পথ জানা নাই-----
২৮.১২.১৫
বিষয়: বিবিধ
১৫৫১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একলিটার পানিতে এক চা-চামচ স্যাভলন/ডেটল ও এক/দু চা-চামচ গুঁড়োসাবান মিশিয়ে নিয়ে ভালো করে গুলে নিন, হাল্কা ফেনা হলে ভালো হয়!
গরমপানির বদলে এ পানিটা ব্যবহার করুন,
ওদের সকল আস্তানায় পিচকারী করুন,
তিন সপ্তাহ ধরে সপ্তাহে এক বা দুদিন করুন!
এ পানি নির্দোষ, শুকিয়ে গেলে তেমন কিছু থাকবেনা!
এতে বয়স্ক শিশু ডিম্ব সবই মারা পড়বে ইনশাআল্লাহ!
এরা নিশাচারী, অন্যের বাসা থেকে ঘন্টায় ২-৩ কিলোমিটার বেগে সফর করতে পারে! তাই শুধু আপনার বাসারগুলো মারলেই হবেনা, তাদের অনুপ্রবেশও বন্ধ করতে হবে!
আপনার খাট/পালঙ্ক/চৌকি দেয়াল থেকে দূরে এবং প্রতি পায়ার নিচে পানি-ফাঁদ বা প্রতিরোধক কিছু দিয়ে রাখতে হবে যেন পায়া বেয়ে বিছানায় উঠতে না পারে!
এরা কোন পথ না পেলে ছাদ থেকে বিছানায় লাফিয়ে পড়ে, কাজেই সেদিকেও প্রতিরোধক থাকা চাই!
আপনার কষ্টের ভাগ নিতে পারলাম না, কিন্তু ব্যস্ততাভরা সময় থেকে আপনাকে ভাগ দিলাম- যদি আপনার কষ্ট লাঘব হয়!!
দোয়া করি!
কেরসিন তেল লাগান ভাইয়া ।
আমার যতদূর মনে পড়ে এদের মুখোমুখি কখনও হইনি। শুনেছি লেপ তোষক রোদে দিলে উৎপাত কমে। াাপনার জন্যে দোয়া করছি,আল্লাহ আপনাকে উদ্ধার করুক।
তবে তাবিজের গল্পটা ভীষন ভালো লাগলো। আমিও এ থিউরী বর্তমানে ফলো করছি। আমিও দোয়া করি আপনার দোয়াটা যেন কবুল হয়। --- ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন