জুকারবার্গ পারলে অন্যরা কেন নয়?
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:৩৪:৪৪ দুপুর
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুকে তার এবং তার স্ত্রীর মোট শেয়ারের মালিকানার ৯৯% লভ্যাংশ মানবতার কল্যানের জন্য ব্যয় করবেন বলে ঘোষনা দিয়েছেন। গত সাপ্তাহে জুকারবার্গ ও প্রিসিলা দম্পতির কোল জুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান ‘ম্যাক্স’। তার এ সন্তানের জন্ম উপলক্ষ্যে তিনি এমন মানবতাবাদী ঘোষনা দিয়েছেন। তিনি জানান, তার কন্যার জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখের যাওয়ার জন্য এ সম্পদ তিনি বিশেষ একটি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ব্যয় করবেন। অভিনন্দন জানাই তার এ বাস্তববাদী সিদ্ধান্তের জন্য।
সত্যি কথা বলতে কি পৃথিবীর কোন বাবা মা-ই চায়না তার সন্তানকে একটি বিরুপ পরিবেশে রেখে যেতে। সব বাবা মা চান তার ঔরসজাতরা নিরাপদে থাকুক পৃথিবীতে। সম্ভাব্য সব রকম প্রচেষ্টার সমন্বয় ঘটিয়ে যতটুকু সম্ভব কাজ করেও যান। এ প্রচেষ্টায় সাধ ও সাধ্য অনুযায়ী কেবল পরিমানের হেরফের হয় এই যা।
কথা হলো, জুকাবার্গের সম্পদ আছে তিনি করে যাচ্ছেন। বিল গেটসের আছে তিনিও করে যাচ্ছেন। ওবামার আছে তিনিও তার সন্তানদের জন্য করে যাচ্ছেন নিরাপদের রাখার যাবতীয় প্রচেষ্টা। পৃথিবীতে এমন সামর্থ্যবান মানুষের সংখ্যা আসলে কতো? যারা নিজ সন্তানের জন্য কল্যানকর কাজ করার মানসিকতা রাখেন।
পুরো বিশ্বের কথা বাদই দিলম। বাংলাদেশেও তো শত শত লোক আছে যারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। বৈধ অবৈধ মিলে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তারা কতটুকু সচেতন দেশকে বাসযোগ্য করার জন্য? তাদের সন্তানদের জন্য আদর্শ পরিবেশ গড়ে তুলতে ঠিক কতোটা সচেতন? হতে পারা তারা নিজ দেশকে নিরাপদ ভাবেন না বলেই হয়তো বিদেশের মাটি বেছে নেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।
একটা প্রশ্ন আলোচনার সূত্র ধরে এসেই যায়। বেঁচে থাকার জন্য আসলে একজন মানুষ বা একটি পরিবারের জন্য ঠিক কতো টাকা বা সম্পদের প্রয়োজন হয়? কতো টাকা বা ধন সম্পদ থাকলে পরবর্তী সাত আটটা প্রজন্ম ভালো ভাবে খেয়ে পরে দিনানিপাত করতে পারবে? আমিও হলেও হয়তো এর সঠিক সংজ্ঞাটি বা সীমাবদ্ধটা বলতে পারতাম না। আজ আমার নেই বলেই হয়তো এমন অদ্ভুদ চিন্তার উদয় হয়েছে।
দেশ-বিদেশের প্রায় আশি শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। এদের বেশির ভাগ অংশ আবার প্রয়োজনীয় অন্নের সংস্থানও করতে পারেনা। তাদের সন্তানদের কি হবে? তাদের ভবিষ্যত কি তবে? পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পৃথিবীর অর্ধেক সম্পদ প্রায় শতাধিক ধনকুবেরের কাছে কুক্ষিগত। এ সম্পদের খুবই সামান্য অংশ কেবল ব্যয় করা হয় মানুষ কিংবা মানবতার কল্যানে। তাও হাতে গোনা চার পাঁচ জন।
অসীম কৃতজ্ঞতাবোধে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই খুবই স্বল্প পরিসরে হলেও তিনি তার সন্তান তথা মানুষের জন্য ভেবেছেন। ভাবছেন। অন্যরা কি তবে উজ্জ্বীবিত হবে?
---- উল্লেখ্য যে, মার্ক জুকারবার্গ-প্রিসিলা দম্পতির ফেসবুকে মোট শেয়ার মূল্য সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৯ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন