পাপী আমরা ভাবি সব নন্দদোষ
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ০৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:১৫:৪৬ সকাল
আজ ছুটির দিন হবার কারনে আমি এবং আমার রুমমেট শোয়েব হাটতে বেরুলাম বিকেলে। এলোমেলো হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম মাইজদী কোর্ট রেল স্টেশনে। লোকজন বলাবলি করছে ডেমু ট্রেন আসবে স্টেশনে।হটাত মন চাইলো ডেমুতে চড়ে চৌমুহনী যাব। দুজনের মতমিল হওয়ায় চলে গেলাম টিকেট কাউন্টারে। টিকেট কেনার জন্য টাকা দেব এমন সময় পাশে দাঁড়ানো এক যুবক বললো, চৌমুহনী যেতে টিকেট কাটা লাগে নাকি! ট্রেনে টিটিকে পাঁচ দশ টাকা দিলেই হবে। যুবকটি আরো জানালো তিনি প্রায় প্রতিদিনই বিনা টিকেটে ঐ পথে যাতায়াত করেন।
---
আমরাও মত পাল্টে উঠে পড়লাম ট্রেনে। টিকেট ছাড়াই। ভয় ভয় লাগছে। কখন টিটি এসে ধরবে! অজানা আতংকে হাঁটাহাঁটি করছি এ কামরা থেকে ও কামরা।ফাঁকা দেখে দুজনে বসে পড়লাম দু আসনে। কই টিটিতো আসেনা। কিছুক্ষন পরে সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেন এক নিরাপত্তা কর্মী। লাঠি হাতে যাবার সময় আমাদের পানে তাকিয়ে খানিকটা হাঁসলেন। মনে মনে ভাবছি আমাদের বোধহয় চিনে পেলেছেন আমরা যে বিনা টিকেটের যাত্রী। নাহ, তিনিও কিছু বলেন নি।
----
বসে বসে রিলাক্স থাকার হীন চেষ্টা করছি আর আসপাশের বিভিন্ন যাত্রীর খেজুরে আলাপ শুনছি। এক মহিলার দম্ভোক্তি তিনি টিকিট কাটবেন কেন? তাকে উল্টো রেল কর্তপক্ষই টাকা দিতে হবে ট্রেনে যাতায়াতের জন্য!! আরেকজন বললেন তিনি আজকে তো নয়ই কোন দিনই টিকেট কাটেন না। প্রায় সিংহ ভাগ যাত্রীই টিকেট বিহীন!
-----
হকারদের অসহ্য উতপাত, নোংরা পরিবেশ, যাবাবর শ্রেনির ব্যাপক উপস্থিতিসহ বহুবিধ কারনে চরম বিরক্তি লাগছিল। কই টিটি পিটি কেহই তো এলেন না! টিকেট চেক করলো না কেউ! অবশ্য টিটি ধরলে কিকি বলবো তা দুজনে আলাপ করে আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। মিনিট বিশেকের ডেমু ট্রেন ভ্রমন শেষে নেমে গেলাম চৌমুহনী স্টেশনে। এতক্ষন খানিকটা ফাঁকা থাকলেও চৌমুহনী থেকে বহু যাত্রী উঠলেন। কে জানে এদের মধ্যেও কে কে টিকেট নেন নি!!
-----
বিনা টিকেটে আমার ট্রেন ভ্রমন প্রথম। ট্রেনে ভ্রমন দ্বিতীয়বার। ডেমুতে প্রথম, তাও টিকেটহীন অবৈধ।
কি সুন্দর ঝকঝকে ডেমু। অথচ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক গাফলতি। ফলশ্রুতিতে সরকারের লস প্রজেক্ট। বিনা টিকেটি যাত্রীরা!!!
---
আমরা সাধারন জনগন অসত। দেশকে ভালোবাসিনা। প্রতিনিয়তই আমরা দুর্নীতি আর ছলাকলায় ঠকিয়ে চলি রাষ্ট্রকে। অথচ সেই আমরাই রাষ্ট্র থেকে আশাকরি সর্বোত্তম ভালো ও কল্যানকর কিছু!!! কিভাবে সম্ভব??? প্রতিদান না দিয়েই ফিরতি প্রতিদান আশা করা অচ্ছুত দেখায় না?
----
ভীষন খারাপ লাগছে আজকের অন্যায় কাজটি করে। সরি।
মনে হচ্ছে দেশপ্রেমিক হতে পারিনি সত্যিকারের। আমরা যদি দেশকে ভালোবাসা না দিতে পারি তবে কি আশা করতে পারি দেশ থেকে?
---
হে ধরনী তুমি দ্বিধা হও..
নচে আমাদের প্রকৃত মানুষ করো ....
২৯ ০৮ ১৫ইং
বিষয়: বিবিধ
১১৫১ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
রেলে যে এরকম বিনা ভাড়ায় যাত্রী যাওয়া -আসা করে - এতে রেলের লস হয় । কিন্তু রেলের লোকদের লস হয় না ।
বিভিন্ন কাহিনী করে রেলের সিডিউল বিপর্যয় ঘটিয়ে রেলকে এরা পঙ্গু করে রাখে বাসওয়ালাদের স্বার্থেই ।
এটা সন্দেহ করা একেবারেই অমূলক নয় যে রেলের টপ টু বটম বাসওয়ালাদের কাজ থেকে র্যাংক অনুযায়ী একটা সন্মানী পায় মাস শেষে তাদের বাসের ব্যবসা জম জমাট রাখার কারণে - না হলে নিজেদের সেক্টরের এত বড় লস তারা করাবে কেন ?
আর যারা মাগনা যায় , দেখবেন বাসে চড়লে এরা ঠিকই ভাড়া দেবে , কারণ বাসের কন্ডাক্টর ম্যান টু ম্যান ভাড়া কাটে । রেলে এরকম সিস্টেম করলে সবাই ভাড়া দিবে ।
কিন্তু ঐ যে .... সবার কাছ থেকে ভাড়া নিতে হলে যে আগে নিজেকে সুন্দর সিস্টেমে আনতে হবে ! সিডিউল মত ও ঘন ঘন ট্রেন ছাড়তে হবে । এসব করা খুব পরিশ্রমের কাজ এবং এতে সেক্টর লাভবান হলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তো কোন লাভ নেই । তারা চায় আরামসে বসে বসে খাবে , কোন কাজ করবে না এবং বাসওয়ালাদের কাছ থেকে টাকা নেবে ।
সরকারী চাকরিতে বেতন কোন ব্যাপার না , ব্যাপারটা হচ্ছে পজিশন । কায়দা করে চললে একজন পিয়নও সরকারী চাকরি করে ৫ তলা বাড়ি বানাতে পারে।
যারা নিয়মিত জয়দেবপুর-বিমান বন্দর-কমলাপুর যাতায়াত করেন তারা মাসিক টিকিট কেটে নেয় ৪৫০ টাকা করে । এটা ভালই কাজ দেয় - মাশা আল্লাহ ।
যদি এই রুটে প্রতি ১৫ মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়ে (ডেমু টাইপ)বিশেষ করে অফিস সময়ে - তাহলে মগ বাজার থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত মানুষ আর বাসে চড়বে না ।
যদি ঢাকা শহরকে ঘিরে বেড়ি বাধের মত ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয় তাহলে ঢাকা শহরের জ্যাম অনেক কমে যাবে । মানুষ ম্যাক্সিমাম ট্রেনেই চলাচল করা শুরু করবে ।
এতে বাসওয়ালারা পথে বসবে । সরকার কোনভাবেই এটা হতে দেবে না । কারণ বাসওয়ালাদের মধ্যেই তাদের নেতা ও ক্যাডার আছে , ট্রেনে সেরকম নেই ।
বাংলাদেশীরা যদি টাইট শাসকের হাতে পড়ে তাহলে সিধা হয়ে চলে । ২০০৭ এ মইন-ফখরুদ্দিনের সময় কি সেটা হয় নি ? এই বাংলাদেশীরা বিদেশে গেলে কি সে দেশের নিয়ম অনুযায়ী সিধা হয়ে চলে না ?
লিডার ঠিক হলে তার অধীনেরাও ঠিক হতে বাধ্য
এরা ভালো পারে পীর মুরীদিতে। এতকষ্ট করে কি লাভ! আমার পীরেররি এত মুরিদ যে একটাকা করে দিলে মাসে কোটি টাকা হয়ে যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন