মেঘনার ভাঙনে বিলীনের পথে রামগতি-কমলনগর উপজেলা দুটি

লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ১২ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:৪৬:২৪ দুপুর



স্বাধীনতা পরবর্তী সমযে় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা হিসেবে বরাবরের মতো ব্যাপক অবহেলিত লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা। এক সমযে়র গর্বের মেঘনা নদী আজ সর্বস্ব কেডে় নেওয়ার খেলায় মেতেছে। প্রমত্তা মেঘনা নদীর বৈরীতা দেখা যায় বর্ষাকালে । বর্ষায় তার ভাঙনের অশুভ প্রতিযোগিতা দেখে মনে হয় নদীটি না থাকলেই বোধ হয় মঙ্গল হতো লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের। নদী ভাঙতে ভাঙতে রামগতি-কমলনগরের মানচিত্র প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ হতে চলেছে। বিগত কযে়ক বছর যাবত এ ভাঙনের পরিমান ক্রমশই বাড়ছে। অসংখ্য মেহনতী মানুষ তাদের কৃষি জমিসহ বসত ভিটে হারিযে় খোলা আকাশের নিচে বাস করছে অত্যন্ত মানবেতর ভাবে। অনেকেই অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় নিযে়ছে সরকারী উদ্যোগে নির্মিত সাইক্লোন সেল্টারসহ, বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার ভেতরে বাহিরে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ইত্যাদির অভাবে জনজীবন চরম আকার ধারন করছে।

অব্যাহত ভাঙনের ফলে এরই মধ্যে বিলীন হযে়ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় নির্মিত ০৮ টি সাইক্লোন সেল্টার, বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও অফিস, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, হাট-বাজার, রাস্তা, ব্রিজ-কালভাট ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি । ভাঙনের হুমকির মুখে রযে়ছে বাকি সাইক্লোন সেন্টার গুলোর বেশ কযে়কটি, রামগতি উপজেলা চত্তর, নব নির্মিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট্য উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিনেমা হল, আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজ, আলেকজান্ডার মহিলা কলেজ ও রামগতি পৌরসভার পুরোটা। উল্লেখ্য যে, রামগতি উপজেলা চত্তর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নদী মাত্র কযে়ক গজ। চলতি বর্ষার যে কোন মুহূর্তে নদী গর্ভে বিলীন হযে় যেতে পারে সরকারি এ দুটি প্রতিষ্ঠানের পুরোটাসহ সেবাগ্রাম ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয় (এ বিদ্যালয়টি আরো একবার ২০০৫ সালেও ০৫ কিমি দূরত্বে ভাঙন কবলিত হযে় স্থানান্তরিত) । আলেকজান্ডার থেকে রামগতি পর্যন্ত যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি নদী গর্ভে বিলীন হযে়ছে দশ বছর আগেই। বলা যায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কাটছে রামগতির মূল অংশের সাথে। এ ছাড়াও আলেকজান্ডার টু নোয়াখালী সড়ক থেকে নদী মাত্র কযে়ক হাত দূরে অবস্থান করছে। এ সড়কটি ভেঙ্গে গেলে পুরো দেশের সাথে এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্নই হযে় যাবে রামগতি।

দিনকে দিন ভাঙনের এ তীব্রতা বাড়তে থাকায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজিৈতক দলের ব্যানারে মিছিল, বিক্ষোভ, সভা-সেমিনাÍ, অবরোধ, মানববন্ধনসহ জেলা প্রসাশককে বেশ কযে়কবার স্মারকলিপি দেয়া হলেও সাম্প্রতিক সমযে় সরকারের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। এর আগে অপরিকল্পিত ভাবে বিশ্ব বেড়ীসহ দুটি বেড়ী বাঁধ ও বেশ কযে়কটি জংলা বাঁধ দেয়া হলেও নদী ভাঙন রোধে তা কার্যকর হয়নি।

অবশেষে উপায়ান্তর না দেখে উপজেলাবাসী নিজ উদ্যোগে বিশ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হযে়ছে। এ ছাড়াও সাবেক বস্ত্রমন্ত্রী ও বিশিষ্ট্য শিল্পপতি মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান এ নিজস্ব উদ্যোগে ইটের তৈরি বিশ হাজার ব্লক ফেলা হযে়ছে। তবে এসব আযে়াজন প্রযে়াজনের তুলনায় নিতান্তই কম। বাংলাদেশের মানচিত্রে রামগতির চিহ্ন রাখতে হলে অতি শীঘ্রই মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধ করা প্রযে়াজন । মেঘনা নদীর ভাঙন প্রতিরোধ ও ভাঙন কবলিত নিঃস্ব, গৃহহীন, ভূমিহীন মানুযে়র যথাযথ পুর্নবাসনের জন্য দেশের ধনাট্য বক্তি, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার আশু দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File