সরকার কৌশলী হলে সংঘাত এড়ানো যেত--

লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ০৮ মে, ২০১৩, ০৩:৪৫:৪৩ দুপুর

আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো প্রতিদিনই কতো মানুষের সাথে দেখা করেন। কথা বলেন। সময় দেন। আশা-ভরষা দেন। প্রতিজ্ঞা করেন, প্রতিশ্রুতি দেন। প্রত্যাশা পূরণের গল্প শোনান। কতো জায়গায় মিটিং ফিটিং সভা সমাবেশ করেন। তিনি কি চাইলেই হেফাজতকে সময় দিতে পারতেন না? প্রতিশ্রুতি বিবেচনার আশ্বাস দিতে পারতেন না। যেতে পারেতেন না হেফাজতের সমাবেশে? যেতে না পারেন দূত পাঠালেও তো পারতেন। কিন্তু এর কোনটিই তিনি করেন নি। নমনীয় হন নি প্রায় কোটি মানুষের প্রতি। কোন রকম পাত্তা দেন নি মানুষ গুলোর সেন্টিমেন্টকে। প্রধানমন্ত্রীর বাবা মুসলমান ছিলেন, তিনিও মুসলমান।

অনেকে হয়তো বলবেন- সরকার তো বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছে হেফাজতের সাথে বিষয়টি মিট করতে। বিষয়টি মানলাম কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক ভাবে উদ্যোগ নিয়ে দক্ষ একজন মন্ত্রীর মাধ্যমে যদি চেষ্ঠা করতেন তবে তাদের থামানো যেত বলে আমি মনে করি। তের দফা মানা বা বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হলেই তারা হয়তো আপাতত মানতো। প্রধানমন্ত্রী এসবের একটিও না করে একজন মন্ত্রীকে দিয়ে হেফাজতকে বরং হুমকিই দিলেন। আগামীতে তাদের ঘর থেকে বের হতে দেবেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে উচ্চ কন্ঠে জানালেন। আমার চূড়ান্ত বিশ্বাস ছিল সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও কৌশল নিয়ে এগিয়ে গেলে বিষয় সুষ্ঠু সমাধান করতে পারতেন। তা না করে বরঞ্চ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের উসকে করে দিলেন। যার চূড়ান্ত পরিনতি লাশের পরে লাশ। অগণিত লাশ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কৌশল ও আন্তরিকতার পরিবর্তে আমরা দেখলাম উল্টো টা। রাতের অাঁধারে ইলেকটিসিটি বন্ধ করে, সরাসরি মিড়িয়া সম্প্রচার বন্ধ করে, দুটি টিভি চ্যানেল পুরোপুরি বন্ধ করে তিন দিক থেকে আক্রমন করা হলো সর্বোচ্চ সামরিক কায়দায়। সাউন্ড গ্র্যানেড, রাবার বুলেট, কাঁদানো গ্যাস, গুলি ইত্যাদির মাধ্যমে হাজার দশেক বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যের মাধ্যমে অভিযান চালানো হলো গভীর রাতে। এর অাগে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ও পায়ে হাঁটায় দুদিনের ধকল গেছে হেফাজত কর্মীদের উপর । আধাপেটে বা না খেয়ে থাকা এবং আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকা মানুষ গুলোর উপর হামলে পড়তে কারোর কি একটু মায়া লাগেনি! সরকারি বাহিনীর কারো বুকে বাধেনি ঘুমন্ত কিংবা আধো ঘুমো মানুষগুলো কে আক্রমন করতে? ২৫শে মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার যেভাবে আমাদের উপর হামলে পড়েছিল ঠিক একই ভাবে নিরস্ত্র মুসলমানদের উপর হামলা করেছে তারই স্বজাতি ভাইয়েরা।

লাশের সংখ্যা যাই হোক সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের প্রেস নোট পাওয়া যায়নি। সরকার হয়তো দায়িত্ব মনে করেনি তাই দেয়া হয়নি। তাইতো বিভিন্নজন বলেন ২৫০০ থেকে ৩০০০ হেফাজত কর্মীকে সে রাতে হত্যা করা হয়েছে। এর সঠিক সংখ্যা হয়তো একদিন ইতিহাস থেকে জানা যাবে। ইতিহাস একদিন এর সঠিক মূল্যায়ন করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞে জয় পরাজয় নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ খুশি কিংবা বেজার হতে পারেন কিন্তু আগামীর বাংলাদেশ খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হলো এ কথা হলফ করে বলা যায়। সামনে এখন কঠিন পথ………

বিষয়: বিবিধ

১৬০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File