রক্তাক্ত রাজপথ, রক্তাক্ত ইসলাম
লিখেছেন লিখেছেন ঝরাপাতা ০৬ মে, ২০১৩, ১২:৪০:৩৩ দুপুর
গতকাল সন্ধ্যা থেকে মনটা ভীষণ খারাপ। দেশে কি জানি কি হয়। ধারনা সত্য হয়ে দেখা দিল দিনের শেষ দিকে। হেফাজতের শান্তি পূর্ণ সমাবেশে বিভিন্ন ভাবে উসকে দিয়ে সরকার ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধিয়ে দেয়া হয় অত্যান্ত কৌশলে। নিরস্ত্র, অহিংষ ও নিরপরাধ মুসলমান ভাইদের উপর এ আক্রমন চলে সারারাত। এখোনো চলছে। রাত বারোটা নাগাদ অনলাইনে জানতে পারলাম ষোল জনের শহীদ হওয়ার খবর। একবুক চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে গেলাম। ভাবতে থাকলাম গভীর রাতে কি জানি কি ঘটে? আজ রাত কি তবে আরো একটি কালো রাত হবে? শান্তি প্রিয় মুসলমান ভাইদের কলাপে কি লেখা আছে এসব চিন্তা প্রতিক্ষণে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ভোরে ঘুম থেকে জেগে দেখি সারা রাতের ভাবনাটাই অবশেষে সত্য হল । সামরিক কায়দায় চতুর্মূখী স্বসস্ত্র হামলায় মতিঝিল থেকে পিচু হটতে বাধ্য হল হেফাজতে ইসলাম। আধো ঘুমো কিংবা ঘুমন্ত মানুষের উপর দেশের বিভিন্ন বাহিনীর হামলায় অগনিত মৃত্যূ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ভোরে বহু লাশ ও আহতদের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন গলির ভেতর আশ্রয় নিলেও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি । কার ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা না গেলেও অবস্থা যে অত্যন্ত ভয়াভহ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এর আগে বিভিন্ন মিড়িয়াকে সরাসরি সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলে তারা সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল পুরাপুরি বন্ধ করে দেয়া হয় গভীর রাতে ঘটা যেন কোন কিছুই প্রকাশিত না হয় সে জন্য। পুরা মতিঝিলে বিদ্যূত সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয় আগের দিন সন্ধ্যায়। ঘটনার ভয়াভহতা এতোটা বিস্তৃত যে, আহত, নিহত, গ্রেফতার কিংবা গুম-খুনের সংখ্যা কতো হবে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন হয়ে পড়েছে । আহতদের চিকিতসা নিতেও দিচ্ছে না ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতিনিয়তই তল্লাসি করছে তারা।
অপরদিকে জাগরন মঞ্চের শ;খানেক কর্মী পুলিশ পাহারায় লাঠি নিয়ে জঙ্গী মিছিল করেছে আরামে। বাম ছাত্র সংগঠন এর আগেই নিজেদের কে সরিয়ে নিয়েছে জাগরন মঞ্চ থেকে ইমরানের স্বেচ্চাচারিতার অভিযোগে। একই দেশে পাশাপাশি দুটি আয়োজনের দুই রুপ দেখলো বিশ্ব। নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশে গুটি কয়েক নাস্তিক আল্লাহ ও তাঁর রাসুল বিরোধী কর্মকান্ড করে সমাবেশ ও দীর্ঘ সময় অবস্থান করছে কোন ধরনের বাধা ছাড়াই। পেয়েছে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। বিপরীত দিকে আল্লাহ ও রাসুলের অবমাননার বিচার চেয়ে করা সমাবেশ হয়েছে রক্তাক্ত। কার কাছে কি বিচার চাইব জানিনা।
জানিনা কার কাছে কেমন অনুভূতি হচ্ছে? তবে আমার চোখে জল ।পুরো রাত বিছানায় চটপট করেছি অজানা এক শংকায়। মুসলমান হয়ে স্বজাতির জন্য মনটা ভীষন কাঁদছে। আল্লাহ কি মুমিনদের পরীক্ষা নিচ্ছেন নাকি তিনি উপর থেকেই এর ফয়সালা করবেন তাই এখন ভাবনার বিষয়।
যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। আর যারা আহত হয়ে হাসপাতাল বা অন্য কোন স্থানে আছেন তাদের অতি দ্রুত সুস্থতা কামনা করি । মহান আল্লাহ যে কবুল করে।
বিষয়: বিবিধ
১৭৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন