চিন্তার খোরাক (দুই)

লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ সাঈদ খান ২৪ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৩৪:৫১ রাত

ব্যস্ত নগরে আমরা যে পাখিটির সাথে সবচেয়ে পরিচিত তা হল কাক। সকাল থেকে দুপুর অবদি কাকের কর্কষ কা কা যেন আমাদের যান্ত্রিক মননেরই পরিচয় তুলে ধরে। যাই হোক, কোকিল, চড়ুই, বউ কথা কউ, চিল, কাঠঠোকরা ইত্যাদি প্রজাতির পাখিদের কলকাকলী কবিদের জন্য যেমন কবিতার উপকরণ তেমনি ফটোগ্রাফারদের ফটোগ্রাফীর বস্তু।

কিন্তু পাখির গঠনে যে আমাদের চিন্তার খোরাকও আছে। কখনও কি ভেবে দেখেছি পাখিরা কিভাবে শ্বাস নেয়। পাখি যখন উড়তে থাকে তখন প্রচণ্ড বেগে তার মুখের দিকে বাতাস ধেয়ে আসতে থাকে। এমতাবস্থায় পাখির ফুসফুসের গঠন যদি মানুষের মত হত তাহলে কি পাখি শ্বাস নিতে পারতো?

আমরা (মানুষরা) প্রতি মিনিটে ১৪ থেকে ১৮ টি শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে থাকি। শ্বাস নেয়ার সময় আমাদের নাক বাতাস প্রবেশ করে ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস, ব্রঙ্কিওল (তথা শ্বাসনালী) পার হয়ে বাতাস ফুসফুসের গ্যাস বিনিময়ের স্থান এলভিওলিতে পৌছে। শ্বাস ছাড়ার সময় আবার ঠিক উল্টো দিকে এলভিওলি হয়ে একই পথ ব্রঙ্কিওল, ব্রঙ্কাস ও ট্রাকিয়া হয় নাক দিয়ে বাতাস বের হয়ে যায়।

কিন্তু পাখিদের ক্ষেত্রে যদি শ্বাসনালীর গঠন এরকম হয় তাহলে পাখির পক্ষে ওড়া সম্ভব হবে? উত্তর না। কেননা উড্ডয়মান অবস্থায় শ্বাস টানার পর শ্বাস ছাড়ার সময় ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকার কারণে ওড়ার সময় পাখির ডানার অনবরত পরিশ্রমের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পাখি উড়তে ব্যর্থ হবে।



(ছবি সূত্র: Harun Yahya, Darwinism Refuted, page:94)

করুণাময় আল্লাহ, তাই পাখিকে দিয়েছেন এক সুপরিকল্পিত শ্বাসযন্ত্র। হ্যা, পাখি শ্বাস নালীতে গলার ঠিক নিচে থাকে ‘এয়ার স্যাক’ এবং ফুসফুসের ঠিক পেছনে থাকে আরেকটি ‘এয়ার স্যাক’। পাখি শ্বাস নেয়ার সময় এর বাতাসের একটি অংশ ফুসফুসে প্রবেশ করে অক্সিজেন দিতে এবং একটি অংশ প্রবেশ করে পেছনের ‘স্যাক বা থলেতে’, তবে সামনের থলেতে এই সময় বাতাস প্রবেশ করে না। কারণ সামনের থলেতে থাকে ফুসফুস থেকে অপসারিত কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত বাতাস। এবার পাখি যখন শ্বাস ত্যাগ করে তখন পেছনের থলে থেকে অক্সিজেন যুক্ত সতেজ বাতাস প্রবেশ করে ফুসফুসে, ফলে শ্বাস ছাড়ার সময়ও ফুসফুসে অক্সিজেন প্রবাহ অব্যাহত থাকে যেন পাখির উড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পেয়ে যায়। একই সাথে সামনের থলে থেকে দূষিত বাতাস শ্বাসনালী দিয়ে বেড়িয়ে যায়। সুবহানআল্লাহ, কি চমৎকার প্রকৌশল।

অন্যদিকে এই অতিরিক্ত এয়ার স্যাক গুলো, পাখিকে ‘হাল্কা’ করে উড়ার উপযোগী করার কাজটিও করে যাচ্ছে সুচাড়ুরূপে।

নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।

বিষয়: বিবিধ

১২৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File