আসুন কুরআন অবমাননাকারী নাস্তিক 'আনিসুল হক' এর সাথে পরিচিত হই
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নীল ২০ মার্চ, ২০১৩, ১২:২৮:৫৭ দুপুর
১৯৯১ সালের ৩০ নভেম্বর 'পূর্বাভাস' পত্রিকায় প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক, আনিসুল হক নিচের লেখাটা লিখেছিল। পবিত্র কুরআনের আয়াতকে ব্যাঙ্গ করে লেখার ধৃষ্টতা সম্ভবত বাংলাদেশেই সম্ভব।
পড়া হয়ে গেলে অনুগ্রহ করে প্রিয়দেরকে পড়ার আমন্ত্রণ জানান। জানিয়ে দিন আনিসুল প্রেমিদের তাদের প্রিয় লেখকের আসল রূপ।
----------------------------
----------------------------
ছহি রাজাকারনামা
-আনিসুল হক
আর তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠ, যে রাজাকার। নিশ্চয়ই রাজাকারগণের জন্যে অতীতের চাইতে ভবিষ্যতকে উত্তম করিয়া সৃজন করা হইয়াছে। অতএব তোমরা তোমাদের প্রভু পাকিস্তানের প্রশংসা করো; নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু পাকিস্তানীরা ক্ষমাশীল।
যখন তোমাদিগকে বলা হইবে নেতা নির্বাচন করো, তখন তোমরা সেই ব্যক্তিকেই নির্বাচন করিবে, যাহার রাজাকারগিরি প্রমাণিত। আর তাহার মতো মূর্খ কে আছে, যে রাজাকার চিনিয়াও তাহাকে সম্মানিত নাকরিলো, আখেরে ইহারাই হইবে অভিশপ্ত। ইহাদের জন্যে সুকঠিন দারিদ্র্য অপেক্ষা করিতেছে। আর যে ব্যক্তি রাজাকার চিনিলো, এবং তাহাকে সম্মান করিলো, এবং তাহার পদাঙ্ক অনুসরণ করিলো, ইহাদের জন্যে অপেক্ষা করিতেছে সুমিষ্ট ফল, সুন্দরী রমণী আর সুদর্শন পুরুষ।
অনন্তর তোমাদের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠীর সৃষ্টি হইবে যাহারা রাজাকারী রজ্জু উত্তমরূপে ধারণ করিবে, আর যাহারা রাজাকারী তরিকা আদমদিগের মধ্যে উত্তমরূপে প্রচার করিবে। যাহারা রাজাকার হিসাবে বাহির হয়, তাহারা শান-শওকতের পথে চলে।
সেই ব্যক্তিই উত্তম রাজাকার, যে বিবাহ করিবে একটি, দুইটি, তিনটি, চারটি, যেরূপ সে ইচ্ছা করে আর তাহার জন্যে বৈধ করা হইয়াছে ডান হাতের অধিকারভূক্ত দাসীদের, আর তাহারা ভোগ করিতে পারিবে বাঙ্গালী রমণীগণকে, অপিচ তাহাদের সহিত আদল করিবার দরকার হইবে না। স্মরণ রাখিও, মালেগণিমতগণের মহিত মিলিত হইবার পথে কোনরূপ বাধা থাকিলো না।
আর মনে রাখিবে, যে রাজাকারী পথে বাহির হয়, সে একা নহে, সৌদি-মার্কিনীরা তাহার সঙ্গে রহিয়াছে। সেই ব্যক্তিহতভাগ্য, যে রাজাকার হইতে সাহস করিলো না এবং মনে মনে বলিলো যে, আমি রাজাকার হইবো না, কেননা পশ্চাতে লোকে আমাকেগালি দিবে। আর প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার একেকটি আঙুলের জন্যে রহিয়াছে দশ দশটা পুরস্কার, আর যে ব্যক্তিএকজন মুক্তিযোদ্ধার ডানপাঞ্জা কাটিতে সক্ষম হইলো, তাহার বরাতে ৭০ গুণ বেশি পেট্রোডলার লেখা হইলো। নিশ্চয়ই তোমাদের জন্যে রাজাকারী কাজের জন্যে পুরস্কার রহিয়াছে।
আর তোমরা কি অতীত হইতে শিক্ষাগ্রহণ করিবে না? গ্যালিলিও নামের এক পাপিষ্ঠ অতীতে সত্য অস্বীকার করিয়াছিল, এবং সে কি প্রাপ্তহয় নাই চরম শাস্তি? আর রাজাকারগণ যাহাকে শাস্তি দিতে ইচ্ছা করেন, তাহাকে নিজ হস্তে শাস্তি দেন। আঙুল কাটিয়া ফেলা হইতে শুরু করিয়া মুণ্ডু কাটিয়া ফেলা -বিপথগামীদের জন্যে অপেক্ষা করিতেছে ভয়ঙ্কর শাস্তি।
আর তোমরা কি সেই গোষ্ঠীর বংশধর নহ, যাহারা অতীতে তিরিশ লক্ষ বেদ্বীনকে কতল করিয়াছে? নিশ্চয়ই আমগাছ হইতে আম এবং রাজাকার গোষ্ঠী হইতে রাজাকারউৎপন্ন হয়।
অচিরেই দেশে নিখিল পাকিস্তান রাজাকার সংসদ গঠিত হইবে। আর রাজাকার কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে সকল লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছাড়িয়া দেওয়া হইবে। আর রাজাকার প্রার্থীদের জন্যে চাকুরির বয়সসীমা আটত্রিশ বছর করা হইবে। এবং অবস্থা অচিরেই এইরূপ হইবে যে, রাজাকার সার্টিফিকেট নকল করিয়া লোকে রাজাকার সাজিতে থাকিবে। তখন সুন্দরী রমণীগণ সেনাকর্তাদের সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইহবার বদলে রাজাকার বরের স্বপ্নে ঘামিতে থাকিবে। কন্যাবৃন্দের মাতাগণ রাজাকার জামাতার গর্বে পাড়া মাতাইবে।
অচিরেই কাহার কল্লা থাকিবে কাহার থাকিবে না, তাহা নির্ধারণের দায়িত্ব ‘ছাই-দি’‘ছা-য়েব’দের হস্তে অর্পিত হইবে। আর যে ব্যক্তি দাড়িপাল্লায় ভোট দিলো, সে-ইমাসুম শিশু হইয়া গেল। ব্যালট পেপার তাহার ডান হাতে আসিবে। ব্যালট পেপার দেখাইয়া স্বর্গে প্রবেশ করাযাইবে। যে ব্যক্তি রাজাকার তহবিলে চাঁদা দিলো, সে-ই ৭০ গুণ ফেরত পাইলো। চাঁদার রসিদ দেখাইলে স্বর্গের দুয়ার খুলিয়া দেওয়া হইবে। আর তোমরা রাজাকারের প্রশংসা করো, আর রাজাকারদের সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই রাজাকারদের তহবিল পরিপূর্ণ। তাহারা তোমাদিগের মাসোহারার ব্যবস্থা করিয়া দিবে। এবং তোমরা রাজাকার মাহাত্মে বিশ্বাসীগণের নিকট জানাইয়া দাও যে, তাহাদের জন্যে অপেক্ষা করিতেছে উত্তম শরাব।
আর তোমরা মওদুদীবাদ উত্তমরূপে কল্বের মধ্যে গাঁথিয়া ফেলো। তিনিই শেষ দার্শনিক, ইহার পর আর কোনো দার্শনিক আসিবে না। অতপর তাহার দেওয়া ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
অচিরেই রাজাকার দেশের সর্বোচ্চ আসনে আসীন হইবে, এবংঅচিরেই সকল কুফরি মতবাদ প্রচার ও শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষিত হইবে। আর তখন তোমাদিগকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, বলো, তোমাদের দেশ কি? তোমাদেও মধ্যে যাহারা খাঁটি রাজাকার, তাহারা বলিবে, কেন, পাকিস্তান? পুনরায় তোমাদিগকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, তোমাদের দলপতি কে? তোমাদের মধ্যে যাহারা কল্যাণময়, তাহারা বলিবে, কেন,মওদুদী? পুনরায় তোমাদিগকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, তোমাদের দলপতি কে? তোমাদের মধ্যে যাহারা ইহলোকের ভালো বোঝে, তাহারা জবাব দিবে, কেন, গোলাম আযম? আর তাহাদের জন্যে সুসংবাদ। তাহাদের জন্যে অপেক্ষা করিতেছে রাষ্ট্রের শীর্ষপদ আর অনন্ত যৌবনা নারী আর অনন্ত যৌবন তরুণ। কে আছেন, যে উত্তম সন্দেশ, মসৃণ তলদেশ ও তৈলাক্ত গুহ্যদেশ পছন্দ করে না।
অনন্তর সমস্ত প্রশংসা রাজাকারগণের, যাহারা রক্ত হইতে তখ্ত কায়েম করে।
------------------------------
দলিল-
সচল ব্লগে পরশুদিনও ছিল। তৌহিদী জনতা জানতে পারার পর সেটি মুছে দিয়েছে। এখনো আর্কাইভ থেকে পড়া যাচ্ছে।
http://web.archive.org/web/20120331013937/http://www.sachalayatan.com/real_nowhere_man/9892
সামুতে-
http://www.somewhereinblog.net/blog/general/28741733
বিষয়: বিবিধ
৩৫১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন