সৌদি গেজেটে নিবন্ধ : ন্যায়বিচার অস্বীকারের বিচার
লিখেছেন লিখেছেন পথিক মুসাফির ১৭ জুলাই, ২০১৩, ১২:৪৬:৫৪ দুপুর
বাংলাদেশের যুদ্ধ অপরাধীর বিচার আর এখন শুধু দেশের মাঝেই বিরাজমান নেই এটা এখন বর্হিবিশ্বের বিভিন্ন দেশে সর্বত্র আলোচনা চলছে । হাসিনা সরকার যুদ্ধ অপরাধীর পরিবর্তে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকদেরকে ঘায়েল করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে তা হচ্ছে এখন তা পরিস্কার ।
তারা নিজেদের দেউলিয়ত্বকে গতি সঞ্চার করতে এখন জামাতের বিরুদ্ধে রায়টা রমজানে দিয়ে আশ্বস্ত হতে চাচ্ছে বা নেতাদেরকে চাঙ্গা করতে চাচ্ছে । এ যাবৎ তার যা করেছে সবই বুমেরাং হয়েছে এটাও তেমনি বুমেরাং হবে বলে আশা রাখি ।
সৌদি গেজেটে নিবন্ধ : ন্যায়বিচার অস্বীকারের বিচার
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে এবং এখানে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পরিবর্তে তাকে অস্বীকার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সৌদি আরবের
প্রভাবশালী দৈনিক সৌদি গেজেট।
বুধবার সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এ ট্রায়াল টু ডিনাই জাস্টিস (ন্যায়বিচার অস্বীকারের বিচার) শিরোনামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‘বিচারপতির স্কাইপি স্ক্যান্ডাল ও এর ফলে তার পদত্যাগ, বিচার প্রক্রিয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপ, বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি, রায়ের তারিখ ঘোষণার প্রকৃতিসহ অনেক ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে এ বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে এবং এখানে ন্যায়বিচার
নিশ্চিত করার পরিবর্তে তাকে অস্বীকার করা হয়েছে।’ নিবন্ধটি লিখেছেন সৌদি আরবের সাবেক কূটনীতিক ও দক্ষিণ-
পূর্ব এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ড. আলী আল ঘামদি।
নিবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হত্যা ও ধর্ষণসহ যুদ্ধাপরাধের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী অভিযুক্ত ছিল। শেখ মুজিবুর
রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একটি আইন করে এবং সে অনুযায়ী একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
ওই তালিকায় ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যকে অভিযুক্ত করা হয়এবং ওই যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় কোনো বেসামরিক লোকের নাম ছিল না। যে সব বাংলাদেশী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছিল তাদের বিচারের জন্য আলাদা একটি আইন (দালাল আইন) করা হয়। এ আইনের আওতায় ১০ হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয় কিন্তু শেখ মুজিব সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর তারা মুক্তি পান।
অন্যদিকে ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে আটক পাকিস্তানি সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হন পাকিস্তানের শাসক জুলফিকার আলী ভুট্টো। এর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ মামলার দৃশ্যত সমাপ্তি ঘটে।
নিবন্ধে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের বিখ্যাত উক্তি ‘আমি বিশ্বকে জানাতে চাই যে বাংলাদেশীরা ক্ষমা করতে জানে’
ঘোষণা ও সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শনের ৪০ বছর পর গত নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ এখন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচার করছে। তারা যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সৈন্যদের বিচার করছে না, বিচার করছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের, যাদের বিরুদ্ধে আগে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ছিল না।
নিবন্ধে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক মান রক্ষা না করেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে যে বিচার করছে তার সমালোচনা করেছে অনেক আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার সংস্থা। এ তালিকায় আছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন,
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডএবং অনেক বিশ্বখ্যাত মানবাধিকারকর্মী ও
মুসলিম নেতারা।
এসব সমালোচনায় কোনো কর্ণপাত করা তো দূরের কথা, বরং সরকারের অনেক সিনিয়র মন্ত্রী কবে বিচার শেষ হবে এবং কবে বিচারের রায় কার্যকর হবে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন