আসলেই হেফাজত ইসলামের ১৩ দফা দাবী কি মধ্যযুগীয় ????

লিখেছেন লিখেছেন পথিক মুসাফির ০৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:৪৪:৩৮ দুপুর

হেফাজতে ইসলামের লংমার্চকে ঘিরে আলোচনার শেষ নেই। ঘরে কি বাইরে সর্বত্র আলোচনা ৬ই এপ্রিলের লংমার্চ ও হেফাজতে ইসলাম।

গত ৯ই মার্চ চট্টগ্রামের দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্‌্‌ আহ্‌্‌মদ শফী ১৩ দফা দাবি পেশ করেন।

এই ১৩ দফা দাবীগুলোতে কি এমন বিষয় যোগকরা হয়েছে যে এটা মধ্যযুগীয় মনে করা হচ্ছে এবং তা বাস্তাবয়নের মত না এমনই মন্তব্য আসছে চারিদিক থেকে । আমিও আপনাদের অবগুতর জন্য ১৩ দফাগুলো লিখলাম এবং প্রশ্ন আকারে বর্ননা করলাম আপনারা বিচার বিশ্লেষণ করুন।

১। সংবিধানে ‘আল্লাহ্‌্‌র উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরান-সুন্নাহ্‌্‌ বিরোধী সকল আইন বাতিল করতে হবে।

এই দাবী কি সকল ঈমানদার মুসলমানের না ?? এখানে তো নাস্তিক ছাড়া কারো কোন দ্বিমত থাকতে পারে না।

২। আল্লাহ্‌, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।

ব্লাসফেমী (ধর্মের অবমাননা) আইন তো অনেক উন্নত পশ্চিমা দেশেও আছে তাহলে আমাদের মুসলিম দেশে কেন এই আইন হবে না ??

৩। কথিত শাহবাগী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-র শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী কুলাঙ্গার ব্লগার ও ইসলাম বিদ্বেষীদের সকল অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

এখানে মধ্যযুগীয় কোন্ চিন্তার প্রতিফলন আছে ???

৪। ব্যক্তি ও বাক-স্বাধীনতার নামে সকল বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

এই গুলোতো মুসলমানদের সংস্কৃতি না তাহলে আমরা মুসলমানের সন্তান হয়ে কেন এমন ইসলাম বিরোধী সংস্কৃতি পালন করব।?

৫। ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।

এই খানে যে কথা বলা হয়েছে তা অতি বাস্তব কেননা প্রাথমিক স্তরে যদি ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামুলক না করা হয় তাহলে প্রিত ঘরে নাস্তিক হবার সম্ভাবনা বেশী । যেমন এখন দেখছি প্রগতির নামে কি হচ্ছে ।

৬। সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

এদের বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকা জরুরী ইসলামী সরকার ছাড়া এই কাজ সাধারণ সরকার করবে না।

৭। মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরীতে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।

এটা অতীব বাস্তব কথা ১৬ কোটি মুসলমানের দেশে এমন মুর্তি কলঙ্কজনক। নবী করীমের সাঃ আবির্ভাব হয়েছিল এই মুর্ত পুজার অবসানের জন্য ।

৮। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।

মসজিদে ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপ করা যাবে না এটা কোন মুসলমানের দেশে হয় না । তবে গন্ডগোল ফাসাদ যেন মসজিদে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে।

৯। রেডিও, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।

এটা অত্যন্ত গুরুত্বপ্ুর্ণ কথা। এমন ধরনের কার্যকলাপ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে দাড়ি টুপি বা সম্মানিত লোকের কোন সম্মান হানি হয় তেমন কোন নাটক বা সিনেমা করা যাবে না।

১০। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মান্তকরণসহ সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

জোর করে টাকা দিয়ে ধর্মান্তকরন গর্হিত কাজ এ থেকে বিরত থাকা উচিত।

১১। রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র এবং তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।

কেন এই সম্মানিত লোকদেরকে হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ করা হয় তাদের অপরাধ কি ?? তারাতো ছাত্রলীগের গুন্ডাদের মত সরাসরি বা গোপনে কোন অস্ত্র নিয়ে কোন অপকর্ম করে না তাহলে অনর্থক হামলা মামলা কেন ??

১২। সারা দেশের কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ এবং মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

অনর্থক হুমকি ধমকি কাম্য নয় ।

১৩। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সকল আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদেরকে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের শাস্তিদান করাই সরকারের কাজ কিন্তু কেন তারা অপরাধীদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে অপরাধমুক্ত লোকদের হামলা করে জেলে পাঠানো হচ্চে।

সব কিছু সমন্বয় তা বাস্তবায়ন করলে সমাজ পিছিয়ে যাবে না বরং সমাজে স্থিতিশীলতা আসবে ইনশা আল্লাহ।

বিষয়: বিবিধ

২০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File