শুভ্র ও স্বপ্নকন্যাঃ কিছু অব্যক্ত কথা (পর্ব- ১)
লিখেছেন লিখেছেন বিমুগ্ধ রজনী ১৬ জুন, ২০১৪, ০৯:৪৪:১৮ রাত
খুব বেশি দিন হয়নি শুভ্র ও স্বপ্ন কন্যার পরিচয় হয়েছে। তাদের ফ্যামিলির হাত ধরেই এক রৌদ্র উজ্জল সকালে এক রেস্টুরেন্টে তাদের পরিচয়। স্বপ্ন কন্যার সাথে তার মা এসেছিল শুভ্র’র সাথে নিজেদের আদরের মেয়েকে পরিচয় করে দিতে। মেয়ের বিয়ে নিয়ে মা’রাই মনে হয় চিন্তিত বেশি থাকে। একটা ভালো পাত্র, মেয়ের অনাগত ভবিষত এসব নিয়ে মা’দের চিন্তার অন্ত থাকে না। আরেকটা নতুন পরিবেশে গিয়ে একটা মেয়ের যে খাপ খাইয়ে নেয়া কতটা কষ্টকর এই উপলদ্ধিটা মা’র চেয়ে আর বেশি কে জানে!
হে, ঐদিন শুভ্র’র সাথে স্বপ্ন কন্যার অনেক কথা হয়েছিল। তো শুভ্র’ই বকবক বেশি করেছিল। তারা কেমন করে সাজাতে চায় তাদের অনাগত ভবিষত, তাদের পছন্দ, অপছন্দ আরো কত কি! শুভ্র কথা বলছে আর ভাবছে, জীবন বহতামান স্রোতের মতো বার বার দিক পাল্টে কোথা থেকে কোথায় যায়! দুইদিন আগেও স্বপ্ন কন্যা নামে কাউকে সে চিনত না, এখন একটু কথাতেই মনে হচ্ছে সারা জীবন সে বুঝি এমনই এক স্বপ্ন কন্যার খোঁজে জলে- স্থলে- অন্তরীক্ষে চষে বেড়িয়েছে! সে ভাবে সৃষ্টিকর্তা কি মায়া- মমতা দিয়ে আমাদের বানিয়েছেন, একটুতেই মনে কি টান সৃষ্টি করেন! সে মনে মনে ধন্যবাদ দেয় সৃষ্টিকর্তাকে।
ওরা লান্স করে একটা সময় বাহির হয়ে যায়। শুভ্রকে তার অফিসে যেতে হবে, তাই তার হয়তো তাড়া একটু বেশিই। কিন্তু তার যেতে মন চায় না। লাজ-লজ্জার ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না। কিন্তু কাজের কাজ যেটা হয়েছে যাওয়ার আগে স্বপ্ন কন্যার সেল নাম্বারটা নিয়ে নিয়েছে। এটা অবশ্য শুভ্র’র বড় বোনই শিখিয়ে দিয়েছিল। তুই ওর ফোন নাম্বারটা নিয়ে নিবি। শুভ্র’র তাতে যথেষ্ট আপত্তি ছিল, কিভাবে এক দেখাতেই আমি সেল নাম্বার চাইতে পারি! শুভ্র’র আপত্তি ছিল- যে কাজটা আমি সারাজীবন করিনি বা করতে পারিনি আপু তুমি আমাকে এটা করতে বলো না। আপু ছিল নাছোড়বান্ধা। যাইহোক, লাজ- শরমের মাথা খেয়ে শুভ্র ওইদিন কিন্তু ঠিকই স্বপ্ন কন্যাকে জয় করেছিল, তার সেল নাম্বার নিয়েছিল আর মনে মনে ভাবছিল স্বপ্ন কন্যা আমি শুধু তোমার সেল নাম্বারটাই নিয়ে যাচ্ছি না তোমার হ্রদয় হার্ড ডিস্কটাও সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি, পরে টের পাবা!
তারপর রাত যায়- দিন যায়, স্বপ্ন কন্যার সাথে রঙিন জীবনের গল্পে বিভোর থাকে শুভ্র। তার ইচ্ছে হয় যেন, স্বপ্ন কন্যার সাথে সারাক্ষন কথা বলতে। স্বপ্নকন্যার হাসিটা শুভ্র’র হ্রদয় ভেদ করে যায়। মাঝে মাঝে স্বপ্নকন্যার অভিমানে নিশ্চুপ থাকাটাও ও খুব ইনজয় করে। কিন্তু স্বপ্ন কন্যার নিরাপদ, সতর্ক উচ্চারন তার ভাবনায় মাঝে মাঝে ছেদ পরায়। স্তম্বিত ফিরে শুভ্র ভাবে বহুকাল, বহুযুগ আমি তো তোমারই প্রতীক্ষায় ছিলাম স্বপ্ন কন্যা! তার গলা ছেড়ে গান ধরতে ইচ্ছে করে! কিন্তু পাছে কেউ শুনবে বলে আত্ম সংবরণ করতে হয়। মাঝে মাঝে সে স্বপ্ন কন্যাকে অনুরোধ করে একটু গান শোনানোর জন্য, স্বপ্ন কন্যা একঘুয়ে, বিয়ের পরই সে গান শোনাবে আগে নয়। শুভ্র মনে মনে কল্পনায় ভাসে আর হাসে!
চলবে-
বিষয়: সাহিত্য
১৩২৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জীবনের প্রথম ভালবাসা। এ যেন কলিজা কাঁপানো এক অন্যরকম শিহরণ। উহ! কিযে মজা। আনন্দ। বাধাহীন উচ্চাস। রাত বিরাতে কল্পনার জগতে একা হাটার অদম্য আগ্রহ.....
সেই অনুভুতি দিয়ে শুরু করা আপনার গল্পের প্রণয়ের রানীকে দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। ভাল লেগেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন