পর্দা কি শুধু নারীদের জন্য?
লিখেছেন লিখেছেন বিমুগ্ধ রজনী ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১১:৫১:২২ রাত
অনেক ভাই আছেন। সে শুক্রবারে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়, এক সপ্তাহে ৩৫ ওয়াক্তের মধ্যে ১ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে (রমজানে ব্যতিত)। কিন্তু ভাবী আবার নামাজ রেগুলার পড়ে। ভাবী হিজাব/পর্দা করেন। ভাবী যাতে দ্বীন ঠিকমত পালন করে সেটা ভাইয়া সবসময় খেয়াল রাখে! কিন্তু ভাইয়ার দ্বীনের কোন খবর নাই, সে ক্লীন-শেভড, খুব আধুনিক।
এরকম ধ্যান-ধারণা কিন্তু আমরা যতটুকু পর্যবেক্ষণ করি তার থেকে অনেক বেশি প্রচলিত। ভাই নিজে গিয়ে সিনেমা হলে সিনেমা দেখে আসে, কিন্তু বোন এদিক ওদিক করলেই তার ঈমান জেগে উঠে।
কেমন লাগবে, রাস্তায় কোন ছেলে তাকালে যদি কাছে গিয়ে বোরখাওয়ালী মেয়েরা বলা শুরু করে, ওই ব্যাটা তাকাবি তো চোখ কানা করে দিব। (একটা হাদীসে কারও ঘরে মানে প্রাইভেসীতে উঁকি দিলে চোখ কানা করে দেয়ার হুমকি দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে! হিজাব পড়ার পরেও পুরুষরা যখন বলে এতেও ‘ঠিকমত’ পর্দা হয় নি, কিংবা কোন নারীর পোশাক আশাকের ব্যপারে মন্তব্য করে, তখন ইচ্ছা করে সত্যি সত্যি চোখ কানা করে দেই! এই অভদ্রতার অধিকার কে দিল?)
একটা হাদীসে পড়ছিলাম সেদিন, রাসূল (সা) কখনও গায়ের জামা খুলতেন না নিজের খুব কাছের ছাড়া অন্যদের সামনে। ‘আজকালকার ছেলেরা’ যে কোন উপলক্ষ্যে (গরম লাগা, ক্রিকেট পরবর্তী উল্লাস, সমুদ্র বিলাস) গায়ের জামা খুলতে একটুও দ্বিধা করে? কিংবা শার্টের বোতাম খোলা রাখা। অথচ, রাসুলের সুন্নত কিন্তু পুরুষদের জন্যও ‘ঢিলা ঢালা’ কাপড় চোপড় পড়া। এখন মেয়েরা গজ ফিতা নিয়ে পুরুষদের কাপড়ের প্রস্থ মেপে মোড়লীপনা শুরু করলে কেমন লাগতো?
কেমন হতো বোরখা পড়া খালাম্মা টাইপের কেউ গিয়ে যদি হুমকি দিত, পর্দা পুশিদার ঠিক নাই তোর!
অথবা নিজের চেয়ে বয়সে ছোট কোন বোরখাওয়ালী মেয়ে ভাব নিয়ে বলতো, আপনের ভাব সাব দেখে মনে হয় আপনে কাপড় খুলে ঘুরতে পারলেই বাঁচেন!
দাড়ি নিয়ে তো যথেষ্ট কড়া হাদীস আছে, ক্লীন শেভড প্রত্যেককে ধরে কিশোরী তরুনীরা যদি বলা শুরু করতো, আপনের সমস্যা কি? মুখে দাড়ি নাই কেন?
কেমন লাগতো? খুব শালীন মনে হতো? খুব স্বাভাবিক মনে হতো?
না, পর্দা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই।
বরং পুরুষদের পর্দা ইসলামের আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোরানে পুরুষদের পর্দার কথা মেয়েদের পর্দার আগে বলা হয়েছে। পুরুষদের পর্দা মেয়েদের পর্দা থেকে সেজন্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে পুরুষরা পর্দা করা শুরু করলে মেয়েরা আপনাআপনিই পর্দা করা শুরু করবে।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পবিত্র কোরআনের
►সূরা নূরের ৩০ নাম্বার আয়াতে বলেছেনঃ “মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। “
►সূরা নূরের ৩১ নাম্বার আয়াতে বলেছেনঃ “ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। “
কুরআনের যেই জায়গায় মেয়েদের পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে সবার আগে ছেলেদের দৃষ্টি সংযত করতে বলা হয়েছে (সূরা নূরের ৩০ নাম্বার আয়াতে ), তারপরে মেয়েদের কথা বলেছেন আল্লাহ (সূরা নূরের ৩১ নাম্বার আয়াতে)।
মেয়েদের হিজাবের চেয়ে ছেলেদের দৃষ্টি সংবরন নিয়ে আল্লাহ বেশি চিন্তিত ছিলেন, তাই সেটা আগে বলেছেন!
সুরা নুরের এই আয়াতগুলো দেখলেই বুঝা যায় যে ছেলেদের পর্দা অন্ততপক্ষে মেয়েদের পর্দার সমান গুরুত্বপূর্ণ, যদি বেশি না হয়। অথচ মেয়েদেরকে পর্দার মধ্যে রাখার জন্য পুরুষদের এত চেষ্টা থাকলেও নিজেদের ব্যাপারে কোন রাখঢাকই নেই।
আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “সাবধান, রাস্তার ধারে বসা থেকে বিরত থাক”। লোকেরা বলল, “ হে আল্লাহর রাসুল, যেহেতু আমরা কথা বলতে এসেছি, তাই না বসে উপায় ছিল না”। রাসুল (সাঃ) তখন তাদেরকে বললেন, “ তাহলে তোমরা রাস্তার অধিকারকে পুরা কর”। তারা বলল,”ইয়া রাসুলুল্লাহ, রাস্তার অধিকার কি?” রাসুল (সাঃ) তখন তাদেরকে বললেন, “ দৃস্টিকে নত রাখা, অন্যকে চলার অসুবিধা থেকে বিরত থাকা, সালামের উত্তর দেওয়া এবং ভালো কাজের আদেশ ও খারাপ কাজের নিষেধ।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
উপরের হাদিসটা যেসব লোক বখাটেদের মেয়ে দেখলে উৎপাত করাকে “মেয়েরা পর্দা কেন করেনা” বলে যুক্তি দেখায় তাদের জন্য উপযুক্ত জবাব। এম্নিতে রাস্তায় দাড়িয়ে আড্ডা দিতেই নিষেধ করা হয়েছে, আর যে রাস্তা দিয়ে মেয়েরা যাতায়াত করে সেখানে দাড়িয়ে শিষ দেওয়াটা কত জগন্য অপরাধ হতে পারে সেটা তো কল্পনাই করা যায়না। যদি খুব দরকারে দাড়াতেও হয়, দৃষ্টি নীচের দিকে রাখতে বলা হয়েছে, যেটা করলে মেয়ে বেপর্দা না বেগানা নাকি অন্যকিছু সেটা তো দেখতে পাওয়ারও প্রশ্নই আসেনা।
আবার অনেককে দেখেছি কোন মেয়ে যদি একটু খোলামেলা কাপড় পড়ে তার নামে যা-তা বলে বেড়ায়। নিচের আয়াত দেখেন, তাদের জন্য কি শাস্তি বরাদ্দ রয়েছে।
“যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি।“ সুরা নূরঃ আয়াত ২৩
সমাজে নারীরা বেপর্দা হওয়া বা লাক্স-চ্যানেল আইয়ে নিজেদেরকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করিয়ে ব্যাভিচার ছড়ানোটাও সম্পূর্ণভাবে পুরুষের দোষ। নিচের আয়াত দেখেন, তাদের জন্য কি শাস্তি বরাদ্দ রয়েছে।
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।“ সুরা নূরঃ আয়াত ১৯
মেয়েদেরকে ধর্মের ষোলআনা পালন করানোর জন্য বাধ্য করব আর নিজের বেলায় ধর্মের কোন খোঁজখবর নেই, এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রনযোগ্য। একজন মুসলমান নিজের জন্য যা পছন্দ করবে অন্যের জন্যও তাই পছন্দ করবে।
দেখেন পারেন কিনা, ঢাকার রাস্তায় ১ মাইল হেটে দেখেন আর যত মেয়ে আসে তাদের দিকে না তাকিয়ে দৃষ্টি নিচের দিকে করে রাখবেন, সুন্দরী হোক অসুন্দরি হোক, তাদের দিকে তাকাবেন না।
অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি, হাদীস গ্রন্থগুলোতে মেয়েদের পোশাক আশাক নিয়ে যত হাদীস আছে, ছেলেদের পোশাক আশাক, সে সংক্রান্ত নির্দেশাবলী নিয়ে হাদীস আছে ‘অনেক বেশি!’
“ভাই, শুনেছেন ঠিক মতো”– মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের পোশাক নিয়ে আল্লাহর রসুল (সাঃ) বেশি চিন্তিত ছিলেন! সব সময়কার সুন্নত হিসাবে উনার মাথা টুপি, আবার কখনও টুপি ও পাগড়ি দিয়ে মাথা ঢাকা থাকতো। এক মুঠ দাড়ি দিয়ে মুখের বড় অংশ আবৃত থাকত। লম্বা ঢিলে ঢালা পোশাক পরেছেন। টাকনুর উপরে পাজামা/লুঙ্গি পরেছেন।
জীবনে তো নারীর পর্দা নিয়ে অনেক গবেষনা করেছেন। একবার বুখারী শরীফের “পোশাক অধ্যায়” পড়ে দেখবেন প্লীজ ।অনেক ভাই আছেন। সে শুক্রবারে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়, এক সপ্তাহে ৩৫ ওয়াক্তের মধ্যে ১ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে (রমজানে ব্যতিত)। কিন্তু ভাবী আবার নামাজ রেগুলার পড়ে। ভাবী হিজাব/পর্দা করেন। ভাবী যাতে দ্বীন ঠিকমত পালন করে সেটা ভাইয়া সবসময় খেয়াল রাখে! কিন্তু ভাইয়ার দ্বীনের কোন খবর নাই, সে ক্লীন-শেভড, খুব আধুনিক।
এরকম ধ্যান-ধারণা কিন্তু আমরা যতটুকু পর্যবেক্ষণ করি তার থেকে অনেক বেশি প্রচলিত। ভাই নিজে গিয়ে সিনেমা হলে সিনেমা দেখে আসে, কিন্তু বোন এদিক ওদিক করলেই তার ঈমান জেগে উঠে।
কেমন লাগবে, রাস্তায় কোন ছেলে তাকালে যদি কাছে গিয়ে বোরখাওয়ালী মেয়েরা বলা শুরু করে, ওই ব্যাটা তাকাবি তো চোখ কানা করে দিব। (একটা হাদীসে কারও ঘরে মানে প্রাইভেসীতে উঁকি দিলে চোখ কানা করে দেয়ার হুমকি দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে! হিজাব পড়ার পরেও পুরুষরা যখন বলে এতেও ‘ঠিকমত’ পর্দা হয় নি, কিংবা কোন নারীর পোশাক আশাকের ব্যপারে মন্তব্য করে, তখন ইচ্ছা করে সত্যি সত্যি চোখ কানা করে দেই! এই অভদ্রতার অধিকার কে দিল?)
একটা হাদীসে পড়ছিলাম সেদিন, রাসূল (সা) কখনও গায়ের জামা খুলতেন না নিজের খুব কাছের ছাড়া অন্যদের সামনে। ‘আজকালকার ছেলেরা’ যে কোন উপলক্ষ্যে (গরম লাগা, ক্রিকেট পরবর্তী উল্লাস, সমুদ্র বিলাস) গায়ের জামা খুলতে একটুও দ্বিধা করে? কিংবা শার্টের বোতাম খোলা রাখা। অথচ, রাসুলের সুন্নত কিন্তু পুরুষদের জন্যও ‘ঢিলা ঢালা’ কাপড় চোপড় পড়া। এখন মেয়েরা গজ ফিতা নিয়ে পুরুষদের কাপড়ের প্রস্থ মেপে মোড়লীপনা শুরু করলে কেমন লাগতো?
কেমন হতো বোরখা পড়া খালাম্মা টাইপের কেউ গিয়ে যদি হুমকি দিত, পর্দা পুশিদার ঠিক নাই তোর!
অথবা নিজের চেয়ে বয়সে ছোট কোন বোরখাওয়ালী মেয়ে ভাব নিয়ে বলতো, আপনের ভাব সাব দেখে মনে হয় আপনে কাপড় খুলে ঘুরতে পারলেই বাঁচেন!
দাড়ি নিয়ে তো যথেষ্ট কড়া হাদীস আছে, ক্লীন শেভড প্রত্যেককে ধরে কিশোরী তরুনীরা যদি বলা শুরু করতো, আপনের সমস্যা কি? মুখে দাড়ি নাই কেন?
কেমন লাগতো? খুব শালীন মনে হতো? খুব স্বাভাবিক মনে হতো?
না, পর্দা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই।
বরং পুরুষদের পর্দা ইসলামের আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোরানে পুরুষদের পর্দার কথা মেয়েদের পর্দার আগে বলা হয়েছে। পুরুষদের পর্দা মেয়েদের পর্দা থেকে সেজন্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে পুরুষরা পর্দা করা শুরু করলে মেয়েরা আপনাআপনিই পর্দা করা শুরু করবে।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পবিত্র কোরআনের
►সূরা নূরের ৩০ নাম্বার আয়াতে বলেছেনঃ “মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। “
►সূরা নূরের ৩১ নাম্বার আয়াতে বলেছেনঃ “ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। “
কুরআনের যেই জায়গায় মেয়েদের পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে সবার আগে ছেলেদের দৃষ্টি সংযত করতে বলা হয়েছে (সূরা নূরের ৩০ নাম্বার আয়াতে ), তারপরে মেয়েদের কথা বলেছেন আল্লাহ (সূরা নূরের ৩১ নাম্বার আয়াতে)।
মেয়েদের হিজাবের চেয়ে ছেলেদের দৃষ্টি সংবরন নিয়ে আল্লাহ বেশি চিন্তিত ছিলেন, তাই সেটা আগে বলেছেন!
সুরা নুরের এই আয়াতগুলো দেখলেই বুঝা যায় যে ছেলেদের পর্দা অন্ততপক্ষে মেয়েদের পর্দার সমান গুরুত্বপূর্ণ, যদি বেশি না হয়। অথচ মেয়েদেরকে পর্দার মধ্যে রাখার জন্য পুরুষদের এত চেষ্টা থাকলেও নিজেদের ব্যাপারে কোন রাখঢাকই নেই।
আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “সাবধান, রাস্তার ধারে বসা থেকে বিরত থাক”। লোকেরা বলল, “ হে আল্লাহর রাসুল, যেহেতু আমরা কথা বলতে এসেছি, তাই না বসে উপায় ছিল না”। রাসুল (সাঃ) তখন তাদেরকে বললেন, “ তাহলে তোমরা রাস্তার অধিকারকে পুরা কর”। তারা বলল,”ইয়া রাসুলুল্লাহ, রাস্তার অধিকার কি?” রাসুল (সাঃ) তখন তাদেরকে বললেন, “ দৃস্টিকে নত রাখা, অন্যকে চলার অসুবিধা থেকে বিরত থাকা, সালামের উত্তর দেওয়া এবং ভালো কাজের আদেশ ও খারাপ কাজের নিষেধ।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
উপরের হাদিসটা যেসব লোক বখাটেদের মেয়ে দেখলে উৎপাত করাকে “মেয়েরা পর্দা কেন করেনা” বলে যুক্তি দেখায় তাদের জন্য উপযুক্ত জবাব। এম্নিতে রাস্তায় দাড়িয়ে আড্ডা দিতেই নিষেধ করা হয়েছে, আর যে রাস্তা দিয়ে মেয়েরা যাতায়াত করে সেখানে দাড়িয়ে শিষ দেওয়াটা কত জগন্য অপরাধ হতে পারে সেটা তো কল্পনাই করা যায়না। যদি খুব দরকারে দাড়াতেও হয়, দৃষ্টি নীচের দিকে রাখতে বলা হয়েছে, যেটা করলে মেয়ে বেপর্দা না বেগানা নাকি অন্যকিছু সেটা তো দেখতে পাওয়ারও প্রশ্নই আসেনা।
আবার অনেককে দেখেছি কোন মেয়ে যদি একটু খোলামেলা কাপড় পড়ে তার নামে যা-তা বলে বেড়ায়। নিচের আয়াত দেখেন, তাদের জন্য কি শাস্তি বরাদ্দ রয়েছে।
“যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি।“ সুরা নূরঃ আয়াত ২৩
সমাজে নারীরা বেপর্দা হওয়া বা লাক্স-চ্যানেল আইয়ে নিজেদেরকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করিয়ে ব্যাভিচার ছড়ানোটাও সম্পূর্ণভাবে পুরুষের দোষ। নিচের আয়াত দেখেন, তাদের জন্য কি শাস্তি বরাদ্দ রয়েছে।
“যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।“ সুরা নূরঃ আয়াত ১৯
মেয়েদেরকে ধর্মের ষোলআনা পালন করানোর জন্য বাধ্য করব আর নিজের বেলায় ধর্মের কোন খোঁজখবর নেই, এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রনযোগ্য। একজন মুসলমান নিজের জন্য যা পছন্দ করবে অন্যের জন্যও তাই পছন্দ করবে।
দেখেন পারেন কিনা, ঢাকার রাস্তায় ১ মাইল হেটে দেখেন আর যত মেয়ে আসে তাদের দিকে না তাকিয়ে দৃষ্টি নিচের দিকে করে রাখবেন, সুন্দরী হোক অসুন্দরি হোক, তাদের দিকে তাকাবেন না।
অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি, হাদীস গ্রন্থগুলোতে মেয়েদের পোশাক আশাক নিয়ে যত হাদীস আছে, ছেলেদের পোশাক আশাক, সে সংক্রান্ত নির্দেশাবলী নিয়ে হাদীস আছে ‘অনেক বেশি!’
“ভাই, শুনেছেন ঠিক মতো”– মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের পোশাক নিয়ে আল্লাহর রসুল (সাঃ) বেশি চিন্তিত ছিলেন! সব সময়কার সুন্নত হিসাবে উনার মাথা টুপি, আবার কখনও টুপি ও পাগড়ি দিয়ে মাথা ঢাকা থাকতো। এক মুঠ দাড়ি দিয়ে মুখের বড় অংশ আবৃত থাকত। লম্বা ঢিলে ঢালা পোশাক পরেছেন। টাকনুর উপরে পাজামা/লুঙ্গি পরেছেন।
জীবনে তো নারীর পর্দা নিয়ে অনেক গবেষনা করেছেন। একবার বুখারী শরীফের “পোশাক অধ্যায়” পড়ে দেখবেন প্লীজ ।
লেখক: আমিন বেগ
বিষয়: বিবিধ
২৬৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন