কফিনের কাপড়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থানা হাজতে ছিলেন যে ভাইটি.....
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:২২:৪৫ দুপুর
আমাদের থানার ইসি মিটিং এ সদ্য কারামুক্ত এক ছাত্র ভাইকে দাওয়াত দেওয়া হল। ভাইটি সাত মাস কারা ভোগ করে বাহীর হল বিনা অপরাধে।
ভাইটির ভয়াবহ বর্ণনা , থানা পুলিশের নিষ্ঠুরতা ,আর সংগঠনের প্রতি ব্যক্তির কমিট্ ম্যান্ট , আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা ও আল্লাহর সাহায্য পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত এক সৈনিককে দেখলাম অশ্রুস্বজল নয়নে ।
রাত গভীর মেস ঘেরাও , একে একে পাঁচ জনকে পড়াল হ্যান্ড কাপ । শেষ ভাইটি চেষ্টা করল প্রাণপণ তার রুমের দরজাটি আড়াল করতে নিজে ই আগে বাহীর হয়ে । দেখছিল ও না হায়েনা বাহীনি বাহীর হয়ে যাবে এমন সময় হায়েনাদের একজন বলে উঠল স্যার এদিকে ও একটি রুম আছে মনে হয়। যেই বলা সাথে সাথে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল হায়েনা বাহীনি , আর যায় কই, তাদের পরম আরাধ্য জঙ্গী কিতাব কোরান , হাদিস আর ইসলামী সাহিত্যের সারি সারি। সাথে সাথে কৃষ্ণ নামের অফিসার ধরল মাথায় পিস্তল। বলল তোকে এখনই গুলি করে দিব। ভাইটি শান্ত জবাব গুলি করবেন কি করবেন না সেটি তো আপনার বিষয়।।
মারতে মারতে থানায় নিয়ে গেল ।
সে সময় চলছিল দেশের সর্বত্র ক্রস ফায়ারে স্বামী, বাপ, ভাই, ছেলে, হারানো হাহাকার....
সবাই ধরে নিল এই ভাইকে ও কি গোম কিংবা খুন করবে গোম খুনের রাষ্ট্রীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুলিশ র্যাব !!
বিষয়টা সে রকমেই ছিল , কারণ রাস্ট্রীয় বিদ্যমান আইন লঙ্গন করে কয়েকদিন শুধু মাইরের উপরে ছিল সবার থেকে আলাদা করা ভাইটি।
রাস্ট্রীয় বীভৎসতার অন্য রূপ দেখল নিস্পাপ , নির্দোষ ভাইটি । নিস্পাপ এইজন্যই বললাম যে বিষয়ে তারা মামলা দেয় সে বিষয়ে সে নিষ্কলঙ্ক ও ছিল।
তাকে মারতে মারতে বেহুঁশ করে ফেলা হয়েছে বার বার । তাকে রাত্রে থাকতে দিয়েছে মহিলাদের জন্য রক্ষিত গারদে , যেখানে ছিল কয়েকটি পুরনো ময়লা যুক্ত রাস্ট্রীয় কফিনের কাপড় , ইঁদুর আর তেলাপোকা। রাত্রে গারদের মেঝেতে কাহীল ও যন্ত্রণা ক্লিষ্ট শরীর একটা কাঁপনের দুর্গ্নদ্ধ যুক্ত কাপড় কোন রকম গায়ের নিচে দিয়ে আরেকটি মাথার নিচে দিয়ে ছিল এই কঠিন শীতে ।
জীবন গেলে যাবে ময়দানের ক্ষতি করবে না এই ছিল ভাইটির অঙ্গীকার , জ্ঞান ফিরলে তাকে আবার ও ডাকা হল , কি বলবি না এরা কারা হ্যা স্যার ইনি শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি , ইনি সেক্রেটারী জেনারেল , তাদের পত্রিকায় দেখিছি স্যার , আর কারো ছবি দেখে সে বলে না ইনি ওমুক ভাই উনি তমুক ভাই , শত নির্যাতনের পর ও যখন কিছুই বলছে না তখন আরেক পুলিশ এসে বলে কি এদের মেরে ফেললে ও এরা কিছু বলবে না , এরা শফতের লোক তো , আসলেই তাই, নিজের জীবন দিতে পারে অন্য ভাইয়ের কেশাগ্র ও যেন ক্ষতি করতে না পারে হায়েনা বাহীনি এই ছিল তার আন্তরিক ভাসনা, আল্লাহ তার ইচ্ছা পুরন করলেন ও । সর্ব শেষ পুলিশের এস পি আসল ইন্ট্রারোগেট করতে , ইন্টারভিউ নিল , অনেক প্রশ্নের পর জিজ্ঞেস করল সুরা হাশরের শেষ আয়াত গুলোর তাফসির বল। সে বলে নাই , কারন প্রশ্নের উদ্দ্যশ্য শিখা না , কোরান দিয়ে জব্দ করা , বলল এই কোরানের তাফসীর আর এত সাহিত্য কার কীসের জন্য ? বলল এইগুলো স্যার আমি নিজে জানার জন্য পড়ি আর আমি অন্যদের কোরআন শিক্ষা দিই । অবশেষে বলল তুমি আমাকে সহযোগীতা করলে আমিও তোমাকে সাহায্য করব , তুমি আল্লাহ্রে বেশী বেশী ডাক আর রাত্রে তোমারে নিয়ে অভিযানে বাহীর হব। সে যে উদ্দ্যেশ্যই বলুক ভাইটি কিন্তু অপর চার বন্দী ভাইয়ের কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিয়েছে ভুল ত্রুটির জন্য, এবং শাহাদাতের তামান্না নিয়ে মহান রবের দরবারে প্রার্থনা করেছে হে মাবুদ মওলা তুমি ছাড়া আমার আর কোন সাহায্যকারী নেই আমি আমাকে তোমার কাছেই সুপর্দ করলাম । মহা জ্ঞানী আল্লাহ কি মজলুমের আন্তরিক দোয়া ফিরিয়ে দিবেন? ? না আল্লাহর সাহায্য বান্দার খুবই নিকটেই থাকে ।ভাইটির মামার এক ঘনিস্ট বন্ধু ঢাকার এক গুরুত্ব পূর্ণ থানার ওসি। সে খবর পাঠাল ওর উপর যেন একটা ফুলের বাড়ী ও না লাগে , ফ্যামিলি করল সাংবাদিক সম্মেলন , ভাগিনা নিয়ে গেল থানায় টাকা আর ওষুধ । এই যাত্রায় বেচে গেলেন ভাইটি , টাকা টনিকের মত কাজ নাকি করে , সে রাতেই সেন্ট্রিকে টাকা দিয়ে কল করে ঘনিস্ট একজনকে বলে দেয় কার কার ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করা হল , কে কে তাদের জিজ্ঞাসার লিস্টে ছিল , কার কার বাসায় না থাকা উচিত ইত্যাদি , ওই দিকে তাকে দেওয়ার জন্য অনেক ওষুধের মধ্য থেকে কেবল এক পিচ প্যারাসিটামল তাকে খেতে দেওয়া হয় । পরের দিন পত্রিকায় চলে আসায় বাধ্য হয়ে কোর্টে চালান করে। অতপর সাত মাস কাটল কারাগারে ।
অতপর কারাগারে ও পালন করা হয় সাংগঠনিক দায়িত্ব , সে খানে তাদের মুটু ছিল কেবল ইবাদত আর জ্ঞান অর্জন , পবিত্র কোরানের বিষয় ভিত্তিক অধ্যয়ন। আর মহান রবের কাছে প্রার্থনা ছিল আজীবন যেন ইসলামী আন্দোলনের সঠিক পথে জীবন নির্বাহ করতে পারেন ।। মহান রব মজলুম ভাইদের ত্যাগ কোরবানী কবুল করে আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার তৌফিক দিন । আমিন চুম্মা আমিন।।
বিষয়: বিবিধ
২১০০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান রবের কাছে প্রার্থনা- আজীবন যেন ইসলামী আন্দোলনের সঠিক পথে জীবন নির্বাহ করতে পারেন ।। মহান রব মজলুম ভাইদের ত্যাগ কোরবানী কবুল করে আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার তৌফিক দিন । আমীন ছুম্মা আমীন।।
সংশ্লিষ্ট পুলিশদের নাম যেন নোট করা থাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন