সূর্য কখনো চলে যায়না।
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১০ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:৪৭:৩৬ দুপুর
কঠিন সময়গুলো সরে যাবে জানি। জানি একদিন আবার সূর্য হাসবে। ভানু ফিরে আসবে। আমি সেই সময়ের জন্য অপার হয়ে বসে আছি। আমার দয়াময়ের দয়ার স্পর্শ আসবে আমার উপর, আমি আবার আগের মত করে সুস্থ হয়ে চলাফেরা করবো, আগের মতন করে আশাবাদী হবো নিজেকে নিয়ে, আমার পরিবার-সমাজকে নিয়ে, আমার উম্মাহকে নিয়ে... এই স্বপ্ন দুনিয়া কাটিয়ে আখিরাত ছুয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। সূর্য কখনো চলে যায়না। আনি জানি সূর্য পাটে যায়নি। স্রেফ একখন্ড মেঘ এসে তাকে আড়াল করে নিয়েছে। আমার মতন করে এখন আত্মা আরো বড় বড় সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে। তারা সবাই অপার হয়ে অপেক্ষা করছে তার অপার ভালোবাসার বর্ষণের।
এই মন খারাপদেরকে আমি খুব ভালো করে চিনি। আমার সাথে জনম জনমের দোস্তি। কিন্তু আমি ওদের জানিয়ে দিয়েছি -- আমি এখন চিনি আমার আল্লাহকে। আগে তারা এসে আমার আল্লাহকে ভুলিয়ে দিতে চাইতো, পারতো। এখন আর তা হতে দিইনা। দিতে চাইনা। আমি জানি, একবার আমি আমার কন্ট্রোল হারিয়ে ফেললে মেঘনার মোহনার প্রবল ঘূর্ণির মতন করে এই মনখারাপের দল আমাকে গভীরে ডুবিয়ে নিয়ে যাবে -- আমি হারিয়ে যাবো, মরে যাবে আমার স্বপ্নদের দল।
এই তিলোত্তমা নগরী ঢাকার জনমানবের মাঝে কেন যেন প্রবল পশুত্বকে আবিষ্কার করি -- অনৈতিক, জিঘাংসু আর ভোগময় পশুর দল। তখন খুব ইচ্ছে হয় সবাইকে সুন্দর জিনিসগুলোকে চিনিয়ে দিই, ইচ্ছে করে আত্মার মুক্তির অর্থ আর পথগুলো বুঝিয়ে দিই। দিন দিন আমি অনুভব করছি যারা খারাপ কাজ করে, তারা আসলে খুব বেশি খারাপ না। আসলে তাদের কেউ বুঝাতেই পারেনা। তারা যে জানেন না সুন্দর কী -- এই অজ্ঞানতা খুব বড় অপরাধ নয়। কিন্তু তাদের বুঝাতে হলে তাদের চাইতে সুন্দর "আত্মা" হতে হয়। এটুকু বুঝি আমি! অথচ, হতভাগা আমি যে আমাকেই সামলাতে পারিনা! আমি আমাকে পেরিয়ে কবে অন্যদের কাজে আসবো! কবে সুন্দর আত্মা হয়ে তাদের ডাকবো সুন্দরের পথে! আমাদের সমাজের সুন্দর আত্মার মানুষদের প্রয়োজন তাদের বোধগুলোকে চারপাশে ছড়িয়ে দিতে। হাসনাহেনার সুবাসের মতন যখন সেই সৌন্দর্যের সুঘ্রাণ ছড়িয়ে যাবে -- হতে পারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা ওই নির্বোধ মানুষদেরকে সেরা মানুষ বানিয়ে দেবেন!
আমি জানি, আমাদের মুক্তির পথ ওই "তাঁর" মাঝে নিজেকে সঁপে দিতেই। তিনি ছাড়া আমার আসলে আর কিছুই করার নেই। আমি এখন যেকোন প্রচেষ্টার উর্ধে। ব্যক্তিগত জীবনে আমার অনেক পরিবর্তন দরকার। এভাবেই দিগভ্রান্ত হয়ে চলেছে অনেকগুলো বছর। এই স্পর্শকাতর আত্মা মরতে বসে কেন বারবার আমি জানিনা। একাকীত্ব আর দিকভ্রান্তির মাঝে ডুবে আমার রবের নির্দেশগুলোর কোন একটিকে যখনই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অমান্য করে ফেলি, তখনই বুঝি এই আত্মাতে অমোচনীয় কালির দাগ পড়লো। সে দাগ ঘষে ঘষেও তুলতে পারিনা। ঘষতেই থাকি, ঘষতেই থাকি -- তা হতাশা বাড়াতে থাকে, লজ্জা বাড়াতেই থাকে... আমি এখন আত্মায় দাগ ফেলতেই ভয় পাই।
আমি ইদানিং শরীরের ব্যথাগুলোকে আবিষ্কার করে লজ্জিত হই। যখন ব্যথাগুলোতে প্রবল কষ্ট হয়, তখন পথের ধারে পড়ে থাকা বিকলাঙ্গ মানুষগুলোর কথা মনে পড়ে। আমি তো আর বিশেষ কৃতকর্মের কারণে তাদের চাইতে ভালো নেই, তাইনা? আমি জানি হে দয়াময়, আমি অনেক ভাগ্যবান। তবু এই ক্ষুদ্র বান্দার মনের, শরীরের, আত্মার কলঙ্কগুলোকে মোচন করার শক্তি দাও, ভালোবেসে ক্ষমা করে তাকে প্রশান্তি দাও।
বিষয়: বিবিধ
১০০৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শব্দের পরতে পরতে আত্নসমালোচনা ও কষ্টের বিষাদ নীলকে আবিষ্কার করে আমি নিজেও অনুতপ্ত হলাম নিজেকে নিয়ে! আল্লাহ আমাদের প্রতিটি দিনে তাঁর কাছে সঠিক আত্নসমালোচনা করার তৌফিক দান করুন । আমিন!
আপনার সুস্হতার জন্য দোআ রইলো!
মন্তব্য করতে লগইন করুন