আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাব।
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৮ এপ্রিল, ২০১৫, ০৪:১৯:৪১ বিকাল
মরুভূমির তপ্ত বালুর মধ্যে শায়িত হযরত বিলাল (রাঃ)র উপর যখন উমাইয়া বিন খালফের চাবুক বার বার আঘাত হানছিল, তার মুখ দিয়ে শুধু একটা কথাই বের হচ্ছিল ‘আহাদ’ ‘আহাদ’। আবু জেহেলের অত্যাচারের মুখে সুমাইয়া (রাঃ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দিয়ে গেছেন। আল্লাহর কালিমাকে বুকে ধারণ করার পর তারা জানতেন দুনিয়ার সমস্ত মোহের বিনিময়ে তাঁরা বেহেস্ত কিনেছেন। শত্রুর হুমকি-ধামকি-অত্যাচার তাদের টলাতে পারেনি, বরং শত্রুকেই তাদের দৃঢ়তা কাপিয়ে দিয়েছিল।
উনিশ শতকের প্রথম দিকে হকপন্থী আলেমগণ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তুলেন। ব্রিটিশরা টের পেয়ে আলেম-উলামাকে হত্যা করেন, এমনকি কাউকে বস্তা বন্দী করে পুড়িয়ে মারা হয়। কাউকে কাউকে জেলে নিক্ষেপ করা হয়। যেদিন ব্রিটিশ বিচারক তাদের মৃত্যুদন্ড প্রদান করে, তারা সকলে উচ্ছসিত হয়ে উঠেন। ব্রিটিশরা অবাক বিস্ময়ে তাদেরকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে অভিন্দন জানাতে দেখে। মৃত্যুমুখে দাড়িয়ে এই সফলতার হাসি কাফিরদের হতবিহবল করে দেয়।
ইখওয়ানের অন্যতম নেতা সাইয়্যেদ কুতুবের উপর জেলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে। জেলে কখনও তার সাথে অন্য ইখওয়ান সদস্যদের দেখা হয়ে যেতো যাদের উপরও চলছিল অত্যাচার। উনি তাদের উতসাহ দেয়ার জন্য তাদের দিকে তাকিয়ে হাসতেন। তার বিখ্যাত কবিতায় তিনি তাদের বলেছেন,
My brother, you are free behind these gates.
My brother, you are free within these chains.
For if upon Allah you do rely,
The intrigues of his slaves can bring no pains
ফাসির কাষ্ঠে তিনি হাসিমুখে প্রবেশ করেন। ফাসির আগেও তাকে মুক্তির বিনিময়ে শুধু কয়েকটা লাইন বলে আপোস করতে বলা হয়, কিন্তু তিনি দৃঢ় চিত্তে জানান, যে আঙ্গুল দিয়ে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দিয়ে তা এক অত্যাচারী শাসকের সমর্থনে কিছু করতে অস্বীকৃতি জানায়।
লিবিয়ায় ইতালীয় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা মুজাহিদ ওমর মুক্তারকে তিন দিনের নামকা ওয়াস্তে বিচারের মাধ্যমে ফাসির দন্ড দেয়া হয়। তিনি দৃঢ় চিত্তে শেষ কথা উচ্চারণ করেন, আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাব। তার সেই বিখ্যাত উক্তি, "We Will Not Surrender . We Win or We Die" এখনও মুজাহিদদের অনুপ্রেরণা যোগায়।
আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এভাবেই ঈমানদাররা হাসিমুখে জীবন দিয়ে গেছেন। যুগে যুগে তাদের হত্যা করা হলেও, তাদের ধর্মকে শেষ করা যায়নি, আদর্শকে বিলীন করা যায়নি। আমাদের মনে রাখা উচিত, তারা কেয়ামতের দিন যে খোদার সামনে দাড়াবে, সেদিন আমরাও একইভাবে দাড়াবো। তাদের পূর্ণ ঝোলার দিকে তাকিয়ে হয়তো দীর্ঘনিশ্বাস ফেলবো। হয়তো মনে হবে, আরেকবার জীবন দাও খোদা, আরেকবার সুযোগ দাও, তোমার পথে জীবন দিয়ে যেন তোমার সামনে উপস্থিত হতে পারি।
বিষয়: বিবিধ
১১৪৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
correct explanation,,,,,jazakallah khair.
কাফের, মুশরিক, কমিউনিস্ট ও আওয়ামীলীগ দেশ, গণতন্ত্র ও কমিউনিজম এর জন্য চাইলে মারতে ও মরতে পারে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন