আজকের যানজট ও এক যুবকের স্বপ্নভঙ্গের হাতছানি ....
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৪৬:৪৩ সকাল
হঠাৎ ভাইয়া ডাক শুনে চকিতে থাকালাম , যদি ও আমার কোন ভাই বোন নাই , করুণ শব্দে তো তাই। চারিদিকে সারি সারি গাড়ী। মোটর সাইকেল দূরে থাক মানুষ হাটার ও যায়গা নাই রাস্তায় কিংবা পাশে।
আবার শব্দ পেলাম......... আমাকে কি একটু লীভ দেওয়া যাবে ? ভাইয়া? আমার পরীক্ষা। সাথে গাড়ীর ড্রাইবার ও।
কি সে করুন চাহনি, চোখ চল চল, আশা নিরাশার হাতছানি, জীবনের স্বপ্ন ভঙ্গের আকুতি দুই চোখে। না না এটা অভিশাপ রাস্ট্র যন্ত্রের প্রতি, দেশের ভবিষ্যৎ এক কর্ণদারের। আরো কত অভিশাপে বিষিয়ে ঊঠা, একটি জীবনের ক্রন্দন ধ্বনি যেন.....
আমি বললাম আসুন আমার সাথে। আর হ্যা সে বসেছিল একটি কাভার্ড ভ্যান এর সামনের সিটে । সে ড্রাইভারকে ও সে কনভিঞ্জ করে ঊঠেছিল অন্য গাড়ী না পেয়ে জীবনের স্বপ্ন গড়তে পত্যয়ী এই যুবক।
সরকারের তো রাস্তা ঘাটের খবর নাই , তারা ব্যাস্ত আছে রাজাকার খুজতে.........
শুকর খুঁজে কচু আর আওয়ামীরা খুঁজে রাজাকার.........
যা হোক, আজ ঐতিহাসিক জ্যাম রাস্তায়, ভোর হতেই । আমার অফিসে লেইট ১:৩০ ঘণ্টা । অফিসের প্রায় কাছাকাছি এসেই এই যুবকের ডাক শুনি। তাকে আমার সাথে নেওয়ার পর জিজ্ঞেস করলাম কোথায় কি পরীক্ষা আপনার? সে বলল আমার ভর্তি পরীক্ষা।
জাহাঙ্গীর নগর ভার্সিটিতে ল এ।
বললাম আপ্নিত মনে হয় পৌঁছতে পারবেন না ? বলল আমাকে চন্দ্রা পর্যন্ত দিলে হবে ।
আমি বললাম আমি তো অতদুর যাব না এইত আমার অফিস?
একদিকে অনেকদূর হতে রিস্ক নিয়ে আসা আবার অফিসে লেট , অন্য দিকে এক যুবকের করুন আকুতি.....
আমি যেহেতু চবির ছাত্র ছিলাম তাই জিজ্ঞেস করলাম চবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিবেন না?
বলল আমি গত বছর রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ে ওইখানে ভর্তি হয়েছি। গত কাল ও ছাত্র লীগের দু গ্রুপের মধ্যে প্রচণ্ড গুলাগুলি হয়েছে , যখন তখন বন্ধ হয়ে যায় ।ক্লাস পরীক্ষার কোন নিশ্চয়তা নাই , সাথে জীবনের ও।
আমি বললাম আমি ও চবির ছাত্র ছিলাম বর্তমানের গুন্ডারা তখন ও ক্ষমতায় ছিল আমি মনে করতাম পড়া লেখা দিয়ে কি হবে সোহরাওয়ার্দি মোড় নামক কার্গিল পয়েন্টে গেলেই তো জীবন লীলা সাঙ্গ হয়ে যাবে।
( যেই খানে রহিমুদ্দীন আর মাহ্মুদুল হাসান নামের দুই ছাত্র ছাত্র লীগের গুণ্ডাদের হাতে ৫০০ পুলিশের উপ্সতিতে এস এম জি এর সরাসরি গুলিতে নিহত হয়েছে, আব্দুসশাকুর নামের আরেক ভাই গুলি বিদ্ধ হয়েছে, ছাত্র লীগের চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিল আরেক বড় ভাই রুস্তম পবিত্র রমজান মাসেই।)
ছেলেটি বলল আমি ঢাকা ক্যান্টপাব্লিকের ছাত্র ছিলাম। আমার স্বপ্ন ল পড়া ।
তার এই বছর ই শেষ বছর , সে কি পারবে তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে এই যানজটের কারনে?
এই ভাবে কত স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় অঙ্কুরেই , কত জীবনের বিনাশ হয় নিস্পাপ কোন শিশুর দুনিয়ায় আসার পুর্বেই? কত মায়ের প্রান নাশ হয় সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছতে না পেরে আত্নজা সহ? আর কত ভাই বোন জীবন মৃত্যুর স্নদিক্ষনে দুকে দুকে মরে?
না না বাংলাদেশে কোন সমস্যা নাই সমস্যা শুধু রাজাকার নিয়ে !!
এটা কি কোন রাষ্ট্র ? নাকি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের কোন হায়েনার কারাগার??
আমাদের ট্যাক্সের টাকায় চালিত রাষ্ট্রীয় সকল যন্ত্র ব্যাবহার করছে গোম খুন দুর্নিতি আর জনগণকে হয়রানী করতে।
আর অঙ্কুরেই বিনাশ হচ্ছে জনগণের লক্ষ কোটি স্বপ্ন , তাতে তার কি আসে যায় তার শুধু প্রয়োজন ক্ষমতা আর ক্ষমতা।
যা হোক মুখে দাঁড়ী থাকার কারনে আর দর্শকদের গ্রাম জাবিতে গেলাম না । কাছাকাছি এক যায়গায় নামিয়ে দিলাম আর বললাম আমি শিবির করতাম শিবিরকে ভয় পেয়োনা। আমার নাম জিজ্ঞাসা করল পরম তৃপ্তিতে । আমার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা বলে বললাম দ্রুত যান আপনার সময় নাই। আমি ফিরে আসলাম আমার গন্তব্যে আলহামদুলিল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৩ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
I was a student of Jahangirnagar.
Bangladesh.
মন্তব্য করতে লগইন করুন