আমার দেখা ৫ ই মে ২০১৩। লিখা ও ছবি।-১
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৫ মে, ২০১৪, ১১:৪৩:১৯ সকাল
সব কিছু লিখা কি ঠিক?? সব কিছু বলা কি ভাল??? তবু ও বলছি তবু ও লিখছি........
আজ ৫ মে ২০১৪। ঠিক এক বছর পূর্বের এই দিনটি আমার মৃত্যু থেকে ফিরে আসার দিন। হয়ত সব কিছু লিখার সময় এখন ও আসেনি কারণ সেই খুনিরা এখন ও অবৈধ ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে আছে বেহায়ার মত লক্ষ কোটি মানুষের অভিশাপ নিয়ে । হয়ত আমরা অক্ষম বলে।
যা হোক , ফজরের নামাজ পড়ে হাউজ বিল্ডিং মোড়ে আসলাম উত্তরায় যা আমার বাসার পাশেই। রাস্তায় ইতিমধ্যে অনেক পাঞ্জাবী পড়া লোক কোন মাদ্রাসার ছাত্র/শিক্ষক হবে হয়ত। ওরা এক লাইন হয়ে রাস্তায় বেরিকেট দিল। আমি সাধারণ পোষাকে থাকায় আমার আবেগকে আহত করল তারা। তাদের মধ্যে প্রচুর অহমিকা দেখলাম। আমার সহযোগিতা তারা নিল না । এমন কি আমাকে দাঁড়াতে ও দিল না। ইতি মধ্যে প্রচুর সংখ্যক র্যাব পুলিশ এসে হাযির। অদূরেই আব্দুল্লাহপুর পলওয়েলের দিখে থাকালাম দেখি ব্যাপক সাদা পাঞ্জাবী আর সাদা টুপি।
আমাদের বাসার ড্রাইভার কাম কেয়ার টেকার আমাদেরি দ্বীনি ভাই । সে সাইকেল নিয়ে আসলে তার কাছ থেকে সাইকেল নিয়ে টঙ্গী ব্রীজের দিখে রওয়ানা দিই দেখার উদ্দ্যেশে কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু গোঁয়ার প্রকৃতির লোক আমার সাইকেলে লাটি দিয়ে বারী দেয় এবং আমাকে নেমে যেতে বাধ্য করে। তবু কিছু পায়ে হেটে কিছু চড়ে টঙ্গী বাজার পর্যন্ত যায়। ইতি মধ্যে মশুল ধাঁরে বৃষ্টি নামে। অনেকে বৃষ্টিতে ভিজে নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর স্লুগান দেয় । আমি ও অনেকাংশে ভীজে যাই।
নাস্তা ও পাঞ্জাবী পড়ার উদ্দ্যেশ্যে বাসায় আসি । পরে মোটর সাইকেল নিয়ে ভিতরের রাস্তা দিয়ে পল ওয়েল এর মোড়ে আসি । সেখানে রাত জাগা অনেক মুসাফির ছিল ক্লান্ত শ্রান্ত শুয়ে বা আধা জাগা অবস্তায়। আমরা সাংগঠনিক ভাবে ও ব্যক্তি পর্যায়ে কালেকশান করে তাদের কলা রুটি বিস্কুট পানি যা পাওয়া গেছে সামনে তা এই বিতরণ করি।
শুরু হল বিক্ষিপ্ত আলোচনা বক্তব্য ওয়াজ উদ্দীপনা মূলক কথা।
যার কাছে হ্যান্ড মাইক ছিল তার কাছেই ভীড়। এক জায়গায় একটি মাইক ছিল আমরা কয়জন পরিকল্পিত ভাবে বক্তব্য দেওয়ার জন্য মনোনীত করলাম। সু শৃঙ্খল ভাবে বসিয়ে দিলাম লোকজনকে । নিজে ও বসে পড়লাম রাস্তায়। বক্তাদের উৎসাহ দিলাম। পার্শ্বে আরেক জায়গায় জটলা আমার মনে হল তারা হিজবুতি । নিজেদের আলাদা করে বক্তব্য চালিয়ে যাচ্ছে । একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনারা কারা? এড়িয়ে গেল। আমি ও আর খুচালাম না বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ।
ইতি মধ্যে যোহরের সময় হয়ে গেল। বাসায় গিয়ে খাবার খেয়ে নিলাম । শুনলাম রওয়ানা দেওয়া হবে মতিজিলের দিকে । আমি ও বের হয়ে পড়লাম মোটর সাইকেল নিয়ে। পিছনে নিলাম আরো দুজনকে। কিন্তু এত লোক রাস্তায় চলা দায়। মাঝে মাঝে স্লোগান দিলাম নারায়ে তাকবীর সমস্বরে সবাই বলল আল্লাহু আকবর। অনেকের হাতে কালেমা খচিত পতাকা লাটির মাথায় কিংবা নিজের মাথায়।
অনেক কষ্টে শিষ্টে আগাতে থাকলাম বিশাল বহরের মধ্যে যেন মক্কা বিজয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। স্লোগানে যেন গলা ফেটে রক্ত বেরুবে। তবু থামেনা স্লোগান নাস্তিকের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও গুঁড়িয়ে দাও ।
খিলক্ষেত পার হয়ে জিয়া কলোনির পাশে এসে থামলাম । অনেকের হাটতে হাটতে পায়ে পুস্কা পড়ে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়েছে। সবাই কে একত্রিত করার উদ্দ্যেশে। আবার যাত্রা শুরু হল এক আল্লাহ্ এক আল্লাহ্ লা ইলাহা ইল্লাহ সহ নানা স্লোগান দিতে দিতে। কেও অতি আবেগে বা স্বাভাবিক মনে করে হাসিনা বা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিলেই মুরব্বীরা থামিয়ে দিতেন। শুধু নাস্তিকদের বিরুদ্ধে দিতে বলতেন। আবার কওমিরা পূর্ব থেকেই আওয়ামীদের ভোট দিত এই কারণে ও হতে পারে।
আমি একটু এগিয়ে গেলাম দেখি মহাখালী ফ্লাই ওভারের নীচে নাস্তিকেরা ব্যানার লাগিয়ে কিছু প্ল্যাস্টিকের চেয়ার সাজিয়ে বসে আছে। মনে মনে হাসলাম। শাহরিয়ার কুলাঙ্গার কে দেখি নাই । পরে শুনেছি সে নাকি বিশাল জন শ্রুতে সেলুনে লুকিয়ে আত্ন রক্ষা করেছে। এগিয়ে গেলাম একা একাই কিন্তু না সামনে ও জন শ্রুত । দেখলাম এরশাদের পার্টি ও পানি মুড়ি দিচ্ছে মিছিল কারীদের। আসলে সে দিনের যাত্রা ছিল পোরায় আবেগ তাড়িত। কি হবে কি করবে কতক্ষণ চলবে? কি করতে হবে কোন নির্দেশনা ছিল না। তবু থেমে নেই বাঙ্গালী মুসলমানেরা। আজকে তারা পাইল বুঝিয়েই ছাড়বে গন জাগরণ কারে কয়? তার মধ্যে শত প্রতিভার ও বিকাস দেখলাম স্লোগানের নানা ডাইমেনশনে।
চলবে..... সাথে থাকুন। আমার দেখা ৫ ই মে ২০১৩। লিখা ও ছবি। -২Click this link
বিষয়: বিবিধ
২৮৩৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আওয়ামী সরকারের অনুমতি পাওয়ার পর #গিরিপথ(মানে ঢাকায় প্রবেশের ৪টি মুখ) অরক্ষিত রেখে সরল প্রাণ মুসলমানেরা পঙ্গ পালের মত মতিঝিলের দিকে ছুটছিলেন । যেন শাপলা চত্বরেই আসতে পারাই প্রধান সফলতা !
যদিও তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী ছিল ঢাকার প্রবেশ মুখ অনিদৃষ্টকালের জন্য অবরোধ ।
---
মনে হচ্ছে এই তো সেদিন বুকভরা স্বপ্ন আর আশা নিয়ে আমার দেশে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য অবশেষে হলো বুঝি ভাবতে ভাবতে আল্লাহর দরবারে অনেক দুয়া করেছিলাম!! কিন্তু না হাজার হাজার শহীদের রক্ত ও আমাদের মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য এনে দিতে পারেনি!!!..অথচ বাতিল ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছুটছে নিজেদের লক্ষ্যপানে!.....
ইয়া আল্লাহ!! তুমি শহীদ হিসেবে কবুল করো তাদের!..আমাদের দেশকে বাতিলের সবধরণের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করো!
মন্তব্য করতে লগইন করুন