আহ্ মর্মান্তিক !!!!!!কষ্ট পেলাম!!!!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৫১:৪৭ দুপুর
নাভিদ বাংলাদেশী একটি সফটওয়্যার ফার্মের পরিচালক। তার ফার্মে কাজ করে বুয়েট, ঢাবি, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, সাস্ট, এনএসইউ, ব্র্যাক, ইডব্লিউইউ সহ দেশী ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী অসংখ্য মেধাবী তরুণ। তার ফার্মের মার্কেটিং টীমটিও বেশ। দেশের ভালো ভালো বিজনেস স্কুলের তরুনেরা তাঁদের মেধা দিয়ে ফার্মটিকে দাড়া করিয়েছে। বার্ষিক রেভেনিউ গ্রোথ প্রায় ৪০০%। তাঁদের প্রোডাক্ট গুলো দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
সব ধরণের প্রেডিকশেনে তাঁদের সফটওয়্যার সবচেয়ে কার্যকরী হিসেবেই দেখা যাচ্ছে। তাঁদের সফটওয়্যার এর ক্রেতারা সুফল পাচ্ছে। নড়ে চড়ে বসছে সবাই। কি এলগোরিদম তারা ব্যবহার করছে, যাকিনা সকলের চাইতে ভালো ? এর রহস্য কি ?
যাই হউক। সামনে ব্যাংক অফ আমেরিকা তাঁদের নতুন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন সফটওয়্যার বানাবে। বাজেট ৬ বিলিয়ন ডলার, ৪ বছর মেয়াদী প্রজেক্ট। ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার। সব দেশের সব বড় বড় ফার্ম অংশ নিচ্ছে। বিড করছে বাঘা বাঘা সবাই। তবে এই সফটওয়্যার ক্যাটাগরিতে জায়ান্ট ধরা হয় ভারতীয় টাটা কন্সাল্টেন্সি, উইপ্রো আর ইনফোসিস কে।
কিন্তু টাটা কন্সাল্টেন্সি, উইপ্রো আর ইনফোসিসের ট্রায়াল রেজাল্ট মোটেও ভালো না নাভিদের ফার্মের তুলনায়। ভারতীয় এই তিন কোম্পানি তাই সিক্রেটলি তাদের রিসার্চ টীমকে একীভূত করলো। ৬ বিলিয়ন ডলার বলে কথা। প্রজেক্টটি পেলে প্রত্যকের তাও ২ বিলিয়ন ডলার ভাগ। শেষমেশ জয়েন্ট বিড করলো তারা।
কিন্তু না, তাও টেস্ট রেজাল্ট খারাপ। কি করা যায়, কি করা যায় ? টাটা কনসালটেন্সি এর সিইও নটরাজনের বাল্যবন্ধু আবার এখন 'র' এর ডেপুটি চীফ রাজেশ। রবিবার রাতে পার্টিতে তাকে ব্যাপারটা বলেই ফেলল সে, ওয়িস্কি খাবার সময়। সব শুনে নটরাজন বলল কবে হবে ফাইনাল পিচ ব্যাংক অফ আমেরিকার কাছে ? নটরাজনের জবাব, আর মাত্র ২ সপ্তাহ। নিউ ইয়র্কেই হবে সেই পিচ। মোট ৫ টি ফার্ম শরতলিস্টে। কিন্তু বাকী ৩ টির কোনও চান্স নাই।
সব শুনে 'র' এর ডেপুটি চীফ রাজেশ বলল, যেহেতু সব ভারতীয় কোম্পানিই জয়েন্ট বিড করেছে, আর সবাই ভারতীয় কোম্পানি এবং যেহেতু ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন, তাই চীফকে বলেই হয়তো একটা একশন পাশ করানো যাবে। বাংলাদেশে 'র' এর সেটাপ ব্যবহার করা হবে।
রাজেশ প্রস্তাব দিতেই লুফে নিল 'র' এর সেন্ট্রাল কমান্ড কাউন্সিল। স্যাঙ্কশন হোল অপারেশন "কেজড বার্ড"। ৫ দিন সারাক্ষন ফলো করা হবে নাভিদকে। সুযোগ পেলেই গুম করা হবে। এতে করে নিউ ইয়র্কে পিচ করতে পারবেনা নাভিদের ফার্ম। প্ল্যানটি নটরাজন শুনে বলল, আচ্ছা ওকে কি আমরা পেতে পারিনা কয়েকদিনের জন্য ? ওর ফার্মের এলগোরিদমটা না জানলে তো কোনও লাভ হবেনা আমাদের। রাজেশ আবার 'র' এর সেন্ট্রাল কমান্ড কাউন্সিলে প্রস্তাব দিল। রিভাইজ হোল প্ল্যান। তাকে গুম করে নিয়ে আসা হবে মুম্বাইতে।
কিন্তু ঢাকার জামে নাভিদকে একলা পাচ্ছেনা তারা। কাজপাগল নাভিদ শুধু অফিস আর বাসা। বাসাও তার গুলশান এভেনিউতে মেইন রোডের উপরে এপার্টমেন্টে। অফিস ও কাছেই। কোনও সুযোগই পাচ্ছেনা তারা। নাভিদের অফিসে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, কোনও এন্ট্রি নাই। বাসাতেও সারবক্ষনিক প্রহরা। এতো বড় অপারেশন আবার বাধা পেল।
অবশেষে দারস্ত হতে হোল স্পেশাল সেল রাইনো এর। ঢাকাতে সেই ১৯৯২ সাল থেকে আছে তারা। ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার থেকে গনভবনের সব এজেন্টদের দিটেইলস তাদের কাছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বোনের দেবরও আছে সেই সেলে। সেই লোকই অবশেষে সাজেস্ট করলো যে এতো ঝামেলা না করে, নাভিদ যখন বিমান বন্দরে আসবে নিউ ইয়র্কের ফ্লাইট ধরতে, তখন তার ব্যাগে আইএসআই এর নথি ঢুকিয়ে জাস্ট সার্চ করলেই তো হবে। আর আইএসআই এর নথি যেহেতু, তাই ভারতের সাথে করা গোপন চুক্তি নং-৩০১ মোতাবেক তাঁকে ওখানেই 'র' এর কাছে হ্যান্ড অভার করা যাবে। এই বলে রাইনো সেলের বাকীদের একটু গালমন্দও করল সে। বাকীরাও চিন্তা করলো, আসলেই তো, এতো ঝামেলা করার তো আসলেই কোনও দরকার ছিলোনা।
প্রথম আলোতে মহানগর পেজে ৪ লাইনের একটি খবর আসলো যে বাংলাদেশী এক তরুণ সফটওয়্যার আইএসআই এজেন্ট সন্দেহে গ্রেফতার। ব্যাস এই টুকুই। আইএসআই চর হবার কারণে ফার্মটির রেপুটেশন নষ্ট হয়ে গেল। আগের ক্লায়েন্টরা নিজেদের রেপুটেশন বাঁচাতে অন্য ফার্মে চলে গেল। বিদেশ তো বটেই, দেশের বাজারও হারাল সেই ফার্ম। শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া ঘোষণা হোল।
নিউ ইয়র্কে আগেই নাভিদের গ্রেফতারের কথা শুনে তাঁদের পিচ ক্যান্সেল হয়। ফলে ৬ বিলিয়ন ডলারের ডিল পায় ভারতের তিন কোম্পানির এক কনসরটিয়াম। তাদের এলগোরিদমে দেখা যায় বুভূত উন্নতি। হঠাত করেই তাদের প্রেডিকশন অনেক ভালো হতে লাগলো। তাদের সফটওয়্যারের নতুন ভার্সন আরও অনেকেই কিনলো। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রেভেনিউ। অন্যদিকে নাভিদের ফার্মের সেই দলটির মেধাবীরা একেকজন একেক জায়গায় চলে গেল। কেউ পিএইচডি করতে চলে গেল, কেউ বা অন্য ফার্মে কম বেতনেই চাকরী করতে রাজি হোল। কেউ কেউ অন্য পেশায় চলে গেল।
নাভিদের পরিবার প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিলো। রিপ্লাই আসলো যে আইএসআই এর চর হবার কারণে কোনও মাফ নাই। ব্যাপারটি গনভবনেে এক পারিবারিক ডিনার টেবিলেও উঠলো। এক প্রস্থ হাসাহাসি করলো তারা। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বললো, আরে গাধার দল, ডিজিটাল মানে তুই ল্যাপটপ কিনবি, স্মার্টফোন কিনবি, বাসের মধ্যে ওয়াইফাই দিয়া সানি লিওনের নাচ দেখবি, ভারতের মতো উন্নত দেশের এতো বড় কোম্পানির সাথে লাগতে যাস কোন সাহসে ? সেই টেবিলে রাইনো সেলের আরও পাঁচজন সদস্য ছিল, তারা সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল ...Rage Ezekiel
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন