সাঈদ খালী সম্পর্কে সাংবাদিক নিয়াজ মাখদুম কি বলে একটু দেখি........
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৭ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:৫২:৫৭ দুপুর
আমার মনে হয় ইসলাম যে সকল মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান তা জনাব দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী প্রমান করেছেন।
মার্চ ২০১৪ উপজেলা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পিরোজপুরের জিয়া নগরে গিয়েছিলাম। ওই উপজেলায় তিন জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, অন্যজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আ. খালেক গাজী, আরেকজন স্বতন্ত্র। জিয়ানগরে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন মাসুদ সাঈদী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ নেতা পেয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ভোট। এখানে ভোটের ব্যবধান তিনগুণের বেশি।
পিরোজপুর সদর আসনের এমপি একেএম আউয়াল সাহেবের সঙ্গে কথা বললাম। সে বিস্তর অভিযোগ দাঁড় করিয়েছেন। তাতে মনে হয়েছে-এলাকার মানুষ সাঈদী সাহেবের কাউকেই পছন্দ করে না। কিন্তু সরেজমিন বলে উল্টো কথা।
তার কথা শুনে ভেবেছিলাম মানুষ সাঈদীর ছেলেকে ভোট দেবে না। কিন্তু দেখলাম হিন্দুরাও তাকে ভোট দিয়েছে। উপজেলায় হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামও রয়েছে। সেখানে মাসুদ সাঈদী সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। ইতিহাস অনুযায়ী এখানের ভোটগুলো পাওয়ার কথা গাজী আবদুল খালেক সাহেবের। কারন তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। বাংলাদেশের সব অঞ্চলের মানুষ বিশ্বাস করে হিন্দুরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়।
যাই হোক আমার কৌতুহল এক জায়গায় মাওলানা সাঈদীর অভিযোগ এই উপজেলায়ই। বিভিন্ন গণমাধ্যম বছর বছর ধরে প্রচার করে আসছে। এগুলো কি জিয়ানগরের মানুষ দেখে নাই? তারপরও কেন? তারা মাওলানা সাঈদীর ছেলেকে বিজয়ী করলেন। এই মানুষগুলো সম্পর্কে কি বলা যায়, আমি জানি না। তারা জেনেও এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেলেন।
নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরে দেখা ছিল আমার দায়িত্ব। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই ছিল ভোটারদের সরব উপস্থিতি। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রও ছিল চার থেকে পাঁচটি। একটি কেন্দ্র হচ্ছে ২৪ নং ভবানীপুর কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর ছেলে বেশ কয়েকটি মটর সাইকেলে ক্যাডার নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু সাধারণ মহিলা ভোটাররা ফিল্মি স্টাইলে বাক্স ছিনিয়ে রেখে দেয়।
সরেজমিন ঘুরে ঘুরে দেখলাম, হিন্দু ভোটারদের সঙ্গেও কথা বললাম। তাদের অগাধ বিশ্বাস সাঈদীর ওপর। বিমল দাস নামের এক ভোটার বলেন, “সাঈদীর আমলে খুব আরাম ও নিরাপদেই ছিলাম। তার ছেলে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে তাকেই ভোট দেব।” ছোট ছোট বাচ্চারা বলে দোয়াত-কলমেই ভোট দেয়া মানেই সাঈদীকে ভোট দেয়া।
আমি বুঝিনা, এতো অপরাধের অভিযোগ থাকা সত্যেও কেন সাঈদীর এতো জনপ্রিয়তা। কেন মানুষ তার উত্তরসূরীদের জনপ্রতিনিধি করল।” এই উত্তর খুঁজে পাইনা। চেষ্টা করেছি সেই উত্তর খোঁজার।
আমি ও বাংলাভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার রিশান নাসরুল্লাহ সারাদিন জিয়ানগর উপজেলায় ঘুরলাম। বাংলাভিশনের গাড়িতে করেই। শেষ বিকেলে মাসুদ সাঈদীর একটি বক্তব্য নেয়ার জন্য সাঈদ খালী সাঈদীর বাড়ি গেলাম। দ্বিতলবিশিষ্ট একটি টিনশেট বিল্ডিং। বিশ্বাস হয়নি এটা তার বাড়ি। মাসুদ সাঈদী ঘর থেকে বেড়িয়ে আসার পরে বিশ্বাস করতে হয়েছে এটা তাদেরই বাড়ি। যার খ্যাতি পৃথিবীজুড়ে তার বাড়ি এতো সিম্পল হয় জানা ছিলনা।
যাই হোক ঢাকা ফেরার পথে এলাকার মানুষের কাছে জানতে চাইলাম সাঈদীর আর কোনো বাড়ি আছে কিনা-এলাকার মানুষ জানালো নাই। আমি জানতে চাইলাম পিরোজপুর সদরে আছে কিনা-উত্তর একটাই ‘না’।
সবশেষে একটা কারণ চিহ্নিত করতে পেরেছি। তা হচ্ছে পিরোজপুরের মানুষের কাছে সাঈদী খুবই বিশ্বস্ত। তিনি এমপি থাকাকালীন হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করেন নাই। সমতার ভিত্তিতে যে পেতেন তাই নাকি দিয়েছেন। এছাড়া তার ছিলনা কোনো ক্যাডার বাহিনী। যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালাবে।
উন্নয়ন করেছেন অতুলনীয়। মানুষ বলে স্বাধীনতার পরে এতো বেশি উন্নয়ন হয় নাই পিরোজপুরে। যা তার আমলে হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জনকল্যান ই জনগনের কাছে যাওয়ার একমাত্র উপায়। যতই প্রচারনা চালন হোক সাধারন মানুষ ঠিকই বুঝে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন