ঈমানের পরীক্ষা........পর্ব- ২

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৮ মার্চ, ২০১৪, ০৫:০১:০৫ বিকাল



দেশে আওয়ামীদের চেয়ে দেশ বিরোধী কি কেও আছে??

আওয়ামীদের চেয়ে মানবতা বিরোধী কি কেও আছে???

আওয়ামীদের চেয়ে জন বিরুধী খুনি লুন্ঠন কারী কি কেও আছে???? চারদিকে শুধু ভাসছে লাশ আর লাশ..............

আপনারা হয়তো শুনেছেন যে, আরব দেশে মদ পান করার প্রথা খুব বেশী প্রচলিত ছিল। নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই মদের জন্য একেবারে পাগল প্রায় ছিল। আসলে মদের প্রতি তাদের অন্তরে গভীর আকর্ষণ বিদ্যমান ছিল। এর প্রশংসা করে কত যে গযল-গীত তারা রচনা করেছিল, তার হিসেব নেই। মদের জন্য প্রাণ দিতেও তারা প্রস্তুত হতো। একথাও আপনারা জানেন যে, একবার মদের নেশা লাগলে তা দূর হওয়া বড়ই মুশকিল। মদখোর ব্যক্তি মদের জন্য প্রাণ দিতে পারে, কিন্তু মদ ত্যাগ করতে পারে না। কোনো মদখোর যদি মদ না পায় তবে তার অবস্থা কঠিন রোগীর অপেক্ষাও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু যখন মদ নিষিদ্ধ হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছিল তখন কি অবস্থা হয়েছিল তা কি আপনারা কখনও শুনেছেন ? মদের জন্য পাগল জান দিতে প্রস্তুত সেই আরবরাই এ হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে নিজেদের হাতেই মদের বড় বড় পাত্র ভেংগে ফেলেছিল। মদীনার অলিতে-গলিতে বৃষ্টির পানির মতো মদ বয়ে গিয়েছিল। একটি মজলিসে কয়েকজন লোক একত্রে বসে মদ পান করছিল। হযরতের ঘোষণাকারী যখন তাদের কাছাকাছি গিয়ে বললো যে, মদ নিষিদ্ধ হয়েছে, তখন যার হাত যেখানে ছিল তা সেখানেই থেমে গেল আর একটুও কেউ অগ্রসর হলো না। যার হাতের পেয়ালা মুখের সাথে লেগেছিল, সে তখনই তা সরিয়ে নিলো। তারপর আর এক বিন্দু মদ তার উদরে প্রবেশ করতে পারেনি। এটাই হচ্ছে সত্যিকার ঈমানের পরিচয়। আর এটাকেই বলা হয় আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য।

ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি কত কঠিন তা তো আপনাদের অজানা নয়। তা হচ্ছে পিঠে একশত চাবুক। বস্তুত এর কল্পনা করলেও মানুষের শরীর শিউরে ওঠে। আর ব্যভিচারী বিবাহিত হলে তো তাকে একেবারে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। এ কঠিন শাস্তিও নাম শুণলেই মানুষ ভয়ে কেঁপে ওঠে। কিন্তু সেসব লোকের খাঁটি ঈমান ছিল, অথচ ভুলবশত তাদের দ্বারা কোনো ব্যভিচারের কাজ হয়ে গিয়েছিল, তাদের অবস্থা কিরূপ ছিল, তা কি আপনারা জানেন ? একজন লোক শয়তানের প্রতাণায় পড়ে ব্যভিচার করে বসলো। তার সাক্ষী কেউ ছিল না, আদালতে ধরে নিয়ে যাবারও কেউ ছিল না, পুলিশকে খবর দেয়ার মতো লোকও কেউ ছিল না। কিন্তু তার মনের মধ্যে ছিল খাঁটি ঈমান। আর সেই ঈমান তাকে বললো-আল্লাহর আইনকে ভয় না করে যখন তুমি নফসের খাহেশ পূর্ণ করেছ তখন তাঁর নির্দিষ্ট আইন মতে শাস্তি নিবার জন্য প্রস্তুত হও। কাজেই সে নিজেই হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এসে হাযির হলো এবং নিবেদন করলোঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি ব্যভিচার করেছি, আমাকে শাস্তি দিন।’ হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। সেই ব্যক্তি আবার সেই দিকে গিয়ে শাস্তি দেয়ার জন্য অনুরোধ করলো এবং বললো, আমি যে পাপ করেছি আমাকে তার উপযুক্ত শাস্তি দিন। এটাকেই বলে ঈমান। এ ঈমান যার মধ্যে বর্তমান থাকবে, খোলা পিঠে একশত চাকুকের ঘা নেয়া এমন কি পাথরের আঘাত খেয়ে মরে যাওয়াও তার পক্ষে সহজ ; কিন্তু আল্লাহর নাফরমানী করে আল্লাহর সামনে হাযির হওয়া তার পক্ষে বড়ই কঠিন ব্যাপার।

আপনারা এটাও জানেন যে, দুনিয়ার মানুষের কাছে তার আত্মীয়-স্বজনই অতিশয় প্রিয়পাত্র হয়ে থাকে। বিশেষ করে পিতা-পুত্র-ভাই মানুষের এত প্রিয় যে, তাদের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতেও মানুষ প্রস্তুত হয়। কিন্তু আপনি একবার বদর ও ওহোদের যুদ্ধের কথা চিন্তা করে দেখুন যে, তাতে কে কার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। বাপ মুসলমানদের দলে, ছেলে কাফেরদের দলে, ছেলে একদিকে, পিতা অন্যদিকে, এক ভাই ইসলামের পক্ষে অন্য ভাই দুশমনের পক্ষে। একেবারে নিকটতম আত্বীয়গণ দু’ দলে বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। আর এমনভাবে যুদ্ধ করেছে, যেন তারা কেউ কাউকে চিনেই না। কোনো টাকা পয়সা কিংবা জায়গা জমি অথবা কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতার জন্য তারা যুদ্ধ করেনি। তারা নিজেদের রক্ত দান করে আত্বীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে শুধু আল্লাহ ও রাসুলের খাতিরেই যুদ্ধ করেছে। আর আল্লাহ ও রাসূলের জন্য বাপ-ভাই-ছেলে এবং বংশের সকলকেই অকাতরে কুরবান করার মতো প্রচন্ড মনোবল তাদের মধ্যে বর্তমান ছিল।

আপনাদের একথাও জানা আছে যে, ইসলাম আরব দেশের প্রায় প্রাচীন রসম-রেওয়াজকে একবারে বন্ধ করে দিয়েছিল। তখনকার যুগে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান ছিল মূর্তি পূজা। এ প্রথা শত শত বছর ধরে চলে আসছিল। কিন্তু ইসলাম সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করলো, এ মূর্তিগুলো পরিত্যাগ কর। মদ পান, ব্যভিচার, জুয়া, চুরি, ডাকাতি আরব দেশের নিত্যকার ঘটনা ছিল। ইসলাম বললো, এসব ছাড়তে হবে। আরব দেশের নারীরা একেবারে খোলাখুলিভাবে চলাফিরা করতো। ইসলাম আদেশ করলো, এরূপ চলতে পারবে না পর্দার ব্যবস্থা কর। মেয়েদেরকে সেখানে সম্পত্তির অংশ দেয়া হতো না। ইসলাম ঘোষণা করলো, পুরুষদের মতো মেয়েরাও সম্পত্তির অংশ পাবে। পালিত পুত্রকে সেখানে ঠিক আপন ঔরষজাত পুত্রের মতো মনে করা হতো। ইসলাম বললো, এটা হতে পারে না। পরের ছেলে পালন করলেই একবারে নিজের ঔরষজাত সন্তানের মতো হয়ে যায় না। এমনকি পালিত পুত্র তার স্ত্রীকে তালাক দিলে তাকে বিয়েও কারা যেতে পারে। মোটকথা, এ সমস্ত পুরাতন রসমকে সেখানে একটি একটি করে চুরমার করে দেয়া হয়েছিল। চলবে..... হাকিকত সিরিজ

বিষয়: বিবিধ

১২১১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

194134
১৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:০৬
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : বর্তমান অবৈধ সরকার আমাদের দেশে লাশ নিয়ে হলি খেলা করছে, একদিন এদেরকে নিয়ে বাংলার জনগণ খেলবে।
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:২৪
145025
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : সর্বত্র লাশ আর লাশ।গোটা বাংলাদেশ যেন আজ মৃত্যু উপত্যকা।কার লাশ,কোত্থেকে আসছে এত লাশ এবং কারা এদের মারছে ? কারো কোন বক্তব্য নেই।গোটা দেশে আজ বেওয়ারিশ লাশের মিছিল।নিরব সরকার এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো।দেশটাও যেন আজ বেওয়ারিশ(অনেক দুঃখ থেকে শব্দটি উচ্চারণ করলাম)।
194144
১৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:২২
মোহাম্মদ নূর উদ্দীন লিখেছেন : ক্রসফায়ার নামক নাটক করে খুনি র‍্যাব-পুলিশের সাহায্যে সরকারের মানুষ হত্যায় ব্যাপক সমালোচনার পর এরা নতুন কৌশল নিয়েছে বোধহয় ।
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:২৫
145026
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : হয়ত .... কিন্তু দেশের মানুষের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করা যায় কিভাবে???
194471
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:১৬
ভিশু লিখেছেন : ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
Praying Praying Praying
১৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:২৬
145027
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমি আনন্দিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File