মুসলমান কাকে বলে?? চতুর্থ পর্ব ......

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৫ মার্চ, ২০১৪, ০৫:০৪:৫৪ বিকাল



এই লোকটারে আপনারা কেও চিনেন নাকি??

ওপরে আমি যে তিনটি ‘দেবতার’ উল্লেখ করেছি, এদের দাসত্ব করাই হচ্ছে আসল শিরক। আপনারা পাথরের দেবতা ভাংগিয়েছেন, ইট ও চুনের সমন্বয়ে গড়া মূর্তি ও মূর্তিঘর আপনারা ধ্বংস করেছেন ; কিন্তু আপনাদের বুকের মধ্যে যে মূর্তিঘর বর্তমান রয়েছে, সেই দিকে আপনারা মোটেই খেয়াল করেননি। অথচ মুসলমান হওয়ার জন্য এ মূর্তিগুলোকে একেবারে চূর্ণ করে দেয়াই হচ্ছে সর্বাপেক্ষা দরকারী কাজ ও সর্বপ্রথম শর্ত। যদিও আমি দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানকে লক্ষ্য করেই একথা বলছি এবং আমি জানি যে, দুনিয়ার মুসলমান যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে হবে, এ তিন প্রকারের দেবতার পূজা করাই হচ্ছে তার একমাত্র কারণ। কিন্তু এখানে আমি কেবল এ দেশীয় মুসলমান ভাইগণকে বলছি যে, আপনাদের অধপতন আপনাদের নানা প্রকারের অভাব-অভিযোগ ও বিপদের মূল হচ্ছে উপরোক্ত তিনটি জিনিস। নফসের দাসত্ব, বংশগত প্রথার দাসত্ব এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য মানুষের দাসত্ব আপনাদের মধ্যে এখনও খুব বেশী পরিমাণেই আছে। আর এটাই ভিতর থেকে আপনাদের শক্তি এবং দ্বীন ও ঈমানকে একেবারে নষ্ট করে দিচ্ছে। আপনাদের মধ্যে আশরাফ-আতরাফ, কুলীন-গৃহস্ত এবং ছোট লোক বড় লোকের পার্থক্য আছে। আর এরূপে আপনাদের সমাজের লোকদেরকে নানা শ্রেণীতে ভাগ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ইসলাম এ সমস্ত শ্রেণী ও সম্প্রদায়কে এক জাতি ও পরস্পরের ভাই করে একটি মযবুত দেয়ালের মত করতে চেয়েছিল। সেই দেয়ালের প্রত্যেকখানা ইট অন্য ইটের সাথে মযবুত হয়ে গেঁথে থাকবে, এটাই ছিল আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা। অথচ আপনারা এখনও সেই পুরাতন হিন্দুয়ানী জাতিভেদের ধারণা নিয়ে রয়েছেন। হিন্দুদের এক গোত্র যেমন অন্য গোত্র হতে পৃথক থাকে আর এক জাতি অন্য জাতিকে ঘৃণা করে আপনারাও ঠিক তাই করেছেন। বিয়ে-শাদীর ব্যাপারে আপনারা পরস্পর কোন কাজ করতে পারেন না। সকল মুসলমনকে আপনারা সমানভাবে ভাই বলে গ্রহণ করতে পারেন না। মুখে মুখে ভাই বলে থাকেন, কিন্তু কাজের বেলায় আপনাদের মধ্যে ঠিক সেরূপ পার্থক্য থেকে যায় যেমন ছিল আরব দেশে ইসলামের পূর্বে। এসব কারণে আপনারা পরস্পর মিলে একটা মযবুত দেয়াল হতে পারেন না। ভাংগা দেয়ালের নানা দিকে ছড়ানো ইটের মতো আপনারা এক একজন মানুষ পৃথক হয়ে পড়ে রয়েছেন। এ জন্যই না আপনারা এক ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত হতে পারছেন, না কোন বিপদ-আপদের মুকাবিলা করতে পারছেন। ইসলামের সুস্পষ্ট শিক্ষা অনুযায়ী আপনাদেরকে যদি বলা যায় যে, এ সমস্ত ভেদাভেদ ও পার্থক্য চূর্ণ করে দিয়ে ও পরস্পর মিলে-মিশে এক হয়ে যান তাহলে আপনারা তখন ঐ এক কথাই বলবেন যে, আমাদের বাপ-দাদার কাল হতে যে প্রথা চলে এসেছে তা আমরা ভেংগে দিতে পারি না। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এর উত্তরে কি বলবেন তা কি আপনারা জানেন ? তিনি বলবেন, বেশ তোমরা এ সমস্ত ভেংগ না, আর এ সমস্ত অমুসলমানী আচার ছেড়ো না, ফলে আমিও তোমাদের একেবারে টুকরো টুকরো করে দেব এবং তোমরা দুনিয়ায় বহু লোক হওয়া সত্তে¡ও আমি তোমাদেরকে লাঞ্চিত ও অধপতিত করে রাখবো।

আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে আদেশ করেছেন, তোমাদের ছেলে-মেয়েরা সকলেই তোমাদের সম্পত্তির অংশ পাবে। কিন্তু আপনারা এর কি উত্তর দিয়েছেন? আপনারা বলেছেন, আমাদের বাপ-দাদার আইনে মেয়েরা সম্পত্তির অংশ পেতে পারে না- পেতে পারে একমাত্র ছেলেরাই। কাজেই আমরা বাপ-দাদার আইন মানি আল্লাহর আইন মানতে পারি না। একটু চিন্তা করে দেখুন, এর নাম কি ইসলাম? আপনাদেরকে বলা হয়েছে যে, বংশগত ও দেশ প্রচলিত আইন পরিত্যাগ কর, উত্তরে আপনাদের প্রত্যেকেই বলে ওঠবেন-- সকলে যখন ত্যাগ করবে তখন আমিও করবো। কেননা অন্য লোক যদি তাদের মেয়েকে সম্পত্তির অংশ না দেয়, তাহলে আমার সম্পত্তি তো অন্যের ঘরে চলে যাবে, কিন্তু অন্যের ঘর হতে আমার ঘরে কিছুই আসবে না।- ভেবে দেখুন, এ উত্তরের অর্থ কি ? অপরে যদি আল্লাহর আইন মানে তবে আপনি মানবেন, এরূপ শর্ত করে কি আপনি আল্লাহর আইনের প্রতি ঈমান এনেছেন ? তাহলে কাল আপনি এটাও বলতে পারেন যে, অপরে ব্যভিচার করলে আমিও ব্যভিচার করবো, অপরে চুরি করলে আমিও চুরি করবো। মোটকথা অপরে যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত গোনাহ না ছাড়বে আমিও ততক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত গোনাহ করতে থাকবো। আসল কথা এই যে, এ ব্যাপারে আমাদের দ্বারা উল্লেখিত তিনটি দেবতারই পূজা করানো হচ্ছে। নফসের বন্দেগী করছেন, বাপ-দাদার প্রথারও বন্দেগী করছেন, আর দুনিয়ার মুশরিক জাতিগুলোর দাসত্বও আপনারা করছেন। অথচ এ তিনটি দেবতার পূজার সাথে সাথে ইসলামের দাবীও আপনারা করছেন। এখানে মাত্র দু’টি উদাহরণ আমি উল্লেখ করলাম। নতুবা একটু চোখ খুলে তাকালে এত প্রকারের বড় বড় রোগ আপনারদের মধ্যে দেখা যাবে যে, তা গুণেও শেষ করা যাবে না এবং লক্ষ্য করলে আপনি দেখবেন যে, কোথাও একটি দেবতার পূজা চলছে, কোথাও দু’টি দেবতার পূজা করার সাথে সাথে ইসলামেরও দাবী করা একটা হাস্যকর ব্যাপার এবং এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা খাঁটি মুসলমানদের ওপর যে অফুরন্ত রহমত নাযিল করার ওয়াদা করেছেন, ঠিক তাই আমাদের ওপর নাযিল হবে-এরূপ আশা করাও কম হাস্যকর ব্যাপার নয়। --হাকিকত সিরিজ

বিষয়: বিবিধ

১৬০২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

192572
১৫ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:২৭
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ভালো লিখেছেন ,বাপ দাদারা কি মানলো সেটা বিষয় নয় আপনি ইসলাম মানতেই হবে যদি মুসলমান হতে চান। আপনার লিখা থেকে শিখার অনেক কিছু আছে।
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:২৮
143608
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : তবে আসুন না ভাই কফি পেস্ট শেয়ার সর্বোপরি আমল করে কাজে লাগাই...।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:২৯
143713
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192582
১৫ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪১
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:২৮
143609
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক অনেক মোবারকবাদ।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143714
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192586
১৫ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
মোঃজুলফিকার আলী লিখেছেন : অনেক সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ।
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:২৯
143610
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনার মন আরও সুন্দর ও পবিত্র করে দিন মহান রব।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143715
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192588
১৫ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
শেষ বিকেলের লিখেছেন : মাটিতে মাথা ঠিকাঠুকি করেই বা কি লাভ?
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩০
143613
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : কোন লাভ নেই যদি না তা স্রস্টার তরেই নিবেদিত হয় ..।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143716
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192597
১৫ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৩
ফেরারী মন লিখেছেন : খুব সিম্পল একজন মানুষ আমি। এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে কোনো পূজা করি না।
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩১
143614
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : সকল দিক হতে মুখ ফিরিয়ে কেবল আল্লাহকেই মানেন?? সুবহানাল্লাহ।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143717
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192655
১৫ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩২
143615
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনার ভাল লাগার অনুভূতি প্রকাশ করায় আমি আনন্দিত। যাযাকাল্লাহ।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143718
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192726
১৫ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:০৫
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : জাজাকাল্লাহুল খাইরান, চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না।
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
143616
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : কেন কেন ?? খোদার ভঁয়ে অশ্রু বিসর্জন নাকি আমার রবের খুবই পছন্দ.....।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
143719
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
192804
১৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:২১
ভিশু লিখেছেন : ফেরারী মন লিখেছেন : খুব সিম্পল একজন মানুষ আমি। এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে কোনো পূজা করি না।
Loser Loser Loser
১৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩৪
143617
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনি ও তাই?? মাশেয়াল্লাহ।।
১৬ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩১
143720
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : Click this link ঈমানের পরীক্ষা
194051
১৮ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১৯
জাগো মানুস জাগো লিখেছেন : May allah give us the realization
১৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৫২
144703
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আমিন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File