মুসলমান কাকে বলে?
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১০ মার্চ, ২০১৪, ০৩:০৮:১৮ দুপুর
জানি শিরুনাম দেখার পর এই ব্লগ পড়ার লোক পাওয়া যাবে না । তবু যদি একজন ও উপকৃত হয় তাও কম কি??
পরের জন্যে করলে কিছু , নিজের জন্য করা হয় , আল্লাহ্ তালার পক্ষ হতে যায় পাওয়া যায় বিনিময় ..........
ঘোষ সামাজিক ব্যধ্যি.......... এর থেকে মুক্তির উপাই কি????
গতকাল সুদর্শন এক যুবক কারারক্ষীর সাথে কথা বলছিলাম, কথা প্রসঙ্গে তাকে গিজ্ঞাসা করলাম আপনার বেতন কত?? সাব্লিল উত্তর ১৬০০০ হাজারের কিছু বেশী তবে প্রতিমাসে অফিস হতে এক্সট্রা ৪০০০০ টাকা পাই। হ্যাঁ তবে আমি একা খাই না , থানা কে দিই রি এরেস্ট না করার জন্য অফিসের সবায় নির্দিষ্ট হারে ভাগ পায়..........
আহারে এত সুন্দর চেহারার আড়ালে কি কুৎসিত মন!!!!! কিভাবে অবলীলায় জাহান্নামের সওদা করছে........ কত মজলুমের আহাজারী অভিসাফ তাদের জন্য ....... এদের যদি আলোর পথে আনা যেত তবে কতই না ভাল হত.......
মানুষকে সন্তুষ্ট করতে চাওয়ার চেয়ে বড় বোকামি বুঝি আর নাই..............
খোদাকে সন্তুষ্ট করা সহজ,কিন্তু মানুষকে নয়...........
কারণ আল্লাহ্ আলীমুল গায়েব,দৃশ্য,অদৃশ্য,সাম্রথ,অসআম্রথ,খুটি নাটি সবই তিনি জ্ঞাত তদউপরি কোন কাজের প্রতি আন্তরিকতা নিষ্ঠা ও এই আহকামুল হাকিমিনের বিবেচনায় পুঙ্কানুপুঙ্ক রুপে থাকে যা প্রকৃতপক্ষেই কোন মানুষের থাকে না তাই মানুষের বিচার কিংবা মুল্যায়ন সঠিক ভাবে করা মানুষের সাম্রথের বাহিরের জিনিস। অতএব মানুষকে খুশি কর বা ঘৃণা কর তা যেন আল্লাহর নিমিত্তেই হয়, তবে কখনো হতাশ হবে না ............ আমাদের তাবৎ সন্তুষ্টি প্রিয় রবের তরেই হোক।।
নফসের বন্দেগী করছেন, বাপ-দাদার প্রথারও বন্দেগী করছেন, আর দুনিয়ার মুশরিক জাতিগুলোর দাসত্বও আপনারা করছেন। অথচ এ তিনটি দেবতার পূজার সাথে সাথে ইসলামের দাবীও আপনারা করছেন। একটু চোখ খুলে তাকালে এত প্রকারের বড় বড় রোগ আপনাদের মধ্যে দেখা যাবে যে, তা গুণেও শেষ করা যাবে না এবং লক্ষ্য করলে আপনি দেখবেন যে, কোথাও একটি দেবতার পূজা চলছে, কোথাও দু’টি দেবতার পূজা করার সাথে সাথে ইসলামেরও দাবী করা একটা হাস্যকর ব্যাপার এবং এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা খাঁটি মুসলমানদের ওপর যে অফুরন্ত রহমত নাযিল করার ওয়াদা করেছেন, ঠিক তাই আমাদের ওপর নাযিল হবে-এরূপ আশা করাও কম হাস্যকর ব্যাপার নয়।
এখানে আমি মুসলমানের জন্য প্রয়োজনীয় গুণনসমূহ উল্লেখ করবো। অর্থাৎ মুসলমান হওয়ার জন্য কমপক্ষে শর্ত কি আর মানুষের মধ্যে কমপক্ষে কি কি গুণ বর্তমান থাকলে তাকে মুসলমান বলা যেতে পারে; এখানে আমি সে বিষয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করবো।
একথাটি ভালো করে বুঝার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে কুফর ও ইসলাম সম্পর্কে সঠিক এবং সম্যক ধারণা অর্জন করতে হবে। এ সম্পর্কে মোটামুটি আপনারা জেনে রাখুন যে, আল্লাহর হুকুম পালন করতে অস্বীকার করাকেই ‘কুফর’ বা কাফেরী বলা হয় ; আর কেবলমাত্র আল্লাহর হুকুম পালন করে চলা এবং আল্লাহর ওয়াদা পবিত্র কুরআনের বিপরীত যে নিয়ম, যে আইন এবং যে আদেশই হোক না কেন তা অমান্য করাকেই বলা হয় ইসলাম। ইসলাম এবং ‘কুফরে’র এ পার্থক্য কুরআন মজীদের নিম্নোল্লিখিত আয়াতে সুস্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছেঃ
﴿وَ مَنْ لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ﴾ ( الماﺌدة-۴۴)
“আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে যারা ফায়সালা করে না তারাই কাফের।”
আদালত ও ফৌজদারীতে যেসব মোকদ্দমা উপস্থিত হয় কেবল সেই সবের বিচার-ফায়সালা কুরআন-হাদীস অনুসারে করার কথা এখানে বলা হয়নি। বরং প্রত্যেকটি মানুষ তার জীবনের প্রত্যেকটি কাজের সময় যে ফায়সালা করে সেই ফায়সালার কথাই এখানে বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি ব্যাপারেই আপনাদের সামনে এ প্রশ্ন ওঠে যে, এ কাজ করা উচিত কি উচিত নয়, অমুক কাজ এ নিয়মে করবো কি আর কোন নিয়মে করবো? এ সময় আপনাদের কাছে সাধারণত দু’প্রকারের নিয়ম এসে উপস্থিত হয়। এক প্রকারের নিয়ম আপনাদেরকে দেখায় আল্লাহর কুরআন এবং রাসূলের হাদীস। আর এক প্রকারের নিয়ম উপস্থিত করে আপনাদের নফস, বাপ-দাদা হতে চলে আসা নিয়ম-প্রথা অথবা মানব রচিত আইন। এমতাবস্থায় যে ব্যক্তি আল্লাহর দেয়া নিয়ম বাদ দিয়ে অন্যান্য পন্থা অবলম্বন করে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, প্রকৃতপক্ষে সে কুফরির পথই অবলম্বন করে। যদি সে তার সমস্ত জীবন সম্বন্ধেই এ সিদ্ধান্ত করে নেয় এবং কোনো কাজেই যদি আল্লাহর দেয়া নিয়ম অনুসরণ না করে তবে সে পুরোপুরিভাবে কাফের। যদি সে কতক কাজে আল্লাহর হেদায়াত মেনে চলে আর কতকগুলো নিজের নফসের হুকুম মতো কিংবা বাপ-দাদার প্রথা মতো অথবা মানুষের রচিত আইন অনুযায়ী করে তবে যতখানি আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধাচরণ করবে, সে ঠিক ততখানি কুফরির মধ্যে লিপ্ত হবে। এ হিসেবে কেউ অর্ধেক কাফের, কেউ চার ভাগের এক ভাগ কাফের। কারো মধ্যে আছে দশ ভাগের এক ভাগ কুফরী আবার কারো মধ্যে আছে কুড়ি ভাগের এক ভাগ। মোটকথা, আল্লাহর আইনের যতখানি বিরোধিতা করা হবে ততখানি কুফরি করা হবে, তাতে সন্দেহ নেই।
বস্তুত কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার বান্দাহ হয়ে থাকা এবং নফস, বাপ-দাদা, বংশ-গোত্র, মৌলভী সাহেব, পীর সাহেব, জমিদার, তহশীলদার, জজ-ম্যাজিষ্ট্রেট প্রভৃতি কারো আনুগত্য না করারই নাম হচ্ছে ইসলাম। আল্লাহ ছাড়া আর কারো দাস হবে না। আর কারো দাসত্ব কবুল করবে না-এটাই হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তির কাজ। কুরআন শরীফে বলা হয়েছেঃ
﴿قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْاْ إِلَى كَلَمَةٍ سَوَاء بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلاَّ نَعْبُدَ إِلاَّ اللّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئاً وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضاً أَرْبَاباً مِّن دُونِ اللّهِ فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُولُواْ اشْهَدُواْ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ﴾ (ال عمران: ۶۴ )
“(হে নবী !) আহলে কিতাবদের বলঃ আস, আমরা ও তোমরা এমন একটা কথায় একত্রিত হই, যা তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য (অর্থাৎ তোমাদের নবীরা যা বলেছে, আমিও আল্লাহর নবী হওয়ার কারণে তাই বলছি।) তা এই যে, (১) আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারোও বান্দাহ হবো না, (২) আল্লাহর উলুহিয়াতের সাথে অন্য কাউকেও শরীক করবো না এবং (৩) আমাদের মধ্যে কেউ আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকেও নিজের অভিভাবক ও মালিক বলে মান্য করবো না। এ তিনটি কথা যদি তারা স্বীকার না করে তবে তোমরা তাদেরকে পরিষ্কার বলে দাও তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলমান-অর্থাৎ আমরা এ তিনটি কথাই পুরোপুরি কবুল করে নিচ্ছি।” সূরা আলে ইমরানঃ ৬৪
অন্যত্র বলা হয়েছেঃ
﴿أَفَغَيْرَ دِينِ اللّهِ يَبْغُونَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعاً وَكَرْهاً وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ﴾ (ال عمران: ۸۳ )
“তোমরা কি আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া অন্য কারো আনুগত্য করতে চাও ? অথচ আকাশ ও পৃথিবীর প্রত্যেকটি জিনিস ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক তাঁরই আনুগত্য করে যাচ্ছে। আর সকলেই তাঁর কাছে ফিরে যাবে।”
এ দু’টি আয়াতে একই কথা বলা হয়েছে। তা এই যে, আসল দীন হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য করা, তাঁর আদেশ পালন করা । আল্লাহর ইবাদাতের অর্থ কেবল এটাই নয় যে, দিন-রাত পাঁচবার তাঁর সামনে সিজদা করলেই ইবাদাতের যাবতীয় দায়িত্ব প্রতিপালিত হয়ে যাবে। বরং দিন-রাত সর্বক্ষণ একমাত্র আল্লাহ তাআলার হুকুম পালন করে চলাকেই প্রকৃতপক্ষে ইবাদাত বলে। যে কাজ করতে তিনি নিষেধ করেছেন, তা হতে ফিরে থাকা এবং তিনি যা করতে আদেশ করেছেন তা পূর্ণরূপে পালন করাই হচ্ছে ইবাদাত। এজন্য প্রত্যেকটি কাজে এবং প্রত্যেকটি হুকুমের ব্যাপারেই কেবলমাত্র আল্লাহর খোঁজ নিতে হবে। নিজের মন ও বিবেক-বুদ্ধি কি বলে, বাপ-দাদারা কি বলে বা করে গেছেন, পরিবার, বংশ ও আত্মীয়গণের মত কি, জনাব মৌলভী সাহেব আর জনাব পীর সাহেব কেবলা কি বলছেন, অমুক সাহেবের হুকুম কি, কিংবা অমুক সাহেবের মত কি-এসব মাত্রই দেখবে না এবং সেই দিকে মাত্রই ভ্রক্ষেপ করা যাবে না। আল্লাহর হুকুম ত্যাগ করে এদের কারও হুকুম পালন করলে আল্লাহর সাথে শিরক করা হবে এবং যার হুকুম মান্য করা হবে তাকে আল্লাহর মতো সম্মান দান করা হবে। কারণ হুকুম দেয়ার ক্ষমতা তো কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলারঃ إِنِ الْحُكْمُ إِلاَّ لِلّهِ “আল্লাহর হুকুম ছাড়া মানুষ অন্য কারো হুকুম মানতে পারে না।” মানুষের ইবাদাত-বন্দেগী তো কেবল তিনিই পেতে পারেন, যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যার অনুগ্রহে মানুষ বেঁচে আছে। আকাশ ও পৃথিবীর প্রত্যেকটি জিনিসই তাঁর হুকুম পালন করে চলছে। একটি পাথর অন্য পাথরের হুকুম মতো কাজ করে না, একটি গাছ আর একটি গাছের আনুগত্য করে না, কোনো পশু অন্য পশুর হুকুমবরদারী করে চলে না।কিন্তু মানুষ কি পশু ,গাছ ও পাথর অপেক্ষাও নিকৃষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা তো শুধু আল্লাহর আনুগত্য করবে, আর মানুষ আল্লাহকে ছেড়ে অন্য মানুষের নির্দেশ মতো চলতে শুরু করবে ? একথাই কুরআনের উল্লেখিত তিনটি আয়াতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। চলবে..... হাকিকত সিরিজ.....
বিষয়: বিবিধ
২৩৯৮ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন ।
১) আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর তাসবীহ করেছে৷ তিনি মাহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী৷১
১. এটা এই ভাষণের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা । ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কোরআন, সূরা হাদীদের তাফসীর, টীকা ১ ও ২ । এ ধরনের ভূমিকা দিয়ে বক্তব্য শুরু করার কারণ হলো, পরে যা বলা হবে তা শোনা বা পড়ার আগে মানুষ যাতে একথা ভালভাবে বুঝে নেয়, যে আল্লাহ তা'আলা অভাবহীন এবং অমুখাপেক্ষী । তাঁর প্রতি কারো ঈমান আনা, সাহায্য করা এবং ত্যাগ ও কুরবানী করার ওপর তাঁর কর্তৃত্ব নির্ভরশীল নয় । তিনি এর অনেক উর্ধে । তিনি যখন ঈমান গ্রহণকারীদের ঈমানের ব্যাপারে একনিষ্ঠ হওয়ার শিক্ষা দেন এবং বলেন সত্যকে উন্নতির করা জন্য জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করো তখন এ সব তাদের নিজেদের কল্যাণের জন্যেই বলেন । তাঁর ইচ্ছা তাঁর নিজের শক্তি ও ব্যবস্থাপনার সাহায্যেই বাস্তব রূপ লাভ করে । কোন বান্দা তাঁর ইচ্ছা বাস্তাবায়নের সামান্যতম তৎপরতাও যদি না চালায় বরং গোটা পৃথিবী সে পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে বদ্ধপরিকরও হয় তবুও তার নিজের শক্তি ও ব্যবস্থাপনা দ্বারা তা বাস্তবরূপ লাভ করে ।
ভালো লাগলো ধন্যবাদ
সুন্দর লিখেছেন । ভালো লাগলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন