আল্লাহ ফাসিকদের হিদায়াত দান করেন না৷
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০২ মার্চ, ২০১৪, ০২:৩৭:৩৫ দুপুর
যেসব মানুষ ইচ্ছা করে বাঁকা পথে চলতে চায় অথবা তাদেরকে সোজা পথে চালান এবং যারা আল্লাহর নাফরমানী করার জন্য বদ্ধপরিকর তাদেরকে জোর করে হিদায়াত দান করা আল্লাহর নিয়ম বা রীতি নয় । এর দ্বারা একথা আপনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেল যে, কোন ব্যক্তি বা জাতির গোমরাহীর সূচনা আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয় না বরং স্বয়ং সেই ব্যক্তি বা জাতির পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে । তবে এ ক্ষেত্রে আল্লাহর নিয়ম বা বিধান হলো, যারা গোমরাহীকে গ্রহণ করে তিনি তাদের জন্য সঠিক পথে চলার উপায় -উপকরণ নয়, বরং গোমরাহীর উপায় -উপকরণেই সরবরাহ করেন যাতে যেসব পথে তারা নিজেদেরকে নিয়ে যেতে চায় সেসব পথে যেন অবাধে যেতে পারে । আল্লাহ তো মানুষকে বাছাই করে নেয়ার স্বাধীনতা (Freedom of choice) দিয়েছেন । এরপর এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রতিটি মানুষের বা মানুষের দলও গোষ্ঠীর নিজের কাজ যে, তারা তাদের রবের আনুগত্য করবে কি করবে না এবং সঠিক পথ গ্রহণ করবে না বাঁকা পথের কোন একটিতে চলবে । এই বাছাই ও গ্রহণ-বর্জনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে কোন জবরদস্তি নেই । কেউ যদি আনুগত্য ও হিদায়াতের পথ বেছে নেয় তাহলে আল্লাহ তা'আলা তাকে জোর করে গোমরাহী ও নাফরমানীর পথে ঠেলে দেন না । আর কেউ যদি নাফরমানী করা এবং সঠিক পথ অনুসরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে তাকে জোর করে আনুগত্য ও হিদায়াতের পথে নিয়ে আসাও আল্লাহর নিয়ম নয় । কিন্তু এটাও একটি বাস্তব ব্যাপার যে, কেউ নিজের জন্য যে পথই বেচে নিক না কেন সে পথে চলার জন্য উপায়-উপকরণ আল্লাহ তা'আলা যতক্ষণ সরবরাহ না করেন এবং অনুকূল অবস্থা ও পরিবেশ -পরিস্থিতি সৃষ্টি না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত সে ঐ পথে কার্যত এক পাও অগ্রসর হতে পারে না । এটাই হলো আল্লাহর দেয়া তাওফীক বা আনুকূল্য যার ওপর মানুষের প্রতিটি চেষ্টা -সাধনা ফলপ্রসূত হওয়া নির্ভর করে । কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি ভাল কাজের তাওফীক আদৌ না চায় বরং উল্টা মন্দ ও পাপ কাজের তাওফীক চায় তাহলে সে তাই লাভ করবে । আর যখন সে মন্দ ও পাপ কাজের তাওফীক লাভ করে তখন তার মন-মানসিকতার গোটা ছাঁচ এবং চেষ্টা -সাধনা ও কাজকর্মের পথও বাঁকা হয়ে যেতে থাকে । এমন কি ভাল ও কল্যাণকে গ্রহণ করার ক্ষমতা ও যোগ্যতা ধীরে ধীরে তার মধ্যে থেকে নিঃশেষ হয়ে যায় । "তারা বাঁকা পথ ধরলে আল্লাহও তাদের দিল বাঁকা করে দিলেন" কথাটির অর্থ এটাই । এ অবস্থায় যে ব্যক্তি নিজে গোমরাহী কামনা করে গোমরাহীর জন্য তৎপর থাকে এবং গোমরাহীতে নিমজ্জিত থেকে অধিকতর গোমরাহীর দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য সমস্ত চিন্তা-ভাবনা ও চেষ্টা -সাধনা নিয়োজিত করে তাকে জোর করে হিদায়াতের দিকে ফিরিয়ে দেয়া আল্লাহর আইন ও নিয়ম-নীতির পরিপন্থী ব্যাপার । কারণ যে পরীক্ষার জন্য মানুষকে দুনিয়ায় বাছাইয়ের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে এরূপ কাজ সেই উদ্দেশ্য লক্ষকেই নস্যাত করে দেবে । আর এভাবে হিদায়াত লাভ করে মানুষ সঠিক পথে চললেও সে জন্য তার কোন প্রকার বিনিময় বা উত্তম প্রতিদান লাভের উপযুক্ত বিবেচিত হওয়ারও যুক্তিসংগত কোন কারণ নেই । এ ক্ষেত্রে তো বরং যে ব্যক্তি বাধ্যতামূলক হিদায়াত লাভ করেনি এবং গোমরাহীর মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে তারাও কোন প্রকার শাস্তি লাভ না করা উচিত । কারণ এমতাবস্থায় তার গোমরাহীর মধ্য থেকে যাওয়ার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আল্লাহর উপরই বর্তায় । সে বরং আখেরাতে জবাবদিহির সময় এ যুক্তি পেশ করতে পারে যে, আপনার কাছে বাধ্যতামূলকভাবে হিদায়াত দান করার ব্যবস্থা যখন ছিল তখন আপনি আমাকে এই কৃপা থেকে বঞ্চিত রেখেছিলেন কেন৷'আল্লাহ তা'আলা ফাসেকদের হিদায়াত দান করেন না' বাণীটির তাৎপর্য এটাই । অর্থাৎ যেসব মানুষ নিজেরাই তাদের জন্য গোনাহ ও নাফরমানীর পথ বেছে নিয়েছি তিনি তাদেরকে আনুগত্যের পথে চলার 'তাওফীক' দেন না ।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৯ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাই এটা কোন আয়াতে আছে জানালে উপকৃত হতাম
আল্লাহ ফাঁসিকদের হিদায়াত দান করেন না৷ সুরা আস সফ-৫ নং আয়াত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন