জাওয়াহিরি ড্রোন ও দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তি যুদ্ধা
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৩৯:১৭ সকাল
ছবি দ্বিতীয় মুক্তি যুদ্ধে ব্যাস্ত আমাদের জাফর ষাঁড় ........
আল কায়েদার সম্ভাব্য আক্রমন ঠেকাতে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার জ্যাফ্রিক ড্রোন। ড্রোন কমান্ডার জাফরিকবাল জানান, এই ড্রোন দিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্ব থেকে আল কায়েদাকে নির্মুল করা সম্ভব হইবে।
মুক্তিযুদ্ধ কালে জাফর ইকবাল ও হুমাউন আহাম্মেদের যুদ্ধে যাওয়ার যথেষ্ট বয়স হয়েও যায় নাই। -- ঠিক না, জাফরের জন্ম ১৯৪৯ সালে, তার মানে ৭১ সালে তার বয়স ছিল ২৩ বছর। জাফর চ্যারের বয়স যদি ২০+ হয়, তারপরেও যুদ্ধে যায় নাই, তবে আর কত বয়স লাগব? বড় ভাই কবরে গেলে ও আমি দ্বিতীয় প্রজন্মের যুদ্ধে ব্যাস্ত থাকবার চাই কিন্তু আবার জাওয়াহারী মাওয়াহিরিকে নিয়ে আইলে তো আমার কি হইব- শ্রদ্ধেয় জাফর ষাঁড়
এইদিকে জাওয়াহিরি সাহেব আমাকে ফোন করছিলেন। আমি বললাম দেশে আসেন.... আমি হেফাজতরে পানি খাওয়াইছি, আপনারে ডাব খাওয়াবো। উনি আমার কথা শুনলেন না। শুনলেন মতি-মাহফুজের কথা। ভিডিও বার্তা পাঠাইলেন। আমাগো ড্রোনগুলা নাহয় সাইজে একটু ছুটু, তাই বইলা থ্রেট দিবেন? এইটা একটা মুরুব্বি মানুষের কথা হইল.......
''জাওয়াহিরির বক্তব্যঃ একটি অশ্বডিম্বের পেছনে ছুটোছুটি''
শুরুতেই বলে রাখি, আল কায়েদা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরির যে ভিডিও বার্তাটি নিয়ে আওয়ামী-বাম মিডিয়াগুলো হুলস্থূল মাতামাতি করছে, টকশো করতে করতে মাথার ঘাম পায়ে, আর পায়ের ঘাম মাথায় তুলেছে, সেই ভিডিওবার্তাটিকেই বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘অনির্ভরযোগ্য’ বলে প্রেসবার্তা দিয়েছে। তাই এই বক্তব্য নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের যে প্রয়োজনীয়তা ছিল, তা গতকাল রাতে রাতেই ফুরিয়ে গেছে। এখন আমি জাওয়াহিরির সেই কথিত বক্তব্যের মূল পয়েন্টগুলো এবং আমার কিছু মন্তব্য তুলে ধরব। বক্তব্যের মূল পয়েন্টগুলোঃ
১) বাংলাদেশ আজ এমন এক ষড়যন্ত্রের শিকার, যাতে ভারতীয় দালাল, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনা নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষমতালোভী, বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিবিদেরাও জড়িত। উপমহাদেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মুসলিম উম্মাহ এ ষড়যন্ত্রের মূল শিকার।
মন্তব্যঃ এখানে উনি মিথ্যে কী বলেছেন?
২) উপমহাদেশের মুসলমান রক্ষার নামে ৬০ বছর আগে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও দেশটিতে শরিয়ার কোনো স্থান নেই। ৪০ বছর আগে জনগণের মুক্তির দাবিতে স্বাধীনতা পেলেও বাংলাদেশ আজ পরিণত হয়েছে কারাগারে। যেখানে মুসলমানদের সম্মান ও পবিত্র স্থান অপবিত্র করা হচ্ছে।
মন্তব্যঃ একেবারেই সত্য কথা।
৩) ‘ইসলামবিরোধিতার’ জায়গায় ‘স্বার্থ’ এক হওয়ায় এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পাচ্ছে।
মন্তব্যঃ ১০০% ঠিক।
৪) বাংলাদেশের রাজপথে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের অপরাধ ছিল একটাই, ইসলামবিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের সঙ্গে কতিপয় বিপথগামী নাস্তিক্যবাদীর যোগসাজশের প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছিল।
মন্তব্যঃ কথাটিতে মিথ্যের লেশমাত্র নেই।
৫) শত শত আলেমকে কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। তাঁদের জেলে আটক রাখা হয়েছে, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। কোনো অপরাধ না থাকার পরও তাঁদের মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ইসলামবিরোধীদের বিরোধিতা করাই ছিল তাঁদের একমাত্র অপরাধ।
মন্তব্যঃ জাওয়াহিরিকে সালাম, তিনি একটি কঠিন সত্য তার বক্তব্যে তুলে ধরেছেন।
৬) সত্যিকারের আলেমদের’ কাছে জড়ো হয়ে তাদের সমর্থন ও সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান। আর উলামায়ে কেরামদের ওপর ইসলাম ‘যে দায়িত্ব দিয়েছে’ তা পালনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মন্তব্যঃ সহমত।
৭) সবশেষে তিনি বাংলাদেশে ‘ইসলামবিরোধী’দের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনের (ইন্তিফাদা) ডাক দিয়েছেন।
মন্তব্যঃ জাওয়াহিরি এই 'প্রতিরোধের' আহ্বান জানালেও কী না জানালেও কী? গত ৫ বছর যাবত আমরা তো রাজপথে প্রতিরোধ আন্দোলন করেই যাচ্ছি। গত বছরের ৫ই ফেব্রুয়ারির শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন থেকে শুরু করে ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ৫ই মে সহ আজকের দিন পর্যন্ত আমরা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমাদের শত শত ভাইকে হারিয়েছি। জাওয়াহিরি আহ্বান জানালেও প্রতিরোধ আন্দোলন চলবে, না জানালেও চলবে। অতএব এটা কোন ব্যাপার না।
এবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন, জাওয়াহিরি যদি আদৌ এই ধরণের বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি ভুল কোন্ জিনিসটি বলেছেন। বাংলাদেশে কি প্রতিদিন হত্যাকাণ্ড ঘটছে না? ভারত কি তার ষড়যন্ত্রের জাল এই দেশে বিছায়নি? একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি অন্য একটি দেশের সমস্যাগুলো তুলে ধরে কিছু বক্তব্য রেখেছেন মাত্র। এই ধরণের বক্তব্য প্রতিদিন কত সংগঠনই তো দিচ্ছে। তিনি যদি বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে বোমা হামলা করার হুমকি দিতেন, বাংলাদেশের মানুষকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার করার কথা বলতেন তাহলে বিষয়টি আতঙ্কের ছিল। কিন্তু একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রধান হিসেবে তাঁর বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলাটা আমি দোষের কিছু দেখছি না। উনার নাম 'জাওয়াহিরি' আর ওনার সংগঠনের নাম 'আল কায়েদা', এটা শুনেই যদি কলিজায় কামড় খেয়ে পুরো বক্তব্যের সমালোচনা করা হয় তাহলে তা একান্তই কারো চেতনাগত সমস্যা বলেই আমি মনে করি।
বিষয়: বিবিধ
১৭০২ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহ মত
মন্তব্য করতে লগইন করুন