feeling happy to see the light.

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:২৮:৫৭ সকাল



দেখুন, একটা সময় বন্যা হতো, শুনতাম কত কত মানুষ মারা যাচ্ছে, পানিতে ভেসে ওঠা ফুলে যাওয়া মাংসল শরীরের ছবি দেখেছিলাম, হ্যাঁ সাদা কালো ছিল সেই ছবিগুলো। বাসার লাইব্রেরীতে আব্বুর বইগুলোয় বন্যা জলোচ্ছ্বাস আর দুর্ভিক্ষের ছবিগুলো দেখে হৃদয়টা হাহাকার করে উঠত। আমার বয়স তখন কত ৫/৬ বছর, সেই পিচ্চিকাল থেকেই পেপার পত্রিকার দিকে বিশেষ আগ্রহ, বর্ণমালা শেখার সময় থেকেই না'কি আমি পেপার পড়া শুরু করেছিলাম। কি বুদ্ধিজীবী মার্কা কারবার!! আমার ঐ ছোট্ট বুকে কষ্টের অনুভূতিগুলো ছিল আজকের চেয়ে ভিন্ন, তখন ব্যথাগুলো খুব বুকে লাগতো। ম্যাগাজিনে জয়নুলের সেই বুকের খাঁচা দৃশ্যমান ছবিগুলো দেখতাম আর চুপচাপ ভাবতাম।

অত বিরাট বিরাট রচনামুলক প্রবন্ধ পড়ার চেয়ে ছবিগুলোই ছিল আমার প্রধান আকর্ষণ।



বন্যা সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহের একটা উপকারী দিক হল এরা এই অঞ্চলের মানুষের জনসংখ্যার একটা সুসম ভারসম্য রক্ষা করতো। হয়ত অনেক মানুষের জীবন চলে যেতো, অনেক এতিম এবং মিসকীনের সংখ্যা বেড়ে যেত, অনাহারী অসহায় মানুষের সংখ্যা বাড়ত, কিন্তু মহাকালের কাছে মানুষের জীবনের কি মূল্য আছে? প্রকৃতি যখন ইচ্ছা মানুষ খুন করতে পারে, এবং তাকে কেউ শাস্তি দিতে পারে না, কোন রকমের আইনের আওতায়ও আনা সম্ভব না। অনেকটা স্বৈরাচারী। ঐ তুফানে জলোচ্ছ্বাসে কিংবা দুর্ভিক্ষেও তো অনেক মানুষ প্রার্থনা করেছে, অনেক মানুষ চোখের পানি ফেলে স্রষ্টার কাছে আকুল আবেদন করেছিলো এই জঘন্য সময় থেকে তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য, কিন্তু কি হয়েছে?? মহা বিপদে কেউ কি উদ্ধার পেয়েছিলো?? দূর্যোগ একটি অগনতান্ত্রীক আয়োজন।



এরপর অনেকদিন কোন খরা বন্যা কিংবা দুর্ভিক্ষ দুর্যোগ আসেনি, যা'ও এসেছিলো মানুষ ততদিনে শক্ত ভাবে প্রস্তুতি নিতে শিখেছে, মানুষ হয়তো প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই করতে শিখেছে, হয়ত সচেতন হতে শিখেছে অথবা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা থেকে নিজেদেরকে আগেভাগেই সরিয়ে নিয়ে এসেছে। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হচ্ছে, মারা যাচ্ছে খুব কম। এবং বহুকাল দুর্ভিক্ষ না থাকায় মানুষ খেয়ে পড়ে হষ্ট পুষ্ট হয়ে বাচ্চা বিয়ানো শুরু করেছে মহানন্দে। এবং এতে করে আবার জনবহুল হতে শুরু করেছিলো স্বদেশ। আবার বেড়ে যাচ্ছে বাতাসে গাড় নিঃশ্বাসের গন্ধ, আবার বেড়েছে চোখ, নাক মাথা, হাত আর পা...



কিন্তু সেই জনসংখ্যা কমানোর প্রাকৃতিক প্রয়োজন তো রয়েই গেছে। মানুষ তো কমাতে হবে... আবার মানুষকে এতিম হতে হবে, মৃত হতে হবে, মিসকিন হতে হবে। ঘরবাড়ী হারাতেই হবে। কিভাবে?? মানুষ যে শিখে গেছে স্বৈরাচারী জলোচ্ছ্বাস বন্যা আর দুর্ভিক্ষের সাথে লড়াই করতে- সেই পুরাতন পদ্ধতি তো আর কাজে আসবে না, কারণ একই প্রতিকূলতার সঙ্গে একাধিক বার লড়াইয়ে মানুষ প্রতিবারই নতুন কিছু শিখে, হয়ত প্রাণ যায় অনেক, কিন্তু লড়াইয়ের পদ্ধতিতে সে আনকোরা থেকে সুদক্ষ হতে শেখে, স্রষ্টাই মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে তার মধ্যে সৃষ্টি করে দেন অভিজ্ঞতার শিল্ড। যার ফলে নতুন আক্রমণটাও হয় আরও অনেক বেশী ক্রিয়েটিভ আর নৃশংস।



এই দেশ বন্যা খরা দুর্যোগ দুর্ভিক্ষ থেকে লড়াই করে এসে এখন সম্মুখীন হয়েছে রাজনৈতিক দুর্যোগের। বলেছিলাম দুর্যোগ অগনতান্ত্রীক। যে দুর্যোগ একই সঙ্গে জনসংখ্যা হ্রাসে ভূমিকা রাখছে, এতিম করছে, মিসকিন করছে, গৃহহারা আর লাঞ্ছিতদের মিছিল লম্বা থেকে লম্বাতর করছে।

প্যাসিমিষ্টিক মানুষগুলো এতে অন্ধকার দেখে... অথচ আমি কেবল বিস্মিত হই, কি করে আজ অবধি টিকে আছে ক্ষমতাহীন লড়াই করে চলা মানুষগুলো? কোন হিম্মত তাদেরকে আজো সেই জলোচ্ছ্বাস বন্যা আর খরা দুর্ভিক্ষের মত এই দুর্যোগেও লড়াই করতে শেখাচ্ছে?



এ লড়াইও শেষ হবে একদিন, মানুষ টিকে থাকবে, কারণ যারা মরে যায় তারা বেঁচে যায়, আর যারা বেঁচে থাকে তারা শিখে যায় কিভাবে বাঁচতে হয় মাথা উঁচু করে। এ জাতি প্রকৃতির সাথে লড়াই করা জাতি, প্রকৃতি হয়ত তাদের জীবন কেড়ে নিয়েছে কিন্তু কেড়ে নিতে পারেনি আবার বেঁচে ওঠার তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে।-H Al Banna

বিষয়: বিবিধ

৩৩৮০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

162007
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৪৫
হতভাগা লিখেছেন : লাইট আছে , তবে আপনাদের চোখে তা ধাঁ ধাঁ লাগিয়ে দিয়েছে ।

অন্ধকারে জীবন যাপন করলে সামান্য আলোও চোখে জ্বালা ধরায় ।
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
116265
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনার জন্য প্রযোয্য।
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫৪
116276
হতভাগা লিখেছেন : Winking
১৪ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩০
116666
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : ~:>
162142
১৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৫
ভিশু লিখেছেন : খুব ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
১৪ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৯
116663
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পায়।। ভাল লাগে আপনার উপস্থিতি.।। মন জুড়ায় বাবুর চাহনি .।। ভাল থাকুন ।। মহান আল্লাহ্‌ আপনার মঙ্গল করুন।।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File