দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শন ও আমরা

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:৫৭:৩০ বিকাল



কিছুক্ষণ আগে এক ভাই ম্যাসেজ দিয়েছেঃ

‘ভাই, রবির উদ্যোগে ২৭,১১৭ জনকে নিয়ে যদি দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শন হতে পারে তাহলে আমাদের জন্য এর চেয়ে দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শন তো কোন ব্যাপারই না, তাই না? ঢাকা শহরে বা চট্টগ্রামে ৬০-৭০ হাজার জন নিয়ে দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শন তো ঘণ্টাখানেকের ব্যাপার। এরকম একটি উদ্যোগ কি নেয়া যেত না?’

আমার উত্তরঃ

ভাই দেখেন রবি তাদের এই প্রোগ্রামের জন্য অনেক দিন ঢাকঢোল পিটিয়েছে, টিভি-পত্রিকায় অভিনেতা-অভিনেত্রী, মডেলদের ব্যবহার করে তারা অনেক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। কিন্তু মোটামুটি ২৬-২৭ হাজার মানুষ হাজির করতেই তাদের হিমশিম খাওয়ার জোগাড়। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আনিয়েছে, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আজকের বিজয় দিবসের কুচকাআওয়াজ বাদ দিয়ে এই নাটকের জন্য তারা সরকারকে দিয়ে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীকে এনেছে, এ ছাড়া আরো অনেক কিছুই করেছে, কিন্তু এরকম ‘দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শনের’ আল্টিমেট রেজাল্টটা আসলে কী? দেশের জন্য কী বা কোন্‌ ধরণের মর্যাদা বয়ে আনবে? গিনেজ বুকে নাম লেখাবে এই তো? এতে লাভটা কী? শোনেন, আমরা যারা ইসলামী আন্দোলন করি, আমাদের জন্য এইসব দীর্ঘ পতাকা প্রদর্শন, একযোগে বেলুন ওড়ানো প্রভৃতি কোনো ব্যাপারই না, কিন্তু এইসব কাজ চোখে দেখতে অনেক সুন্দর লাগলেও আল্টিমেটলি এইসবের কোন রেজাল্টই নাই। ওরা এইসব ভংচংকে দেশপ্রেমের কাজ হিসেবে প্রচার করলেও এগুলো আদৌ দেশপ্রেমের কাজ তো নয়ই বরং দেশপ্রেমের নামে দেশেরই সাথে এক অদ্ভুদ মশকরা করা। এই যে আমরা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, পাঠাগার, মেডিকেল কলেজ, আধুনিক হাসপাতাল, কোচিং সেন্টার, ব্যাংক, বীমা সহ শত শত হাজার হাজার উন্নয়নমূলক ইত্যাদি কাজ করেছি বা করছি এইসবের ১%-ও কী এই তথাকথিত দেশপ্রেমিকরা করেছে? রবি বলুন, শাহবাগি বলুন আর বাম-নাস্তিকদের কথাই বলুন, ওদের কাছে দেশপ্রেম মানে এইসব (পতাকা প্রদর্শন, একযোগে জাতীয় সংগীত গাওয়া, বেলুন ওড়ানো)। ওরা দেশপ্রেমের নামে এইসব ভংচং করে কোটি কোটি টাকার বানিজ্য করছে, কয় টাকা দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করছে? অতএব সত্যিকারের কোন দেশপ্রেমিক এইসব ভংচং কাজ করে তার জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পুরষ্কারের আশায় দেশের জন্য কেউ যদি ১টাকারও কাজ করে বা দেশ গড়ার কাজে এতোটুকু শ্রম দেয় তাহলেই তার জীবন সার্থক, মৃত্যুর পর মানুষ তার জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া করবে, নইলে সে যেমন সারাজীবন শুধু বেলুন ওড়ানোর কাজকেই দেশপ্রেম মনে করেছে, তেমনি মৃত্যর পরেও মানুষ তার জন্য দোয়া না করে শুধুই বেলুন ওড়াবে। অর্থাৎ যার যা প্রাপ্য সে সেটাই পাবে। আল্লাহ্‌ বলছেন,

‘‘কিন্তু তখন কি অবস্থা দাঁড়াবে যখন আমি তাদেরকে একদিন সমবেত করবো, যে দিনের আগমনে কোন সন্দেহ নেই। আর নিজেদের কৃতকর্ম তাদের প্রত্যেকেই পাবে, তাদের প্রাপ্য প্রদান মোটেই অন্যায় করা হবে না।’’

-সূরা আলে ইমরানঃ ২৫

Abdullah Russel

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File