আমি এক হতভাগ্য বাবা! আমি এক হতভাগ্য বাবা!
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৪৩:১৯ সকাল
এক জন বিডিআরের আত্মকথন ( আমি কোন বেইমান নই। )
রাত নাই দিন নাই এক কাপড়ে পাঠিয়ে দিয়েছে জঙ্গলে। সারাদিন বাঙ্কারে থেকেছি। কোন রকম বিশ্রাম দেওয়া হয়নি। দেশের জন্য কাজ করেছি। একদিন পাহাড়ী জঙ্গলে ডিউটি পড়েছে। এক কাপড়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের টিমে একজনের
মাত্র একটি গামছা ছিল। দুইদিন তিন দিন পরে পরে একদিন ঐ গামছা পরে হ্রদের পানিতে গোসল করেছি। কোন প্রকার দূর্ণীতিতে জড়ায় নাই। অথচ আজ আমাদের হল সাজা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বলেছিল, হয় সাক্ষি দাও না হলে জেলে যাও । সাক্ষি ছিল সাদা কাগজে সাইন করে দিতে হবে। যা লিখার তারা লিখে নিবে। আদালতে যাওয়ার আগে তাদের কাছে লিখিত কপি দেয়া হবে। তার আলোকে কথা বলতে হবে। কিন্তু যারা আমাদের ব্যাটেলিয়নের লোক না । যাদেরকে কোন দিন দেখিনি, চিনি না তাদের বিরুদ্ধে কেমন করে সাক্ষি দেব। পরিবারের সাথে কথা বল্লে জানালো, এমন মিথ্যা সাক্ষি দিয়ে আল্লাহর কাছে অপরাধী হওয়ার কোন দরকার নেই তার চেয়ে বরং জেলে যাও। তার পর থেকে এই অবস্থায় সরকারের
মহা ষড়যন্ত্রের বলি হলাম। এখন আমার পরিবার কিভাবে দিন কাটাচ্ছে তা জানা নেই । ৪টি বছর আমি জেলে আছি।
সুনামগঞ্জ থেকে কাশিমপুরে আশার পয়সা না থাকায় বাবাকে দেখতে আসতে পারেনা। ছেলে রা। আর এ জেল থেকে সুনামগঞ্জ বদলি হয়ে যেতে ১৫ শ টাকা লাগবে যে কারণে যেতে পারছিনা। মাত্র ২০০ টাকা দিতে পারিনাই
বলে আমাকে টাওয়ারে রাখা হয়েছে ২ বছর। টাওয়ারে খারাপ ছেলেরা থাকে বলে এখানে কেউ আসেনা। এখানে কাওকে ওয়ার্ড কাটলে তারা আরো কিছু টাকা ঘুষ দিয়ে এখান থেকে ওয়ার্ডে চলে যায়। এই টাওয়ারের ছেলেরা কিছু থেকে কিছু বাধলেই ব্লেড দিয়ে পোচা পুচি করে বলে কেউ ভয়ে এখানে আসতে চায় না। আর আমার তো আর কোন টাকা নেই । ছেলের ৪ বছরে একদিন ও দেখতে আসতে পারেনাই । এতই গরীব। আমাদের এলাকার এক জন মহিলা গাজীপুরে গার্মেন্টে কাজ করে তাকে মাঝে মাঝে ফোনে বলে দেয় ‘আমার বাবাকে একটু দেখে এসে সে কেমন আছে এটা যেনা জানায়,
সেই মহিলা কয়েক মাস পরে এসে এসে আমাকে দেখে গিয়ে আমার পরিবার কে জানায়। এভাবেই তারা বাবার সৃতি নিয়ে বেচে আছে । ৪ বছরে যদি একবার না দেখতে আসতে পারে তাহলে কেমন করে কি খায় এটা আমি ভাল ভাবে বুঝতে পারি। যে কারণে তাদের ভুলে থাকতে চেষ্টা করে ও পারিনা। আমি এক হতভাগ্য বাবা! আমি এক হতভাগ্য বাবা!
আমি এক হতভাগ্য বাবা! প্রশ্ন শ্রষ্টার কাছে এর বদলে আমাকে হাশরে কি দেওয়া হবে ?
আমি কোন বেইমান নই।
##
পিলখানা হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাকে ফাঁসি না দেয়া পর্যন্ত ফাঁসির দড়ি যেন না নামানো হয়।
আজ নিরীহ যাদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে ফাঁসির দড়িতে,সেই একই দড়ি যেন থাকে,একই জল্লাদ যেন থাকে,ঠিক একই মঞ্চে শেখ হাসিনা ও অন্যান্যদেরও ফাঁসি হবে।আশায় থাকলাম।
আজ বিচারালয়ে রেজাউল নামে একজন কান্নাস্বরে বলে উঠলেন,'আমাকে ১ মিনিট কথা বলার সুযোগ দিন,আমি সেই রেজাউল না।আমার কথা না শুনেই কেন আমার বিচার করা হচ্ছে?
বিচারক পুলিশদের বললেন,'লোকটিকে থামান।'
শুধু এই ১ টি ঘটনা না,এমন শত শত ঘটনা আছে যা দ্বারা ছোট শিশুও বুঝতে পারবে এই বিচার সম্পূর্ণই নাটক।জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হল,বাকী যারা ছিল তাদের নিজেদের ভাই হত্যার মামলায় নাটক সাজিয়ে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
কি নির্মম উপহাস!
দারুন! আমরা চোখের সামনে দেখলাম এক মহিলা কীভাবে তার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে দেশে আসলেন,সেনাবাহিনীর দেশসেরা অফিসারদের হত্যা করলেন আর সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পঙ্গু করে দিলেন।
প্রিয় জাতি,যেই বৃদ্ধ লোকটিকে আজ পায়ে লোহার বেড়ী পরিয়ে বিচারালয়ে আনলে,ফাঁসি দিয়ে হত্যার নির্দেশ দিলে,,সেই বৃদ্ধ লোকটি যুগের পর যুগ তোমার দেশের সুরক্ষার জন্য,তোমার জনগণের নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছিল,বহিঃশত্রুর সাথে জান বাজী রেখে যুদ্ধ করেছিল।
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ,আর কতটা নির্লজ্জ হলে জাতি এমন অকৃতজ্ঞ হয়!
আর কোন দেশ প্রেমিক রাখবেনা হাসিনা , দেশ প্রেমিক থাকলে তো দেশ ইন্ডিয়া হইবো না ।অকারণ ভাবনা চলার পথকে অনেক সময় জটিল করে দেয়।প্রিয় মানুষের মনে যদি শুধু আখেরাতের কল্যাণের চিন্তা থাকে তাহলে দুনিয়ার সকল অমঙ্গল থেকে সে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
অন্যায়ভাবে একজনকে হত্যা করা, সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করার সমতুল্য ।আর সেই হত্যাকান্ডে লিপ্ত বর্তমান জাহেলি অবৈধ আওয়ামী সরকার । আমাদের অসংখ্য নেতা কর্মীকে হত্যা, গুম, পঙ্গু করেছে। জেল , রিমান্ড, নির্যাতন করেছে এবং করছে । আমাদের প্রিয় নেতাদের(মুজাহিদ, সাঈদি,আজহার,আব্দুল কাদের মুল্লা......।।) ফাঁসীর রায় দিয়েছে। এর পর ও সংগঠনের সকল কর্মসূচীতে আমাদের জনশক্তির সরব সক্রিয় উপস্থিতি বাংলার জমিনে দ্বীন কায়েমের আশা জাগায়। অপর দিকে সাধারন জন সম্পৃক্ততার কারনে জন সমর্থন ও বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরেও আমাদের দুর্বলতার দিক কম নয় ,এজন্য মহান রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।মহান আল্লাহ আমাদের সকল তৎপরতা তার দ্বীনের জন্য কবুল করুন। আমিন চুম্মা আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৯৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন