চর্বিত চর্বণ।মউদুদি পুত্র যখন নয়নের মনি।দেখি কে কি বলে।
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ০৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:৩৮:৪৬ দুপুর
কিনানের আধুনিক ভার্সন হায়দার ফারুক।
আমার তো বিশ্বাস জামায়াত-শিবিরের ১জন লোকও পাওয়া যাবে না যারা এই ভন্ডের কথায় সামান্য একটু দ্বিধান্বিত হবে। যারা এখনও সংগঠনের সাথে জান-মাল দিয়ে লেগে আছে, তারা জীবন থাকতে আর এটা ছেড়ে যাবে না। আমরা তো মওদূদী র. এর পরিবারকে ভালোবাসি না বা পরিবারের ব্যাপারে আমরা চিন্তাও করি না। মওদূদী র. এর সাহিত্যের ধারের কাছে এখনও কোন সাহিত্য আসতে পারে নাই। আমরা তাঁর অমর সাহিত্যকর্ম থেকে উপকৃত হচ্ছি। আমরা রাসূলের সা. সৈনিক। আর কুলাঙ্গার কোন পুত্রের জন্য বাপের শাস্তি হবেনা। মওদূদী র. এর কর্মফল তাঁরই জন্য। আর তাঁর পুত্রদের কর্মফল পুত্ররা ভোগ করবে। মাঝখানে ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চা - আমাগো দেশের ছাগল বামগুলা, দুধ খাওয়া দেইখা তিড়িং বিড়িং লাফাইলো। আমাগোরে একটু বিনোদন দিলো।
৭ দিন আগে প্রথম আলুতে প্রকাশিত মওদূদী পুত্র ফারুক মওদূদীর লেখা পড়ে যারা বগল বাজাচ্ছেন, তারা ১০ বছর আগে মওদূদী কন্যা হুমায়রা মওদূদীর লেখা ' আমার আব্বা আম্মা ' বইটি বাজার থেকে ৭০ টাকা দিয়ে কিনে পড়ে দেখেন ।
মদিনা , আল আজহার ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়ে মওদূদী ( রহ) বই পাঠ্য অথচ মওদূদী ইসলামী চিন্তাবিদ - প্রথম আলু এমন কথা জীবনেও লিখেনি। কিন্তু তার এই বখে যাওয়া বৈমানিক পুত্রধনকে ' উপমহাদেশের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ' আখ্যা দিয়ে প্রথম আলু যেভাবে সবাইকে স্পিকার বানানোর চেষ্টা করছে তাতে জানতে চাই -
'স্পিকার হবার কত দেরি , সাকা চৌধুরী ? '
শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুন, জাহানারা ইমামের সন্তানেরা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিতে নেই কেন?
প্রথম আলোতে মতিউর রহমানের ছেলে এবং আমাদের সময়তে আবু হাসান শাহরিয়ারের ছেলে নেই কেন?
তার মানে কি এইসব সন্তানেরা তাদের পিতার আদর্শ ধারণ করে না???
মাওলানা মওদূদীর সন্তানদের মধ্যে হায়দার ফারুক ছাড়া বাকী সবাই পাকিস্থান জামায়াতে ইসলামীর সাথে জড়িত। বড় ছেলে এবং এক মেয়ে জামায়াতের রুকন।
মাওলানা নিজামীর ছেলে-মেয়েদের কেউ জামায়াতের রুকন হতে না পারলেও সবাই দেশে-বিদেশে ইসলামি আন্দোলনের কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
একই ভাবে গোলাম আযম সাহেবের ৬ ছেলের প্রায় সবাই দেশে-বিদেশে ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।
এর বাইরেও জামায়াত নেতাদের কোন সন্তান যদি ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়িত না থাকে, তাহলে তা ঐ পিতার ব্যর্থতা বা একান্তই আল্লাহ্র ইচ্ছা বলে আমাদেরকে মেনে নিতে হবে। হযরত নূহ আঃ এবং লূত আঃ এর সন্তানদের কথা তো আমাদের জানা আছে। পিতা নবী, কিন্তু সন্তান তাঁর অনুসারী হয়নি অথবা পিতা আলেম কিন্তু ছেলে জালেম, এমন অসংখ্য উদাহরণ আমাদের জানা আছে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, জামায়াত নেতাদের মধ্যে আমি আজ পর্যন্ত এমন কাউকে দেখিনি যিনি তাঁর সন্তানদের জামায়াত-শিবির করতে নিষেধ করেছেন। উপরন্তু ছেলে শিবির না করার কারনে ছেলের খাবার বন্ধ করে দিয়েছেন এমন অনেক পিতা-মাতাকে আমি দেখেছি।
অন্য সবার কথা বাদ দিলাম, আমি আমার কথা বলি, আমি আল্লাহ্র কাছে সবসময় দোয়া করি, হে আল্লাহ্ তুমি আমাকে নেককার সন্তান দান করো, যে সন্তান জামায়াত শিবিরের হয়ে ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাবে। কারন ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্ব আমি বুঝেছি।
জামায়াত নেতাদের কোন্ ছেলে জামায়াত করে না, কোন্ ছেলে সেক্যুলার, এসব আমি কখনো খুঁজে বেড়াই না। ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য আমি নিজে কি করছি এবং আমার পরিবারকে ইসলামী আন্দোলনের সাথে আমি যুক্ত করতে পারছি কিনা, এটাই আমার চিন্তার বিষয়। কারন জামায়াত নেতাদের সন্তানরা কেন জামায়াত করে না এর জবাব হাশরের ময়দানে আল্লাহ্ তা'আলা আমার কাছ থেকে নিবেন না। আল্লাহ্ তা'আলা প্রশ্ন করবেন আমার এবং আমার পরিবার সম্বন্ধে।
আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলছেন,
“মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।”
[সূরা আত্-তাহরীম: ৬]
শাহরিয়ার কবিরের বাবা একজন নামকরা আলেম ছিলেন। তার চাচা প্রখ্যাত আলেম ও বুজুর্গ মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, যিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন- তিনি তো ছিলেন শহীদুল্লাহ কায়সার এবং জহির রায়হান এর পিতা। অথচ এই তিন জনই নিজ নিজ সনামধন্য আলেম বাবার চূড়ান্ত অবাধ্য হয়ে চরম নাস্তিক হইয়েছেন। তাই লেজকাটা শিয়াল এর মত শাহরিয়ার কবির রা যে তাদের মত অন্য কোনো পিতামাতার অবাধ্য সন্তানের খোজ করতে থাকবেন, এবং এমন কেউকে পেলে তাকে চূড়ান্ত নাস্তিকতার পর্যায়ে টেনে নেবেন ও বাধরের মত একজোট হয়ে লাফালাফি করবেন- সেটাই স্বাভাবিক।
আর মাওলানা মওদুদির র: এই ছেলের এমন পাগলামি নতুন কিছু নয়, বরং গত ৪০ বছর ধরেই চলে এসছে, তার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই তার আপন পরিবারের ঘনিষ্ট মেম্বার দের কাছ থেকে যা শুনেছি তা নিয়ে বিস্তারিত লিখার চেষ্টা করব সময় পেলে। আপাতত শুধু এটুকুই বলে রাখি- কতটুকু পাপিষ্ট কপাল পোড়া (কিংবা পাগল) হলে একটা ছেলে তার সারা বিশ্বে সনামধন্য মরহুম বাবাকে একজন ড্রাগ ডিলার এর সাথে তুলনা করতে পারে এবং তার ৮০ বছরের বৃদ্ধ অসুস্থ মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে কেইস করতে পারে। এমন পাগলামি বাংলাদেশে ও মিশর এর ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বের আত্বীয়রাও করেছে- কিন্তু তাতে ইসলামী আন্দোলনের কোনো ক্ষতি হয়নি- শুধু এই হতভাগাদের নিয়তিই আরো খারাপ হয়েছে।
কথিত মওদুদীপুত্র এবং আমার ভাবনা:
জামায়াতে ইসলামী মানেই চরমোনাই, আটরশির
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পীরগীরি নয়,
হাসিনা খালেদার পারিবারিক রাজনীতি নয়।
এখানে কেউ নেতৃত্ব চেয়ে নিতে হয় না, নেতৃত্বের
জন্য শক্তির মহড়া দিতে হয় না, নেতৃত্বের জন্য
গুনাবলী অর্জন করে নিতে হয় । এখানে নেতৃত্ব মানেই
ঢাকা শহরে কিংবা কানাডার বেগমগন্জে বাড়ির
মালিক হয়ে যাওয়া নয় , মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব
হয়ে যাওয়া নয় । একথা আমি হলফ করে বলতে পারি আজ
যদি রাসূলের (সাঃ) চাচা আবু তালিব ও বেঁচে থাকতেন
তবে এই কুচক্রীমহল তাকে দিয়ে ইসলামের
বিরোদ্ধে সংবাদ সন্মেলন করিয়ে ছাড়তো । কিন্তু
ইসলামের সুমহান শিক্ষা আর আদর্শকে নিজের জীবনের
একমাত্র ব্রত হিসেবে মেনে না নেয়ায় যেমন বহু
নবী রাসূলের পরিবারবর্গ ও পথভ্রষ্ট হয়েছিলেন
তেমনি কথিত মওদুদীপুত্রের ক্ষেত্রেও অসম্ভব কিছু নয়
।সর্বোপরি , যারা মজিব , জিয়া , এরশাদের সৈনিক
তাদের বলছি , এই জামায়াত কোন ব্যাক্তির আদর্শের
দল নয় , কোন অফিসে তাদের ২য় পিতার
ছবি টানিয়ে রাখা দল নয় , এই জামায়াত
হচ্ছে রাসূলের আদর্শে জীবন ও সমাজ গড়ার
প্রত্যয়ে নিবেদিত এক দল সৈনিক যাদের
কাছে প্রতিটি সহকর্মী তার নিজের ভাইয়ের মত , এই
জামায়াত মওদূদীর ছবি টানিয়ে রাখার দল নয় , এই
জামায়াতের ৯৯ ভাগ নেতাকর্মী তাদের সংগঠনের
প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ছবি সারা জীবনে একবার ও
দেখে নি । এরা তার রচিত ইসলামী আন্দোলনের
বইসমূহ কুরআন হাদিস ও অন্যান্য সাহিত্যের
পাশাপাশি অধ্যয়ন করে মাত্র । আজ
যারা লাখো লাখো জামায়াত
শিবিরকর্মীকে বোকা বানাতে চান
তারা মনে রাখবেন আল্লাহ আপনার
চোখে পর্দা তৈরী করে দিয়েছেন । সত্য আর মিথ্যার
মাঝে পার্থক্য করার ক্ষমতা আপনার নেই বলেই
আপনি জুমআর নামাজ ও পড়তে যান না কিন্তু ধর্মের
জন্য দরদ দেখাতে আসেন । অচিরেই হয়ত আমরা এটাও
দেখতে পাবো কাকে আপনি রাজনৈতিক
স্বার্থে মওদুদীপুত্র বলে চালিয়ে দিয়েছেন।
বঙ্গ মিত্র
৯০ এর দশকে আমি ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী ছিলাম। নিজেকে বুঝ দেওয়ার জন্য আমার এক চাচাতো ভাই এর কাছ থেকে ফারুক হায়দার মওদূদী সম্পর্কে কিছু তথ্য চেয়ে আনি। বলে রাখা ভাল, ফারুক হায়দার মওদূদীই হচ্ছেন পৃথিবীর তুমুল আলোচিত তিনজন আধুনিক ইসলামী আন্দোলনের পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদীর ছেলে।
হায়দার ফারুক মওদূদী হচ্ছেন তাদের মধ্যে অন্যতম যেকিনা স্বয়ং পিতা সাইয়্যেদ মওদূদীর এবং সাইয়্যেদ মওদূদীর অনবদ্য সৃষ্টি জামায়াতে ইসলামেরর বিরোধিতাকারী। যার কারনে বাম রাজনীতির সাথে জড়িতদের জন্য হায়দার ফারুক মওদূদী বড় একটা হাতিয়ার তাদের মূল শত্রু জামায়াতের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে, অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।
পরবর্তীতে হার্ভার্ডে পড়ার সময় এক সহপাঠীর সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়, ছেলেটি বেশ মেধাবী হলেও ইসলাম মনস্ক ছিল। সরাসরিভাবে কখনো শিবির কিংবা জামায়াতের সাথে জড়িত ছিল কিনা জিজ্ঞেস করার সুযোগ হয়নি, তবে ওর সাথে ধর্ম নিয়ে প্রায়ই আমার বিতর্ক হত। এক পর্যায়ে এ প্রসঙ্গ আসতে ও আমাকে বেশ কিছু নির্ভরযোগ্যত তথ্য-প্রমান দিয়ে আমাকে ভুল প্রমান করেছিল, বলা চলে ব্যবহারিক জীবনে সেটিই ছিল আমার প্রথম আদর্শিক পরাজয়।
হায়দার ফারুক মওদূদী আমাদের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন রেখে গেছেন। খোলা চোখে দেখলে একটি প্রশ্নের মাধ্যমেই তিনি জামায়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এবং বাম রাজনীতিতে সক্রিয় থাকাকালীনও এটি আমি ধরতে পেরেছিলাম।
হায়দার সাহেবের মূল যুক্তি হচ্ছে, সাইয়্যেদ মওদূদী নিজ সন্তানদের জামায়াত থেকে দূরে থাকার উপদেশ দিয়ে গেছেন। অন্য কথায়, নিজ সন্তানদেরই নিজ সৃষ্টিতে শামিল করতে চান নি। এ থেকে দু'টি বিষয় সামনে আসে-
১. জামায়াত আসলে প্রকৃত ইসলাম নয়, যার কারনে সাইয়্যেদ মওদূদী নিজের সন্তানদের এর মধ্যে ঠেলে দেন নি।
২. সন্তানের প্রতি পিতার সেই স্নেহ সাইয়্যেদ মওদূদীকে নিজ সন্তানদের তাঁরই প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল।
এ প্রশ্ন দু'টোর উত্তর আমি ভিন্ন কোন সময় দেব, ভিন্ন কোন প্রসঙ্গে। এখন যে বিষয়ে কথা বলছি তাতে হায়দার সাহেবের দাবীর সত্যতা যাচাই এর ক্ষেত্রে এতটুকু তথ্যই যথেষ্ট যে,
সাইয়্যেদ মওদূদীর ৯ সন্তান এবং একমাত্র স্ত্রীর মধ্যে ৬ সন্তান ও স্ত্রী সরাসরি জামায়াতের সাথে জড়িত, হায়দার সাহেব এবং অপর দুই সন্তান কেবল মাত্র জামায়াতের সাথে জড়িত হন নাই। তবে উল্লেখ্য যে, কেবলমাত্র হায়দার ফারুকীই জামায়াতের বিরোধিতা করেন, অন্য দু'জন সক্রিয়ভাবে জামায়াতের সাথে জড়িত না হলেও সমর্থন করেন।
সুস্থ মস্তিষ্কে নিরপেক্ষ মন মগজের যেকোন মানুষই আশা করি হায়দার সাহেবের দাবীর সত্যতার শতকরা হার নির্নয় করতে সক্ষম হবেন।
গতকাল এবিষয়ে আমার এক ভারতীয় বাঙালি ছাত্র, ধর্মীয় পরিচয়ে হিন্দু, আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল এপ্রসঙ্গে। আমি তাকে পুরো বিষয়টি এপর্যন্ত ব্যাখ্যা করতেই সে প্রশ্ন করে বসে, কেন হায়দার সাহেব এমনটি করলেন? জামায়াতের বিরোধিতা করার কারন কি?
হায়দার সাহেবের যেকোন বক্তব্যই ঘাঁটলে দেখা যাবে, পুত্রদের জামায়াত থেকে দূরে রাখা ছাড়া আর কোন যুক্তিই তার হাতে নাই। জামায়াত বিরোধিতার জন্য এমন কোন বিশেষত্ব নেই তার যা দিয়ে তাঁকে এত বড় মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। আফসোসের বিষয়, সাদামাটা যুক্তি দিয়েও অসাধারন তকমাটা তিনি পাচ্ছেন কেবলমাত্র তিনি সাইয়্যেদ মওদূদীর ছেলে বলেই। অথচ যার পরিচয়ে তিনি পরিচিত, তাঁরই দুর্নাম করে বেড়ানোটা আমার কাছে সস্তা পাবলিসিটি চাওয়া ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না।
জামায়াত বিরোধিতার অন্তরালে সাইয়্যেদ মওদূদীর সাথে হায়দার সাহেবের বিরোধিতার পুরনো কিছু ইতিহাস থাকতে পারে বলে আমার ধারনা, অন্তত হার্ভার্ড পড়ুয়া আমার সেই বন্ধুটি আমাকে সেরকমই ধারনা দিয়েছিলেন।
হাইস্কুলে থাকতে বখে যাওয়ার অভিযোগে সাইয়্যেদ মওদূদী হায়দারকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বালক হায়দার চাচার তদবীরে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপরেও একবার তাঁকে সাইয়্যেদ মওদূদী তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেন এবং তাঁর সাথে সম্পর্কহীন অবস্থায়ই ওপারে গমন করেন।
যে ঘর থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামী আন্দোলন এবং ইসলামের নামে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে 'জিহাদ' শুরু করেছিলেন সাইয়্যেদ মওদূদী, সেই ঘরে বসেই হায়দার সাহেব তাবিজ-কবজ, জাদু-টোনা করতেন। স্বভাবতই সাইয়্যেদ মওদূদী তাঁর ওপর প্রচন্ড রাগান্বিত ছিলেন এবং পিতার কারনেই তাঁর এ ধর্মব্যবসা ধোপে টিকতে পারে নাই। অবশ্য সাইয়্যেদ মওদূদীর ছেলে বলেই তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ছিল বলে অনেকের ধারনা রয়েছিল, কিন্তু সাইয়্যেদ মওদূদী জনগনকে এ হাস্যকরন বিশ্বাস থেকে বিরত রাখতে অনবরত আহ্বান জানিয়েছিলেন।
হায়দার ফারুক মওদূদী সম্পর্কে আরেকটি তথ্য দিই, তাঁর জন্মদাতা মা তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন। মামলার এক পর্যায়ে হায়দার সাহেবের স্বাক্ষ্যের সময় উপস্থিত হলে তিনি স্বাক্ষ্যদানে অস্বীকার করেন। তাঁর স্বাক্ষ্যদান অপরিহার্য্য বিধায় মামলার কার্য্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে তাঁর মা মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
হায়দার সাহেবের দাবী অনুযায়ী সাইয়্যেদ মওদূদীর কোন সন্তানই জামায়াতের সাথে জড়িত নয়। অথচ সাইয়্যেদ মওদূদীর স্ত্রী এবং ৬ সন্তান পৈত্রিক সম্পত্তিতে তাদের প্রাপ্য অংশ জামায়াতকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হায়দার সাহেব এনিয়ে বিরোধ শুরু করেন (যার জের ধরেই মামলাটি হয়েছিল) এবং জামায়াত যেন এ সম্পত্তি না পায় একারনে এই বিরোধের নিশপত্তি করতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে জামায়াতের আমীর 'বিতর্কিত সম্পত্তি' হিসেবে আখ্যায়িত করে সাইয়্যেদ মওদূদীর বংশধরদের কাছ থেকে এসম্পত্তি নিতে অস্বীকার করেন।
হায়দার সাহেবকে অনেককে পরিচয় করিয়ে দিতে দেখি একজন ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে। বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত অবোধ্য যে পেশায় একজন বৈমানিক, ইসলাম সম্বন্ধে যার দর্শন সম্পর্কে এমন কোন বই-পুস্তক বা নিবন্ধ নেই যা থেকে তার ইসলাম মনস্কতা সম্বন্ধে অনুমান করা যেতে পারে তাকে কি করে ইসলামী চিন্তাবিদ বলা যেতে পারে? তবে কি পৈত্রিক সূত্রে সাইয়্যেদ মওদূদীর কাছ থেকে তিনি এ তকমা পেয়েছেন?
মুবাশ্বির লোকমান টেলিভিশনের পর্দায় বলেছিলেন, 'হায়দার সাহেব আমীরে জামায়াত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মওদূদী তাঁর জীবদ্দশায় তা হতে দেন নাই। মওদূদীর মৃত্যুর পরও মওদূদী প্রতিষ্ঠিত ইসলাম অনুসৃত নিয়মের বেড়াজালে এয়াটকে হায়দার সাহেবের আমীর হবার স্বপ্ন ভেঙে যায়।' এথেকেও হায়দার সাহেবের জামায়াত বিরোধিতার একটি কারন অনুমান করা যেতে পারে।
হায়দার সাহেব শুধু জামায়াতের বিরোধিতা করেছেন তাই নয়, তিনি গোটা ইসলামী রাজনীতিরই বিরোধিতা করেছেন। আর দশজন সেক্যুলার এবং বাম রাজনীতিকের মত তিনিও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবী তুলেছেন। স্পষ্টভাষায় তিনি রাষ্ট্রধর্ম এবং ইসলামী রাষ্ট্রের মত ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর বিরোধিতা করে বলেছেন-
'If a country wants to practice democracy then it cannot have a religion. Democracy is always secular. Without being secular you cannot claim you are practicing democracy.' (সূত্রঃ ঢাকা ট্রিবিউন)
এখন আমার প্রশ্ন হল,
মওদূদীপুত্র ব্যতীত যার কোন পরিচয় নেই তার কথার জোড়ে কিভাবে মওদূদীর বিরোধিতা করা যেতে পারে?
প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাইব্যুনাল, সাদা চোখে যা বিচারিক হত্যাকান্ড যখন হত্যার দ্বার সীমায় উপনীত হয়েছে তখন বাংলাদেশে হায়দার সাহেবের বাংলাদেশ ভ্রমন কিসের ইঙ্গিত দেয়? তাঁকে এদেশে কে এনেছে এবং এর অর্থায়নে কারা ছিল, এর উদ্দেশ্যই বা কি ছিল?
ইসলামসম্বন্ধীয় যার কোন দর্শনই নয়, তাঁকে ইসলামী চিন্তাবিদ আখ্যা দেওয়ার মত তথ্যসন্ত্রাসের অপরাধের ক্ষতিপূরন কি হতে পারে?
আর দশজন বামপন্থী আর হায়দার সাহেবের মধ্যে তফাতটা কোথায়- স্রেফ মওদূদীপুত্র বলেই বাড়তি যত্ন?
তবে সব মিলিয়ে একটি স্বীকৃতি আমার সাবেক আদর্শভিত্তিক দলগুলো দিয়েছে যে, সাইয়্যেদ মওদূদী এবং সাইয়্যেদ মওদূদী প্রতিষ্ঠিত আন্দোলন এক বৈশ্বিক রুপ লাভ করেছে এবং এর বিরোধিতাকারীদেরও সাইয়্যেদ মওদূদী কর্তৃক সত্যায়িত হতে হয়, যেমনটা পুত্র সম্বন্ধে সত্যায়িত হয়েছেন হায়দার সাহেব।
মহাত্মা গান্ধীর দুই ছেলে মুসলমান হয়েছিল।
আচ্ছা নূহ (আঃ) এর এক পুত্র কি কুফরি করেনি? সে কি নূহ
(আঃ) এর কিসতিতে উঠতে অস্বীকৃতি জানায় নি?
এতে কি নূহ (আঃ) এর
কাফেলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে? এতে কি নূহ (আঃ) এর
মর্যাদা কমে গেছে?
রাসূল (সঃ) চাচা ইসলাম কবুল করেন নি। ব্রাদারহুডের
প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল বান্নার ছোটভাই জামাল আল
বান্না সেক্যুলারপন্থী ছিলেন। এতে কি আদর্শের আন্দোলন
থেমে ছিল??
তাহলে মওদুদী সাহেবের পুত্র তার পিতার
আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করলে সে কাফেলায়
উঠতে অস্বীকৃতি জানালে ''এত কেন? কেন?"
করতে হবে কেন?
কিছুতো একটা করতে হয় তাই মুরগীর বেপারী শাহরিয়ার কিছু একটা করছে আরকি?বাংলাদেশে কি এমন উদাহরণ নাই? আল্লামা আবুল হাসিমের সন্তান হয়ে বদরুদ্দিন উমর কি করে নাস্তিকতার রাজনীতি করেন?
মাওলানা মওদুদী (রঃ) এমন একটি দলের প্রতিষ্টা করেছেন যা দুনিয়ার অন্য কোনো দলের সাথে মিলেনা। তিনি ইন্দিরা, মুজিব, ভুট্টু বা জিয়ার মতো কোনো দল করেন নি যাতে বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব থাকবে। তিনি চরমোনাই বা আটরশির মতোও দলের নেতৃত্ব গদিনশিন করে যান নি। তার সন্তানদের মধ্যে এই জাহিল ছাড়া অন্য সবাই কমবেশী আন্দোলনের সাথেই আছেন। এই আন্দোলনে যোগ্যতার বলেই নেতৃত্ব নিরধারিত হয়। এজন্য মাওলানা মওদুদীর সন্তানদের কেউ হয়তো দলের উচ্চ পদে নাই।
পরিবারের অবাঞ্চিত ছেলে, মনের দুঃখে কিছু কথা বলেছে, তা নিয়ে লাফা লাফি ....
মউদুদি পুত্রও তখন নয়নের মনি হয়ে যায়। সেলুকাস......
বিষয়: বিবিধ
৪০৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন