এই কাফেলা রুখতে পারে সাধ্য কার??
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ২১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:০৯:৩৫ সকাল
জামাত শিবির কোন কচুরী ফেনা নয় পানিতে ভেসে যাবে। কোন খড়-কুটো নয় বাতাসে উড়ে যাবে জামাত ছিল আছে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আর যুদ্ধাপরাধের দায় দন্ড পাওয়া রায় ও মেনে নেবেনা। ৪বছরেই যখন দলের সমস্যা হয়নি আরতো মাএ কয়েকটি দিন তারপর সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে । ধৈর্য ধরুন আর দেখতে থাকুন ।
যার চলে যায় সে বুঝে হায় বিচ্ছেদে কি যন্ত্রণা .।.।
যে দিন খলিল ভাই শাহাদাত বরণ করলেন । সে দিন বিকালে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মীজান ভাই (আমার বাল্য বন্ধু) সহ শহীদের সাথীরা অর্থাৎ উনি যে ওয়ার্ডে কাজ করতেন সে ওয়ার্ডের সেক্রেটারি , কয়েক জন সাথী , শহীদের দায়িত্ব শীল, এবং জামাত প্রতিনিধি শহীদ পরিবারে যাওয়ার সময় আমার অফিসে ডুকলেন কেন জানেন? ইফতার করার জন্য । তারা ও সে মিছিলের সাথী । যারা রোজা রেখে মিছিল করে সাথী শহীদ হওয়ার পরও ভয়ে পালিয়ে যায় না তারা ও শহীদের মিছিলে শামিল হতে প্রস্তুত তাদেরকে আপনি কি দিয়ে রুখবেন বলুন????
গতকাল কাশিমপূর কারাগারে গিয়েছিলাম । কেন জানেন??
চৌদ্দ বছরের এক কিশোর কে দেখতে তাঁর মা বাবা ভাই বোন সহ ।
সেই কিশোরের বর্ণনা শোনে চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারছিলাম না ।
পড়ুন তাঁর বর্ণনা
হরতালের প্রথম দিন সন্ধ্যা মাগরিবের নামাজের পর আমাদের চার জনকে ছাত্র লীগ ধরল বাকী তিন জনের পকেটে মোবাইল এবং টাকা পয়সা ছিল, আমার পকেটে কোন টাকা পয়সা ছিলনা তাই আমাকে রেকে দিল । তাঁদের এগুলো ছাত্র লীগের সোনার ছেলেরা চিনিয়ে নিয়ে গেল ইতো মধ্যে পুলিশ এসে গেল । আর আমার চশমাটা পড়ে গিয়েছিল তাই ভাল দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমাকে নিয়ে ঢুকাল আবদুল্লাহ পূর পুলিশ বক্সে এখানে বেধড়ক পিটুনি দিল। এর পর নিয়ে গেল উত্তরা পশ্চিম থানা । আমার মাকে খবর দিল । আমার মা আসল । না মারার শর্তে পাঁচ হাজার টাকা নিল । আর বলল বিশ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দিবে।
এ দিকে তাকে নিয়ে গেল উত্তরা থানা পশ্চিমের আন্ডার গ্রাউন্ডের টর্চার সেলে আমার পায়ে হ্যান্ড কাপ পরিয়ে উল্টো করে ঝুলাল কিছুই জিজ্ঞেস করে না শুধুই মারে । আমার নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত গড়িয়ে পড়ে মাটিতে । ঐ দিকে তাঁর মা বিশ হাজার টাকা জুগার করে ধারে দারে ঘোরে। তাঁর মা ও বাবা দুজনেই উত্তরার দুইটি প্রসিদ্ধ স্কুলের সাধারণ শিক্ষক। ইতো পূর্বে তাঁর বাবাকে মসজিদের কোয়ার্টার থেকে স্যার ডাকছে বলে রাতের অন্ধকারে বিমান বন্দর থানা পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। খেটে আসেন ৪ মাসের জেল । আর প্রতি মাসের কোর্টে গিয়ে হাজিরা ফ্রি জূটে গেল । এদিকে মসজিদের চাকুরী আর নিজ খরচে তৈরি করা বাসা তো গেলই। এটিই হল সেই ছেলেটির জন্য কাল। তারপর শুনুন ছেলেটির কথা ঐ রাতেই দিয়ে দিল সেই কিশোরকে র্যাব নামক কাল বাহিনীর হাঁতে তারা করল জিজ্ঞাসা বাদ ।
তাঁর নমুনাটি কেমন ছিল একটু পড়ুন ।
আমাকে তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল
১। তোদেরকে মিছিলে কে নিয়ে আসে।
২। তোদের টাকার উৎস কি?
৩। তুই কারে কারে চিনস?
ছেলেটির একটাই উত্তর আমি ছোট তো তাই জানি না।
তাঁর পর শুরু হল পৈশাচিক নির্যাতন।।
হাঁতে নিল কমিউনিস্ট দের প্রতীক হাতুড়ি হাঁটু থেকে থেঁতলে দিল তাঁর দুই পা । দু পায়ের বৃদ্ধ আঙ্গুলে চালাল সুই। তাঁতেও তারা সন্তুষ্ট হতে পারল না ।
তাকে দুবার বসাল র্যাব -১ এর ইলেকট্রিক চেয়ারে। আমি তিন ঘণ্টা জ্ঞান হারা ছিলাম । এর পর আমার বাবার নাম জিজ্ঞেস করেছিল তারা । সত্যি বলতে কি আঙ্কেল আমার বাবার নাম ও ভুলে গিয়েছিলাম।
র্যাবের মধ্যে ও কিছু মানুষ আছে একজন এসে বলল তাক বাদ দেন এদের কে হয়ত দল ভারি করার জন্য আনে ।
র্যাবের কেও এটি পড়ে থাকলে বলব পুলিশ যখন কাওকে কোন বর্ণনা দিয়ে আপনাদের হাঁতে তুলে দেয় , সে বর্ণনার জাস্টিফায় করুন । আর মানবিক হওন।
তাঁর উপর কেন এ বর্বর নির্যাতন বুদ্ধা পাঠক মহল কি একটু বলবেন? আমাদের ট্যাক্সের টাকায় লালিত এই সব বাহিনী কি আমাদের সন্তানদের পঙ্গু করার জন্য?? সে এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না । তাঁর প্রতিটা আঘাত সে কাপড় উঠায়ে আমাকে দেখাচ্ছিল তাঁর জখমগুলো দেখে আমি আর সয্য করতে পারছিলাম না । বলুন কোন বর্বর সমাজে আমরা বাস করছি?
তাদের ছেলে মেয়েরা তাদের পিতা মাতাকে হত্যা করবে না তো কে করবে?
তারা যে আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে হত্যা করছে বা হত্যার কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে?
তাঁর পর ছেলেটি যা বলল তাঁর জন্য আমি মুটেও প্রস্তুত ছিলাম না ।
সে বলল আঙ্কেল কে কি মনে করবে জানিনা আমি যে জামাত শিবিরের কাওকে চিনিনা তা নয় । তারা চায়ছিল আমারে নিয়ে অভিযানে বের হতে । আমি কিভাবে একাজে সহযোগিতা করি বলুন?
তাই সম্মানিত পাঠকরা বলুন এই কাফেলা রুখতে পারে সাধ্য কার??
আল্লাহই হল এই কাফেলার রক্ষা কারী । আর তাঁর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য তাঁর প্রত্যেকটি কর্মী কাজ করে।
ছেলেটি নবম শ্রেণিতে পড়ে তাঁর জন্য সকলে দোয়া করবেন । তাকে চার মাসের জেল দিয়েছে নিষ্ঠুর বিচার ব্যাবস্হা।
মুসলমানরা একটি মিশনারি জাতি । তারা যত দিন দিনের পথে সক্রিয় ছিল ততদিন বিজয়ের বেশে পৃথিবির নেতৃ্ত্ব দিয়েছেন। যখনি তারা নিজেদের কর্তব্য ভুলে খানকা পীর মুরিদি তসবি পড়ে সহজে জান্নাত লাভের আশায় ভুগ বিলাস ও সহজে আল্লাহ্র দিদার লাভে মত্ত হয়েছেন। দিকে দিকে তাদের পরাজয় ও অপমানের বুঝা তাদের কপালের লিখন হয়েছে। এখন ও যদি আমরা সচেতন হই আল্লাহ্র নির্ধারিত রাসুলের(সাঃ) দেখানো পথে ইসলামী আন্দোলনে সক্রিয় হই তবে দুনিয়ার বিজয় ও পরকালের সাফল্য অতি নিকটেই।
বিষয়: বিবিধ
৪৫৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন