ঝাল মিটান ঝাল আপনি না আয়না সরূপ?
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ২৯ জুন, ২০১৩, ০৯:৪৫:৫১ রাত
ভাইব্রাদার এবং বইনগণ, ইসলামে ঝাল মেটানোর কোন অপশন নাই অর্থাৎ ইসলাম আপনাকে আমাকে এ সুযোগ দেয় নি । যদিও ঝাল মেটাতে খুব আনন্দ পাওয়া যায় তবে মস্তিষ্ক ঠান্ডা হলে নিশ্চয়ই আপনাকে/আমাকে অপরাধবোধে ভুগতে হয় ।
তাহলে কি আজীবন মজলুমই থেকে যাব ?
ভাই, জুলুমের প্রতিবিধানে জুলুম করা কিন্তু ন্যায় বিচার নয় । আপনাকে ন্যায় বিচার করতে বলা হয়েছে, জুলুম করতে না ।
সত্যি কথা বলতে কি আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই #তাকওয়া(খোদা ভীতি, পরহেযগারী, আত্মশুদ্ধি) অর্জন করতে পারতাম, তাহলে কোন সমস্যাই থাকত না । ব্যক্তিজীবনে যদি সদাসর্বদা #মুমিনেরগুনাবলী অর্জনে সচেষ্ট থাকতে পারতাম তাহলে আর এতসব ভুলভ্রান্তিতে মশগুল করে ফেলতে পারত না শয়তান আমাদেরকে !
সমস্যার মূলে যেহেতু ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং সামগ্রিক ত্রুটি । সুতরাং সব কিছু মাথায় রেখেই অন্যের সমালোচনা করা উচিত । আগেই বলেছি না ঝাল মিটিনো, না গীবতের বদলা কম গীবত, না অপবাদের বদলা কম অপবাদ দিয়ে নেয়ার সুযোগ আছে ইসলামে ।
হাদিসে আছে জুলুমকারীকে সাহায্য করার কথা কিভাবে যেন ???
#জুলুমকারীকে নিবৃত্ত করে ।
ব্লগে আমরা যারা একে অপরের সাথে বন্ধুত্বের সেতু বন্ধনে আবব্ধ, অধিকাংশই(প্রায় সবাই) সবার কল্যাণকামী । দ্বীনই ভাই হিসাবে এমনটাই হওয়ার কথা, তাই নয় কি ?
কে কোন দলমত পথের অনুসারী সেটা নিয়ে তার সাথে বিতর্ক চলতে পারে ; কিন্তু বৃহত্তর পরিসরে আমরা যদি নিজেদের মুসলিম মিল্লাতের অংশ মনে করতে পারি, যদি ঈমানি দাবীকে অগ্রাধিকার দিতে পারি, একতাবদ্ধ হওয়ার এবং থাকার দাবীকে সামনে নিয়ে ভাবতে পারি তাহলে কিন্তু পরবর্তী ছোট-মাঝারি কিংবা বড় বড় সংগঠনের অধীন থাকা অথবা না থাকার সময়ে বিভেদটা অনেক কমে যায় । কারণ ঐক্যবদ্ধ থাকার চেতনা ঐ একটিই যা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সঃ) দেখিয়ে দিয়ে গেছেন । ------- এই অংশ নিয়ে হয়ত দীর্ঘ আলোচনা করা যাবে, কিন্তু আপাত যে কথাগুলো বলছি #তাহলঃ-
-গীবত
- পরচর্চা
- পরনিন্দা
- চোগলখুরি
- অপবাদ
- ধৈর্য/সবর
- আনুগত্য
- এহতেসাব/পরামর্শ
করা না করা । কিভাবে দেয়া যায়, কিভাবে দেয়া উচিত নয় । কোনটা অপরাধ/গুনাহ এবং কোনটা পুণ্য সেই সম্পর্কে অল্প অল্প না সুস্পষ্ট এবং অধিক জ্ঞান থাকা চাই । খুব কঠিন আবার মোটেও কঠিন না । উপরোক্ত গুনাহের কাজে আমিও কখনো কখনো অজ্ঞাতসারে জড়িয়ে পরি (আল্লাহ্ আমাকে ও আপনাকে ক্ষমা করুণ । কিন্তু সব বিষয়ে ক্ষমা কিন্তু আল্লাহ্ নিজের এখতিয়ারে রাখেন নি ; বান্দার হক নষ্ট করলে সেটা বান্দাকে দিয়েই ক্ষমা করিয়ে নিতে আদেশ করেছেন । আর ইগো ত্যাগ করে কারো কাছে ক্ষমা চাওয়া কিন্তু খুব কঠিন, ক্ষমা পাওয়া, না পাওয়া তো অনেক পরে ।) তো তখন আপনার দায়িত্ব কি ? অবশ্যই এই গুহান থেকে আমাকে বাঁচিয়ে দিতে সহায়তা করা, তাই নয় কি ?
পরিশেষে সকলের কাছে ক্ষমা এবং দোয়া চাওয়ার পাশাপাশি আরো একটি কথা বলতে চাই । তাহলঃ-
নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল ............
না । নিন্দুককে ভালোবাসতে বলছি না ; আমি বলছি আপনি তাকেই ভালোবাসুন যিনি আপনার দ্বারা জুলুম সংগঠিত হলে প্রথমেই আপনাকে বাঁধা দেয় । শুভানুধ্যায়ী কিন্তু এই ব্যক্তিইইইইই যিনি সত্যিকার অর্থেই বন্ধুত্বের হক আদায় করল । ধন্যবাদ সকলকে ।
পুনঃ পুনঃ ক্ষমা প্রার্থনা করছি যদি অজ্ঞাতসারে আপনাদের কারো প্রতি জুলুম করে থাকি......... এমন কি গীবতও যদি করে থাকি । আমাকে ক্ষমা করবেন আর আগামীতে আপনাকে আমার পাশে জুলুম প্রতিরোধকারী মুসলিম বন্ধু হিসাবেই চাই ।
আল্লাহ্র কাছে একান্তে ক্ষমা চাইব যেসব ক্ষেত্রে গীবত-পরচর্চা-চোগলখুরি শুনেছি কিংবা নিজ দায়িত্বপালনে অসচেতন থেকেছি কিংবা নিজেই অপরাধী তিনি নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু আপনি ??? প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন । কথা দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ্ আজ থেকে আমি এসব ব্যপারে আরো বেশি সতর্ক থাকব ; আপনিও চেষ্টা করুণ ।
আপনার ভাইকে ভালোবাসুন ; ঠিক যেমনি করে তাকে ভালোবাসতে বলা হয়েছে ।
আপনার ভাইকে সহযোগিতা/অসহযোগিতা করুণ ; ঠিক যেমনি করে তাকে সহযোগিতা/অসহযোগিতা করতে বলা হয়েছে ।
ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হবে খোদায়ী দাবীকে সমুন্নত রেখে ; বিচ্ছেদেও তাই । ঠিক যেমনটা বলা হয়েছে ।
#
জাতির বিবেকের প্রতি বহু প্রশ্ন করেছি, আসুন এবার নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি(খুব খিয়াল কইরেন কিন্তুক ভ্রাতিস্ট এবং ভগ্নিস্ট) ।
- অন্যের ____কাজের সমালোচনা ইসলামিক পদ্ধতিতে করছি তো ?
- জুলুমের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে জুলুম করছি না তো ?
- মজলুমের জন্য আল্লাহ্ আছেন, কিন্তু জুলুমকারীর জন্য ?
মজলুম অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে চাই । যেন জুলুমকারী না হই কখনো । আমার সহযোগিতা আপনার প্রতি ; আপনার সহযোগিতা হোক আমার প্রতি ।
শুক্রবার দিন আসলেই আমরা ইসলামিক হয়ে উঠি । রমজান আসলে আরো বেশি । কিন্তু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনই হওয়া উচিত ইসলামের আলোয় আলোকিত । এই কথাটা যেন ভুলে যাই :/ সামনে যেন ভুলে না থাকি সেই প্রত্যাশায় ।
প্রত্যেকে আমরা প্রত্যেকের ত্বরে । ঠিক যেন আয়নার মত শুধু আমাকেই বলবে আমার ত্রুটি এবং খুঁত ।
ভাল আয়না যেমন দাগকে ছোট বড় করে দেখায়না। টিক যতটুকু ততটুকুই দেখায়। দোষ দেখানোর জন্য আয়নাকে আমরা ছুড়ে ফেলে দিই না । তেমনি দোষ বলা ভাইকে যেন যত্ন করি । মন মানসিক অবস্তা ভাল থাকলেই আয়না দেখা হয় । দোষ দেখানোর সময় ও ভাইটির মন মানসিকতার দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। আয়নাকে আমরা যত্ন করি , তেমনি ত্রুটি দেখিয়ে দেওয়া ভাইটির ও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন । আয়নার পিছন দিকে চেহারা দেখা যায় না । তেমনি দোষ যুক্ত ভাইটির পেছনে তার দোষ না বলা উচিৎ ,বললে গীবত হবে। আয়নাকে উপরে নিছে রাখলে চেহারা সঠিকভাবে দেখা যায় না, তেমনি আমার দোষ ধরে দেওয়া ভাইটিকে সম মানের চিন্তায় রেখে নিজের দোষ সংশোধনে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) কত জ্ঞানী ছিল দেখলেন তো । তার একটি কথা “ এক মুমিন অপর মুমিনের আয়না সরূপ” এর কত বিশ্লেষণ। আল্লাহ্ আমাদের সংশোধন হওয়ার তৌফিক দিন ।
বিষয়: বিবিধ
১৯১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন