কেমন আছেন অধ্যাপক গোলাম আযম

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ২৪ জুন, ২০১৩, ০১:০০:১১ দুপুর



দু’সপ্তাহ পর গত (২২/৬/১৩) অধ্যাপক গোলাম আযম এর সাথে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতের দিন ছিল। গত ৮ই জুন প্রিজন সেল এ শেষ দেখা হয়েছিল উনার সাথে। আমি, আমার মা এবং জীবিত একমাত্র ফুফু, জাহান আরা আযহারী, বাবার সাথে দেখা করি বিকেল ৪:১৫ থেকে ৪:৪৫ মি. পর্যন্ত।

আমার ফুফু ঢাকা বিশ্বব্যিালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী করেন। উভয় পরীক্ষাতেই মেধা তালিকায় স্থান ছিল। আজিমপুর গার্ল্স স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন ছয় বছর। ৭০ এর দশকের শেষ থেকে একটানা দুই যুগ আয়েশা একাডেমীতেও (এ্যালিফেন্ট রোডে স্থাপিত এবং বর্তমানে জিগাতলায় অবস্থিত) শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ১০ বrসর একটানা জামায়াতের মহিলা শাখার প্রধান ছিলেন। ফুফা, মরহুম মওলানা আলাউদ্দীন আল আযহারী, আরবী ভাষায় একজন বিখ্যাত পণ্ডিত ও আলেম ছিলেন। তিনিই প্রথম বাঙালী মুসলমান যিনি কায়রোর আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ’৫০ এর দশকে মডার্ন এ্যারাবিক এ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। উনার জীবন ও কর্মের উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন।

আনুমানিক ১২টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি টেলিফোনে নিশ্চিত করে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা প্রস্তুতি চলে সাথে নিয়ে যাবার আইটেমগুলো গোছগাছ করতে। আত্মীয়, শুভানুধ্যায়ী অনেকেই খোঁজ রাখেন কবে সাক্ষাr হবে। সাক্ষাতের অনেকেই ফল পাঠিয়ে দেন উনার জন্য। গতকাল একজন দিয়েছেন আম আর কাঁঠাল, আরও দু’জন আম, একজন বেল। আংগুর, সফেদা, জাম, লিচু এগুলোও নেয়া হলো কিছু। শুকনো খাবারের অনুমতি থাকায় প্যাকেট করা মুড়ির মোয়া, ওয়েফার বিস্কুট, প্রিংগ্ল্স চিপ্স ইত্যাদিও নেয়া হলো। এছাড়া, লুঙ্গী, তোয়ালে, গেঞ্জি এবং টুপীও প্যাকেট করা হলো। এগুলো অবশ্য আমরা হাতে করে উনার রুম পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারি না। ‘প্রিজন সেল’ এর গেইটে এসব রেখে দেয়া হয়। সাক্ষাত শেষে আমরা চলে আসার পর নিয়ম অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেদিন সন্ধ্যা বা পরদিন উনাকে ওসব পৌঁছানো হয়। কোন রান্না করা খাবার নেয়া যায় না। নিয়মিত বাসা থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহের জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে অনুমতি পাওয়া গেলেও যে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল তাতে করে আমাদের পক্ষে বাসা থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করার মত রিস্ক্ নেয়া সম্ভব হয়নি। আমি নিশ্চিত, যাঁরা এই আদেশ দিয়েছেন উনারাও নিজেদের ক্ষেত্রে এরকম পরিস্থিতিতে এই রিস্ক্ নিতেন না। এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলা নিরর্থক।

যাই হোক, আমরা বিকেল ৪টা বাজার আগেই বিএসএমএমইউ এর ‘প্রিজন সেল’ এর কাছে পৌঁছালাম। ৪টার পর পর কারা কর্মকর্তা এলেন। সেল এর লোহার কলাপসিব্ল গেইট খুলে দেয়া হলো। আমার মা হুইল চেয়ারে বসা, ৪জন কারারক্ষী মিলে ধরে ভিতরে (৪ সিঁড়ি উপরে) টেনে তুললো। ফুফু হাতে লাঠি নিয়ে আমার হাত ধরে উঠলেন। ওখানে উপরে উঠার সিঁড়ির গোড়ায় ‘রিসেপ্শন’ রয়েছে। আমাদের “চেক” করা হলো। মা’কে হুইল চেয়ার থেকে ধরে দাঁড় করালাম, চেয়ার “চেক” করা হলো। এরপর সকলে মিলে তিনতলায় উঠলাম।

অন্যান্য বারের মত আজও আম্মার হুইল চেয়ার চার কারারক্ষী বহন করলো। ফুফু আমাকে ধরে, লাঠিতে ভর দিয়ে, রেলিং এর সাহায্য নিয়ে কষ্ট করে উঠলেন। যেসব কারারক্ষী হুইল চেয়ার ধরে উপরে নেয় বা নীচে নামাতে সাহায্য করে তাদের দেখলে কষ্ট হয়। অপ্রশস্ত সিঁড়ি দিয়ে হুইল চেয়ার ওঠানো-নামানো খুবই কষ্টকর। ‘প্রিজন সেল’ এর একপাশে, যেখান দিয়ে খাবার সরবরাহ করা হয়, ওখান দিয়ে আরেকটি প্রবেশ পথ আছে। ঐদিক দিয়ে গেলে লিফ্ট ব্যবহার করা যায়, কারও কোন কষ্ট হয় না। আমি কয়েকবার বলেছিলাম। যারা হুইল চেয়ার টানাটানি করে তারাও কখনো কখনো অনুরোধ করেছে। কোন লাভ হয়নি। এই সাড়ে ১৭ মাসেও আমার মাকে তিনতলায় উঠানোর জন্য লিফ্ট ব্যবহার না করার বিষয়টি আমার কাছে রহস্যই হয়ে থাকলো।

ঠিক ৪:১৫ মিনিটে বাবার “সেল” এ ঢুকলাম। উনি খালি গায়ে লুঙ্গী পরে চেয়ারে বসে আছেন, আমাদের অপেক্ষায়। অন্যান্য সময় ফতুয়া পরে থাকেন। আজ খালি গায়ে কেন জানতে চাওয়ায় বললেন, “আমার স্বাস্থ্যের কি অবস্থা তা যেন তোমরা স্বচক্ষে দেখতে পারো, তাই।” সালাম বিনিময় হলো, আমার সাথে কোলাকুলি করলেন, মা আর ফুফুর মাথায় হাত দিয়ে স্নেহের পরশ বুলালেন। আব্বাকে খালি গায়ে দেখে মনে হলো বেশ শুকিয়ে গেছেন। অন্যান্য সময় ফতুয়া পরে থাকেন দেখে এতটা বুঝা যায়না। জেলে যাবার আগে ঘাড়, হাতের মাস্ল ও হাতের পাঞ্জা ইত্যাদির চামড়া মাশাআল্লাহ টান্টানই ছিল। এখন কুঁচকানো, ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। মুখে মৃদু হাসি হাসি ভাব তো লেগেই থাকে আল্লাহর রহমতে।

অনেকদিন পর আদরের ছোট বোনকে দেখে খুউব খুশী হয়েছেন বুঝা গেল। ফুফুর কাছে শুনেছি, ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে, আমার বাবা যখন ডাকসুর জি.এস তখন, আমার আব্বার ইচ্ছাতেই ফুফুকে ঢাকায় এনে কামরুন্নেসা স্কুলে ক্লাস থ্রি’তে ভর্তি করানো হয়েছিল। দাদা-দাদু তখনও ঢাকায় আসেননি। আব্বা ও ফুফু টীকাটুলীতে উনাদের মামার বাসায় থেকে লেখাপড়া করছেন। আব্বা ফুফুর চুল আচড়ে, চুলে বেনী করে দিয়েছেন, সাইকেলে করে ঘুরিয়েছেন, লেখাপড়া করিয়েছেন। কত আদরের বোন বোঝাই যাচ্ছে। প্রায় ৪/৫ মাস ধরে আব্বার সাথে আমাদের সাক্ষাতের আবেদনে নিয়মিত ফুফুৃর নাম দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু, অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ অনুমতি মিলেছে। অনেক “দয়া” (!) হয়েছে উনাদের।

আব্বা পরিবারের সবার খোঁজ নিলেন, দেশের বিদেশের সবার। অনেক মানুষের (যার মধ্যে ফেসবুকের অনেকেই আছেন) সালাম ও দো’আ পৌঁছালাম। তিনি সকলের সালাম গ্রহণ করলেন, “ওয়ালাইকা ওয়াআলাইহিস সালাম” বলে জবাব দিলেন। কারও মাধ্যমে সালাম পৌঁছানো হলে এমন করেই জবাব দেয়া রাসুলের (দ.) সুন্নত, এটা বাবার কাছে শিখেছি অনেক আগেই। এর অর্থ, ‘যিনি সালাম দিলেন এবং যিনি পৌঁছালেন দু’জনার উপরই শান্তি বর্ষিত হোক’। জীবনের এমন খুটিনাটি কতশত শিক্ষা যে উনার কাছ থেকে পেয়েছি তা গুণে শেষ করা যাবে না।

দেশের বর্তমান অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান সংঘাত ও সংকট নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন মনে হলো। দেশ ও জনগণের সুখ-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য তাহাজ্জুদ ও প্রতি নামাযে দো’আ করছেন বলে জানলাম। কারাবন্দী উনার সহকর্মীদের নিয়ে এবং যারা ময়দানে আছেন তাদের নিয়ে উনি অনেক পেরেশান বলে জানালেন। সবার জন্য দো’আ করছেন বললেন। উনার স্নেহধন্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য খুব কষ্ট পাচ্ছেন উল্লেখ করে, সাঈদী সাহেবের ছেলে মাসুদ সাঈদীর সাথে যোগাযোগ করে সাঈদী সাহেবের অবস্থা খোঁজ নিয়ে উনাকে জানাতে বললেন ।

সবচেয়ে আশ্চর্য হবার মত বিষয় হলো, বিগত চার দশক ধরে যারা ক্রমাগতভাবে উনার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে করে মিথ্যার পাহাড় তৈরী করেছে, মিথ্যা বলে বলে মানুষের মনে উনার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও বিষ ছড়িয়েছে, এখনো ছড়াচ্ছে, অশ্রাব্য সব ভাষায় উনার বিরুদ্ধে অনবরত মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে Ñ তাদের কারও বিরুদ্ধে উনার কোন ক্ষোভ, অভিযোগ, আক্রোশ কোনকিছুই নাই। যারা অযথাই উনার নাম উচ্চারণের সময় মুখে ঘৃণার ভাব দেখায়, বিষবাষ্প বের করে, উনাকে নির্মূল ও উrখাত করতে চায়, ফাঁসীতে ঝুলাতে চায়, পাঁজাকোলা করে ফাঁসীর কাষ্ঠে নিয়ে যাবার খায়েশ জনসম্মুখে প্রকাশ করে, তাদের কারও প্রসঙ্গে আলোচনার সময় আমি যদি কখনো উনার সামনে কারও ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করি, রাগ দেখিয়ে দু’টো মন্তব্য করি, তবুও তিনি নির্বাক, নির্বিকার হয়ে বসে থাকেন, মৃদু হাসেন। কি আশ্চর্য এই সর্বংসহা মানুষটি! কি করে একটা মানুষের এতটা সহ্যগুণ থাকতে পারে! যারা উনাকে “শত্র” মনে করেন, তাদেরকেও উনি “শত্র” মনে করেন না! আমার বুদ্ধিতে কুলিয়ে ওঠে না!! মনে হয় তিনি মনে মনে ভাবেন, “ওরা তো জানে না, বোঝে না ওরা কি ভুল করছে, কত বড় পাপ করছে। বুঝবে যখন, তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমার আল্লাহ কি এসব দেখছেন না? তিনি কি তাদের ছেড়ে দিবেন? অযথা এই নির্বোধদের ব্যাপারে আমার রাগ দেখানো নিরর্থক। তাদের কর্মফল তারাই দুনিয়া ও আখেরাতে ভোগ করবে।” তিনি মহান আল্লাহর উপর যে কত দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা রাখেন তা বলাই বাহুল্য। মনে পড়ছে, গ্রেফতার পূর্বে টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি হাসতে হাসতে বলেছিলেন, “শাহাদাতের জয্বা নিয়েই তো ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না। মুসলমানের জন্য মৃত্যুকে ভয় পাওয়া জায়েয নয়”। ৬০ বৎসরের বেশি সময় ধরে যিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের জীবন উrসর্গ করেছেন, নিজের সকল আরাম-আয়েশ, সাধ- আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছেন, আজ কেবলমাত্র আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেয়ার “অপরাধেই” তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে বিচার করে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে!

উনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। উনি নিজে সব সময়ই একটি ফার্সী প্রবাদ বলেন, “এক পীরি, শ’ বিমারী”, অর্থাr “এক বার্ধক্যে শতরোগ”। উনি কি ভাল আছেন? উত্তর, ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’। হ্যাঁ একারণে যে, এই ৯১ বrসর বয়সে আলহামদুলিল্লাহ্ উনি যতটুকু ভাল আছেন তা চিকিrসা বিজ্ঞানে এক বিস্ময়! ক্লিনিক্যাল কোন হিসেবে নিকেশে মিলেনা। উনার বয়সের যত মানুষ পৃথিবীতে বেঁচে আছে তাদের শতকরা ৯৯% লোকের চেয়ে আলহামদুলিল্লাহ্ উনি ভাল আছেন বলে আমার বিশ্বাস। এর মূল কারণ মনে হয়, (১) সারাজীবন কঠিন রুটিন জীবনযাপন; (২) পরিমিত খাবার গ্রহণ; (৩) সাধারণ খাবার খাওয়া; (৪) প্রবল মানসিক শক্তি। আল্লাহর রহমতে উনার ভাইটাল অর্গানসমূহে (Vital Organ) কোন বড় সমস্যা নেই, যা এই বয়সে আমার জানামতে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখিনি।

উনার শারীরিক সমস্যা তো অনেক, তবে মূলত: (১) দৃষ্টিশক্তি আরও ক্ষীণ হয়ে গেছে। বললেন, একটানা বেশীক্ষণ পড়তে পারেন না। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। (২) শ্রবণশক্তিও কমে গেছে আগের থেকে অনেক। হিয়ারিং এইড ব্যবহার না করলেও বেশ জোড়ে কথা না বললে শুনেন না। (৩) সায়াটিকা - কোমড় থেকে পুরো পা, হাঁটু জয়েন্টে ব্যাথা। এ সমস্যা আগে থেকেই ছিল। গ্রেফতারের আগে দৈনিক ২/৩ বার থেরাপী দেয়া হতো। এখন এটা প্রায় বন্ধ, বেশ কিছুদিন পর পর দেয়া হয়। (৪) কন্স্টিপেশন - এটাও আগে থেকেই ছিল। এখন বেড়েছে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এর কারণে এই অবনতি হয়েছে বলে মনে হয়। এর জন্য ঔষুধ দেয়া হয়। তখন লুজ্ মোশন শুরু হয়। ঔষুধ বন্ধ করলে আবার সমস্যা। নিয়মিত ইসবগুলের ভূষি, বেলের শরবত এগুলো খাচ্ছেন। তারপরও সমস্যা থাকছেই। (৫) ঠিকমত ঘুম হয় না। মাঝে মাঝে ডাক্তার ঘুমের ঔষুধ দেয়। তারপরও ডিসটার্বড্ ঘুম হয়। কোন শারীরিক পরিশ্রম না করার ফলে এমনটা হতে পারে। (৬) গরম সব সময়ই উনাকে বেশ কাহিল করে দেয়। গতকাল এত কাহিল না দেখালেও গরম আবহাওয়ায় মাঝে মাঝেই বেশ কষ্ট পান তিনি। (৭) সময় কাটানো বড় সমস্যা বলে জানালেন। যেহেতু একটানা বেশীক্ষণ পড়তে পারেন না, আর কথা বলারও কোন লোক নেই, তাই সময় কাটতে চায় না। কিছু কিছু লেখার চেষ্টা করতে বলেছি কয়েকবার। বলেন, “মুড আসে না”। এবারও বলে এসেছি যে, “আপনার এখনকার লেখা তো দেশের জন্য অনেক মূল্যবান দলিল হতে পারে”। এবার আপত্তি করলেন না।

রুমের ভিতরে আমরা যতক্ষণ থাকি ততক্ষণ ৮/১০ জন বেসামরিক পোষাকধারী, গোয়েন্দা কর্মকর্তা হবেন ধারণা করি, আমাদের আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকে। কোন প্রাইভেসী নেই! ঘড়িতে ৪:৪০ বাজতেই কারা কর্মকর্তা নোটিশ দিলেন, “আর ৫ মিনিট আছে, স্যার”। এরমধ্যে আব্বার হাত-পা এর নখ কাটা, দাড়ি-মোঁচ ছেটে দেয়া এগুলো সেরে ফেলি। ঠিক ৪:৪৫ মিনিটে যখন বিদায় নেই, প্রতিবারের মতই বিষন্ন মুখটা দেখলে মন ভার হয়ে যায়। আল্লাহর উপর ভরসা করে মনটাকে শক্ত করে কোলাকুলি করে, দু’জনে দু’জনের কপালে চুমু দিয়ে সালাম দিয়ে বিদায় নেই। আমাদের যতক্ষণ পর্যন্ত দেখা যায়, অপলক তাকিয়ে থাকেন। নিশ্চয়ই মনে মনে বলতে থাকেন, “যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়”।!

উনার বই ডাউনলোড করুন এই লিন্ক থেকেjibne ja deklam

বিষয়: বিবিধ

২০১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File