আল্লাহ্ এক রাসুল একই কোরআন এক সুন্নাহ একই অনুসারীরা ও এক হও।

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৯ জুন, ২০১৩, ১২:০০:০৮ দুপুর



(ইরান নিয়ে এই পোষ্টের কনসেপ্টে কোন ভুল থাকলে জানাবেন)

আজকে শিয়া সুন্নী নিয়ে যারা মারামারি করে বা করতে চায়, তারা কাওমী-আলীয়া নিয়েও করবে, জামায়াত-তাবলীগ নিয়াও করবে, তাবলীগ-সালাফী নিয়াও করবে, সালাফী-চরমোনাই নিয়াও করবে, চরমোনাই-খেলাফত নিয়াও করবে। মুলত মাওলানা মওদুদীর লেখা ভাঙ্গাগড়া ও অধ্যাপক গোলাম আযমের লেখা ইসলামী ঐক্য ইসলামী আন্দোলন এই দুটি বই পুরাতন হলেও সবার পড়া দরকার। ছোট্ট দুটি বই। আর মাওলানা মওদুদীর অমীয় বানীটি স্মরন রাখা দরকারঃ "ইসলাম হল একটি বাগানের মত, আর ইসলামী সংগঠনগুলো হল সেই বাগানের একাধিক মালী। যাদের কেউ সার দিচ্ছে, কেউ পানি দিচ্ছে, কেউ নিড়ানি দিচ্ছে, কেউ গাছ লাগাচ্ছে"।

ইরানের ভেতরকার অবস্থা জানি না, তবে শুনেছি অর্থনৈতিকভাবে এখনো খুব দুর্বল। অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারনে তৈরি অনৈতিকতা কেবল আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করা যায় না। অর্থনৈতিক শক্তিশালী ভিত্তি প্রয়োজন হয়। একজন অফিসের পিয়ন যত কম বেতনই পাক না কেন, সিদকাটার চোর হয় না, বা সারাদিন ডিউটি করে সন্ধ্যার পর ছুরি ধরে ছিনতাই করতে যায় না। কারনটা সবার বোঝা দরকার। অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি বড় ফ্যাক্টর একটি কল্যানমুখী দেশ গড়ার জন্যে। ইসলামীস্টদের জন্যে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসছে আগামী কয়েক দশকে।

ইরান এখনো পর্যাপ্ত সময় পায়নি বলেই আমার মনে হয়। আর তাই তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখনো কাংখিত পর্যায়ে পৌছেনি। ১৯৭৯ তে বিপ্লবের পর প্রায় ১০ বছর ছিল যুদ্ধাবস্থা। অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছিল, দুর্নীতি ঢুকে পড়েছিল সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। পুরুষের সংখ্যা আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছিল। মহিলারা গোপনে পতিতাবৃত্তিতে নেমে পড়েছিল অভাবের তাড়নায়। সেই অবস্থা থেকে উঠে আসার জন্যে এখনো পর্যন্ত ২০ বছর তারা সময় পেয়েছে মাত্র। ফিলিস্তিন-লেবাননের মুক্তিকামীদের সাহায্য থেকে শুরু করে সমগ্র পৃথিবীতে একটি বিরাট সামরিক ব্যালেন্স তৈরিতে (যদি এখনও খুবই দুর্বল ব্যালেন্স) ইরানের অবদান অস্বীকার করা যায় না। (তুরস্ক নিয়ে অন্যসময় লিখব, কারন তারাই সবচেয়ে শক্তিশালী এই ব্যাপারে। কিন্তু ইরানই ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা)। ইরান নিয়ে বহু স্টেরিওটাইপ আছে, আছে অনেক জল্পনা কল্পনা। সহজভাবে বলার চেষ্টা করলাম, আসলে কি অবস্থা। নীচের তিনটি ভিডিও ইরানীদের কেউ কেউ প্রচার করে থাকে। অনেকের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জন্যে ভাল হতে পারে মনে করে শেয়ার দিলাম। একটু সময় নিয়ে দেখে ফেলতে পারেনঃ

১। Iran Before 1979

http://www.youtube.com/watch?v=dF47rrHd7wo

(এইভিডিওটায় প্রগতিবাদী(!!) আবালদের স্বপ্নগুলো দেখবেন। এরা মনে করে মেয়েরা বিকিনি, হাফপ্যান্ট, শর্ট স্কার্ট পরে পার্টিতে নাচলে আর গলা মিলিয়ে বিয়ার খেলেই দেশ আমেরিকা হয়ে যাবে। এদের জন্যে আফসোস)

২। What you may not know about Ahmadinejad

http://www.youtube.com/watch?v=JyWul35JnjY

৩। ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াতে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার ইন্টারভিঊ আপনারা দেখেছেন। এবার এটি দেখুন। কোয়ালিটির পার্থক্য বুঝবেন। পারভেজ মোশাররফেরটাও এখানে আছে।

http://www.youtube.com/watch?v=u0

অনেক হতাশার মাঝেও কিছু গান আশা জাগায়,

নতুন দিনের স্বপ্ন দেখার কিছু রসদ পাওয়া যায়।

যত শুনি, আরও শুনতে ইচ্ছে করে- এজন্য প্লেয়ারে

রিপিট দিয়ে বার বার শুনি।এমন ১টি গানের কয়েক লাইনঃ

কোন একদিন এদেশের আকাশে কালেমার পতাকা দুলবে

সে দিন সবাই খোদা-ঈ বিধান পেয়ে দুঃখ বেদনা ভুলবে।।

সে দিন আর রবে না হাহাকার, অন্যায়- জুলুম- অবিচার

থাকবে না অনাচার,দুর্নীতি কদাচার,সকলেই শান্তিতে থাকবে

সে দিন সবাই খোদা-ঈ বিধান পেয়ে দুঃখ-বেদনা ভুলবে।।

একাকিনী রমণী নির্জন পথে যাবে,কোন জন কটু কথা কবে না

কোন দিন পথে-ঘাটে সম্পদের মোহে,খুন আর রাহাজানি রবে না

সে দিন আর নয় বেশি দূরে,আর কিছু পথ গেলে মিলবে

সে দিন সবাই খোদা-ঈ বিধান পেয়ে দুঃখ বেদনা ভুলবে।।

-> হে আল্লাহ; মৃত্যুর পূর্বেই যেন এমন ১টি দিন দেখে যেতে পারি।

আচ্ছা আমি যদি এখন আইনস্টাইন কে নিয়ে পোস্ট দেই তাহলে কি আমি ইহুদী হয়ে গেলাম ?

তেমনি হিটলার এর ভালদিক আবিষ্কার করে যদি পোস্ট দেই তাহলে কি নাৎসি হয়ে যাব ?

চে এর বিপ্লবী কার্যক্রম এর বিশ্লেষণ নিয়ে পোস্ট দিলেই কি আমি কম্যুনিষ্ট হয়ে যাব ?

উত্তর আসবে 'না'

তাহলে ইরান কিংবা আহমাদিনেজাদ কে নিয়ে পোস্ট দিলেই আমি সুন্নি থেকে শিয়া হয়ে যাব ?

উত্তর আসবে 'হ্যা'

কারন ইহুদী-খৃষ্টান থেকে শিয়াতে কিছু লোকের চুলকানি বেশী। এরা বাটার স্যান্ডেল পরে ঈদ করে কিন্তু কারও ওয়ালে আহমাদিনেজাদের ছবি দেখলেই এদের এলার্জি বেড়ে যায়।

এরা বহুত ওয়াজ-নুসহত করে বেড়াই কিন্তু টিভিতে প্যান্ট-শার্ট-টাই পরা কোন লোককে ইসলাম নিয়ে কথা বলতে দেখলেই তাকে ইহুদীদের দালাল আখ্যা দেয়। এরা বিপ্লব-ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য কোনদিন রাস্তায় নামার সাহস পাইনা কিন্তু লেপের তল থেকে অমুক-তমুক কে মুরতাদ-কাফের-ইসলাম বিরোধী উপাধি দিয়ে বেড়ায় !

আমি শিয়া মাযহাব নিয়ে পোস্ট দেইনা বললেই চলে, কারণ আমি এ ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতা ছাড়া তেমন কিছু জানিনা আর চুলকানি আলাদের চুলকানি বাড়ানোর কোন ইচ্ছা আমার হয়না।এসব বিভেদ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আলকুদস-আলআকসার দিকে সবাই মিলে রওনা দেবার স্বপ্ন দেখি আমি।

শুধূ মাঝে মাঝে ইরান আর ইরানের নেতাদের নিয়ে যে ভাল জিনিসগুলো দেখি সেগুলো নিয়ে পোস্ট দেয়।

ভাল জিনিস তো ইহুদী থেকেও গ্রহণ করা যায় । আইনস্টাইনের E=mc2 ছাড়া বিজ্ঞান চর্চা করেন দেখি।

শিয়া বিদ্বেষ ঝেড়ে ফেলে একটু ভালভাবে চিন্তা করেন। অনেক কিছু মাথায় ঢুকবে। মাথা গরম আর উগ্রতা কোনকিছুর সমাধান না।

আচ্ছা মাহমুদ আহমাদিনেজাদ কেন এত জনপ্রিয় ?

কারন আমেরিকা-ইজরাইলের কিরুদ্ধে তার হুংকার আর সাদামাটা জীবনযাপন।

আমাদের অনেকে চাই যে মুসলিম বিশ্বের নেতারা এমনই হোক। এজন্যই তারা তাঁর ভালদিকগুলো আলোচনা করে এবং শ্রদ্ধা করে। আজকে আরবের শাসকরা তাদের হেরেমে নেতানিয়াহু-ওবামার সাথে বৈঠক না করে এমন করে মুসলমানদের পক্ষে কথা বলুক কালকেই দেখবেন কত প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ হয়ে যায়। মাগার চে'র গেঞ্জি পইরা ঘুরে বেড়ান কিন্তু একবার আহামদিনেজাদরে প্রো-পিকে আনলেই মুসলিম থেকে খারিজ ! লোল ! বিরাট ফতোয়াবাজ একেক জন !

ও আপনারা তো আবার ইরান-ইজরাইল আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পর্কে বিশ্বাসী ! বিপ্লবের পর আম্রিকাকে ক্যামনে থাপড়ায়া ইরানীরা বের করে দিয়েছিল কিংবা আজকের অবরোধের কারনে তেহরানের হাসপাতালগুলোতে কত লোকের জীবন হুমকির মুখে পড়ছে কিংবা ইরানের মূদ্রাস্ফিতি-মূল্যস্ফিতি কোথায় চলে গেছে এগুলো আপনাদের টিনের চশমায় আসবেনা।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইরানের বক্তব্য-উদ্বেগ-সাহায্য, ফিলিস্তিনীদেরকে গণহারে নিজ দেশে এনে স্কলারশীপে পড়ানো এসব মিথ্যা কথা নাকি !? গতমাসেই সরাসরি গাজার হামাস-ইসলামিক জিহাদ ব্রিগেডের অনেক সদস্য এই শিয়াদের ইরানে ইঞ্জিনিয়ারিং-মেডিকেল পড়তে এসেছে। আপনে এত চিল্লান আপনার দেশে কয়টা গাজার এতিম ছেলে সুযোগ পায় পড়তে ? কারও যদি প্রমাণ লাগে বইলেন, ওদের ফেসবুক আইডির গণলিংক সরবরাহ করা হবে।

আপনাদের একচোখে ফিলিস্তিনে হামাসকে দেয়া ইরানের ফজর-৫ এর খবর ধরা পরেনা, এই ফজর-৫ গতবছরের ইজরাইলি হামলার সময় তেলআবিব পর্যন্ত উড়ে গেছিল।

ইরানের অস্ত্র দিয়ে হিজবুল্লাহর ইজরাইল এর সাথে যুদ্ধকেও আপনারা বলবেন ভুয়া, অভিনয় ! লোল !

আসেন এক হয়ে আলকুদস এর দিকে আগায়। ফিলিস্তিনে ইরানের শিয়াদের অস্ত্র গেছে,যাচ্ছে ।

আসেন দেখি আমরা আরবের বড় বড় আলেমরা কিংবা রোহিংগাদের খেদিয়ে দেয়া ১৪ কোটি মুসলমান কয় বাক্স বুলেট ফিলিস্তিনে পাঠাতে পারি।

আসেন ইহুদীবাদীদের শেষ করে ফিলিস্তিন মুক্ত করার শপথ নিয়ে ফতোয়া দেই।

উহু, তা হবেনা...শিয়া মারেন সওয়াব হবে কিন্তু ইহুদী মারা যাবেনা ! আগে ইরাক-ইরান-লেবানন-পাকিস্তান-আজারবাইজান-আফগানিস্তান-সিরিয়াকে শিয়া মুক্ত করতে হবে, তারপর ফিলিস্তিন-টিলিস্তিন... লোল ! নগদে ব্যাপুক সওয়াব !

*বাশারের মত হারামী লোক ফিলিস্তিনীদের জন্য কি করেছে জানেন আপনে? আপনি জানেন বাশারের সাথে ইজরাইলের ইতিহাস কেমন ? কত লাখ ফিলিস্তিনীকে বছরের পর বছর ধরে খাইয়ে-পরিয়ে-পড়িয়ে আশ্রয় দিয়েছে? আপনি জানেন দামেস্কে হামাসের দপ্তর ছিল এবং হিজবুল্লাহ-হামাসকে দেয়া অস্ত্র্রর চালান এই স্বৈরশাসকের হাত দিয়েই যায় ?

হুম সবই আপনি জানেন, কিন্তু আপনি জানেননা আমেরকিা-সৌদ-কাতার এরা যার পাশে দাড়ায় তার পাশ থেকে খোদ শয়তান পালিয়ে যায়।

সুতরাং, আমেরিকা-ব্রিটেন-জার্মানী-সৌদ-কাতার এসব দেশের বিরুদ্ধে কুকুরও যদি দাড়ায় আমি কুকুরকে সাপোর্ট দিব । কোন সমস্যা আপনার???

*সমস্যা হইলে কাতারে যাইয়া জিহাদ করেন, দেখেন কাতারের আমীর কেমনে কি থেরাপী দেয়। সৌদদের রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। ওই হারামজাদারা অন্যদেশে অস্ত্র-সন্ত্রাসী পাঠাইতেছে কিন্তু নিজ দেশে কোন ইসলামী আন্দোলনের গন্ধ পাইলে কুত্তা লেলিয়ে দেয়। আমি আল-আজহারে পড়া ইসমাইল জাবিউল্লাহ ভাই যিনি জর্ডানেও ছিলেন তার কাছে জেনেছি যে এসব আরবের শাসকরা ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের কি নির্যাতনটাই না করে। সে পোস্ট সোনার বাংলাদেশেও অনেকদিন ছিল স্টিকি করা।

*কথা কম হবে, এই বিংশ শতাব্দীতে ইরানের মত একটা বিপ্লব করেন, খোমেইনীর মত একটা নেতা করেন, একটা রাষ্ট্র করেন যেখানে শরিয়া আইন বলবৎ থাকবে, আহামদিনেজাদের মত একটা প্রেসিডেন্ট পয়দা করেন যে আংগুল উচিয়ে ইজরাইলকে শাসাতে পারবে, একটা মিক্ষা ব্যবস্থা দৈরী করেন যেখানে নিজ দেশে তো বটেই পৃথিবীর নির্যাতিত মুসলমানদের সন্তানরাও নিজেদের স্বপ্নকে উম্মাহর জন্য গড়ে তুলতে পারবে। তারপর ফতোয়াবাজী করতে আসবেন।

*আমি কোন কমেন্ট এর জবাব দিতে পারবনা, দুঃখিত । আবার চাইলে দিতে ও পারি জবাবে কষ্ট পাইলে আমি দায়ি নয় ।

*ইহা একটি ইরান-শিয়া দালালীয় পোস্ট। কারো এন্টেনায় আগুন ধরে গেলে নিজ দায়িত্বে এড়িয়ে যাবেন।

বিষয়: বিবিধ

২৩২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File