খন্ড সমাজের নষ্ট চরিত্র.

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১১ জুন, ২০১৩, ১১:১৯:২৪ সকাল



বিচারপতি হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আমার কলার চেপে ধরলেন ।।

..........................................................................................................................

পুরোনো কিচ্ছা:

সম্রাট আকবর আর বীরবল সমুদ্রের তীর ধরে হাঁটছিলেন। হঠাৎ সম্রাট আকবর তরবারি দিয়ে বালুর ওপর একটা দাগ কাটলেন। বীরবলকে বললেন, না ছুঁয়ে তুমি কি এই দাগটাকে ছোট করে দিতে পারবে ? বীরবল এক মিনিট ভাবলেন। এরপর, তিনি সম্রাটের ওই দাগটার পাশে আরেকটা বড় দাগ কাটলেন। এবার বীরবল বললেন, দেখুন সম্রাট আপনার দাগটা ছোট হয়েছে কী ? সম্রাট আকবর তো থ।

কেচ্ছাটা পুরোনো। কেমন লাগলো আপনাদের ?

প্লিজ অন্যকে ছোট করবেন না। নিজেকে বড় করুন। তাহলে অন্যই ছোট হয়ে যাবে। আমাদের দেশে যখন কেউ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়, তখন তাকে ছোট করার অসভ্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়! সেলুকাস!

সাপ-ভ্রমরের খেলা:

সাংবাদিকতা করতে গিয়ে ভয়ংকর গোখরা সাপ আর বিষওয়ালা বিচ্ছুর কামড় খেয়েছি যে কতবার! তার হিসেবে রাখিনি।

সাপ-ভ্রমরের খেলা দেখেছেন ? চলনবিল অঞ্চলের মানুষেরা হয়তো দেখে থাকবেন। সাংবাদিকতা হলো সাপ আর ভ্রমরের লড়াইয়ের মতো।

ছোট থেকে আজতক। বুকে হাত দিয়ে শপথ করে বলছি। কাউকে থাপ্পর মারা তো দূরের কথা কটূবাক্যও বলিনি। কিন্তু পরশ্রিকাত নপুংসকরা থেমে থাকেনি। ছোবল মেরেছে বুকের পাজরে। সয়ে গেছি, সয়ে যাই আজো।

উদ্ধত বিচারপতি !

উচ্চ আদালত। পৃথিবীতে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। অন্যদিনের মতো সেদিনও নিচতলার বারান্দা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছি। ঠাঁসা ভীড়। হঠাৎ সামনের সারির একজন আমার শাটের কলার চেপে ধরলেন। সজোরে। চোঁখ দুটো লাল। হাত মুষ্টিবদ্ধ। ভয়ানক চিৎকার শুরু করলেন।

- দেখে হাটতে পারিস না স্টুপিড!

আমি হতভম্ব। এ যে বিচারপতি হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া! তখনও তিনি কলারটা শক্তভাবে ধরে আছেন। আমার মাথায় রক্ত উঠে গেলো। রাগের ব্যারোমিটার আসমানে।

আমিও সজোরে আওয়াজ করলাম। ভাবলাম, জেল হলে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবোই।

- আপনি কি অন্ধ হয়ে গেছেন !

বিচারপতি কোন কথা বললেন না। কলারটা ছেড়ে দিলেন। সোজা পথ ধরলেন।

বিচারপতি হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করলাম।

ফোনে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার আমি আমিরুল মোমেনীন মানিক। কাজটা কি ঠিক হলো ? আমার অপরাধ কি ?

কোন জবাব দিলেন না তিনি। ফোনটা কেটে দিলেন।

মিনিট খানেক পরে আমার মুঠোফোনে কল দিলেন হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া। বললেন, স্যরি চিনতে পারিনি আপনাকে।

আমি অবাক হলাম!

ধরুণ আমি সাংবাদিক না, সাধারণ মানুষ, তাই বলে অন্যায়ভাবে উচুঁস্তরের কেউ একজন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন ? অপদস্ত করবেন ? সংবিধানের কোথায় লেখা আছে এটা ?

ব্লাডি জানালিস্ট:

তখন ওয়ান ইলেভেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠালাম। ভীষণ ক্ষেপে গেলেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। চিৎকার করে বললেন, বেয়াদব। ব্লাডি জানালিস্ট। আজই তোর চাকুরী খাবো। তুই আর আদালত চত্বরে আসবি না।

.... ক্যামেরায় পুরোটাই ধারণ হলো।

চাকুরী গেলোনা। বৈশাখী টিভির তখনকার সংবাদ প্রধান আনিস আলমগীর ভাই বললেন, ডকুমেন্টটা রেখে দাও, কাজে লাগবে।

আমি মাঝে মাঝে হাসি! কেমন অসম লড়াই বলুন তো! কোথায় ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ আর কোথায় আমিরুল মোমেনীন মানিক !

শিক্ষাভবনের জন্তুরা:

বাবা রিটায়াড করলেন। পেনশনের টাকা উঠাতে হবে। গেলেন শিক্ষাভবনে। কোন পাত্তাই দিলনা ওরা। শেষে আমি গেলাম। পরিচয় দিলাম। ভ্রুক্ষেপহীন। উল্টো বললেন, যান যান, ছয় মাস লাগবে, পেনশনের টাকা পাবেনা আপনার বাবা। অথচ আমি জানি দু’তিন দিনের ব্যাপার এটা।

প্রতিবাদ করলাম। ওরা আমার সঙ্গে পশুর আচরণ করলো। শেষে গেলাম শিক্ষা অধিদপ্তরের

মহাপরিচালকের কাছে। তিনি সব শুনলেন। এক দিনের মধ্যে কাজটা হয়ে গেলো। শিক্ষাভবনের জন্তুগুলো বললো, স্যারের কাছে কেন গেলেন, আমরাই তো করে দিতাম!,

আর লিখব না কখনো !!!

কখনো ভাবিনি লেখালেখিতে নিয়মিত হবো। কিন্তু চারদিকে এত অসংগতি দেখে স্থির থাকতে পারিনা। তাই দু’ বছর ধরে শপথ করেছি, যতদিন বেঁচে আছি প্রতি বই মেলায় বই বের হবে।

আজতক বেরিয়েছে ৬টি বই। ক. সুর-সঞ্চারী (গানের বই), খ. ইবলিস ( নাটক ),গ. দশ তরুণের প্রেমের গল্প, ঘ. ব্লাডি জানালিস্ট ( গদ্য ), ঘ. বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক ( গদ্য) এবং চ. রাজনীতির কালো শকুন ( গদ্য )।

২০১২ তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক বের হবার পর মৃত্যুর হুমকি এলো।

কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো, এখনো বেঁচে আছি।

কিছু কথা চেপে রাখতে হয়। সব কথা প্রসব করতে হয়না - গুণীজনরা বলেন। তাই সব বলা হলোনা। ঝামেলায় আছি, কি যে হয় !

Amirul Momenine Manik

বিষয়: বিবিধ

২৩৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File