সহিংসতা না সমঝোতাঃ শিবিরের অভিজ্ঞতা - তিন
লিখেছেন লিখেছেন ফরীদ আহমদ রেজা ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:০১:৪৬ দুপুর
আমার শিবির-জীবনের মূলনীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুধু এটা বললে কথা পরিস্কার হবে না যে আমার অবস্থান ছিল সন্ত্রাস এবং সহিংসতার বিপক্ষে। সহিংসতা করবো না, ব্যাপারটা এখানেই শেষ নয়। আমার নীতি ছিল সহিংসতার পরিবেশ যাতে তৈরি না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা। পরিবেশ শান্ত রাখার প্রয়োজনে আমি যে কোন প্রকার ছাড় দিতে সব সময় প্রস্তুত থেকেছি। আমি সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় দায়িত্ব পালনের সময় একই মূলনীতি মেনে চলতে সচেষ্ট থেকেছি।
দেশের যে কোন স্থানে শিবিরের সাথে মারামারি হলে সারা দেশে এর প্রতিক্রিয়া হতো। সিলেটে থাকতে ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এবং ছাত্র ইউনিয়নের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ও অনেকের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। এক-ই ইয়ারের ছাত্রদের সাথে ছাত্রাবাস বা কলেজ ক্যান্টিনে নিয়মিত আডডা হতো। বয়সে যারা ছোট তাদের অন্তরিক ভাবে আদর করতাম এবং আমার প্রতি তাদের আচরণ দেখে বুঝতাম তারা তা অনুভব করে। সে সময়ের কারো সাথে এখনো দেখা হলে আমাকে সম্মান দেখাতে তারা ত্রুটি করে না।
এমসি কলেজ হোস্টেলে মোট ছয়টি ব্লক। অবসর পেলে নিছক ছাত্রদের সাথে দেখা করার জন্যে বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে বেড়াতাম। রুমে রুমে ঢুকে তাদের কুশলাদি জিজ্ঞেস করতাম। একটি ব্লক ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রদের জন্য নির্দিষ্টি। সে ব্লকেও আমার অবাধ যাতায়াত ছিল। সে ব্লকের একজন ছাত্র দাবা খেলায় খুব পারদর্শী ছিলেন। তার রুমে মাঝে মধ্যে দাবা খেলার আসর বসতো। আমি সেখানে গিয়ে দাবা খেলায় অংশ নিতাম। ফিফথ ব্লকের করিডোরে দাবা এবং ক্যারম খেলার আসর জমতো। সেখানে ছাত্রলীগের কলেজ সভাপতির সাথে আমি অনেক বার দাবা খেলেছি।
একটা ঘটনা এখানে বলছি। একবার চট্টগ্রামে শিবিরের সাথে ছাত্রলীগের মারামারি হয়েছে। এমসি কলেজে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ছাত্রাবাসের ক্যান্টিনে বসে তা নিয়ে আলোচনা করছেন। এমন সময় আমি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হই। আমাকে দেখে তারা চোখ টিপে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। আমি তাদের টেবিলে গিয়ে বসে কুশলাদি জিজ্ঞেস করি। হঠাৎ তাদের একজন আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কিছু মনে না করলে রেজা ভাইকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই।’ আমি সম্মতি দিলে তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন, চট্টগ্রামে আমাদের সাথে আপনাদের মারামারি হয়েছে। সেখানে আপনাদের শক্তি বেশি, তাই আমরা কিছু করতে পারিনি। কিন্তু সিলেটে আমরা আপনাদের চেয়ে শক্তিশালী। সিলেটে আপনাদের সাথে মারামারি হলে আপনি কী সেখানে থাকবেন?’
আমি মুচকি হেসে বললাম, ‘অবশ্যই থাকবো। আপনি তো জানেন আমি শিবিরের সভাপতি। শিবিরের সাথে মারামারি হলে আমি সামনের কাতারে থাকবো।’
আমার কথা শুনে তিনি ঢোক গিলে কিছুটা সময় নেন। তারপর বলেন, ‘আপনি সামনে থাকলে আমরা আপনার সাথে কী ভাবে মারামারি করবো?
বললাম, ‘তা হলে মারামারি করবেন না। মারামারি কোন সমাধান নয়। আসুন সবাই মিলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করি। শান্তিপূর্ণ ভাবে সহাবস্থানের নীতি মেনে চলি।’
আরেক বারের ঘটনা। আমি শহর থেকে দেরি করে ছাত্রাবাসে ফিরেছি। এসেই দেখি ছাত্রাবাসের এক জায়গায় ছাত্রদের জটলা এবং চিৎকার। আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হই। আমাকে দেখে ছাত্রশিবিরের এক কর্মী আমাকে বলেন, ‘আমাদের সাথে ছাত্রলীগের ঝগড়া চলছে। আপনি আমাদের সবাইকে এ দিকে আসতে বলুন। যে কোন সময় মারামারি লেগে যেতে পারে।’ আমি সাথে সাথে রাগতঃ স্বরে বললাম, ‘চুপ, একদম চুপ। জাস্ট ফলো মি।’ কাছে গিয়ে দেখলাম, শিবিরের এবং ছাত্রলীগের কয়েকজন অত্যন্ত উত্তেজিত অবস্থায় মুখোমুখি হয়ে আছে। আমি দৌড়ে গিয়ে তাদের মাঝখানে দাঁড়ালাম। শিবিরের লোকদের শান্ত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে ছাত্রলীগের সবচেয়ে উত্তেজিত কর্মীর পিঠে হাত দিয়ে বললাম, ‘আমাকে বলুন কী হয়েছে। শিবিরের কেউ অন্যায় করলে এর যথাযোগ্য প্রতিকার আমি করবো।’ ছাত্রলীগের এ কর্মীকে সবাই ভয় করতো। কিন্তু আমার সাথে তার সুসম্পর্ক ছিল।
তিনি আমার কথা শুনে কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকলেন। চেয়ে দেখলাম তার চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে। সেটা উপেক্ষা করে তাঁকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করলাম। তখন আমার হাত তাঁর কোমরে গুঁজে রাখা লম্বা ছোরার উপর গিয়ে পড়ে। সাথে সাথে হাত সরিয়ে নেই। মনে মনে কিছুটা ভীত হলেও ছোরা-প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাই। তাকে বলি, ‘বললাম তো, আমাকে বলুন কী হয়েছে। শিবিরের কেউ কোন অন্যায় করলে এর বিচার আমি করবো।’ এ সময় ছাত্রলীগের অন্যান্য যারা ছিলেন তাদের একজন এগিয়ে এসে বলেন, ‘ঠিক আছে। রেজা ভাই যখন দায়িত্ব নিচ্ছেন তখন ব্যাপারটা তার হাতে ছেড়ে দাও।’
পরে হোস্টেল সুপারের সহযোগিতায় এ বিরোধ আপোসে শেষ হয়। বিবাদমান দু জন হাত মিলিয়ে ব্যাপারটা ভুলে যাবেন বলে অঙ্গীকার করেন। এর পর আমি সিলেট থাকতে ছাত্রলীগের সাথে এমসি কলেজে আর কোন জটিলতা সৃষ্টি হয়নি।
এ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের এমন একজনের সাথে অনেক বছর পর আমার দেখা হয়। তার সাথেও আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। একান্ত আলাপচারিতার এক পর্যায়ে তিনি আমাকে জানান, সে দিন তাদের ছাত্র শিবিরের সাথে মারামারি করার সিদ্ধান্ত ছিল। কয়েক দিন আগে শহরে বসে এর পরিকল্পনা হয়। আক্রমণের অজুহাত তারা নিজেরাই তৈরি করবেন বলে ঠিক করেন। পরিকল্পনা অনুসারে সবই হয়েছে। হঠাৎ করে ঘটনাস্থলে আমি উপস্থিত হবার কারণে তাদের সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
এখানে শিবির এবং ছাত্রলীগের যাদের কথা বললাম তাদের নাম আমার এখনো মনে আছে। জটিলতা এড়াবার জন্যে সবার নাম উহ্য রেখেছি।
আরেকটি ঘটনা বলা দরকার। এটাও সিলেটের।
ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল এনামুল হক মঞ্জু সিলেট সফরে আসবেন। তাঁকে নিয়ে এমসি কলেজে সাধারণ সভার আয়োজন করবো। যথানিয়মে কলেজ অডিটোরিয়ামে সভা করার জন্যে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছি। কলেজের প্রবেশ পথ, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির দেয়াল, ক্যান্টিন – সর্বত্র পোস্টার লাগানো হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লিফলেট বিলি চলছে।
আগের দিন রাতে খবর পেলাম, জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সেক্রেটারী সিলেট আসছেন। তার আগমন উপলক্ষে জাসদ ছাত্রলীগ একই দিন একই স্থানে সাধারণ সভা করবে বলে ঘোষণা করেছে। খবরটা শোনে অবাক হলাম। খুব বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হলাম। শিবির সাধারণ সভা করবে, এটা কলেজের কারো অজানা নয়। অগত্যা একই দিনে সভা করতে চাইলে তারা কলেজের অন্য জায়গায় করতে পারে। এমসি কলেজে যারা জাসদ ছাত্রলীগের নেতা তাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। তবে তাদের কারো বাসা আমি চিনি না যে তাদের সাথে যোগাযোগ করবো। যোগাযোগ করলে একটা আপোস-ফরমুলা হয়তো বের করা যেতো। এখনকার মতো তখন মোবাইল ফোনের সুবিধা ছিল না। গাড়ি বা মোটর বাইক ছিল না। দায়িত্বশীলদের কারো বাসায় টেলিফোন নেই। এ সময় আমি একটি মেসে থাকতাম। মেসে বা মেসের কাছাকাছি শিবিরের যারা থাকেন তারা ছাড়া কারো সাথে পরামর্শ করা সম্ভব ছিল না। পরামর্শ করে দেখলাম, সময়ের আগে সভাস্থল দখল ছাড়া আমাদের সামনে অন্য কোন বিকল্প নেই। দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে কোন রকম রাত কাটালাম।
ফজরের পর প্রথমে বিভিন্ন এলাকার জনশক্তির কাছে খবর পাঠালাম, সময়ের আগে যেন তারা সভাস্থলে গিয়ে হাজির হন। তবে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্যে তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। একজনকে খবর দিলাম, তিনি যেন সেক্রেটারী জেনারেলকে গাড়িতে করে নিয়ে আসার সময় সাবধানতার সাথে আসেন। পরিস্থিতি খারাপ হলে তাকে নিয়ে আসার দরকার নেই। চলে এলেও তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
পরিবর্তিত অবস্থার প্রেক্ষিতে আরো কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করে জাসদ ছাত্রলীগের এক নেতার সাথে দেখা করতে বের হলাম। এমসি কলেজের পাশে অবস্থিত ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ছাত্র সংসদের তিনি ভিপি ছিলেন। তিনি কোথায় থাকতেন তা আমার জানা ছিল। সব কিছু শোনে তিনি বললেন, এমসি কলেজের জাসদ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সঠিক কাজ করেনি। সাথে সাথে এটাও জানালেন, তার সেখানে করার কিছু নেই। বললেও লাভ হবে না, তারা তার কথা শুনবে না।
এমসি কলেজ অডিটোরিয়ামে আমি যখন পৌঁছি তখন হলরুম কানায় কানায় ভরে গেছে। জাসদ ছাত্রলীগের কয়েকজন স্টেজ দখল করে আছেন। হলরুমের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানে আমাদের কর্মীরা সংখ্যায় বেশি। চোখেমুখে টান টান উত্তেজনা থাকলেও তারা ভীত-সন্ত্রস্ত নয়। একপাশে জাসদ ছাত্রলীগের কিছু কর্মী বসেছেন। আমাকে দেখে শিবির-কর্মীরা উচ্চকন্ঠে শ্লোগান দেয়া শুরু করেন। হলে ঢুকে আমি সরাসরি স্টেজে উঠে পড়লাম। স্টেজে দাঁড়ানো জাসদ ছাত্রলীগের কে একজন সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘রেজা ভাই চলে এসেছেন। আপনারা সবাই শান্ত হোন। তিনি আমাদের বড় ভাই। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা আমরা সবাই মেনে নেবো। তার কথা আপনারা শুনুন।’
আমি কথা বলার আগে কয়েক সেকেন্ড সময় নিলাম। নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম, কী বলবো? আমি কি বলবো, আমি কিছু বলতে হলে আমাদের লোকদের সাথে পরামর্শ করার সুযোগ দিতে হবে? না কি বলবো, এখানে সাধারণ সভার ঘোষণা আমরা আগে দিয়েছি এবং অনুমতি নিয়েছি। সুতরাং জাসদ ছাত্রলীগের সবাই হল ছেড়ে চলে যান। আমি বললেই কি তারা চলে যাবে? না গেলে সংঘর্ষ লেগে যাবে। লোকবল আমাদের বেশি হলেও এর তাৎক্ষণিক পরিণতি হবে, আজকে আমরা কলেজে সভা করতে পারবো না। কী আমি বলবো? দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হলো।
ভেতরে ভেতরে খুব উত্তেজনা থাকলেও আমি খুব শান্ত ভাবে কথা বলা শুরু করলাম। বললাম, ‘জাসদ ছাত্রলীগের ভাইয়েরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার আমার হাতে ছেড়ে দিয়ে আমাকে সম্মানিত করেছেন, এ জন্যে তাদের ধন্যবাদ। ছাত্র শিবির এখানে সভা করবে, এ ঘোষণা অনেক আগে দিয়েছে। সুতরাং নীতিগতভাবে শিবির এখানে সভা করার বৈধ অধিকারী। যেহেতু এ ব্যাপারে সৃষ্ট বিরোধে সিদ্ধান্ত প্রদানের দায়িত্ব শিবিরের সভাপতি হিসেবে আমাকে প্রদান করা হয়েছে, তাই আমি শিবিরের বৈধ এ অধিকার জাসদ ছাত্রলীগকে প্রদান করছি। ঘোষণা করছি, আমাদের সভা আমরা পামতলায় খোলা মাঠে করবো। শিবিরের সকল কর্মীকে আমি এখনই হল ছেড়ে দিয়ে পামতলায় গিয়ে জমায়েত হতে অনুরোধ করছি।’
আমার ঘোষণাকে উপস্থিত সবাই মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে স্বাগতঃ জানালো। তবে শিবিরের কয়েকজন কর্মীর মুখ দেখে বুঝেছি, তারা আমার ঘোষণায় সন্তুষ্ট হয়নি। যারা এমসি কলেজে যাননি তাদের জন্যে বলছি, পামতলা এমসি কলেজের অভ্যন্তরে একটি খোলা মাঠে অবস্থিত। এখানে সাধারণ সভা করার অর্থ হলো কলেজের সকল ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকের চোখের সামনে তা সম্পন্ন করা। বৃষ্টি না হলে এবং পরিবেশ অনুকুল থাকলে সাধারণ সভার জন্যে এর চেয়ে উপযুক্ত স্থান কলেজে দ্বিতীয়টি আর নেই।
পামতলায় নিরুদ্বেগ চিত্তে সাধারণ সভা শুরু করলাম। হামলা বা কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা আমাদের মনে তখন ছিল না। প্রথমে স্থানীয় কয়েকজন বক্তৃতা দেয়ার পর প্রধান অতিথি এনামুল হক মঞ্জু বক্তৃতা শুরু করেন। তার বক্তৃতার সময় আমি চারিদিকে বার বার তাকিয়েছি। আমি দেখেছি রাস্তায়, টিলার উপর, অফিস বিল্ডিং-এর বারান্দা এবং আর্টস বিল্ডিং-এর পাশে দাঁড়িয়ে অনেকে তার বক্তৃতা শুনছে। প্রায় ঘন্টা খানেক তিনি বক্তৃতা করেন। এক সময় সাধারণ সভা শেষ হলো। আমার মনে হয় শিবিরের খুব কম সাধারণ সভা এ রকম উদ্বেগহীন ভাবে আমার জীবনে সমাপ্ত করতে পেরেছি।
বিকালে ছিল সেক্রেটারী জেনারেলের উপস্থিতিতে সদস্য সভা। সেখানে অন্যান্য বিষয়ের সাথে সাধারণ সভার পর্যালোচনা ছিল অন্যতম ইস্যু। সভায় তীব্রভাবে আমার সমালোচনা শুরু হলো। অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়েছে, হলরুমের তুলনায় খোলামাঠ সাধারণ সভার জন্যে অধিকতর উপযুক্ত ছিল, এনামুল হক মঞ্জু দীর্ঘসময় ব্যাপী শিবিরের উদ্দেশ্য-লক্ষ্য এবং কার্যক্রম ব্যাখ্যা করার সুযোগ পেয়েছেন এবং উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। এ সব বিষয়ে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না। আমি কেন কারো সাথে পরামর্শ না করে জাসদ ছাত্রলীগকে অডিটোরিয়াম ছেড়ে দিলাম, এটাই ছিল তাদের সকলের প্রশ্ন।
সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিয়ে কানভরে তাদের কথা শুনলাম। তারপর বললাম, ‘আমি স্বীকার করি, আপনাদের সাথে পরামর্শ করা আমার উচিত ছিল। এটা আমার ভুল হয়েছে। এ জন্যে আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তবে আপনাদের বোঝা দরকার, তখন কারো সাথে পরামর্শ করার পরিবেশ ছিল না। আর সংঘর্ষ এড়ানোর জন্যে আমি এটা করেছি। কারণ সংঘর্ষ হলে আমরা সাধারণ সভা করতে পারবো না, ব্যাপারটা শুধু তা নয়। সংঘর্ষের ক্ষয়-ক্ষতি বাদ দিলেও অন্ততঃ কয়েক মাসের জন্যে এমসি কলেজে কাজের পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে যেতো।’
আমি কথা বলার পর এ প্রসঙ্গে সদস্যদের কেউ আর কোন প্রশ্ন তুলেননি। ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয়ে যায়।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
১৪১৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায়।
ভাল লাগলো এই ব্লগে আইডি দেখে । বিডিটুডের মুল পেজের মতামত পাতায় আপনার অনেক গুলো লেখা পড়েছি । ভাল লেগেছে ।
এই পর্বটা বিডিটুডের মুল পাতায় সকালেই পড়েছি! এখন ব্লগ ওপেন করে নিজের উপস্হিতি জানান দিলাম!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মন্তব্য করতে লগইন করুন