আব্দুল লতিফ মন্ত্রীত্ব হারাচ্ছেন, কারণ হজ্ব না জয়?

লিখেছেন লিখেছেন ফরীদ আহমদ রেজা ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:০২:৪৪ সকাল

আওয়ামী লীগের মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসির দাবিতে বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সরকার বিরোধী এক সিনিয়র আইনজীবী তাঁকে ক্রস-ফায়ারে নিয়ে মেরে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। কাউকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা একটা জঘন্য কাজ। এটা বিনা বিচারে হত্যা এবং নীতিগত কারণে আমরা চাই না কাউকে, সে যত বড় অপরাধী হোক, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হোক। এ ধরণের হত্যা কখনো বৈধ হতে পারে না। যে কোন অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে আত্মপক্ষ সমর্থনের পূর্ণ সুযোগ দিতে হবে। শুধু ন্যায় বিচার করলে হবে না, ন্যায়বিচার হয়েছে বলে প্রমাণও রাখতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত মন্ত্রীর বক্তৃতার ভিডিও ফুটেজে দেখেছি মন্ত্রী বলেছেন, জামাতে ইসলামেরও তিনি বিরোধী। তবে হজ্জ এবং তাবলিগ জামাতের ঘোর বিরোধী। এটা দেখার পর ফেইসবুকে আমি একটা স্টেটাস দেই। সেখানে বলেছি, ‘জামাতে ইসলামী একটি রাজনৈতিক দল। তবলিগ জামাত একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় দল। এ দু দলের বিরোধিতা করার অধিকার যে কারো আছে। কিন্তু বাংলাদেশের এক মন্ত্রী হজ্জ নিয়ে এবং নবী মুহাম্মদ (স) সম্পর্কে যে কটুক্তি করলেন তা শোনে আমরা অবাক। পৃথিবীর কোন অমুসলিম দেশের কোন সরকারী দায়িত্বশীল হজ্জ এবং নবী মুহাম্মদ (স) সম্পর্কে এ রকম কথা বলেছেন বলে আমাদের জানা নেই। মহানবী মুহাম্মদ (স) হজ্জের বিধান প্রবর্তন করেছেন বলে মন্তব্য করে তিনি মুর্খতার পরিচয়ও দিলেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তবে হ্যাঁ, তিনি সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কেও কটুক্তি করেছেন। অন্ততঃ শেষোক্ত কারণে তাঁকে জবাবদিহি করতে হবে এবং মূল্য দিতে হবে।’

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট লোকেরা সাংবাদিকদের বলেছেন, পবিত্র হজ্জ, মহানবী (স) ও সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কটুক্তি করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে তা নিশ্চিত করে বলেছেন, নিয়মতান্ত্রিকতা রক্ষার স্বার্থে তা কার্যকরী হতে কিছুটা সময় লাগবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পরও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিষয় যাদের মনে আছে তাদের সন্দেহ কাটেনি। টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর কোনটা যাবে এবং কোনটা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো ফিরে আসবে কেউ বলতে পারে না। তবে মন্ত্রীত্ব চলে গেলেও মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন থেকে যাবে, কোন অপরাধে তিনি মন্ত্রীত্ব হারাচ্ছেন? হজ্জের বিরুদ্ধে বা রাসুলের বিরুদ্ধে কটুক্তি করার জন্যে, না কি জয়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্যে?

পত্রপত্রিকার খবর থেকে আমরা জানতাম সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রীর এবং কারো মতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, জয় সরকারের কেউ নয়। জয় বেতন নেন কি না আমরা জানতাম না। সরকারের কাজ করে কেউ বেতন নিলে দোষের কিছু নয়। তাই বলে এতো বড় বেতন, মাসিক ২ লাখ ডলার? এটা অবিশ্বাস্য। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এটা যখন বলেছেন, তখন ধরে নেয়া যায় এর মধ্যে কিছুটা হলেও সত্যতা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যপারে সাফাই দিলেও মানুষের মনে সন্দেহ থেকে যাবে। ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পর সরকারের মন্ত্রীদের লুটপাঠের খবর মানুষ ভুলে যায়নি। তাই সজীব ওয়াজেদ জয়কে জড়িয়ে বলা অভিযোগ আরো ডালপালা মেলে বড় হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীর কাছে যিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যত তাঁর বিরুদ্ধে এ রকম ধৃষ্টতামূলক কথা বলে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী পার পেয়ে যাবেন, এটা হতেই পারে না।

বাংলাদেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অপরাধে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এ কারণে কাউকে কখনো শাস্তি পেতে হয়নি। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামাতে ইসলামীর কয়েকজন নেতাকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার নাটক তৈরি করেই প্রথমে আটক করা হয়। পরে তাদের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে অবশ্য এর আগে দাউদ হায়দার এবং তাসলিমা নাসরিন দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক গান রচনা অপরাধে তন্ময় মজুমদার নামক এক তরুণকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে সাইবার অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারক। প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধুর সাথে বেয়াদবী করার কারণেও ইতোপূর্বে কয়েকজনকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বললে শাস্তির বিধানকে কেউ কেউ সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘হীরক রাজার দেশে’র সাথে তুলনা করছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই নিজের ধার্মিকতার কথা প্রচার করেন, সুযোগ পেলে হজ্জ এবং ওমরাহ করতে যান। শেখ হাসিনার এটাও কৃতিত্ব যে যারা এক সময় ইসলাম এবং মুসলমানদের ব্যাপারে ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করেছেন তাদের অনেকে সরকারী টাকায় হজ্জে যাচ্ছেন। আলোচিত মন্ত্রীও একবার হজ্জ করে এসেছেন। বাংলাদেশের অনেক মানুষের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ সরকারের দৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রী বা বঙ্গবন্ধু কি ইসলাম বা নবী-রাসুল থেকে অধিক সম্মানিত?

কাদের সিদ্দিকী আপত্তিকর বক্তব্যের জন্যে নিজের ভাইকে ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ করেলেও মেক্সিকো থেকে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, স্বাধীন ও আধুনিক মানুষ হিসেবে তিনি হজ্জ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। এ বক্তব্য প্রত্যাহার বা এর জন্যে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। তবে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দেবেন তা তিনি প্রতিপালন করবেন। এ থেকে বোঝা যায়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রীর আনুকল্য অর্জনের আশা পরিত্যাগ করেননি। কাদের সিদ্দিকী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেছেন, শামিম ওসমানের পক্ষে যদি প্রধানমন্ত্রী দাঁড়াতে পারেন তা হলে তাঁর ভাইয়ের পক্ষে কেন দাঁড়াবেন না? আমরা জানি শুধু শামিম ওসমান নয়, এর আগে সৈয়দ আবুল হোসেন এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পক্ষেও প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন। ব্লগার রাজিব নিহত হবার পর দেশবাসী সে হত্যার নিন্দা করার সাথে সাথে নবীর বিরুদ্ধে কটুক্তি করারও নিন্দা করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নবীর বিরুদ্ধে কটুক্তির নিন্দা করেননি। দেশের বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে কোন কথা বলবেন বলে হয় না। তবে তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হবে কি না তা এখনো পরিস্কার নয়।

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর শুভদৃষ্টিতে থাকার কারণে পত্রপত্রিকায় তা তেমন প্রকাশিত হয়নি। তাঁর খুঁটি নড়বড়ে হয়ে যাবার সাথে সাথে এখন তা আলোচনায় আসছে। জানা গেছে, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ৪৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠান বিনা দরপত্রে এবং কখনো বিনা মূল্যে তাঁর নিজের লোকদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। নিজের হাতে সরকারি কর্মকর্তাকে প্রহার করেছেন। হরতালকারীদের বাড়িতে ঢুকে তাঁদের হত্যা করার জন্য ছাত্রলীগের কর্মীদের প্রকাশ্যে নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের প্রতি চরম অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদের পৈতৃক বাড়ি অবৈধভাবে দখল করেছিলেন। সে বাড়ি তাঁর নিকট থেকে পুনরুদ্ধারের জন্যে বঙ্গবন্ধুকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা করার কারণে দেশের বিভিন্ন আদালত মানুষকে চাকরিচ্যুত করেছে, সাত বছর কারাদন্ড পর্যন্ত দিয়েছে। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বিভিন্ন মহানবী (সা), হাইকোর্ট, বিরোধী দলের নেতা-নেত্রী, সংখ্যালঘু মানুষ, বুদ্ধিজীবী বা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে তাই বলার পরও কোন শাস্তি পেতে হয়নি। ধর্ম এবং ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন এর জন্যে বাংলাদেশের পেনাল কোডের ২৯৫-ক ধারা অনুসারে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু তিনি ছিলেন এতদিন আইনের উর্ধে। এখন শোনা যাচ্ছে, বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সরকার ৫০টি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার এতোদিন কি করেছে? আপত্তিকর মন্তব্য করার পর মামলা হবার অর্থ হচ্ছে, সরকারে থাকলে তিনি সাধু এবং সরকার থেকে চলে গেলে তিনি চোর? এটা কোন নীতির কথা নয়, এর নাম স্বেচ্ছাচারিতা।

আমাদের বিরেবচনায়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রীত্ব হারালেও তাঁকে বিচারের আওতায় আনা হবে না, তাঁকে নিয়ে যতই হৈ চৈ হোক না কেন। তিনি বিদেশেই থেকে যাবেন। রাজনৈতিক প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেয়া হবে। কিন্তু সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দিবে না। এর কারণ, সরকারের হাঁড়ির খবর তাঁর জানা। তাঁকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে তিনি সরকারের আরো অনেক গোপন তথ্য ফাঁস করে দিতে পারেন। তবে হ্যাঁ, এরশাদের মতো মামলার খড়গ চালু রেখে তাঁকে চাপের মধ্যে রাখা হবে, যাতে তিনি আর বাড়াবাড়ি না করেন।

বাংলাদেশের কোন কোন বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে পাগল বা পাগল বংশের লোক বলে অভিহিত করেছেন। পাগল হলে তিনি এতোদিন মন্ত্রীত্ব করতে পারেন না। পাগল হলে তাঁর কোন অপরাধ আর অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে না। এ জন্যে যারা তাঁকে পাগল বলছেন তারা ঠিক বলছেন না। তিনি যা করেছেন তা ইচ্ছে করেই করেছেন। কেন করেছেন তা নিশ্চয়তা করে বলা না গেলেও আমরা অনুমান করতে পারি। হতে পারে কোন কারণে জয়ের উপর তিনি সন্তুষ্ট নহেন। জয় এবং হজ্বের বিরুদ্ধে বলে তিনি হয়তো নিজের জন্যে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস নিশ্চিত করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা বিদেশে টাকা পাচার করছেন, বাড়ি করছেন, এ সকল অভিযোগ অনেক দিন থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে। আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এর আগে এক দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন বলেও খবরে জানা গেছে। কিন্তু সে আবেদন পরিপক্ক হবার আগেই তিনি দেশে চলে আসেন। এবার তিনি কৌশলের সাথে এক-ই সাথে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত নেতা এবং ধর্মপ্রাণ মানুষকে আক্রমণ করেছেন। তিনি জানেন, এর ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ফাঁসির আওয়াজ উঠবে। জয়ের বিরুদ্ধে বলার পর সরকারও তাঁর বিরুদ্ধে চলে যাবে। এখন তিনি যে কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে এটা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন যে দেশে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নেই।

আইনের আওতায় আনার কথা না বলে অনেকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসি দাবি করছেন। তাদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা কেন তাঁর ফাঁসি চান? তিনি কি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন? তিনি কি মুসলমান ছিলেন? আপনারা তাঁর সম্পর্কে কতটুকু জানেন? এটা ঠিক, তিনি একবার হজ্ব করেছেন। হজ্ব করলেই কি মুসলমান হওয়া যায়? ঈমান হচ্ছে একটি বিশ্বাসের নাম, কাজের নাম নয়। দেশে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে কারো চিন্তাধারা জানার উপায় নেই। তাই তাঁর ঈমান ছিল কি না তা আমরা জানি না। কেউ যদি সাবালক হবার পর বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগ করে ঈমান গ্রহণ না করে থাকে তা হলে কি তাঁকে মুসলমান বলা যায়? আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী মুসলমান না হলে ধর্মত্যাগী হবার প্রশ্নই আসে না। কেউ স্বেচ্ছায় ইসলাম ত্যাগ করলে তাকে মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী বলা হয়। ধর্ম ত্যাগ করলেই কি তাঁকে ফাঁসি দিতে হবে? তিনি কেন ধর্ম ত্যাগ করলেন তা কি আপনারা জানবেন না? তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিবেন না? তাঁর কোন ভুল ধারণা বা অস্পষ্টতা থাকলে তা দূর করার চেষ্টা করবেন না? তাঁকে তওবা করার সুযোগ না দিয়ে ফাঁসি দিলে অধর্ম হবে। আবার ইসলামের প্রাথমিক যুগে ধর্মত্যাগীর জন্যে রাজনৈতিক বিবেচনায় চালুকৃত আইন বর্তমান যুগে কতটুকু প্রযোজ্য তা কি বিবেচনা করবেন না?

একজন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে ফাঁসি দিয়ে আপনারা কি অর্জন করবেন? ইসলাম সম্পর্কে ঠিক তাঁর মতো মনোভাব পোষণকারী লোক বাংলাদেশে বা সরকারে কি আর নেই? ইসলাম এবং এর বিভিন্ন বিধি-বিধান সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণকারী লোকের সংখ্যা বাংলাদেশে কম নয়। আপনারা কি আইনের ভয় দেখিয়ে তাদের ইসলাম শিক্ষা দিতে পারবেন? আমরা মনে করি, যাদের মনে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন আছে তাদের কথা বলার সুযোগ দেয়া উচিত। কথা বললে তাদের মনোভাব জানা যাবে। কথা বললে তাদের সংখ্যাটাও জানা যাবে। মানুষের মনের জিজ্ঞাসা জানলে এর জবাব দেয়ার সুযোগ থাকবে, তাদের সাথে মতবিনিময় বা ডায়লগ করা যাবে। ইসলাম সম্পর্কে দেশে-বিদেশে হাজারো প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে। ধমক দিয়ে মুখ বন্ধ করে অথবা মিছিল করে কি সে সকল প্রশ্নের সমাধান সম্ভব? আলোচনার মাধ্যমে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করুন। ধমক দিয়ে কারো মুখ বন্ধ করতে যাবেন না। আল্লাহ কাউকে দারোগা করে পাঠাননি।

লন্ডন, ২ অক্টোবর ২০১৪

বিষয়: বিবিধ

১৫৪৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

272844
১০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৩১
সুশীল লিখেছেন : জয়
272852
১০ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:১০
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

যাদের মনে ইসলাম সম্পর্কে প্রশ্ন আছে তাদের কথা বলার সুযোগ দেয়া উচিত। কথা বললে তাদের মনোভাব জানা যাবে। কথা বললে তাদের সংখ্যাটাও জানা যাবে। মানুষের মনের জিজ্ঞাসা জানলে এর জবাব দেয়ার সুযোগ থাকবে, তাদের সাথে মতবিনিময় বা ডায়লগ করা যাবে। ইসলাম সম্পর্কে দেশে-বিদেশে হাজারো প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে। ধমক দিয়ে মুখ বন্ধ করে অথবা মিছিল করে কি সে সকল প্রশ্নের সমাধান সম্ভব? আলোচনার মাধ্যমে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করুন। ধমক দিয়ে কারো মুখ বন্ধ করতে যাবেন না। আল্লাহ কাউকে দারোগা করে পাঠাননি।


ভালই বলেছেন- স হ ম ত ! ! !

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
272911
১০ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৮
পুস্পিতা লিখেছেন : জয়...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File