উৎসব বনাম নীতি-ধর্ম ও তত্ত্বকথা
লিখেছেন লিখেছেন রওশন জমির ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ০৫:৪৪:০১ বিকাল
পহেলা বৈশাখ বা পহেলা ফাল্গুনের মতো উৎসবের দিনগুলো যখন এগিয়ে আসে, তখন দুটি প্রবণতা বেশ চাগাড় দিয়ে ওঠে। একদিকে, এদিনগুলো উদ্যাপনের নানা অনুষ্ঠানমালা ঘোষিত হতে থাকে। ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় এর ছাপ পড়ে বেশি। প্রিন্ট মিডিয়া বিশেষ সংখ্যা বের করা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অন্যদিকে, ধর্মীয় মহল এর বিরুদ্ধে নানা তত্ত্ব ও নীতিকথা প্রচার করতে থাকে। এভাবেই দিন যত যাচ্ছে, প্রচারমাধ্যম নানা উৎসব নিয়ে মাতামাতি করছে আর ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো নানা উদ্ধৃতি টেনে, যুক্তিতর্ক দিয়ে এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই যে পক্ষ-বিপক্ষ, একি জগৎ-বাস্তবতার দ্বান্দ্বিক প্রকাশ, নাকি ভিন্ন কিছু ? সেই পরিপ্রেক্ষিতে এ-দ্বন্দ্ব কি চলতেই থাকবে, নাকি এর বাইরেও পরস্পর মিলনের কোনো উপায় আছে?
আনন্দ-উল্লাস প্রকাশের প্রবণতা মানব-জীবনের অচ্ছেদ্য অংশ। জীবনের নানা পর্যায়ে অপূর্ব প্রাপ্তির পর্বে মানুষ উৎফুল্লবোধ করে। চিৎকার দিয়ে সে তা জানান দিতে কসুর করে না। কিন্তু সম্মিলিতভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশের সূচনা কবে থেকে, তা বোধহয়, একমাত্র নৃবিজ্ঞানীরাই বলতে পারবেন। তাই মানুষ যখন যুথবদ্ধতায় অভ্যস্ত হতে থাকে, তখন প্রথম কোন উপলক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে নেচে উঠেছিল, তা আমাদের মতো সাধারণদের জন্য কৌতূহলের বিষয় বৈ কি! কিন্তু মানুষ যে উল্লাসপ্রবণ, উচ্ছ্বাসপ্রবণ, তা তো অস্বীকার করার জো নেই। কারণ, জীবন যদি শুধু নিস্তরঙ্গ ও নিরানন্দ হয়, তাহলে এর প্রতি নিরাশা, বিতৃষ্ণা জন্মানোই স্বাভাবিক। তাই জীবনের তাগিদেই আনন্দ-প্রবাহ অব্যাহত থাকবে, রাখতেই হবে। কিন্তু কীভাবে?
যারা ব্যক্তি-জীবনে ধার্মিক, নিজ ধর্মে তাদের যে উৎসবের অনুমতি দেওয়া আছে, তাতেই তারা সন্তুষ্ট থাকে। ইসলাম ধর্মে দুটি ঈদ উৎসব পালনের অনুমোদন নয় শুধু, নির্দেশ বিদ্যমান। আবার প্রতি সপ্তাহে জুমার দিনও গুরুত্বসহকারে পালনের আদেশ আছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যাপারে একটি কথা শোনা যায় যে, ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’। খ্রিস্টীয়গণ বড়দিন, ইস্টার সানডে ইত্যাদি ফি-বছর পালন করলেও সাপ্তাহিক জমায়েতেরও রীতি আছে। বৌদ্ধগণ কঠিন চিবরদান ও আষাঢ়ে পূণিমা পালন করে থাকে। বিয়ে উপলক্ষ্যে উৎসব করার রীতি সব ধর্মেই আছে। মুসলিম সমাজে খতনা-অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল, এখন এতে ভাটা পড়েছে।
ধর্মীয় পদ্ধতির বাইরে জন্মোৎসব-জন্মবার্ষিকী, বিবহোত্তর সংবর্ধনা, বিবাহ-বার্ষিকী ইত্যাদি নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে নানাজনের নানা মত। এমন কি রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও একাধিক মন্তব্য শোনা যায়। মানে এর কার্যক্রম ও উদযাপন পদ্ধতি নিয়ে সংগত-অসংগত নানা কথা তোলা হয়। উত্তর সর্বত্র বিরাজমান না থাকলেও এবং সহজ না হলেও, অনুষ্ঠান উদযাপন কিন্তু বন্ধ থাকে না। তাহলে সমালোচকদের উপযোগিতাটা বিচার করবো কীভাবে?
সামাজিক, ক্ষেত্রবিশেষে রাষ্ট্রিক উৎসবের ধর্মীয় সিদ্ধতা নিয়ে অনেকে বেশ দ্বিধান্বিত। সামাজিক উৎসবে পারস্পরিক বন্ধনবৃদ্ধিসহ তা বিস্তারের একটি লক্ষ্য থাকে। রাষ্ট্রীয়/ জাতীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে থাকে ইতিহাস-ঐতিহ্য চর্চার প্রণোদনা, রাষ্ট্রিক প্রয়োজনে যা খুবই দরকার। প্রশ্ন হল, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় চেতনা কি ধর্ম বিরোধী? তা না হলে ধর্মের সংশ্লিষ্টতা টেনে দ্বিধা তৈরির চেষ্টা হবে কেন?
পৃথিবীর কোথাও নিরেট ধর্মীয় উৎসব নিয়ে সমাজ বা রাষ্ট্রের যেখানে আপত্তি নেই, সেখানে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় উৎসবকে ধর্মের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে কী লাভ? বটে, এ সব উৎসবে ধর্মীয় রঙের মিশেল হচ্ছে। কখনো জ্ঞাতসারে, কখনো অবচেতনে। একারণে তখন সরাসরি অনুষ্ঠান-উৎসব বর্জনের পথে না গিয়ে যে উপাদানগুলো ধর্মকে আহত করে, মানবতাকে বাধাগ্রস্ত করে, শুধু তা এড়িয়ে যাওয়ার পথ দেখানো যায় কি-না। তা না হলে মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো বোকামি হয়ে দাঁড়ায়! এটি কি গভীরবোধ-সম্পন্ন কোনো মানুষের কাম্য হতে পারে?
এই কদিন আগেও, মুসলিম সমাজে কারো মৃত্যুর পর, কুলখানি বা চেহলাম অনুষ্ঠানের রেওয়াজ ছিল। শবে বরাত, শবে কদর ও শবে মিরাজ উপলক্ষ্যে উৎসব উৎসব ভাব তৈরি হত। অসচ্ছল কারো জন্য তা আর্থিক চাপ বটে। কিন্তু অর্থে-বিত্তে যাদের কোনো কমতি নেই, তাদের জন্য তা তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বরং এর মাধ্যমে অত্মীয়-স্বজনসহ গরিব লোকদের প্রতি বদান্যতা প্রকাশের সুযোগ হত, পারস্পরিক সম্পর্ক গভীর হত। কিন্তু ইসলামি অনুশাসনের আক্ষরিক ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের চাপে আজ এগুলো কোণঠাসা। গ্রামীণ পরিবেশে শীতকালে, প্রায় সর্বত্র তরুণ সমাজের উদ্যোগে দলীয় গান বা নাটকের আয়োজন হত। ভাটি অঞ্চলে বর্ষা মরসুমে জারি-সারি ও কেচ্ছা-কাহিনির ধুম পড়ে যেত। আজ তা নেই সে একই কারণে। কিন্তু এতে হলোটা কী? হ্যাঁ, এখন সেই বিনোদনের জায়গা দখল করেছে স্যাটেলাইট টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদি। যদি গ্রামীণ সমাজের শেকড় থেকে উঠে-আসা বিনোদন-অনুষ্ঠানের সে সব রীতি বজায় থাকতো, এত দ্রুত অবক্ষয়-অবনমন তৈরি হত না, সে নিশ্চয় করে বলা যায়।
আক্ষরিক ধর্মীয় অনুশাসনের চাপে সামাজিক উৎসবের মাত্রাও কমে আসছে। উৎসবাদি যখন কমছে, মানুষের পারস্পরিক দেখাসাক্ষাৎও কমছে। মেল-বন্ধনের গেরোও ঢিল হতে শুরু করেছে। মানুষ এমনিতেই আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপরায়ণ। আক্ষরিক ধর্মীয় অনুশাসনের ফাঁক গলিয়ে পুঁজির পুঁজ সবাইকেই সংক্রমিত করছে। অর্থাৎ এতে একা একা ভোগ করার, খাওয়া-দাওয়া ও ফূর্তির অবাধ সুযোগ তৈরি হচ্ছে। চাঙা হচ্ছে বাজার। ব্যক্তিক ভোগের দরোজা যেহেতু খোলা, পুঁজি ও এর সহায়ক মাধ্যমগুলো বসে নেই, নিজ গতিতেই এগিয়ে চলেছে। সঙ্গে সঙ্গে শিথিল হচ্ছে আবহমান কালের সামাজিক ও মানবিক সম্পর্কগুলো। কিন্তু এতে শেষে লাভ হচ্ছে কার?
সেই অতীতে রাষ্ট্রের পরিচিতি ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল অঙ্গাঙ্গিভাবে। এখন রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক সুবিধাবাদী পর্যায়ের। এই আংশিক ধর্মযুক্ত/ ধর্মবিযুক্ত রাষ্ট্র-ব্যবস্থাকে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান অভিহিত করছে ‘ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থা’ হিসাবে। অবশ্য ইসলাম ধর্মীয়, বিশেষত আমাদের দেশের কতিপয় পণ্ডিতদের মাঝে এই নিয়েও আপত্তি আছে। থাকতেই পারে। কিন্তু ধর্মযুক্ত রাষ্ট্র/ সমাজ-ব্যবস্থায় উৎসবের সার্বজনীন কোনো রূপ আছে কি-না, তারা বলছেন না। মূল সমস্যাটা এখানেই। তারা যদি পাঁজিপুঁথি ঘেটে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মেলবন্ধনের কোনো সূত্র উদ্ধার করে তা প্রয়োগের বাস্তব নমুনা আবিষ্কার করতে সক্ষম হন, তখনই তরুণ সমাজ তাদের ডাকে সাড়া দিতে এগিয়ে আসবে। ধর্ম পালনে সবাই স্বাধীনতা চায়। এখানে কেউ কারো বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে চলবে না। ধর্মীয় পরিচিতি থাকবে, থাকতেই পারে। কিন্তু বিশ্বমানবতার অভিন্ন স্রোতে গা মেলানোর সুযোগ/ পথ তৈরি না হলে আধুনিক মনে তা কোনো আবদেন সৃষ্টি করতে পারবে না। তাই এ বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।
ঈদ, বড়দিন ও পুঁজো ইত্যাদি উৎসবে বেশ কঠিনভাবে পুঁজির ছাপ লেগেছে। কিন্তু এব্যাপারে কি কারো কোনো সচেতনতা আছে? মানে ধর্মীয় আবেদন উদ্ধারের কোনো চেষ্টা আছে? এখন এই সব উৎসব মানে বাজারের চাঙা ভাব। খাদ্য-পরিধেয়সহ সকল বিষয়েই কেনাবেচার ধুম লেগে যায়! শেষ বিচারে যা ‘তেলা মাথায় তেল ঢালা’র চমৎকার এক পর্ব, যা ধর্মের মূল চেতনার সঙ্গে কোনোভাবেই যায় না। তারপরও ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ এব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব! এতো গেল উৎসবের কথা, আরো একটু গভীরের প্রশ্ন তোলা হোক। রমজান কৃচ্ছতা-সাধনের মাস। কিন্তু উপোস করার অজুহাতে গুণে-মানে-পরিমাণে ও সংখ্যায় অধিক ভোগ করার যে প্রাণপণ চেষ্টা, তার বিপক্ষে কারো কোনো মন্তব্য নেই। কারণ, বক্তা নিজেই এই ভোগের শিকার, এতে আদ্যোপান্ত নিমজ্জিত। আর এভাবেই পহেলা বৈশাখসহ সকল জাতীয় উৎসব হাতছাড়া হয়ে চলে গেছে পুঁজির কৌশলী নিয়ন্ত্রণে। পহেলা বৈশাখ মানে নতুন জামা, নতুন কাপড়, ইলিশ মাছ, টিভি-শো, নানা অনুষ্ঠান, উদরপূর্তির দেদার আয়োজন। ভোগ-বিলাসিতার এইতো সুযোগ। কে এই স্রোতের বিপক্ষে দাঁড়াবে এবং কীভাবে?
ইসলাম ধর্মে উৎসব-অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট কী? বিশেষত ঈদ? একি কাকতালীয় কোনো ঘটনা, নাকি এর পেছনেও রয়েছে গূঢ় কোনো কারণ, সূক্ষ্ম কোনো চেতনা? সেই সময়েও যদি উৎসবের পেছনে কোনো লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সক্রিয় থাকে এবং এখনো ঠিক সেভাবেই আছে, তাহলে ধর্মীয় প্রণোদনার বাইরে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় প্রেক্ষাপটেও নানা উৎসব-অনুষ্ঠানের প্রবর্তন হতে পারে। উদাহরণত বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের পেছনেও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিদ্যমান। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি যখন পাকিস্তানি শাসক মহলের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায়, তখন এই পহেলা বৈশাখই বাঙালিত্ব প্রকাশের অনন্য এক আশ্রয়। পহেলা বৈশাখ ছিল সম্মিলিত জমায়েতের এক উপলক্ষ্য মাত্র। শাসকগোষ্ঠী নানাভাবে নিজেকে ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে প্রকাশ করলেও বৈশাখী উৎসব তখনও কোনোভাবেই ধর্মের বিপক্ষে দাঁড়ায় নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, যখন পাকিস্তানি শাসকদের চোখ রাঙানি নেই, তা অব্যাহত থাকে। মাঝখান থেকে এতে ধর্মীয়ভাবে আপত্তিকর উপাদানের সংযুক্তি ঘটেছে অতি উৎসাহী তরুণদের কারণে এবং অবশ্যই ধর্মীয় ধ্বজাধারী ব্যক্তিদের অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াশীল এবং অসৃজনশীল মানসিকতা ও আচরণের দরুণ। কারণ, তরুণরা সবসময়ই বাধাবন্ধনহীন। তাদের মাঝে নির্ভুল ধর্মীয় ও জাতীয় চেতনার প্রলেপ থাকলে অতি উৎসাহেও অতিরঞ্জনের মতো কিছু ঘটতো না। অন্যদিকে সমালোচক গোষ্ঠী সে লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে শুধু সমালোচনা করেই নিজেদের সার্থক ও সাধু ভাবতে অভ্যস্ত! তারা যদি পহেলা বৈশাখে মাটি, মানুষ ও ধর্মের উপযোগী বিকল্প কিছুর সন্ধান দিতে পারতেন, যথাযথভাবে তা উপস্থাপন করতে পারতেন, তখন ভিন্ন রকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। আসলে আমাদের দেশের সমালোচক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীটি অসৃজনশীল এবং একান্ত বন্ধ্যা। এরা বিকল্প কোনো কিছুর জন্ম দিতে না পারলেও সমালোচর ভঙ্গি দেখলে মনে হয়, এদের প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে!
ধর্ম যদি সমাজ বাস্তবতার অংশ হয়ে থাকে, তাহলে একে মলাটবদ্ধ করে সযত্নে ঘরে তুলে রাখার উপায় নেই। মানুষের সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় উপযোগিতার প্রমাণ দিতে হবে। তাই যারা ঘরে বসে, টিভি পর্দায়, পত্রিকার পাতায়, কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনে উৎসব-অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে ক্ষুব্ধ হন, তাদের প্রতি বিনীত আবেদন: বেরিয়ে আসুন নিজের কোটর থেকে। সাধারণ জনতার সঙ্গে গা মিলিয়ে তাদের আত্মিক প্রত্যাশা-চাহিদা অনুমান করুন। জনতার মাঝে যে প্রবণতার স্রোত বইছে, তা উপভোগ নয়; উপলব্ধি করুন। সে অনুপাতে নিজেকে তৈরি করুন। তাদেরকে দূরে ঠেলে দিতে নয়, নয় তাদেরকে অবিকল গ্রহণ করতে; বরং তাদের মন জয় করতে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১০৯১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন