আলো-আঁধারের খেলায় অভিজিৎ-ফারাবি

লিখেছেন লিখেছেন রওশন জমির ০৭ মার্চ, ২০১৫, ০৪:৪৭:৩৮ বিকাল



বন্দনা:

বাংলা সাহিত্যে মঙ্গল কাব্যের সূচনা হত বন্দনা দিয়ে। সেই সময় বন্দিত হতো দেব-দেবতা। আমার এই লেখা মঙ্গলকাব্য নয়, তবুও এখানে বন্দনা করছি আততায়ীর হাতে নৃশংসভাবে নিহত অভিজিৎ রায়ের। দেবতা হিসাবে নয়, একান্ত রক্ত-মাংসের মানুষ হিসাবে, দোষ-গুণের আকর হিসাবে। যেই সময়ে অভিজিৎ-এর মতো লোকের প্রয়োজন ছিল সব চেয়ে বেশি, সেই সময় তিনি হারিয়ে গেলেন। তার এই শূন্যতা পূরণ হবার নয়। সমাজ-উন্নতির চিন্তা নিয়ে হয়ত আরো অনেকেই দাঁড়াবেন। তারা হয়ত অভিজিতের চেয়ে আরো প্রতিভাধর এবং কর্মঠ হবেন। কিন্তু ব্যক্তির কোনো বিকল্প হয় না। তাই হে বিদ্রোহী, তোমাকে অভিবাদন!

তোমার-আমার ভালবাসা রেললাইন-রেললাইন:

অভিজিৎ একটি আইকন-প্রতীক, যেমন ফারাবি। দু-জনেরই লক্ষ্য সমাজ। অভিজিৎ চায় বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ, ফারাবি চায় ধর্মনির্ভর। অভিজিৎ-এর আস্থা বিজ্ঞানে, ফারাবির ইমান ধর্মে। তাদের দু-জনের লক্ষ্য অভিন্ন হলেও উপায় ও পথ-পন্থা ভিন্ন, সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ভিন্নতার কারণেই আজ তারা আইকন এবং প্রতীক!

অভিজিৎ-এর বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজে ধর্মের কোনো ঠাঁই নেই। ধর্মহীন মুক্ত সমাজ তার কাম্য। এ জন্য তার লেখাজোখায় মুক্তমনের প্রকাশ। প্রথাগত এই সমাজে অভিজিৎ প্রথা ভাঙার সাহসী কারিগর। তার লেখা এবং বই অন্তত তাই প্রমাণ করে। প্রথার নিগড়ে শক্ত বাঁধনে বাঁধা সমাজ তাকে সহ্য করে নি। বরং করুণভাবে নিশেষ করে দিল তাকে। পশ্চাৎপদ একটি সমাজের জন্য এ যে কত বড় আঘাত, তা ভাবতে গিয়েও গা শিউরে ওঠে।

হাঁটি-হাঁটি পা-পা:

সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও হয়েছে; একবার নয়, হাজার বার। তার আগে যুগে যুগে, কালে কালে এমন অনেক মানুষের আগমন ঘটেছে, ইতিহাসের শেষ কোণেও যাদের নাম নেই। তাদের স্মরণে রাখার তাগিদ কেউ অনুভব করে নি। কিন্তু জগতের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে তাদের অবদান অনস্বীকার্য।

খ্রিস্টান-জগতের মার্টিন লুথার আলোচিত হন সংস্কারক হিসাবে, যদিও তার সংস্কারের আওতা ছিল ধর্মবেষ্টিত। তিনি প্রচলিত নিজ ধর্ম-কাঠামোকে ভেঙে নতুন ব্যাখ্যা ও সংযোজনের মাধ্যমে আলো ও মুক্তি খোঁজার চেষ্টা করেন। আমাদের দেশে বিদ্যাসাগর ও রামমোহনও ছিলেন সমাজ-সংস্কারক। বিদ্যাসগর ছিলেন পাঁড় নাস্তিক। কিন্তু সমাজের কু-সংস্কার দূরীকরণে শাস্ত্রকেই ব্যবহার করেছেন, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো! কুড়াল ব্যবহার করেন নি। আবার রামমোহন জোর করে চাপিয়ে দিয়ে পরিবর্তনের চেষ্টা করতেন। বিদ্যাসাগর ছিলেন এর বিরোধী। তার উদ্দিষ্ট ছিল, মানুষের ভেতর থেকে জাগরণ ঘটানো। বিদ্যাসাগর ধর্মকে উন্নতির প্রতিবন্ধক মনে করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। অথচ তার কর্মপ্রচেষ্টা অধর্মের জন্য নয়; বরং ধর্মহীনতার অভিমুখে, মানবতার মুক্তির সোপান-আরোহণে। তিনি বরং অজ্ঞানতাকে মূল শত্রু হিসাবে গণ্য করে একে বিনাশ করার জন্য আজীবন চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার প্রভাব আজকের সমাজে, বিশেষত হিন্দু সমাজে কতটুকু? তখনকার যে রেনেসাঁ ছিল, সে হিসাবে ধর্মের নাগপাশ শিথিল হল বটে। তবুও কি বলা যায়, সমাজের-মানুষের মুক্তি ঘটেছে?

আর হ্যাঁ, বিদ্যাসাগরের সংস্কার-চিন্তা নিজ ধর্মের গণ্িডর ভিতরেই সীমিত ছিল। তিনি মুসলিম-সমাজকে এ্যাড্রেস করেছেন, এমন প্রমাণ নেই। তাই মুসলিম-সমাজকে তার সংস্কার-চিন্তা স্পর্শ করে নি। অপরদিকে, ব্রাহ্ম-ধর্মের মতো বাঙাল মুলুকে ইসলামের নতুন কোনো পথের আবিষ্কার হয় নি। আর ব্রাহ্ম-ধর্মও তো কোথায় কীভাবে হারিয়ে গেল, তার কি কোনো হদিস আছে? রামমোহন-কেশবের একেশ্বরাবাদী চিন্তা এখন শুধু ইতিহাসের পাতায়, বাঙালি হিন্দু-সমাজে তা নেই, একেবারেই নেই। কিন্তু কেন?

এদিকে বাঙালি মুসলিম সমাজে, ইউরোপীয় আলোকায়নের জোরে হোক বা কলকাতাকেন্দ্রিক রেনেসাঁসের কারণে, একদল তরুণের আবির্ভাব ঘটে। তারা শিখা জ্বালিয়ে বুদ্ধির মুক্তি চেয়েছেন। ধর্মের বিরুদ্ধে তাদের কোনো অবস্থান ছিল না, হয়ত-বা তারা নাস্তিকও নন। কিন্তু তারা ধর্মের প্রথাগত ব্যাখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। না, কূপমণ্ডুক মুসলিম-সমাজ তাদের সে অবকাশ দেয় নি। সেই শিখা আলো দিতে পারে নি, অন্ধতার ঝড়ে নিভে যায় শুরুতেই।

কে হায়, কবিতা খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে:

হ্যাঁ, ততদিনে ইউরোপ আলোড়িত করে এই দেশে নানা ছিদ্র দিয়ে মার্কসবাদ আসতে শুরু করে। সতের শতকের ইউরোপীয় রেনেসাঁস ছিল মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে, ধর্ম-গির্জা-পুরোহিতের শেকল ভাঙার আয়োজনে। সেই থেকে ধর্মের বন্ধন সেখানে নড়েবড়ে। যাও-বা ছিল, তা সামন্তবাদ ও পুঁজিবাদের একান্ত সহায়ক হয়ে, ক্ষেত্রবিশেষে ক্রীড়নক হয়ে। তখন মার্কস এসে ধর্মকে আফিম হিসাবে চিহ্নিত করে এর থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। এ-কারণে ইউরোপে ধর্মের প্রভাব একেবারে শেষ তলানিতে গিয়ে পড়ে।

এ-সব চিন্তা-চেতনার অভিঘাত ভারতের তরুণদের মনে দোলা দেয়। ভারতীয় উপনিবেশ নিয়ে মার্কসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অনেকের চোখ খুলে দেয়। তাদের স্বপ্ন: এখানেও ধর্মহীন, বৈষম্যহীন সমাজ-বিনির্মাণ। কিন্তু ইউরোপীয় সেই মার্কসবাদী বীজ এখানে বপন করা হলেও সীমিত ও ক্ষদ্রতর পরিসর ছাড়া বৃহত্তর কোনো পর্যায়ে ডালপালা ছড়াতে পারে নি, ফলদান তো অনেক দূরের কথা। এজন্য দায়ী কে? ধর্ম, মানে ইসলাম ধর্ম? সমাজবিজ্ঞানীরা কি তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবেন? মনে হয়, এই ব্যর্থতার কারণ এখনো চিহ্নিত হয় নি।

ইউরোপ ব্যতীত এশিয়া-আফ্রিকার কোনো দেশেই মার্কসবাদ সন্তোষজনক ফল দিতে পারে নি। এর দায় কি রেনেসাঁস বা বা মার্কসবাদের ওপর বর্তায়? না, তা মনে হয় নয়। এর মূল বোধহয়, আফ্রো-এশিয়ার সামাজিক পরিবেশ। তবে এই পরিবেশকে আত্মস্থ করতে না পারায় মার্কসবাদের পুরোহিতরাও অভিযুক্ত হতে পারেন। একটু খুলে বলা যাক। ইউরোপে সেমিটিক ধর্ম ও গির্জা যে-ক্ষমতা ও অর্থলোলুপতার সাক্ষর রেখেছে, এশিয়া-আফ্রিকায় প্রচলিত ইসলাম ধর্ম ও মসজিদ তা করতে পারে নি। তবে ধর্মের আষ্টেপৃষ্টে জড়ানো এই সমাজে গতিশীলতা আসে নি। এই গতি-আনয়নের ব্যাপারে ধর্মের সঙ্গে মার্কসবাদের বোঝা-পড়া ও মোকাবেলা কীভাবে হবে, তা প্রগতিশীলদের মাথায় কাজ করে নি। এজন্যই প্রত্যাশা ও প্রাপ্তিতে ব্যবধান রয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, শিল্পবিপ্লবের পর ইউরোপে পুঁজিবাদের যে প্রবণতা ছিল, তাতে মার্কসবাদ সহজেই জায়গা করে নিতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশ তো সামন্তবাদ পেরিয়ে পুঁজিবাদের হাই-ওয়েতেই রীতিমত পা রাখতে পারে নি। সেখানে পুঁজিবাদকে শত্রু হিসাবে দাঁড় করানোর উপায় কই?

যত দোষ, নন্দঘোষ:

পুঁজিবাদী শক্তি অবশ্য এখানে বাহ্যত ধর্মের হিতাকাক্সক্ষী হিসাবে আবির্ভূত হয়। মার্কসবাদে ঘোষণা দিয়েই বলা হয়: ঈশ্বর নেই, ভগবান নেই। বিশ্বাসীদের শঙ্কা ও প্রশ্ন: তাহলে দুনিয়া চলবে কী করে? পুঁজিবাদের যে-কপট কৌশল, তাতে এমন খাপছাড়া (?) রকমের কথা নেই! সুতরাং এশিয়া-আফ্রিকার ধর্মগুরুরা ঈশ্বরহীন প্রফেটের (ইকবালের ভাষায় ‘না-খোদা নবী’) আদর্শের বিপক্ষে অবস্থান নেন। না, এশিয়া-আফ্রিকা মার্কসবাদকে আর মেনে নেয় নি। এজন্য মার্কসবাদী চিন্তকরা ধর্মকে কখনোই ক্ষমা করতে পারেন নি। আর এ বিপুল ভূখ- জুড়ে ইসলাম ধর্মের ধ্বনিই তো শুনতে পাওয়া যায়!

পুঁজিবাদের মতো মার্কসবাদও একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা। মানুষের মুক্তির লক্ষ্যেই এর উদ্ভাবন। মার্কসবাদের ছোঁয়ায় মানুষের ও সমাজের কতটুকু মুক্তি ঘটেছিল, তা কিন্তু ইতিহাসের পাতায় সংরক্ষিত। মার্কসবাদের পতনের পর তাদের সেই ইতিহাস ঢেকে রাখার কোনো উপায় নেই। কিন্তু যেই সমাজে মার্কসবাদ প্রতিষ্ঠা-ই পায় নি, সেখানে সকল নষ্টের গোড়া কে? শুধুই ধর্ম? আর কিছু নয়? হ্যাঁ, অভিজিৎ-এর মতে তাই। আর তাই তারা ধর্মকে গুঁড়িয়ে-উড়িয়ে, ঝেটিয়ে বিদায় করে সমাজটাকে শূন্য থেকে শুরু করতে চায়।

এশিয়া-আফ্রিকার নষ্টের মূলে কি একান্ত ধর্মই দায়ী, না অন্যান্য উপাদানের ভূমিকাও আছে এবং তা কতটুকু? এ-প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সময় যখন এলো, বিশেষত সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর, তখন বেশ সাড়ম্বড়ে ঘোষণা এলো: ‘পৃথিবীর অন্তিম ঠিকানা হল পুঁজিবাদ’! অন্যদিকে, সেমিটিক ধর্ম খ্রিস্টবাদের উদার জমিন ইউরোপ অপর (সেমিটিক) ধর্ম ইসলামকে পুঁজিবাদ নয়, পশ্চিমা আদর্শের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করায়। তখন আত্মপ্রকাশ লাভ করে ‘সভ্যতার সংঘাত’ তত্ত্বের, এডওয়ার্ড সাইদের ভাষায় যা ‘অজ্ঞতার সংঘাত’! এই সব বিচার-বিশ্লেষণকে আমাদের মতো মূর্খরা মনে করে, ‘বিজ্ঞতা-অজ্ঞতার সংঘাত’। মানে, ‘অপর’কে মূর্খ রেখে জ্ঞান-বিজ্ঞানে নিজে বড় হয়ে, প্রতিষ্ঠিত হয়ে কীভাবে সে-‘অপর’কে শাসন করা যায়, শোষণ করা যায়, শাসন-শোষণকে বৈধ ও দীর্ঘায়িত করা যায়, সেই বিষয়ে বিজ্ঞতা অর্জন করা এবং কেউ এর বিরোধিতা করতে এলে তাকে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে বিপর্যস্ত করা এবং একে সভ্যতার শত্রু বলাই হল এই থিউরির মূল লক্ষ্য। সুতরাং এ হল ‘বিজ্ঞতা-অজ্ঞতার সংঘাত’! আর তাই এশিয়া-আফ্রিকার অশিক্ষা-কুশিক্ষার অন্ধকার দূরীকরণে কারোই কোনো প্রয়াস নেই। আর শিক্ষা তো এখন পুঁজিবাদের হাতিয়ারে গণ্য। গরিব দেশে তা পণ্য হিসাবে স্বীকৃত। উন্নত বিশ্বে সুখ ও ভোগের নেশায় বৃত্তির আশ্রয় নিয়ে মেধাবীরা দেশ ছাড়ে। শিক্ষা হয়, সুখভোগও হয়, হয় না চেতনার জাগরণ। তাই জন্মভূমির মুক্তির জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য তাদের মনে কোনো আকুতি তৈরি হয় না, হওয়ার অবকাশই পায় না। তবে স্বীকার করতেই হবে, অভিজিৎ রায় এখানে ব্যতিক্রম!

সেমিটিক ধর্ম ইসলাম (এবং অন্যান্য ধর্মও) মার্কসবাদের শত্রু। অন্যদিকে, তা পুঁজিবাদের দুশমন এবং আগ্রাসী যে কোনো শক্তি এবং সা¤্রাজ্যবাদেরও। কালিক বিবেচনায় সেমিটিক অপরাপর ধর্মের তুলনায় তা কনিষ্ঠ। এর অনুসারীরাও চিন্তা-চেতনা ও বিদ্যা-বুদ্ধিতে প্রায় বামন-টাইপের এবং অবশ্যই নাবালক রকমের। দীর্ঘ পথ-পরিক্রমার মাধ্যমে তার যে-সাবালকত্ব ঘটবে, তা ‘হনুজ দুরস্ত’। আবার সেই বামনত্বকে দূর না করেই, দূর করার কোনো প্রয়াস না নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার নগ্নমতাদর্শবাহী কোনো কোনো হাত মাথায় চাটি দেয়! বামনের মাথায় চাটি দেওয়ার মজা-ই আলাদা! বামুন প্রতিপক্ষের মাথা না ছুঁইতে পেরে পা কামড়ে দেয়। আর তখনই শোরগোল বাধে। তারস্বরে চিৎকার করে রাষ্ট্র করা হয় যে, ইসলাম ও মুসলমানদের দাঁত অনেক বড়! এরা যাকে-তাকে কামড়ে দেয়!

.. আধ-মরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা:

অন্যান্য সকল ধর্মাবলম্বীই বিদ্যা-বুদ্ধিতে এগিয়ে, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রাচারিক সকল কৌশল তাদের হাতে। তারা নিজেদের মতো করে জ্ঞান উৎপাদন করে ও নিজস্ব তত্ত্ব অনুসারে তা বিতরণ করে। তাবৎ মুসলিম সমাজ এর গ্রাহক ও ভোক্তা মাত্র। তারা যে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনে কতটা পিছিয়ে, তা কখনো কল্পনাও করে না, করার মতো মানসিকতাও তৈরি হয় না। এই বদ্ধ কূপকেই তারা মনে করে বিশাল সাগর! আবার বিদ্যা-বুদ্ধি ও শক্তি-সামর্থ্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী অমুসলিম-সমাজ যখন তাকে আঘাত করে, তখন শারীরিকভাবে অপরিণত হয়ে ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো সে কাতরাতে থাকে। প্রতিপক্ষ এতে বেশ আমোদবোধ করে। তাই কখনো শাসন-শোষণের নিমিত্ত, কখনো-বা নিরেট আনন্দ-লাভের জন্যও তারা আঘাত করে থাকে!

ইহুদিরা সংখ্যায় অল্প হলেও বেশ জাত্যাভিমানী। অন্যান্য ধর্ম ও সভ্যতার কাছে এরা বারবার পীড়নের শিকার হলেও এদের আত্ম ও জাতীয় উন্নয়নের পথ রুদ্ধ হয় নি। বরং কঠিন থেকে কঠিনতর মুহূর্তেও নিজেদের ঐক্য ও সংহতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আবার এমনও হয়েছে যে, এদের কেউ কেউ শিক্ষাদীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে উন্নীত হয়ে রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক অবস্থার কারণে পৈত্রিক ধর্মীয় বৃত্তের বাইরে চলে গেছে। ইহুদিরা এতে ভীত-বিচলিত হয় নি। কিন্তু সংখ্যায় তাদের চেয়ে শতগুণ বেশি হয়েও মুসলিমরা এধরনের আচরণে শঙ্কিত। কারণ, তাদের মাঝে যেমন ঐক্য ও সংহতি নেই, তা গড়ার ও রক্ষার কোনো প্রয়াস নেই। তেমনই জাতি ও ধর্মীয় অবস্থান থেকে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার ন্যূনতম উদ্যোগ নেই। আবার ইহুদি-স্বার্থের বিরুদ্ধে ইউরোপ-আমেরিকার কোনো দেশে কারো কিছু বলার নেই, সুযোগ নেই। ইহুদিদের এ অবস্থা কীসের জাদুতে হয়েছে? আলাদিনের চেরাগে নাকি তরোয়ালের খোঁচায়? সেই চেরাগ ও তরোয়াল মুসলমানের হাতে নেই কেন?

যাদের সম্ভাবনা আছে দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে জগত জয় করার, মুসলিম জাতিকে মুক্তির উপকূলে নিয়ে যাওয়ার, তাদের সমস্যা হলো, এরা পেকে যাওয়ার আগেই ফেটে পড়ে অথবা পড়তে চায়। ইঁচড়ে পাকা ফল যখন ফেটে পড়ে এবং পড়তেই থাকে, তখন এক সময় তা আবর্জনা আকারে স্তূপকৃত হয়। দুর্গন্ধ ছড়ায়, পরিবেশ দূষণ করে। তালেবান হরকাতুল জিহাদ ও আল-কায়েদা ইত্যাদি এরই উদাহরণ।

হ্যাঁ, সমগ্র মুসলিমবিশ্ব ইঁচড়ে পাকাদের ফেটে পড়ার আবর্জনায় এখন অতীষ্ঠ। এর অধিবাসী সকল এ-থেকে মুক্তি চায়। এসব আবর্জনার প্রতিবাদ করতে চায়। এই প্রতিবাদ করতে গিয়েই কোনো তরুণের প্রাণ ওষ্ঠাগত, কারো প্রাণনাশ হচ্ছে। অবশ্য এজন্য তাদের প্রতিবাদের ধরনও দায়ী। আবর্জনা দূর করতে গিয়ে তো এতে পা সেঁধিয়ে বসে থাকলে চলবে না। বিদ্যাসাগর সমাজ-সংস্কারক ছিলেন, কিন্তু ধর্মের বা ধর্মপুরুষের কুৎসা রটান নি। ধর্মপুরুষের তৎকালীন ঘটনাকে সমকালের আয়নায় ব্যবচ্ছেদ করেন নি। এজন্য বিদ্যাসাগর রয়ে গেছেন, একই সঙ্গে বেগম রোকেয়াও। কিন্তু তসলিমা নাসরিন থাকতে পারেন নি। তিনি গঠনমূলক কাজের চেয়ে আঘাত করতেই বেশি উৎসাহী। অথচ এ তো জানা কথা যে, কু-সংস্কারের জোয়ারকে বালির বাঁধ দিয়ে আটকানো যায় না। বরং এর জন্য পাল্টা ¯্রােতের তৈরি করতে হয়। তসলিমা সেখানে ব্যর্থ।

আমার দুঃখ হয়, ভীষণ দুঃখ হয়; মাঝে মাঝে কান্না পায় তসলিমা নাসরিনের জন্য। তার যে যোগ্যতা ও কর্মক্ষমতা ছিল, তাতে পাহাড়কে সরিয়ে-গুড়িয়ে ও উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল যদি তা গঠনমূলকভাবে ব্যবহৃত হত। নারীর অবরুদ্ধ আত্মা মুক্তির সন্ধান পেত। অভিজিৎ-এর বেলায় আমার অনুভূতি ঠিক একই রকম। লেখাটি তাই আমার কান্না নয় শুধু, গগণবিদারী চিৎকার। এক অসাধারণ প্রতিভাধর, কর্মনিষ্ঠ তরুণ। অথচ কী করুণভাবে, যাদের কল্যাণে চুরির উদ্যোগ-আয়োজন, তাদেরই মুখ থেকে চুরির অভিযোগ মাথায় নিয়ে সরে যেতে হল! অভিজিৎ হয়ত ইতিহাসের আকাশে অন্যান্য নক্ষত্রের সঙ্গে শোভা পাবে। কিন্তু মর্ত্য-জগতে নতুন কোনো অভিজিৎ-এর জন্ম হবে কি-না, সন্দেহ।

ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্ত করে মাত্র:

অভিজিৎ-এর এই নৃশংস হত্যায় অনেক তরুণ ভীষণ আহত হয়েছেন। তারা ফারাবির দিকে, তার ধর্মের দিকে আঙুল তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কখনো সংযত ভাষায়, কখনো অতিরঞ্জিত ও আপত্তিকরভাবে। যেমনই করে অভিজিৎ-এর লেখায় কোনো কোনো ফারাবি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অতিরিক্ত ভাবালুতা, আবেগধর্মিতা কা-জ্ঞানকে খুইয়ে দেয়, তা-তো ফারাবিদের মন্তব্যেই প্রকাশ। এবার অভিজিৎদের লেখায়ও এর প্রকাশ দেখা গেল। ফারাবির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ইসলামকে, ইসলামের অনুসারীদের যাচ্ছেতাই ভাষায় ঝাড়া হল। কেউ কেউ খোদ ইসলামকে দেখে নেওয়ার, ঝেড়ে ফেলার শপথও করে বসেছেন। তাদের এই সব আচরণে ডিরোজিওর ভাবশিষ্য ইয়ং বেঙ্গলের কথা মনে পড়ল। সেই সময়ের ইয়ং বেঙ্গলরা হিন্দুত্বকে ঝেড়ে ফেলার জন্য হাস্যকর কত কসরতই না করেছে। প্রকাশ্যে মদ, গোমংস ও শোকরের মাংস ভক্ষণ নয় শুধু, ধর্মকে নানাভাবে গাল পেড়ে নর্তন-কুর্দন করেছে। আর ভেবেছে, শেষ, ধর্ম শেষ। এবারে সিলেটের রাস্তায় নাকি এমন হয়েছে! ইতিহাসে এগুলো অপরিপক্বতা ও অর্বাচীনতা হিসাবেই চিহ্নিত। আমাদের বর্তমান তরুণদের এ-সব আচরণও এক সময়ে সে-কাতারে গণ্য হবে।

ইয়ং বেঙ্গলের কারণে কি হিন্দু ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে গেছে? না, যায় নি; যাবেও না। ধর্ম ধর্মের জায়গাতেই আছে এবং থাকবেও। ইতিহাসের এমন সাক্ষ্য থাকার পরও মুসলিম তরুণদের এতো উদ্বেগ কেন? এরা এসব আচরণে ও বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মারমুখো ও সহিংস হতে দ্বিধা করে না। ধর্ম কি এতোই ঠুনকো যে, অভিজিৎ-এর আচরণে তা ভেঙে খান খান হয়ে যায়, তাই একে সরিয়ে দিয়ে যে-কোনোভাবে ধর্ম রক্ষা করতে হবে? নবি মুহাম্মদ সা.-এর জন্মের পর থেকে এ সব কি কখনো রুদ্ধ ছিল, বন্ধ ছিল? তাকজিব-মিথ্যায়ন সব-সময়ই ছিল। সে সবের বিস্তৃত বিবরণ ইতিহাসে নেই। থাকলে বোঝা যেত যে, এতো পুনরাবুত্তি মাত্র, অন্য কিছু নয়। চৌদ্দশ বছরের চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখনো যেহেতু ধর্ম টিকে আছে, তা আর কোনোভাবেই বিলুপ্ত হবে না। রুশদি, নাগিব মাহফুজ ও তসলিমা নাসরিনের বেলায় যেহেতু ধর্ম উবে যায় নি, এবারও যাবে না। সুতরাং সংযত ও আদর্শবাদী আচরণই কাম্য।

মোল্লার দৌড় ....:

হতে পারে, ফারাবিদের কাছে ধর্মীয় বাণীর আক্ষরিক নির্দেশনার মূল্য অপরিসীম। অথচ ধর্মের যে শান্তির বাণীও রয়েছে, এরা তা এড়িয়ে সহিংসতার বাণীকেই মান্য করে। এরা বুঝতে চায় না, নাকি পারেও না যে, ইসলামের প্রতিটি আয়াত ও হাদিসের উচ্চারণ হয়েছে সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে, সে ইতিহাস কালের-যুগের এবং ভূগোলের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এর পরবর্তী ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও ভৌগোলিকতা ও রাজনৈতিকতাসহ নানা পারিপার্শ্বিকতার ওপর দিয়ে গেছে। এগুলো থেকে বিযুক্ত করে শুধু আক্ষরিকতার দিকে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। তখন ছিল ‘এক বিশ্বাস-এক রাষ্ট্রে’-এর প্রবণতা। সুনির্দিষ্ট ধর্ম ছাড়া ভিন্ন ধর্মের অনুমতি ও স্বাধীনতা তখন কোনো রাষ্ট্রেই ছিল না। এখন মাল্টি-ফেইথের যুগ। পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রে সকল ধর্মের স্বাধীনতা স্বীকৃত। এখন ইসলামকে যদি এগুতে হয়, তাহলে অপরাপর সকল বিশ্বাস, বিপরীত ও জঙ্গম চিন্তার ভেতর দিয়েই নিজের পথ করে নিতে হবে। অভিজিৎ যদি একটি ব্লগ থেকে নবি-রাসুল ও ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ প্রচারণা চালায়, তাহলে ইসলাম-অনুসারীদেরকে দশ-দশটি ব্লগ প্রতিষ্ঠা করে তার যৌক্তিক ও শালীন উত্তর দিতে হবে। উদাহরণত বলা যায়, অভিজিৎ উলঙ্গ হয়ে নাচতে পারবে, কিন্তু ফারাবি পারবে না তার ধর্মীয় চিন্তা ও আদর্শের কারণে। তখন শালীন কাপড় পরে মানুষকে আকৃষ্ট করাই হবে ফারাবির লক্ষ্য। ইসলাম যদি টিকে থাকে, থাকবে তার অন্তর্নিহিত আদর্শের জোরে; খুনোখুনি, লাঠালাঠি আর খিস্তি-খেউড়ের সাহায্যে নয়। তাই দরকার যৌক্তিক, বৌদ্ধিক, প্রজ্ঞাপূর্ণ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং গঠনমূলক আচরণ। আর তখনই শুধু অভিজিৎ-এর অতিরঞ্জন ডাস্টবিনে স্থান পাবে আবর্জনা হিসাবে; এর বিপরীতে ফারাবিদের আচরণই আবর্জনায় পরিণত হবে।

আদর্শিক যুদ্ধে যে-কোনো রকমের অতিরঞ্জন বর্জ্য হিসাবে গণ্য হতে বাধ্য। যারা অভিজিৎ-এর পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন, তারাও তা জানেন এবং অবচেতনভাবে তা স্বীকারও করেন। তাই এমুহূর্তে যারা অভিজিৎ-এর হত্যাকে নিন্দা জানিয়ে তার অতিরঞ্জনকে সমালোচনা করছেন, ভক্তদের পক্ষ থেকে সেই-সব সমালোচকদের ভর্ৎসনা ও নিন্দা করা হচ্ছে এই যুক্তিতে যে, এতে ধর্মান্ধ ও সন্ত্রাসীরা লাই পাবে এবং ভিন্ন কোনো অভিজিৎ-এর জন্ম হবে না। তাই তারা অভিজিৎ-এর অতিরঞ্জন বিষয়ে এখন নীরব থাকতে চান। তার মানে পরিবেশ অনুকূল হলে, সন্ত্রাসীরা লাই পাবার অবকাশ না থাকলে এসব সমালোচনা তারা কবুল করতে প্রস্তুত, এই-তো! যারা ফারাবির পক্ষে, তারাও জানেন এবং বলেন যে, ইসলামের একমাত্র শক্তি এর অন্তর্নিহিত আদর্শ। তাহলে এতো ভয় কীসের? কেন তাহলে ফারাবির অতিরঞ্জিত আচরণের প্রতি ইনিয়ে-বিনিয়ে সমর্থন?

এই ত্যাড়ামি আর ধেড়েমির কারণে ফারাবিকে ভোগতে হচ্ছে, অতীতেও এ রকম দেখা গেছে। এই তো ১/১১-এর আক্রমণে মুসলিবিশ্বের সে কি উল্লাস, বিশেষত আমেরিকা-বিরোধী শিবিরে। কেউ কেউ বিন লাদেনকে সাবাস দিতেও কসুর করে নি। কিন্তু প্রতিক্রিয়া হিসাবে মার্কিনি নিপীড়ন যখন তুঙ্গে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে ভূগোলের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে, তখন এরাই আবার বলতে শুরু করে যে, না, আল-কায়েদা নয়; এটি ইহুদি বা অন্য কারো ষড়যন্ত্র! এমন বৈপরীত্যমণ্ডিত আচরণে হাসতে গিয়েও সঙ্কোচিত হতে হয়।

... দু-জনে সমান অংশীদার:

অভিজিৎ খুন হলেন, এরপর তিনি যে ইসলামি বিধান মতে বধ্য, তা প্রমাণ করার কত তোড়জোর! সে কি লেখালেখি, পোস্ট, স্ট্যাটাস ও মন্তব্য-বিশ্লেষণ! ফিকহ-শাস্ত্রের সবকিছু এক সঙ্গে উদ্ধৃত করতে পারলেই যেন কার্যসিদ্ধি ঘটে আর কি! এভাবেই ফারাবিদের ঘাড়ে অভিজিৎ হত্যার দায় এসে পড়ে। অবশ্য এদের কেউ বা এদের কথায় উৎসাহী হয়ে অন্য কেউ তা ঘটিয়ে থাকতে পারে। সে এখনো নিশ্চিত করে বলা যায় না। কিন্তু ঘটনার তদন্তের আগেই আমরা যখন তারস্বরে চিৎকার করে ধর্তব্য প্রমাণ ছাড়াই খুনিকে চিহ্নিত ও নির্দিষ্ট করে ফেলি, তখন আড়ালের খুনি, যদি থেকে থাকে, অট্টহাস্য করে আমাদের ধন্যবাদ দেয়। অজান্তেই খুলে যায় বিচারহীনতার দরোজা!

যদি সত্যি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে আসল খুনি ঢাকা পড়ার জন্য যেমন দায়ী অভিজিৎ-রা, তেমন ফারাবিরাও। এর একমাত্র বিকল্প হতে পারত বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত। পুলিশি তদন্তে জজমিয়া তৈরি হওয়ার নজির আছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? হঠকারী আচরণের জন্য ফারাবি যদি জজমিয়া হয়, আর আমরাও উল্লাসিত হই, তাহলে আমরা বারবার অভিজিৎ-কে হারাবো। আমাদের আরো কাঁদতে হবে...

বিষয়: বিবিধ

১১৭৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

307662
০৭ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
সজল আহমেদ লিখেছেন : আজকে পারভেজ আলম ভাইয়ের একটা লেখা পড়লাম ।তার চোখেও ফারাবী জজমিয়া ।আপনার সাথে সহমত ,ফারাবীর হঠকারিতার জন্যই আজ ওর এ দশা আমরা আর চাইনা জজমিয়া নাটক...
আরো সহমত,যদি খুনিদের না ধরে আমরা ফারাবীকেই দোষী করে হৈহুল্লোড় করি তাহলে প্রকৃত খুনি আড়ালে একগাল হেসে নেবো ।আরো সহমত ,খুনিরা ইসলামের শান্তির পথ না খুঁজে খুঁজে নিয়েছে শয়তানের পথ ।যাইহোক ,অভিজিত্‍ হত্যায় আমরা মুসলিম সমাজ আংশিক মর্মাহত,খুনের দায় অনেকে বাঙ্গালী মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিতে চায় অথচ এই খুনিরা ইসলামের আইন মেনে খুনটি করেনি ,বরংচ কোরআনের সূরা ইউনুসের ৪০,৪১ সূরা মায়েদার আয়াতের বিরুদ্ধাচারন করে খুনটা করেছেন তাদের বিচার হোক।
০৮ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:২৭
248924
রওশন জমির লিখেছেন :
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

লিখুন, আপনার মন্তব্যের শেষ বিষয়টি নিয়ে একটি লেখা তৈরি করুন। আমাকে আওয়াজ দেবেন, যেন পড়তে পারি।
০৮ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:২২
248963
সজল আহমেদ লিখেছেন : আপা এর কাছাকাছিই একটা লেখা লিখেছি "অভিজিত্‍ হত্যা-এবং ব্লগার ফারাবী এই শিরোনামে ।লেখাটি আপনাকে খুশি করতে পারবেনা কারণ,আমি স্পস্টই একজন মৌলবাদী তাই ফারাবীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবী করেছি ,আর দ্বীতিয়ত লেখাটির অগোছালো ।আমি তেমন একটা গুছিয়ে লিখতে পারিনা তাই পাঠকদের খুশিও করতে পারিনা ।
০৪ মে ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৯
259346
রওশন জমির লিখেছেন : সজল ভাই, লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। ব্লগে আমি অনিয়মিত। তাই সময় মতো পড়া হয় নি। আপনার সঙ্গে আমার দূরত্ব নেই। অবশ্য মানুষকে, সে যেই হোক, তার আচরণ ও বোধ-বিশ্বাস মন্দ হলেও, তাকে দূরে ঠেলার পক্ষে আমি নই। আর আপনি তো ইসলামের মৌলিক চেতনায় বিশ্বাসী, যা আমাকে আশ্বস্ত করে বেশ। আপনার লেখাটিতে আপনার বিশ্বাস ও চেতনার প্রমাণ আছে। আপনি লিখুন। লেখা চর্চা করুন। অন্ধকারকে তাড়ানোর জন্য লাঠি নয়, দরকার আলোর। আপনার সেই ক্ষমতা আছে। চেষ্টা করুন। না হয় আল্লাহর কাছে আপনাকে জবাব দিতে হবে।

ইসলাম একটা বিশাল বিস্তৃত পথ। এখানে সবার চিন্তাধারা যে এক হবে, তা ভাববার কোনো কারণ নেই। ব্যাখ্যা নিয়ে যদি মতবিরোধ তৈরি হয়, তা যেন পরস্পরকে দূরে সরিয়ে না নেয়, তা খেয়াল রাখলে, মনে হয়, ভাল হবে। যাক, এক্ষণের কামনা, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। আমিন।
307668
০৭ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
রক্তলাল লিখেছেন : আপনার বিশাল লম্বা গেজ গেজানি দেখে মনে হচ্ছে নিজেকে খুব সমজদার বুঝানোর চেষ্টা করছেন।

কিন্তু কোথায় যেন কোন কাপুরুষতা আপনাকে কনফিউজড করে রেখেছে। নাস্তিকতা কখনোই মুক্তচিন্তা নয়।

নাস্তিকতা কনক্লুসিভ আর মুক্তচিন্তা ওপেন। অবশ্য আপনারা যাদের বিদ্যার দৌড় কলকাতার উঠান পর্যন্ত তারা এসব খুব বুঝবেন না!

াাআপনি বরং নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। Let the world decide the direction it wants to take. Stay at your safe resort you choose to be in.

পৃথিবীর মানচিত্রের সাথে নিজেকে আরেকটু ফ্যামিলিয়ার করে বুঝার চেষ্টা করেন সভ্যতা কোন ডিরেকশন এ যাচ্ছে।

াাাঅভিজিৎ, তাসলিমা আর আপনার মত মূর্খ্যরা এই প্রথম না।
পৃথিবীর জ্ঞান আর গুণীদের শ্রদ্ধা করলে আপনাদের মত কীট পতংগরা এভাবে অবহেলায় হারিয়ে যেতে হবেনা!


াআবারও স্মরণ করিয়ে দেই - আস্তিকতা নাস্তিকতা পুরাণ, গ্রন্থ দিয়ে প্রমাণের বিষয় নয়। অ আ শিখে সর্ব বিষয়ের জ্ঞানী মনে করাটা নিজের মনোপীড়ার ও কারণ হতে পারে।

াআমরা যারা আল্লাহ কোরানে বিশ্বাস করি তারা আপনাদের চেয়ে কম সমজদার নয়। তৃপ্তির ঢেকুর রা অন্য কোথাও গিয়ে তুলুন। Happy
০৮ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:৩৮
248926
রওশন জমির লিখেছেন :
ভাইজান, বোধহয় তেতে আছেন। তাই কথা থেকে ধোঁয়া ওড়ছে। একটু শীতল হোন। সম্ভব হলে ডিপ ফ্রিজে দীর্ঘক্ষণ বিশ্রাম নিন।

আপনি হলফ করে বলতে পারবেন যে আপনি লেখাটা পড়েছেন? বড় জোর হয়ত চোখ বুলিয়েছেন। তবে আপনি কিছুই বুঝেন নি। আপনার মন্তব্য অন্তত তাই প্রমাণ করে, মূল বিষয়ের সঙ্গে যার সুদূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। আর যদি সত্যি কোনো সম্পর্ক থেকে থাকে, তাহলে বুঝিয়ে দিন। আপনার কথামতো আমার তো সমঝদারি নেই। আপনি বুঝিয়ে দিলে যদি সমঝদারির নসিব হয়, তাও-তো মন্দ নয়।

ধন্যবাদ।
০৮ মার্চ ২০১৫ রাত ০১:১৬
248928
রক্তলাল লিখেছেন : এতটুকু বুঝেছি আপনি কাপুরুষতায় আবরিত কনফিউজড হয়ে আত্নসন্তুস্টির নিরাপদ আশ্রয় খুজছেন।
আর নানা ধানাই পানাইয়ের মাধ্যমে নিজের গিল্টি ফিলিং কে sweetened করছেন।
০৮ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:০৮
248970
রওশন জমির লিখেছেন :
আপনি হলফ করে বলতে পারবেন যে আপনি লেখাটা পড়েছেন? বড় জোর হয়ত চোখ বুলিয়েছেন। তবে আপনার চোখ বোলানোর গুণ দেখে আমি অভিভূত। আগে চোখে বা মনে যে অবিশ্বাস আর সন্দেহের ছানি আছে, তা দূর করুন। আরো অনেক কিছু দেখতে পাবেন।

ধন্যবাদ
307704
০৭ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:০৯
শেখের পোলা লিখেছেন : আর অভিজিৎ হারিয়ে গেলে শহীদ হবে আর ফারাবী হারিয়ে গেলে জঙ্গী হবে৷ এটাও যোগ করলে ভাল হত৷
০৮ মার্চ ২০১৫ রাত ১২:৩৯
248927
রওশন জমির লিখেছেন :
আপনার মন্তব্যের মাধ্যমে তা যোগ হল।

ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File