‘রোদোলা’র নবি মুহাম্মদের ২৩ বছর!
লিখেছেন লিখেছেন রওশন জমির ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:৪৯:১৫ দুপুর
بلغ العلي بكماله كشف الدجي بجماله
حسنت جميع خصاله صلوا عليه و آله
শুরু করলাম পারস্য কবি শেখ সাদির চরণ দিয়েই, যে-সাদিকে নিয়ে খোদ ‘আলি দাশতি’ ঢাউস একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ গ্রন্থটিও নজরে আসতো না, যদি ‘নবি মুহাম্মদের ২৩ বছর’ নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাটি না ঘটত। আলি দাশতির এ গ্রন্থটির অনুবাদ প্রকাশের দায়ে রোদেলা আর রোদেলা নেই, একেবারে মেঘলা। শুধু মেঘলা নয়, মেঘের ঘনঘটা! সত্যি বটে, বাঙালি পাঠকের হাতে পৌঁছার আগেই যে তুমুল কাণ্ড ঘটে গেল, তা অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার বড় একটি প্রমাণ হয়ে থাকবে।
তবে ঐতিহাসিক ব্যক্তি (রাজনৈতিক, সামাজিক, দার্শনিক, ধার্মিক) যে-ই হোন না কেন, তার সম্পর্কিত আলোচনায় সম্মানের জায়গাটুকু স্পষ্ট থাকতে হবে, অন্তত গোস্তাখি ও নেতিকবাচকতার স্পর্শ থাকলে চলবে না। একজনের আদর্শ অন্যজন পছন্দ না-ই করতে পারেন। তাই বলে তাকে অশালীনভাবে, আপত্তিকরভাবে উপস্থাপন, অসম্মানজনকভাবে তার জীবনালোচনা অবশ্যই অপরাধ এবং গর্হিত অপরাধ।
তাহলে কি মহানবির জীবনী নিয়ে গবেষণার, নিরীক্ষার, লেখালেখি ও বিশ্লেষণের অধিকার কোনো বিধর্মীর নেই? আছে, আলবৎ আছে। অতীতে এবং বর্তমানে প্রাচ্যে-প্রতীচ্যে অসংখ্য গবেষক মিলবে, যারা নবি-জীবনের নানা দিক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের সবার লেখাই যে ইতিবাচকতায় ভরপুর, তা না। এগুলোতে সমালোচনামূলক ভাবনার প্রকাশও আছে। এ সব বিষয়ই ওরিয়েন্টালিজম-এর অন্তর্ভুক্ত। যদিও ওরিয়েন্টালিজম মানেই কিন্তু নবি মুহাম্মদ ও তার আনিত ইসলাম নয়; এর পরিধি অনেক বড়, বেশ বিস্তৃত, প্রতীচ্যের সকল বিষয়ই এর আওতাভুক্ত। কিন্তু বর্তমানে আমাদের চোখের সামনে শুধু ইসলাম ও নবি মুহাম্মদের প্রতি অসৌজন্যমূলক বিষয়গুলোই ভাসে। এর কারণ একাধিক। প্রথমত, মুসলিম প্রধান দেশে আমাদের বসবাস। দ্বিতীয়ত, মুসলিমদের মাঝে আবেগী লোকের সংখ্যা বেশি। তৃতীয়ত, তাদের মাঝে জ্ঞানগত সহিষ্ণুতা নেই। চতুর্থত, মুসলিম সমাজ নানাভাবে অশক্ত বলে অ-ইসলামি এবং অ-মুসলিম গোষ্ঠী সময়ে-অসময়ে খোঁচা দেয়। এই খোঁচার ভার সহ্য করতে না পেরে মুসলিম সমাজ এমন সব আচরণ করে, যাতে তার অপরিপক্বতাই প্রকাশ পায় বেশি।
রাসুলের সিরাত ও ইতিহাস আলোচনায় প্রাচ্যবিদদের সিংহভাগই সমালোচনা মুখর। মুসলিম ওলামা ও বুদ্ধিজীবীগণ এই সব সমালোচনার জবাব উগ্রভাবে নয়, বিনম্র ও গঠনমূলকভাবে দিয়েছেন। কারণ, জ্ঞানতাত্ত্বিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় রাসুলের উপস্থিতি থাকবে না, এমন বিধান ইসলামে নেই। উদাহরণ হিসাবে উইলিয়াম ম্যুর ও দয়ানন্দ সরস্বতীর কথা বলা যায়। এদের জবাবদানের ক্ষেত্রে তখন দেওবন্দি-সালাফি-বেরেলি এবং জাফরি সমানভাবে মাঠে নেমেছেন, কলম ধরেছেন। এর বাইরে বিশৃঙ্খলা তৈরির কোনো রকমের উদ্যোগ তারা নেন নি। অন্যদিকে ‘রঙ্গিলা রাসুল’ ও ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এর বিরুদ্ধে মুসলিমবিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এখন প্রশ্ন হল প্রথাগত চিন্তার বাইরে মুসলিম-অমুসলিম কারো লেখায় কখন বাধহীন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা যাবে? এর কি কোনো নিয়মনীতি আছে? আর তাছাড়া যারা ইসলামি দর্শনে অবিশ্বাসী, রাসুল, সিরাত ও ইসলামি ইতিহাসের সঙ্গে তাদের বোঝাপড়াটা কীভাবে হবে?
আলি দাশতির আলোচ্য এই গ্রন্থটিতে কী আছে, সাধারণ পাঠক এখনো জানতে পারেন নি। উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি কি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে, না দ্বিতীয় শ্রেণিতে? এ গ্রন্থটি নিয়ে বাংলাদেশে যারা প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন, তারা অবশ্যই শিক্ষিত। তারাই প্রতিবাদ স্বরূপ প্রথমে রোদেলার ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন। তারা এ গ্রন্থটি সম্পর্কে নিশ্চয়ই ভাল জানেন। তাদের উচিত হবে, তা জানিয়ে তাদের আচরণের যৌক্তিকতা প্রমাণ করা। আর তা না হলে, যে-ভাবে তাদের ওয়েবসাইটে, বাংলাবাজার অফিসে আক্রমণ হল, বইমেলা থেকে রোদেলাকে মেঘের আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হল, প্রকাশকের ভুল স্বীকারসহ ক্ষমা প্রার্থনা ও বই-প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরও লেখক-প্রকাশকের বিচার দাবি করা হচ্ছে, তাতে ইসলামি দাওয়াতি আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কী হবে তখন উত্তর?
বিষয়: বিবিধ
১৮৩১ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপা/ভাই অলি দস্তির বহু ভাষায় অনূবাদিত বহুল সমালোচিত এই বইটির ইংরেজী PDF FILE কয়েক বছর আগেই পেয়েছিলাম কিন্তু তখন তেমন গুরুত্ব দেইনি ,কিন্তু মেঘলা প্রকাশনির ঘটনাটির পর বইটির ইংরেজী ভার্সনটি আবার ডাউনলোড করে পড়েছি।আপনিও পড়েছেন মনে হচ্ছে।বইটির কয়েকটি জায়গায় পবিত্র কোরআনের কয়েকটি আয়াতকে ওসমানের (রাঃ) সাজানো আয়াত বলা হয়েছে ,PDF বইটির(মূল বইয়ের কত নং পৃষ্ঠা হবে তা জানা নেই)৮১ পৃষ্ঠায় মিরাজকে অস্বীকার করা হয়েছে ।আয়েশা রাঃ নিয়ে কোরআনের আয়াত কে অস্বীকার করা হয়েছে ।তাছাড়া ও PDF বইটির ১১৮ পৃষ্ঠায় সূত্রহীন ভাবে ওমর রাঃ,আবুবকর রাঃ,আয়েশা রাঃ,ওসমান রাঃ এর সমালোচনা করা হয়েছে কড়া ভাবে।বইটির ২২৮ পৃষ্ঠায় মহানবীর স্ত্রী আয়েশা রাঃ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে।পুরো বইটিতে আমি দেখলাম শিয়া ইসলামের ছড়াছড়ি(বিঃদ্রঃআমি একজন মুসলিম শিয়া সুন্নিহ্ নয় কিন্তু সত্যটা উপস্থাপন করতে হলে শিয়া সুন্নিহ ইস্যু টানতেই হবে) ।শিয়া মুসলিমরা নবীর মিরাজ কে মানেন না,পবিত্র কোরআনের কয়েকটি আয়াতকে অস্বীকার করেন ,হযরত আয়েশা রাঃ ,ওমর রাঃ,আবুবকর রাঃ ,ও ওসমান রাঃ ,মুয়াবিয়া রাঃ কে চরম ভাবে ঘৃণা করে ।আর অলি দস্তি একজন ইরানি রাজনীতিবীদ এবং লেখক যিনি ১৯৮৪ সালে মারা যান।তার বইটি মূলত শিয়াদের বিশ্বাসের উপর লেখা হয়েছে ,আপনি অধ্যায়গুলো লক্ষ্য করলে তা স্পষ্ট বুঝবেন।যেহেতু ইরান একটি শিয়া বহুল রাষ্ট্র সেহেতু আলোচ্য বইটি ইরানে কোন সমস্যার সৃষ্টি করেনি।বইটির ব্যাপারে প্রথম ফেসবুক থেকে বলা হয়েছে ,বৌদ্ধ অনুবাদক সৈকত চৌধুরীকে ওয়ার্নিং দেয়া হয়েছে তবুও তিনি মেঘলা প্রকাশনি কতৃক বইটি প্রকাশ করিয়েছেন।
বাংলাদেশ একটি সুন্নিহ্ মুসলিম বহুল দেশ কাজেই তাদের বিশ্বাসে আঘাত করে কোন বই তাঁরা প্রকাশ করতে দিবেনা এটা মেঘলা প্রকাশনীর বোঝা উচিত্ ছিল।মহানবী ও তার মোজেজাকে অস্বীকার ,কোন সাহাবী ও রাসুলের স্ত্রীগণের অপমান সুন্নিহরা সহ্য করতে পারেনা (আমি শিয়া ,সুন্নিহ্ ,হাম্বলি কিছু না তবুও আমিও সহ্য করতে পারিনা) মূলত এই অস্বীকার ও এইসব ব্যাপার নিয়ে সমালোচনার কারনেই বইটি নিষিদ্ধ হয়েছে আন্দোলনের মুখে এবং প্রকাশনির ভবনে হামলা হয়েছে।
আপা/ভাই আপনি বল্লেন ,যারা ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন তারাই প্রকাশনীর উপর প্রত্যক্ষ হামলা করেছে ।আপা /ভাই তাদের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন সাইবার ৭১ ,কিন্তু তাদের প্রকাশনির স্টলে ,কিংবা ভবনে সাইবার ৭১ হামলা করেনি এ কথাটা অযৌক্তিক ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
সহমত
মাল্টি ফেইথের এই যুগে ইসলামকে টিকে থাকতে হলে অন্য ধর্মের এবং একই ধর্মের ভিন্ন মতকে মেনেই নিতে হবেই। বিশবাসের বিষয়গুলো নিয়ে জোরাজবরদস্তি দুর্বলতার পরিচায়ক। শিয়া-সুন্নি দবন্ধ, মুতাজিলা আশয়ারি দবন্ধ ও সংঘাতের ইতিহাস ধর্ম ও ইতিহাসের নিরিখে কোনোভাবেই গর্বের নয়। এ জন্যই আমার মত হল আরো সহিষ্ণুতা ও প্রজ্ঞার মাঝেই ইসলামের মঙ্গল।
আপনার অসাধারণ গোছানো মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।
আপা ১৪০০ বছর ধরে ইসলাম ভিন্ন মতকে সম্মান জানিয়ে আসছে ,কিন্তু মতটা হতে হবে যৌক্তিক এবং ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয় ।একটা রাষ্ট্রের জনগন যেমন যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করতে চায় স্বদেশে থাকতে দেয়না, ইসলাম ও তেমনি চায়না অযৌক্তিক কোন মত কে মেনে নিতে ।আসিফ বা থাবার মত যদি কুরুচিপূর্ণ মতামত হয় সেক্ষেত্রে তলোয়ার তোলাই ভাল।
সহমত
১- '১৪০০ বছর ধরে ইসলাম ভিন্ন মতকে সম্মান জানিয়ে আসছে ,কিন্তু মতটা হতে হবে যৌক্তিক এবং ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয় ।'
যৌক্তিকও হবে, আবার সাংঘর্ষিকও হবে না- এমন সোনার পাথরবাটি কোথায় পাওয়া যায়, আমার জানা নাই। সাংঘর্ষিকই যদি না হবে, তা হলে ভিন্ন মত কেন? আমি জানি না, আপনার কাছে ভিন্নতা বলতে কী বোঝায়?
২- যুদ্ধাপরাধীদের যে উদাহরণ টানলেন, তাতে আপনার স্বস্থি হতে পারে। তবে আমার নবি দেশ-কালের অনেক ঊর্ধে। সমকালীন উদাহরণে তাঁকে মাপতে যাওয়া বড্ড বেমানান! যাকগে, সে আপনার ব্যাপার।
৩- 'ইসলাম ও তেমনি চায়না অযৌক্তিক কোন মত কে মেনে নিতে ।'
সেটি ইউনিফেইথের যুগের কথা, যখন দারুল হারব ও দারুল ইসলাম-এর মতো পরিভাষার প্রচলন হয়। সেই যুগ পেরিয়ে ইসলাম এখন মাল্টি-ফেইথের যুগে দণ্ডায়মান!
আপনার আলচ্য বইটি আমি পড়িনি। জানিনা ওতে রাসুল (সা) সে কতখানি সমালোচনা বা অপমান করা হয়েছে। তবে ইসলামিক শাশনব্যাবস্থায় আল্লাহ ও তার রাসুলের নামে গালি দেওয়ার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। আমাদের দেশ যেহেতু গণতান্ত্রিক দেশ - এখানে বিচারের দাবি উঠেছে। দাবিটা অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত। তা না হলে এমন আরো অনেক লেখক ও প্রকাশক উতসাহ পাবে।
বাঙ্গালীর নেতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সমালোচনা করে, কটুক্তি করে একটা বই লিখে দেখুন। বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এর আগেই সাজা হয়ে যাবে। কাকে বলে দেখতে পার। সেক্ষেত্রে কিন্তু বাঙ্গালীর আচরন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস বা সময় কোনটাই পাবেন না। ওদিকে মুসলমানদের নেতা রাসুল (সা) কে সমালোচনার জন্য বিচারের দাবিটা দেখে মুসলমানদের আচরন নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল?
ঐতিহাসিকভাবে মির জাফরকে সম্মান না দিতে পারেন, তাকে ব্যক্তিক আক্রমণ করতে পারবেন কি? হয়ত তাও পারবেন, কিন্তু এতে আপনার কী সম্মান বৃদ্ধি হবে, আমার জানা নেই।
ভারতে এবং বিশ্বে মহাত্মা গান্ধির পরিচিতি অনেক ঊর্ধে। কিন্তু তার হত্যাকারী নাথুরাম গডসের কাহিনি নিয়ে সেখানে, ভারতে নাটক উপস্থাপন হয়, কোনো বাধা ছাড়াই। এতে কি গান্ধির মান হানি হয়?
ইসলামের নবির সঙ্গে কারো তুলনা করাটা কতটা মানায়, তা বলতেও বাধে। কারণ সবার বৈশ্বিক মিশন আছে কিনা, তা তাদের অনুসারীরা বলতে পারবেন। কিন্তু রাসুলের যে রিসালা আছে, তাতে সহিষ্ণুতা ও প্রজ্ঞার বিজয়ই অনিবার্য, হটকারিতার নয়।
ধন্যবাদ।
মীর জাফর কে কেউ সন্মান দেয় না। মানুষের সন্মান আসে তার কাজে , তার গুনে। নাথুরাম খড়স এদের জীবনী নিয়ে নাটক বানালেই তাকে সন্মানিত করা হয়না। সেই নাটকে তাকে খুনীই দেখানো হয়। এমন নাটকে বাঁধা দিবে কে? খুনিকে তো খুনি দেখায়। ওই একই নাটকে নাথুরাম খড়সকে দেবতা বানিয়ে দেখুক - তখন বাঁধা দেখতে পারবেন। এসব আপনার সাথে তর্কের খাতিরে বলছি। আমার বিরোধ ওসব যায়গাতে নয়।
আমার মুল বিরোধ হল এখানে - এই আইডিয়াটা ইসলামে আছে নাকি আপনার নিজের কথা? আপনার নিজের কথা হলে বলুন - এটা আমার নিজের কথা। আর, এটা ইসলামের কথা হলে - কোথায় আছে দেখানে।
আপনি যদি পালটা প্রশ্ন করেন - "রাসুলকে অপমান করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে" - এই কথা কোথায় আছে? উত্তর হল - এটা ইসলামে আছে। আপনি চাইলে আওয়াজ দিয়েন - আমি দেখাতে পারব।
১-অবশ্যই খুনি হিসাবে, কিন্তু তিনি মহিমান্বিত খুনি! এজন্য তার নাটক বন্ধ করারও দাবি উঠে। বন্ধ হয় না। যারা বন্ধ করার দাবি করেন, তারা শঙ্কিত; এই নাটকের কারণে মহাত্মার মাহাত্ম্যে আঁচড় লাগতে পারে এই ভয়ে। যাদের কারণে বন্ধ হয় না, তাদের আবার মহাত্মাজির আদর্শের উপর অটুট আস্থা!
২-ইসলামের নবির সঙ্গে কারো তুলনা করাটা কতটা মানায়, তা বলতেও বাধে। তবে এ আপনার স্বাধীনতা! আমার নবি দেশ-কালের অনেক ঊর্ধে।
৩-ইসলাম শুধু রাসুলের অপমান কেন, যে কোনো নেতিবাচক কর্মের বিরোধিতা করার অধিকার স্বীকার করে। তবে সীমা লঙ্ঘন করে নয়। সে সীমারেখা নিয়েই তো আমি প্রশ্ন তুলেছি! উত্তরের পর্বে যাওয়ার আগে আপনাকে বিনিতভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, এখন মাল্টি ফেইথের যুগ। এখন সেই ইউনিফেইথের যুগের ফতোয়ার খর্গ দিয়ে কাউকে মর্গে পাঠালেই যোগ্যতার প্রমাণ হয় না। এগুলো হল হটকারিতা!
অনেক আগে থেকেই আড়ালে থাকা এই বইটি হঠাত বঙ্গানুবাদ এর কি প্রয়োজন পড়েছিল সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
তিনি অবশ্যই কমিউনিস্ট ছিলেন। কমিউনিস্টদেরও বেঁচে থাকার ও নিজেদের মতবাদ চর্চার অধিকার মাল্টি ফেইথের এ যুগে অবশ্যই আছে। বিশবাসের বিষয়গুলো নিয়ে জোরাজবরদস্তি দুর্বলতার পরিচায়ক।
ধন্যবাদ
নিজের মত প্রকাশ নয়, ইচ্ছেমতো ইতহাস বিকৃতিও নয় সেটি! তিনি কমিউনিস্ট মানুষ, তার ঐতিহাসিক সোর্সগুলো আবার শিয়া-ধারা নির্ভর, যা আমাদের সুন্নি ধারা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এজন্যই তা আমাদের কাছে নতুন ঠেকছে। ইরানের কট্টরপন্থী শিয়াদের কাছে এ সোর্সগুলো যক্ষ্মের ধনের মতো কঠোরভাবে সংরক্ষিত। আবার আপনি যেহেতু যদু বাবুর মতবাদগত অবস্থান স্বীকার করলেন, পাঁড় কমিউনিস্ট দাশতির মতবাদগত অবস্থানে শঙ্কিত কেন?
ব্যক্তিক আক্রমণ অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু দাশ্তি যে সোর্সের উপর ভিত্তি করে বইটি লিখেছেন, সেগুলো ইতিহাস থেকে মুছে দেবেন কি-ভাবে? বিশবাসের বিষয়গুলো নিয়ে জোরাজবরদস্তি দুর্বলতার পরিচায়ক। শিয়া-সুন্নি দবন্ধ, মুতাজিলা আশয়ারি দবন্ধ ও সংঘাতের ইতিহাস ধর্ম ও ইতিহাসের নিরিখে কোনোভাবেই গর্বের নয়। এ জন্যই আমার মত হল আরো সহিষ্ণুতা ও প্রজ্ঞার মাঝেই ইসলামের মঙ্গল।
দির্ঘদিন শুনে ও পড়ে এসেছি লাইব্রেরি অফ আলেকজান্দ্রিয়া হযরত উমর(রাঃ) এর নির্দেশে ধ্বংস করা হয়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্চে এই অপবাদ তাঁর উপর অারোপিত হয়েছিল ১২০০ সালের দিকে ক্রুসেড এর সময়।
সবুজ সাহেব, সোর্সগুলোর অথেন্টিসিটি যাচাই করার অধিকার আপনার আছে। তা করুন। কিন্তু তা করার আগেই এই অতিরঞ্জন কেন? আরেকটি ব্যাপার, এটাই বোধ হয় মূল, আর তা হল বিশ্বাস। শিয়া সোর্স শিয়াদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য, সুন্নিদের কাছে নয়; যেমনটি সুন্নিদের সোর্স শিয়াদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। কী দেবেন সমাধান? কেমন হবে যদি শিয়ারা সুন্নি সোর্সগুলোর প্রকাশ রোধ করে দেয়, বিনাশ করে দেয়। যেমনটি আমরা সুন্নিরা তাদের সোর্সগুলোর সঙ্গে করছি। এর গোড়াতেই রয়েছে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের রক্তাক্ত , করুণ এবং অবশ্যই অ-গৌরবের দীর্ঘ ইতিহাস!
আপনার প্রতিবাদকে আমি সম্মান জানাই। কিন্তু বিশবাসের বিষয়গুলো নিয়ে জোরাজবরদস্তি দুর্বলতার পরিচায়ক।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।
কেউ যদি ভুল করে এবং সে ভুল স্বেচ্ছা কৃতও হতে পারে, পরে সে নতি স্বীকার করে, তখন কি বলে ইসলাম ও ইসলামি শরিয়ত? আপনি মানবেন না, ধর্ম্প্রাণ মুসলমান মানতে চাইবেন না। সে তো হতেই পারে। কিন্তু যিনি ধর্মপ্রাণ/ ধর্মাপরায়ণ, তিনি কি ধর্ম ও শরিয়ত মানবেন, না নিজের আবেগ নিয়ে লাফালাফি করবেন, সে তার ব্যাপার! এনিয়ে আমার বলার কিছু নেই।
http://www.somewhereinblog.net/blog/rouzameer007/30009406
মন্তব্য করতে লগইন করুন