জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা!!!
লিখেছেন লিখেছেন রওশন জমির ১০ জুলাই, ২০১৩, ১২:৪২:২১ দুপুর
আওয়ামী-জামায়াত সমঝোতার বিষয়টি আবারো শিরোনাম হল। সূত্র: http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=119486&&%20page_id=%205 এ বিষয়ে আমি অনেক আগে একটি লেখা লিখেছিলাম। সূত্র: http://www.somewhereinblog.net/blog/rouzameer007/29751333 তাই আমার কথার সত্যতা বাস্তবে রূপায়িত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কিন্তু এখানে কয়েকটি কথা বলে নেওয়া দরকার, যা নিম্নরূপ:
ক) ধর্মের উর্বর এলাকা মধ্যপ্রাচ্য আমাদের চোখের সামনে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার দিক থেকে ব্রাদারহুড জামায়াতের তুলনায় অনেক পোড়-খাওয়া। অথচ তাদের আজ কী করুণ অবস্থা!
খ) মিশরের অবস্থা প্রমাণ করে প্রথাগত ধর্মীয়/ ইসলামি রাজনীতিকে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কারণ, ক্ষমতার পথ অনেক বন্ধুর এবং কণ্টকাকীর্ণ। আবার তা পিচ্ছিলও। উঠা যেমন কঠিন, পা পিছলে পড়ে যাওয়াটা ততটাই সহজ এবং নিষ্ঠুর। তাই আধুনিক রাজনীতির স্বীকৃত উপাদানগুলোকে ইসলামি নীতি অনুসারে আত্মস্থ করেই দিশা খুঁজতে হবে।
গ) ক্ষমতারোহণই নিরাপত্তার শেষ রক্ষাকবচ নয়। এর জন্য দেশের ভেতরে এবং বাইরে আস্থার বাতাবরণ তৈরি করতে হয়। স্থিতিশীলতা ও জনসমর্থন ধরে রাখার জন্য আরো কৌশলী হতে হয়। তা না হলে সুড়ঙ্গে সেঁধিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
ঘ) মিশরের পাশেই ইজরাইল, আন্তর্জাতিক রঙ্গমঞ্চের সর্বোচ্চ কুশীলব। বাংলাদেশের পাশেই ভারত, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির অন্যতম নিয়ামক শক্তি। তাই ব্রাদারহুডকে যেমন ইজরাইলের অনাপত্তিপত্র নিতে হবে, তেমনই জামায়াতকেও ভারতের অনপাত্তিসনদ নিতে হবে। এটা শুধু দাস্য-বশ্যতার রূপক নয়, আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক স্থিতিশীলতারও একটি মোক্ষম উপায়।
ঙ) ব্রাদারহুড ইসলামি মৌলবাদী দল, কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে মৌলবাদ ব্যতীত অন্য কোনো নেতিবাচক অভিধা তাদের দেওয়া হয় না। অন্যদিকে জামায়াত একে তো মৌলবাদী দল, উপরন্তু দেশটির স্বাধীনতা-লগ্নের কতিপয় আচরণের জন্য প্রবলভাবে বিতর্কিত। সে বিষয়টির আইনি ও রাজনৈতিক সমাধান না করে জামায়াত যদি সংক্ষিপ্ত এবং আপাত নিরাপদ কোনো উপায়ে সামনে চলতে চায়, তা তাদের জন্য বড় রকমের ঐতিহাসিক ভুল হবে। কিন্তু ‘চোর না শোনে ধর্মের কাহিনি’, তাই নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে জামায়াত খুব একটা আমল দেবে না বলে মনে হয়।
চ) জাহানারা ইমামের সঙ্গে আওয়ামী লীগ পূর্বেও একবার বেইমানি করেছে, এবারেও যদি করে যেমনটি পত্রিকায় প্রকাশ, তাহলে বলা যাবে, আওয়ামী লীগ নিজ বেইমানি আচরণের পুনরাবৃত্ত করেছে মাত্র। কিন্ত তরুণদের কিছু করার থাকবে না। কারণ, আক্ষরিকভাবে মৌলবাদ-বিরোধী তরুণদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু জামায়াত যদি ভেবে থাকে যে, এভাবে তারা পার পেয়ে যাবে, দোষমুক্ত হয়ে রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে নতুন রূপে আবর্ভূত হবে, তা তাদের চরম ভুল হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ যদি এবারে কোনোভাবে ফুসলিয়ে-টুসলিয়ে, কলা-কৌশল ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসতে পারে, তারা অবশ্যই অবশিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। স্মর্তব্য, এ পরিকল্পনায় ভারতের সক্রিয় ও নিরঙ্কুশ সমর্থন আছে, যা জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের লোকদের অনেকেরই জানা।
ছ) আমরা যারা দর্শক গ্যালারিতে বসে হাত তালি দিই, বিমর্ষ হই, এবারে অন্য কাউকে গাল দিয়ে সুখ লাভের জন্য নয়, কারো সমালোচনা করার জন্যও নয়; বরং নিজেদের সচেনতা বজায় রাখা ও বৃদ্ধি করার জন্য রুদ্রের কবিতার দুটি পংক্তি আবৃত্তি করতে পারি:
বেশ্যাকে তবুও বিশ্বাস করা চলে
রাজনীতিবিদদের ধমনী-শিরায় সুবিধাবাদের পাপ,
বেশ্যাকে তবুও বিশ্বাস করা চলে
বুদ্ধিজীবীর রক্তস্নায়ুতে সচেতন অপরাধ
বিষয়: রাজনীতি
১৭৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন