ধর্মীয় চেতনা

লিখেছেন লিখেছেন লাল গোলাপ ০৯ মার্চ, ২০১৩, ১২:২৯:২১ দুপুর

ফসলের জমিতে আগাছা হলে তা উপড়ে ফেলতে হয়। আগাছা বেড়ে উঠতে দিলে একটা সময় আগাছার আড়ালে ফসলের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। তখন কৃষকের ঘরে ফসল না ঊঠে কৃষকের মাথাই হাত উঠে। আমাদের বাংলাদেশেও এখন একই অবস্তা। কারণ আমরা এখন এতো বেশি চেতনাই বিশ্বাসী হয়ে গেছি যে চেতনার মধ্য ডুবে থেকে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা, কে নাস্তিক আর কে আস্তিক সব এক সাথে গুলিয়ে ফেলেছে। স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, কাল মাক্সের চেতনা, সামাজতান্ত্রিক চেতনা, গনতান্ত্রিক চেতনা গুলোকে এতো বেশি প্রাধান্য দিয়ে ফেলেছি আমাদের জীবনে যার ফলে আমরা ধর্মীয় চেতনা কে বেমালুম ভুলে গেছি। ধর্মীয় চেতনা না থাকলে মানুষের মধ্যে কোন দিন সচেতনতা আসবে না। মানুষের শিক্ষার মাধ্যম দুই টা—১) পাঠ্য পুস্তক এবং ২) সমাজ/পরিবেশ /পরিবার।‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারা দিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি’- এটা পাঠ্য পুস্তক থেকে অর্জিত নির্দেশনা আর এটার বাস্তব্যয়ন হয় তখন , যখন সে সমাজে বিচারন করে। কিন্তু সে সমাজ ব্যাবস্থা যদি কলুষিত হয়ে যায় বিভিন্ন মতবাদ আর চেতনা দিয়ে যা মানুষের মধ্যে বৈষম্য করতে শেখাই, সেই পরিবেশ এবং সমাজ থেকে তার ভালো হয়ে চলার বা বলার বোধশক্তি টুকু হারিয়ে যায়। আর তখনই সে পথভ্রষ্ট হয়ে যায়। '৪৭ থেকে '৭১ পর্যন্ত 2৪ বছর পাকিস্তানিরা আমাদের মেরেছে। তারপরের ৪2 বছর বাঙ্গালী নিজেরা নিজেদের মারছে! স্বাধীণতা কি তবে কেবলই আত্মহত্যার অধিকার? যুদ্ধ করে স্বাধীণ বাংলাদেশ পেয়েছি কি শুধুই আত্মহণনের মঞ্চ আর মহাশ্মশাণ বানাতে? জানি এর উত্তর কেউ দিতে পারবে না। কারণ চেতনার মধ্যে ডুবে থেকে মনুষ্যত্ব বোধের এত অভাব হয়েছে যে আমরা কুমীরের মত শেয়ালের পা ভেবে বাঁশ কে আকড়ে ধরে সান্তনা খুছি। আত্মহত্যা এবং আত্মহণন কোন টা সেটা ও এখন কেউও বোঝে না। আসলে আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ইসলামটা কে না জানা এবং জানার চেষ্টা না করা, চর্চা না করা যদিও আমরা ৯০ ভাগ মুসলমান।আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ যারা ইসলামটাকে সংকুচিত করে শুধু মসজিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই, আরেক শ্রেনী যারা ইসলামটাকে সংস্কৃতি(বিয়েতে,জন্মের সময়,২ টা ঈদ,দামি কুবানি দেওয়া আর মরনের সময় মুসলিম নিয়ম আনুযায়ি কবর দেওয়া) হিসেবে ব্যাবহার করতে চাই।

তার চেয়েও বড় সমস্যা হল আমাদের ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে। একদল ধর্মীয় নেতা অন্য ধর্মীয় নেতাদের দোষারোপ করছে। দেওয়ানবাগী, চরমোনা পীর, ইসলামিক আরও অনেক দল যারা সব সময় বাস্ত্য একে অন্যকে দোষারোপ করা নিয়ে এই বলে যে আমরা সঠিক, আমরা ইসলামের সব আনুশাষন গুলো পুরাপুরি মেনে চলি।অমুক ইসলামি দল জিহাদের ভুল ব্যাখা দিচ্ছে, তারা ইসলাম সম্পর্কে ভুল ব্যাখা দিচ্ছে।

একটা বিষয় সবার জন্য সত্য যে সব ধর্মীয় দলের উদ্দেশ্য একটাই তা হল আল্লাহের দীন বাস্তব্যায়ন করা, রাসুলের আদর্শ বুকে ধারণ করা এবং অন্যকে ও আল্লাহ দেওয়া কুরান মেনে এবং রাসুলের মত করে জীবনটা পরিচালনা করতে পারে তাতে সাহায্য করা।

তাহলে আমার প্রশ্ন কেন আপনারা ধর্মীয় দল গুলো নিজেদের মধ্যে মত পার্থক্য তৈরি করে আজ বিভাজন করে রেখেছেন? আপনাদের এই বিভাজনের কারণে ই আজ আগাছার মত অন্যরা বেড়ে উঠেছে। কারণ যে বনে বাঘ নেই সে বনে বিড়ালের রাজত্ব কায়েম থাকে।যে জন্য আওয়েমীলীগ একটা ধর্মীয় নিরপেক্ষ দল হয়ে ও যার ওলামালীগ নামে কিছু নাম ধারী ওলামা আছে। অথচ ইসলাম টাকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা তারা করে যাচ্ছে আজ। সুতারং আর নয় ধর্মীয় দলের মত পার্থক্য। সবাই আসুন এক সুরে ধর্মীয় চেতানাকে জাগ্রত করি সবার মাঝে।

বিষয়: বিবিধ

১৪২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File