২৫/০২/২০১৩ শাহবাগের গণজাগরণ কোন ধিকে আগাচ্ছে ?
লিখেছেন লিখেছেন কানা বাবা ০৭ মার্চ, ২০১৩, ১০:০১:৫৮ রাত
শাহবাগের গন জাগরণ জাতিকে পুরোপুরি নাড়িয়ে দিয়েছে একথা হলফ করে বলা যায় । কিন্তু এই আন্দোলন কতটা সফল এটা নিয়ে কথা বলতে গেলে দেখা যাবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্তির কৌটা পুরোপুরি শূন্য একমাত্র জাতিকে ৪২ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আবার নাড়িয়ে দেয়া ছাড়া। অনেকে এটা কেই অনেক বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখাতে চেষ্টা করবেন। তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই জাতিকে নাড়িয়ে দেয়ার জন্যই কি আমরা শাহবাগে গিয়েছিলাম ? উত্তর না। আমাদের প্রধান দাবি ছিল রাজাকারদের ফাঁসি নিশ্চিত করা ও জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এই দাবি আদায়ের পথে আমরা খুব বেশি অগ্রসর হয় নি এটা বাস্তব সত্য।এখন সময় এসেছে আমাদের এই ব্যর্থতার কারন খোঁজে বের করার। কারন এই আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে যদি আমরা ঘরে ফিরি তবে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে । জামাত শিবির আবার প্রবল পরাক্রমে এই দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধংসের মিশন শুরু করবে যা আমাদের জন্য খুবই আশংকাজনক একটা বিষয়। প্রায় ২৫ দিন একনাগাড়ে আন্দোলন চলার পরেও কেন কার্যকর কোন সফলতা লাভ করতে পারি নাই এর কারন খুজতে গেলে প্রথমেই আসবে এর দলীয় ইতিহাস সমৃদ্ধ নেতৃত্ব। একটু খেয়াল করলে লক্ষ করা যাবে এই আন্দোলনের মূল উদ্যোক্তার বেশির ভাগ আওয়ামী রাজনৈতিক ঘরানার লোক । তারা জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক এটা চান কি চান না এই প্রশ্নে যাব না। কিন্তু এই আন্দোলনের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে এতটুকু বলা যায় জামাত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারকে বাধ্য করার মত যথেষ্ট জন সমর্থন তারা পেয়েছিলেন কিন্তু তারা সেই পথে না হেঁটে সরকারের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়েছেন। এই দাবি আদায়ের আন্দোলনে প্রতিপক্ষ হওয়ার কথা ছিল সরকার কিন্তু তা না করে যেভাবে সরকারকে বন্ধু বানানো হয়েছে তাতে একজন বিরোধীদল সমর্থক প্রশ্ন তুলতেই পারে এই আন্দোলন মোটেও জামাত শিবির নিশিদ্ধের জন্য নই। মুক্তিযুদ্ধের সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে আওয়ামীলীগ সরকারের গত পাঁচ বছরের কুকীর্তি কে আড়াল করে রাখার অপচেষ্টা মাত্র। আন্দোলনের কর্মসূচী দেখে বিরোধীদল সমর্থকদের এই দাবির সপক্ষে যুক্তি দিন দিন বাড়তেছে। এই আন্দোলনের প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে জামাত থেকে বি এন পি তে পরিবর্তিত হচ্ছে। রায়ের বাজার বৈধ্যভুমি থেকে কর্মসূচী ঘোষণার সময় একজন দেখলাম ঘোষণাকারীকে শিখিয়ে দিচ্ছিলেন এই পোস্টার ছাত্রদলের একজন ছাপিয়েছে এটা বলেন। যেহেতু আওয়ামীলীগ ৭১ এর পর থেকে আদর্শ ও উন্নয়নের পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধকে বেঁচে রাজনীতি করে এসেছে সেহেতু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই আন্দোলনের মাধ্যমে ফায়দা লুঠতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। ফায়দা লুটার পরেও যে আওয়ামীলীগ শাহবাগের আন্দোলন এর দাবি পূরণ করবে এটা ভাবা বোকামি। কারন বাংলাদেশে যতদিন জামাত থাকবে ততদিন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করার একটা কার্যকর প্লাটফর্ম থাকবে। আওয়ামীলীগ ইতিমধ্যে বল আদালতের কোর্টে ছেড়ে দিছে। এতে করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হল। লম্বা সময় ধরে জামাতের তথা বি এন পির বিরদ্ধে মাঠ গরম থাকবে দ্বিতীয়ত জাতির সামনে আরেকটা মুলা ঝুলানো যাবে যে আমরা জামাত নিশিদ্ধের কাজ শুরু করেছি এটা শেষ করার জন্য আমাদের আবার ভোট দেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান আওয়ামীলীগের মিডিয়া সেলের প্রধান ইমরান এইচ সরকার আওয়ামীলীগের সেই পথটাকেই প্রশস্ত করতেছে বলে মনে হচ্ছে। এই ভাবে যদি বি এন পি কে রাজনৈতিক ভাবে চাপে ফেলার জন্য এই আন্দোলন পরিচালিত হলে এই আন্দোলন তথা মুক্তিযুদ্ধের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার এটা বলার জন্য রাজনৈতিক বোদ্ধা হওয়া লাগে না।
বিষয়: রাজনীতি
১৩৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন